কন্টেন্ট মার্কেটিং বা আর্টিকেল মার্কেটিং এর জন্য ২০ টা গোপন ও দরকারি টিপস এন্ড ট্রিকস

যেকোনো বিজনেসের ক্ষেত্রে কন্টেন্ট মার্কেটিং একটি অপরিহার্য অংশ। বেশিরভাগ মানুষ মনে করে যে বেশি লিড কালেক্ট করাই কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্রাটেজির সফল অংশ কিন্তু মান সম্মত কন্টেন্ট মার্কেটিং এর জন্য আপনার নিজেকে ইন্ডাস্ট্রিতে ভাল অবস্থানে স্থাপন করাটাও কিন্তু জুরুরি। এছাড়াও আর অনেক বিষয় আছে যেগুলাতে আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্রাটেজিকে নিয়ে যাবে অন্য অবস্থানে। আসুন তাহলে আলোচনা করা যাক কি কি বিষয়ের দিকে আমাদের নজর দেওয়া উচিত।

১।আপনার ইমেইল ইনবক্স থেকে টপিক খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন :

যখন একটি বিজনেস চলে তখন ওই বিজনেসের উদ্যোক্তা কে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রশ্ন, মন্তব্য তথা জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়, এদের মধ্যে কিছু আবার পুনরায় ঘুরে ফিরে একই রকম, আপনার নিজের বিজনেসের এর ক্ষেত্রে এখানে সুযোগ হল, একটা সময় যখন আপনি খেয়াল করলেন, আপনার ক্লায়েন্ট এবং কাস্টমারদের সামনে বার বার একইধরনের প্রশ্নোত্তরের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তখন ওই বিষয় গুলিকে একটি ব্লগ পোস্টে কনভার্ট করে ফেলুন।এগুলিকে নিয়ে আবার FAQ (Frequently asked questions) এ অন্তর্ভুক্ত করে রাখুন, এটা আপনার কোম্পানিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তুলবে।ভোক্তাদের মূল্যবান তথ্য দেবার চেষ্টা করুন, এবং দেখান যে আপনার বিজনেসের চাইতে তাদের প্রয়োজন এবং উদ্বেগ এর বিষয় গুলি নিয়ে আপনার মাথাব্যাথা বেশি।

২।আপনার পোস্টে ভিডিও এড করুন  :

বিভিন্ন কেস স্টাডি থেকে দেখা যায় ভিডিও ছাড়া ব্লগগুলির চাইতে যে সকল ব্লগে ভিডিও রয়েছে সেগুলাতে হিট শেয়ারের পরিমাণ কয়েক গুন বেশি।ভিডিওর মাধ্যমে আপনার পোস্ট গুলিতে অডিয়েন্স বেশি এনগেজ হবে কারণ, কন্টেন্ট গুলি উপভোগ এর জন্য ভিডিও একটি অত্যাবশ্যকীয় ব্যাপার।আর অডিয়েন্স কে পোস্ট এ বেশি এঙ্গেজ করানোর জন্য ভিডিও হল সর্বত্তম একটি পন্থা।

৩।যদি ভিডিও না থাকে তবে কিছু ভিডিও তৈরি করুন  :

ভিডিও তৈরি করতে চাইলে আপনি যে কোন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন কিন্তু বিজনেস এর ক্ষেত্রে আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনার সাইটের টপিক এর উপর।চিন্তা করে দেখুন, আপনার কোম্পানি বাইরের অন্য কোন কোম্পানি থেকে কোন সার্ভিসটি ভোক্তাদের কে বেশি দিতে পারবে? আপনার কোন দক্ষতা কে কাজে লাগিয়ে অন্যদের থেকে মানুষের কাছে বেশি নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন, আর সেগুলা ভিডিও এর মাধ্যমে প্রকাশ করবেন অবশ্যই।আপনার ব্লগ পোস্টের চাইতে ভিডিওর মাধ্যমে অডিয়েন্স কে সহজে পরিচালনা করতে পারবেন।

৪।একটি Who-to-Follow লিস্ট তৈরি করুন  :

মানুষ জানে যে আপনি আপনার ফিল্ডে একজন এক্সপার্ট কিন্তু যখন আপনি সেইম ফিল্ডের অন্যান্য বস লেভেলের লোকজন দের ও রেফার করে কন্টেন্ট তৈরি করবেন তখন মানুষ মনে করবে যে না, আপনি শুধু মার্কেটিং এর জন্যই আসেন নি বরং পাশে দাঁড়ানোর জন্য অন্যান্য রিসোর্স ও দিচ্ছেন এতে করে আপনি সকলের কাছে আরেকটু বিশ্বাস যোগ্য হয়ে উঠতে পারছেন।এই কাজ তার মাধ্যমে আপনার দুইটা লাভ হবে প্রথমত, ভোক্তাদের কাছে আপনি একটি বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ভাণ্ডার হিসাবে প্রশংসিত হবেন দ্বিতীয়ত, আপনি যাদের লিঙ্ক দিয়ে রেফার করছেন তারাও আপনার প্রতি একটি পজিটিভ ধারনা নিয়ে আসবে কারণ আপনি তাদেরকে ট্রাফিক দিচ্ছেন, এবং তারাও আপনার এই অনুগ্রহ কে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা করবে তাদের কাজের মাধ্যমে।মানে তাদের কাছ থেকেও আপনি ট্রাফিক পাবার একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে।

বিজনেস প্রসার এর ক্ষেত্রে সব থেকে বড় উপকারী দিক হল একই ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য দের মধ্যে ভাল একটি রিলেশনশিপ বন্ধন তৈরি করা।

৫।এমন এগিয়ে যান যেটা আপনার মিশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে  :

মানুষ সর্বদা নতুন কিছু শিখতে ভালবাসে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। এজন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন বিষয়ের সম্মুখিন হতে হবে।

সুতরাং কাস্টমারদের প্রয়োজনের তাগিদে আপনাকে সেসকল বিষয় সম্পর্কে নিজেকেও জানতে হবে আবার তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এতে যা হবে তা হল, সবার কাছে আপনার কোম্পানির আলাদা একটা রেপুটেশন তৈরি হবে যে, আপনি সবার কৌতুহলের প্রতি সচেতন।

৬।বিভিন্ন ধরনের কাহিনীমূলক গল্প প্রণয়ন করুন আর সেগুলো পজিটিভলি তুলে ধরুন  :

কেউ যদি অ্যাপল কিংবা সুবারু এর অ্যাড দেখে থাকেন তাইলে বুঝতে পারবেন যে তারা কিভাবে প্রতিটি বিজ্ঞাপনে বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ গল্পগুলো দ্বারা একটি ব্যাবসায়িক বিজ্ঞাপন তৈরি করে ফেলেছে এবং সেটা তাদের অডিয়েন্স কে ও ভাল ভাবে যোগান দিচ্ছে।নিজের কোম্পানি সম্পর্কে একটু সময় নিয়ে ভাবুন এবং বিবেচনা করুন যে আপনার কোম্পানির কোন বিষয়টিকে আপনি কাজে লাগিয়ে আপনার মিশনের দিকে আগাতে পারবেন।আর সেই সব ধারনা গুলিকে কন্টেন্ট এর ভিতরে কনভার্ট করুন।

মনে করি, আপনি একটি লাইফস্টাইল পণ্য বিক্রয় করেন, আপনি আপনার পণ্য ব্যবহার এর বিভিন্ন উপকারীটা, স্বাচ্ছন্দ্য, এবং নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয় গুলি তুলে ধরুন মানুষের কাছে।সব সময় চেষ্টা করবেন ক্রেতাদের চোখের সামনে এমন কোন আকর্ষক গল্প উপস্থাপন করার যা তাদের হৃদয়ে ঢুকে যাবে।

 

৭।কাস্টমারদের প্রশ্ন গুলি এড়িয়ে যাবেন না কোনভাবেই  :

একজন ক্রেতা যখন একটা পণ্য ক্রয় করতে চায় তার আগে বেশিরভাগ  এইটা সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেট এর সাহায্য নেয়।  গুগল এ যে কোন বিষয় সার্চ দেবার পর হাজার হাজার উত্তর এসে পড়ে, এক্ষেত্রে ওইসকল উত্তর গুলোর মধ্যে যদি আপনার কোম্পানির দেওয়া উত্তর ও থাকে তাইলে ব্যাপারটা কতটা পজিটিভ একটা ফায়দা নিয়ে আসতে পারে! আর আপনার পণ্য কিন্তু আপনার এগুলাতে কোন অ্যাক্টিভিটি নাই, সেক্ষেত্রে আপনার কোম্পানির জন্য বড় ধরনের একটা শূন্যস্থান তৈরি হয়ে আছে।

কন্টেন্ট এর এইযুগে শুধু মাত্র ভাল পণ্য থাকাই কিন্তু যথেষ্ট নয়।মানুষ একটা জিনিস দেখার পরে আগে সেটার উপর নির্ভরশিল হতে হবে তারপর না হয় কেনার সিদ্ধান্ত নিবে।আর তার জন্য যা করতে হবে তা হল, কোম্পানিকেই এই অথোরিটি টা তৈরি করতে হবে যাতে তাদেরকে অন্য কোথাও না যেতে হয়।মানুষের প্রশ্নগুলিকে যাচাই করে চেষ্টা করুন যে উত্তর গুলি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে দেওয়া যায় কিনা।এটা করলে আপনার নিজেকে এক্সপার্ট হিসাবে উপস্থাপন করা হবে আর সেই সাথে সেলস বাড়ার সম্ভাবনাও দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।

৮।বিভিন্ন অফারের জন্য নির্দিষ্ট ধার্য করুন  :

যেখানে এত এত কোম্পানি ভোক্তাদের প্রতিনিয়ত ইমেইল সাইন আপ কিংবা ব্লগ সাবস্ক্রিপশন এর মাধ্যমে প্রচুর সুযোগ সুবিধা প্রদানের অফার করছে, সেখানে খুব কম সংখ্যক ই আছে যারা নির্দিষ্ট সময় ধার্য করে কোন অফার করে।আমার দেখা একটি ইংরেজি লাইফস্টাইল ব্লগ http://fourhourworkweek.com/blog/ আছে যেখানে এই কাজটি করে এবং তার ফলাফল ও কিন্তু অবিশ্বাস্য।

এভাবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যদি পডকাস্ট,ওয়েবিনার, ভিডিও কনফারেন্স প্রভৃতির মাধ্যমে মানুষকে ইনভাইট করেন আর সেগুলার মাধ্যমে একটি স্ট্রং রিলেশন তৈরি করে ফেলতে পারেন তবে সেটা হবে আপনার ওই ইমেইল সাবস্ক্রিপশন এর চাইতে হাজার গুনে বেশি লাভজনক।

৯।প্রথমে প্রমোশন করুন  :

যখন একটি কোম্পানি একটি পণ্যের ডিজাইন করে তখন প্রথম শর্ত হল তাদেরকে আগে শিউর হতে হবে যে মার্কেটে ওই প্রোডাক্ট এর ডিমান্ড আছে কিনা, যদি না থাকে তবে ওই পণ্যটি তৈরি এবং বাজারজাতকরন সবই হবে সময় এবং অর্থের বিশাল ক্ষতি।বিশ্বাস করুন বা নাই করুন কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রেও ব্যাপার তা একইরকম।

সুতরাং ফলপ্রসু কন্টেন্ট মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট এর আগে চিন্তা করতে হবে কিভাবে আপনি সেটার মার্কেটিং করবেন।মার্কেটে এসে যদি নিজের একটি  অবস্থান তৈরি করতে না পারেন তাইলে আপনার পরিশ্রমের কোন মূল্য নাই।

১০।নিজেকে কমিউনিটির মধ্যে প্রতিস্থাপন করুন  :

বর্তমানে অনলাইনে শতাধিক বড় বর কমিউনিটি, ফোরাম ইত্যাদি রয়েছে যেগুলাতে নির্দিষ্ট টপিকের উপর প্রতিনিয়ত আলোচনা করা হয়।এগুলার মধ্যে রেডিট সবচেয়ে ভাল।এরকম কিছু কমিউনিটি খুঁজে বেড় করুন যা আপনার বিজনেস রিলেটেড এবং সেগুলাতে নিয়মিত হোন।

যখন এসকল ফোরাম বা কমিউনিটিতে অংশগ্রহণ করছেন তখন মানুষকে বেশি তথ্য পাবার উৎস হিসাবে আপনার ব্লগ রেফার করুন।পরবর্তিতে যখন এই ফিল্ডে আপনার একটা অথোরিটি তৈরি হবে তখন নিজেও আরও বেশি নিতুন নতুন বিষয় জানতে পারবেন এবং ক্রেতাদের চাহিদা সম্পর্কে আপনার ধারনা আগের থেকে উচ্চ পর্যায়ে বৃদ্ধি পাবে।

১১।স্লাইড শেয়ারে বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন কন্টেন্ট পোস্ট করুন  :

স্লাইড শেয়ার একটি জনপ্রিয় ভিজুয়াল কন্টেন্ট শেয়ারিং সাইট।অনেকেই এটা সম্পর্কে জানে।পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, পিডিএফ, কি-নোট, ওপেন ডকুমেন্ট প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি শেয়ারিং জন্য একটি উৎকৃষ্ট প্লাটফর্ম।এটাকে আপনি স্লাইডের ইউটিউব বলতে পারেন।

স্লাইডশেয়ারে একবার কন্টেন্ট পোস্ট করলে আপনার মার্কেটিং এর কোন সীমা নাই।এখান থেকে ইউজার রা আপনার কন্টেন্ট শেয়ার, রি-শেয়ার, এবং অন্যান্য প্লাটফর্ম এ লিঙ্ক শেয়ার করতে পারে ইচ্ছামত।  যেমন লিঙ্কডিন, ফেইসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস যা থেকে ট্রাফিক আসবে প্রচুর।

১২।পিন্টারেস্ট এর ব্যবহার করুন  :

সোশ্যাল মিডিয়া হিসাবে আমরা প্রায়ই পিন্টারেস্ট একটু উপেক্ষা করে যাই, কিন্তু এখানে আপনার জন্য এমন সুযোগ আগে যা আপনার বিজনেস কে আরও কয়েক ধাপ উপরে নিয়ে যেতে পারে।কারণ এখানে মিলিয়ন মিলিয়ন ইউজার আছে যারা বেশিরভাগ সময় অ্যাক্টিভ থাকে।

কিছু ভাল ভাল আর্টিকেল তৈরি করুন, তারপর সেগুলোতে ইনফগ্রাফিক কিংবা ভিজুয়াল অ্যাড করুন।এখন পিন্টারেস্টএ আপনার নিস রিলেটেড বোর্ড গুলোতে পিন করুন।পিন্টারেস্টএ শেয়ারিং রে-শেয়ারিং এ কোন সমস্যা নাই।তারমানে আপনি যা ইচ্ছা তৈরি করতে পারেন এবং শেয়ার করতে পারেন।এটা আপনার কোম্পানিক প্রসারণের জন্য একটা ভাল সুযোগ।তবে আপনার কন্টেন্ট যত আকর্ষণীয় হবে তত বেশি ট্রাফিক পাবেন।

পিন্টারেস্ট নিয়ে আমার তিন পর্বের একটি লেখা আছে নিচে লিঙ্ক গুলি দিয়ে দিলাম, আশা করি কাজে লাগবে,

১৩।কন্টেন্ট পুনপ্রচার করুন  :

বেশিরভাগ কোম্পানির ক্ষেত্রে কন্টেন্ট তৈরির জন্য বড় কোন টিম থাকা নাগালের বাইরে, সেজন্য ভাল ভাল কন্টেন্ট গুলিকে বুদ্ধি খাটিয়ে পুনপ্রচার করতে শিখা উচিত।এর জন্য যা করা যেতে পারে তা হল, মাঝে মাঝে  ভাল একটা পোস্ট কে ইনফোগ্রাফিক বানিয়ে বা বাছাইকৃত পোস্ট গুলিকে নিয়ে একটি ছোট পোস্টের মাধ্যমে ওই গুলাতে ভিজিটর পাঠানো যায়।

এতে করে সবসময় ভাল কন্টেন্ট তৈরির করার চিন্তা ও পরিশ্রম থেকে একটু নিস্তার পাওয়া যায়।

১৪।সবসময় চিরসবুজ(এভারগ্রিন) কন্টেন্ট এর দিকে লক্ষ্য রাখুন  :

যারা কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে জানেন, তারা অবশ্যই এভারগ্রিন কন্টেন্ট বা চিরসবুজ কন্টেন্ট কথাতা শুনেছেন।এভার গ্রিন কন্টেন্ট বলতে আমন টাইপের কন্টেন্ট বুঝাই যেটা মূলত সময়ের পরিমাপ করে না।আপনি আজকে যে কন্টেন্ট টি শেয়ার করেছেন সেটি আরও পাঁচ বছর পরেও কোন সংশোধন ছাড়াই শেয়ার করতে পারেন।আর সাময়িক পোস্ট গুলার চাইতে এভারগ্রিন কন্টেন্ট গুলি বেশি শেয়ার হয়।

১৫।সোশ্যাল মিডিয়া অপটিমাইজ করুন  :

সোশ্যাল মিডিয়ার একটি জরিপ বলে যে, বর্তমানে ভোক্তাদের মোট সময়ের ২৩% ব্যয় করে অনলাইনে।যদি আপনার কন্টেন্ট কে সেইভাবে সোশ্যাল মিডিয়া অপটিমাইজ করে ফেসবুক টুইটার এ পোস্ট করেন সেক্ষেত্রে আপনার একটি নতুন সুযোগ তৈরি হবে ইন্টার্নেট এ বেশি ছড়িয়ে দেবার।ভাল একটি তথ্যবহুল ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করুন অথবা কার্যকরী একটি ইনফোগ্রাফিক তৈরি করে টুইটার এ পোস্ট করুন।সোশাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কন্টেন্ট নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নাই যে আপনি কি করলেন না করলেন।

১৬।আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স সম্পর্কে জানুন  :

কন্টেন্ট মার্কেটিং এমন একটি জগৎ যেখানে আপনাকে সবকিছু নিজের মোট করে চিন্তা করতে হবে।যদি আপনি আপনার অডিয়েন্স সম্পর্কে না জানেন, তবে তাদের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করতে যেমন অসুবিধা হবে তেমনি আপনার বিজনেস অথবা পণ্যের জন্য টার্গেটেড অডিয়েন্স খুঁজে পাওয়াও প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।এর জন্য গুগল আনালিটিক অথবা এরকম কোন টুলস এর সাহায়ে আপনাকে কিছু সময় দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে কারা আসলে আপনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

ওই লোকগুলি কি করে, কোথায় থাকে, বয়স কেমন, তারা কি কিনতে পছন্দ করে ইত্যাদি একটু যাচাই করে দেখা প্রয়োজন।তাহলে আপনি প্রতিটি সেক্টর এর অডিয়েন্স এর জন্য আলাদা আলাদা টাইপের কন্টেন্ট দিতে পারবেন।আপনি অবশ্যই আঠার বছরের একজন স্টুডেন্ট আর ৫৫ বছরের টিচার এর সাথে একই ভাবে কথা বলবেন না।  One-size-fits-all টাইপের কন্টেন্ট বিজনেসের জন্য খুবই কম কার্যকরী।

১৭।ব্লগের URL অপ্টিমাইজ করুন  :

এটা খুবই সহজ একটা স্টেপ, তবে এটা ব্যাবহারকারীদের সুবিধাজনক আর আপনার জন্য জাদুর কাঠি।ব্লগের কোন পোস্ট পাবলিশ করার আগে এর URL টি অপ্টিমাইজ করে আপনার কিওয়ার্ড রিলেটেড একটি URL দিন।তবে যেরকমই দিন না কেন, অবশ্যই অবশ্যই আপনার মুল কিওয়ার্ড টি যেন থাকে।এর সুফল আপনি র‍্যাঙ্কিং হলে পাবেন।এই পদ্ধতিটি আপনার পোস্টের URL কে সহজ এবং শেয়ারিং এর জন্য বেশি আকর্ষণীয় হিসাবে উপস্থাপন করে।  আর সার্চে অনেক মানুষ আছে যারা URL দেখে ক্লিক করে।

১৮।টেক্সট এবং ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট দুইটাকে 50/50 প্রাধান্য দিন  :

কন্টেন্ট মার্কেটিং রিসার্চ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে ইমেজযুক্ত টেক্সট কন্টেন্ট, আলাদা টেক্সট কন্টেন্ট অথবা আলাদা ইমেজ কন্টেন্ট এর চাইতে কয়েকগুণ বেশি কার্যকরী।একারণেই ইনফোগ্রাফিক এত দুর্দান্তভাবে কাজ করে।ইমেজ সমৃদ্ধ কন্টেন্ট তৈরি করতে থাকলে এক দিক দিয়ে আপনি ধারাবাহিকভাবে ভাল কন্টেন্ট দিতে পারবেন আগের চেয়ে, পাশাপাশি গ্রাহকদের মানসম্পন্ন কন্টেন্ট দিতে পারছেন।

১৯।নিয়মিত পড়াশুনা করুন  :

প্রতিদিন একটু সময় দিন ব্যাবসায়িক পড়াশুনার জন্য, নিয়মিত পড়াশুনা করলে আপনি মানুষের চাহিদা সম্পর্কে বুঝতে পারবেন ভাল।বিভিন্ন প্রশ্ন যেগুলির উত্তর দেওয়া হয় নি সেগুলা নিয়ে ঘাটাঘাটি করুন, পারলে আপনি উত্তর দিন তাহলে মার্কেটে যে শূন্যস্থান আছে সেটি পূরণ হয়ে যাবে সাথে আপনার ও একটি অথোরিটি বাড়বে সবার মধ্যে।

কন্টেন্ট এর এই যুগে বেশিরভাগ কন্টেন্ট ভোক্তাদের সম্পূর্ণরূপে চাহিদার যোগান দিতে পারে না।খুঁজে খুঁজে গ্যাপ গুলা বের করুন আর সেগুলার সদ্ব্যবহার করুন আর সেজন্য চাই মার্কেটে নিয়মিত ঘাটাঘাটি করা।

২০।আদর্শ হবার চেষ্টা করুন  :

আসলে প্রায় সব কোম্পানি কন্টেন্ট মার্কেটিং করে প্রায় একরকম এর মধ্যে তফাৎ খুব কম।অনেকসময় আবার বড় বড় সফল কোম্পানির বিভিন্ন উপায় অনুকরণ করে অনেকেই মার্কেটিং করে।কিন্তু একটা ব্যাপার চিন্তা করে দেখুন অন্য কেউ যে তত্বে সফল হয়েছে আপনিও যদি সেইম কাজ করেন তাইলে আপনিও তো তার সমপর্যায়ে যেতে পারবেন কিন্তু মার্কেটে ব্যাবসা করতে গেলে তো আপনাকে তাদের টপকে যেতে হবে তাইলেই না আপনার ব্যাবসা সফল বলে গণ্য হবে।সুতরাং আবারও বলছি যে কিছু সময় দিন আর খুজেবের করুন যে কোন জিনিসটিতে আপনার কোম্পানি ইউনিক এবং স্পেশাল করে তুলতে পারবে অন্যদের ভিড়ে।দেখবেন মানুষ আপনার এইগুলাতে বেশি সাড়া দিবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যখন একটি পোস্ট উপরের সবগুলি পয়েন্ট মেইনটেইন করে চলছে তখন সেটি একটি আদর্শ কন্টেন্ট।আমি আপনাকে জোর করে এগুলির প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে পারব না যে আপনার কন্টেন্ট এর জন্য কতটা ইম্পরট্যান্ট।তবে প্রথমত, কাহিনী নির্ভর এবং ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট ব্যাবহারের চেষ্টা করুন, ভাবুন যে আপনি কার সাথে কথা বলছেন ।তারপর আপনার কিওয়ার্ড, কিওয়ার্ড এর দিকেনজর না দিলে আপনার ব্লগের র‍্যাঙ্কিং সম্ভাবনা কে কখনো উচ্চ পর্যায়ে রাখতে পারবেন না।সুতরাং প্রথমে অডিয়েন্স তারপর আপনার বিজনেস  এই দুই দিক বজায় রাখলে আপনার কন্টেন্ট এর মান সবসময় ই একটা আলাদা গুরুত্ব বহন করবে।যা আপনার র‍্যাঙ্কিং এর দুশ্চিন্তা থেকে আপনা আপনিই মুক্তি দিবে।

মনে করি, আপনি ১ নাম্বার আর ২০ নাম্বার পড়লেন তারপর ভাল একটি টাইটেল দিয়ে অত্যন্ত ক্রিয়েটিভ একটি blog তৈরি করলেন।এরপর ১৭ নাম্বার মোতাবেক এস ই ও অপটিমাইজ করলেন।এটা হবে মুটামুটি অগ্রগামী একটি ধাপ।কিন্তু আপনার এস ই ও জ্ঞান কে সঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে হলে আপনাকে সব ধরনের পদক্ষেপ গুলিই  কন্টেন্ট মার্কেটিং এ অন্তর্ভুক্ত  করা উচিত।ফলাফল? নিজেই যাচাই করে দেখুন না!!! কথায় আছে দেখতে পারলে শুনে কে?

পরিশেষে এটাই বলতে চাই, নিজেকে আবিষ্কার করুন, আপনার নিজস্ব স্টাইলে কন্টেন্ট মার্কেটিং এর উপর সংগতি ও  ভারসাম্য আনুন, এস ই ও  প্রয়োগ  করুন, এনগেজমেন্ট বাড়ান।

 

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ