ইন্টারনেটে আপনার তথ্য আদান প্রদানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ? ইন্টারনেটে blocked website গুলোতে ঢুকে কাজ করতে পারছেন না? তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্যেই, কেননা এই আর্টিকেলের মাধ্যমেই আমি আপনাকে জানাবো ভিপিএন কি (what Is VPN)? ভিপিএন (VPN) কিভাবে কাজ করে? ভিপিএন এর ব্যবহার। আরো জানাবো- কিভাবে আপনি ভিপিএন (VPN) এর মাধ্যমে যেকোন blocked website এ ঢুকতে পারবেন এবং কিভাবে হ্যাকিং এর ভয় ছাড়াই নিরাপদে তথ্য আদানপ্রদান করতে পারবেন?
ইন্টারনেট স্পিড যখন কম থাকে কিংবা যখন ফ্রি ইন্টারনেট ব্যাবহারের প্রয়োজন পড়ে কেবল তখনি হয়তো আপনার ভিপিএন (VPN) এর কথা মনে পড়ে। আবার অনেকেই ভিপিএন (VPN) কে কেবলই ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যম হিসেবে জানেন। কিন্তু ভিপিএন (VPN) সম্পর্কে এরূপ ধারণা সঠিক নয়।
যেহেতু ইন্টারনেট হলো একটি পাবলিক নেটওয়ার্ক সেহেতু পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ এই নেটওয়ার্কের সাথে সম্পৃক্ত । কাজেই ভুলে গেলে চলবে না যে দশ জন ভালো মানুষের ভিড়ে দু’এক জন খারাপ মানুষের উপস্থিতি অসম্ভব কোন কিছু নয় ।
সুতরাং ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে আপনার personal data বা privacy details চুরি বা হ্যাক হয়ে যাওয়ার একটা ভয় কিন্তু থেকেই যায় । এ ক্ষেত্রে আপনার তথ্য হ্যাক বা ফাঁস রোধ করতে প্রয়োজন ভিপিএন (VPN)।
ভিপিএন এর ব্যবহার হয় কেন?
ভিপিএন (VPN) সম্পর্কে যারা জানে তারা মূলত কিছু blocked website এ ঢোকার জন্য ভিপিএন এর ব্যবহার করে থাকে। আপনি যদি ভিপিন (VPN) এর সঠিক ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এর মাধ্যমে যেমন নিজের online privacy এবং data সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন, তেমনি নিজের অবস্থান বা lucation লুকিয়ে রাখতে পারবেন online hacker দের থেকে। ভিপিএন এর ব্যবহার সঠিকভাবে করার জন্য সবার আগে জানা প্রয়োজন VPN কি ?
ভিপিএন কি (what Is VPN)?
VPN শব্দটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। এর পূর্ণ রূপ হল- Virtual Private Network (ভর্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক)। সহজ কথায় বলতে গেলে ভিপিএন ইন্টারনেটে আপনার এবং অন্য একটি নেটওয়ার্কের মাঝে সিকিউর কানেকশন তৈরি করে দেয়।
অর্থাৎ, আপনার কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা ট্যাব সহ যে সব ডিভাইস গুলো ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সেগুলিতে encrypted connection বা একটি সুরক্ষিত কানেক্শন তৈরি করে, যা যেকোন public network, private network ও open wifi hotspot connection এ আরো অধিক security যোগ করে ।
ফলে আপনার device ও network অনলাইন হ্যাকার (hacker) এবং ডাটা চোর (data sealers) এর নাগালের বাইরে থাকে। সুধু তাই ই নয়, আপনি যদি এমন কোন ওয়েবসাইটে ঢুকতে চান যেটাতে আপনার অঞ্চল ভিত্তিক প্রবেশাধিকার নেই, বা সেই অঞ্চল থেকে ওই ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করা সম্ভব নয় তখন আপনি ভিপিএন এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল লুকেশন ব্যবহার কোরে ব্রাউজ করতে পারবেন খুব সহজেই ।
কত ধরনের হয়ে থাকে ভিপিএন ( VPN )?
প্রোটকল এবং ব্যবহারের দিক থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিপিএন ( VPN ) রয়েছে। প্রতিটি ভিপিএনই ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে সিকিউরিটি এবং নানান ধরনের সুযোগ প্রদান করে থাকে। কাজেই সব ধরনের ভিপিএন সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনার ঠিক কোনটা প্রয়োজন সেটা খুঁজে পেতে অসুবিধা হবে না।
PPTP, Site to Site, L2TP, IPsec, SSL, MPLS, Remote Access, Hybrid, এই সবই হল একেকটি ভিপিএন ( VPN ), এগুলোর যেকোন একটি ব্যাবহার করেই আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার যেকোন ডিভাইস সুরক্ষিত ভাবে নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ করতে পারবেন ।
আবার কিছু ফ্রি ভিপিএন সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে সহজেই ডাউনলোড করতে পারবেন। যেমন, ProXPN , Securitykiss , Shield , Cybershost , GPass , ItsHidden , SpotFlux , NorNord VPN ইত্যাদি ।
ডিজিটাল নিরাপত্তায় ভিপিএন ( VPN ) এর ব্যবহার:
আপনি যদি কোন পাবলিক প্লেসে ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট ব্যবহার করেন তাহলে কিন্তু সেইম নেটওয়ার্ক এ থেকে আপনার ব্রাউজিং ডাটা ট্রেস করা খুবই সহজ। এক্ষেত্রে আপনাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রদান করবে ভিপিএন (VPN)।
যেহেতু আপনি ব্রাউজিং এর জন্য ভিপিএন ব্যবহার করছেন তাই আপনার ডাটা সম্পূর্ণ রূপে এনঙ্ক্রিপ্ত থাকবে। ফলে আপনার যেকোন সেন্সেটিভ ইনফরমেশন আদান প্রদানের সময় আপনি থাকবেন সুরক্ষিত। আইপি এড্রেস হাইড করে নিজেকে হ্যাকার প্রুফ রাখার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী উপায় হল ভিপিএন ব্যবহার করা।
কেননা কোন প্রকার ব্যান্ডউইথ ছাড়াই ভিপিএন আপনাকে সমস্ত P2P ব্যবহারের অনুমতি দেয়ায় আপনি খুব সহজেই একজন অ্যানোনমাস ইউজার হিসেবে ব্রাউজিং করতে পারবেন যার ফলে কেউই আপনাকে আইডেনটিফাই করতে পারবে না।
ভিপিএন এর ব্যবহার করার ক্ষেত্র কিছু সতর্কতা
অনলাইনে নিজের প্রাইভেসি রক্ষার সাথে সাথে সেন্সেটিভ ইনফরমেশন গুলো সুরক্ষিত রাখতে এখন অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ভিপিএন এর ব্যবহার করছেন। কিন্তু সে ইনফরমেশন গুলো সুরক্ষিত রাখার পরিবর্তে পাচার করে দিচ্ছে এমন ভিপিএন সফটওয়্যার এর সংখ্যাও কিন্তু কম না ।
বিশেষ করে অনলাইন থেকে বিনা মুল্যে যে ভিপিএন অ্যাপ গুলো ডাউনলোড করা যায়, সেগুলো থেকেই বেশি ইনফরমেশন বা তথ্য পাচার হয়। সম্প্রতি এক জরীপে জানা গেছে, গুগল প্লে স্টোরের জনপ্রিয় ১৫০ টি ভিপিএন অ্যাপ এর ২৫ শতাংশের বিরুদ্ধে তথ্য বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ভিপিএন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ ব্যবহারকারীই ব্যক্তিগত সুরক্ষায় বেশ বড় রকমের সমস্যার সম্মুখিন হতে পারেন।
আমাদের শেষ কথা :-
আপনি হয়ত এতক্ষণে বুঝে গেছেন, ভিপিএন কি? এবং আপনার ডিজিটাল নিরাপত্তায় ভিপিএন কিভাবে কাজ করে? তবে, আপনি যদি আপনার অনলাইন জীবনে খুব বেশি সতর্ক থাকতে চান তাহলে অন্ধের মত কোন থার্ড পার্টি ভিপিএন (VPN) সার্ভিস এর উপর নির্ভর না কোরে নিজে নিজেই একটি ভিপিএন সার্ভার তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।
Comments (No)