এখন প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির বা আইটি বিভাগ রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানের অভাবে আজকাল অনেকেরই এসব প্রতিষ্ঠানের চাকরি থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছেন। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান চায় তথ্যপ্রযুক্তির দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ করতে। তাই বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তিতে একজন প্রশিক্ষিত ও দক্ষ লোকের চাহিদা আছে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই। আর যাঁরা তথ্যপ্রযুক্তির ওপর বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণ নেন, তাঁদের জন্য চাকরি পাওয়াটা অনেকটাই সহজ হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
যাঁরা তথ্যপ্রযুক্তিতে নিজের পেশা গড়তে চান, তাঁদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিয়েছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশনাল ওয়াকফ (আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ)। প্রতিষ্ঠানটি তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানসূত্রে জানা গেছে, দেশের সুবিধাবঞ্চিত মুসলমান মেধাবী যুবসমাজের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২০০৩ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি তথ্যপ্রযুক্তির নানা বিষয়ে বিনা ফিতে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর বিভিন্ন মেয়াদি প্রফেশনাল ডিপ্লোমা প্রদান করে আসছে। ইতিমধ্যে যাঁরা এসব কোর্স সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি পেশায় কাজ করছেন। প্রতিবছর চারটি সেশনে এখানে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি করানো হয়। Online Income Site
প্রতিটা ব্যাচে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এর মধ্যে আর্কিটেকচারাল অ্যান্ড সিভিল ক্যাড, ডেটাবেইস ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, এন্টারপ্রাইজ সিস্টেমস অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ডিজাইন, গ্রাফিকস, অ্যানিমেশন ও ভিডিও এডিটিং, নেটওয়ার্কিং টেকনোলজিস এবং ওয়েব-প্রেজেন্স সলিউশনস অ্যান্ড ইমপ্লিমেনটেশনস এসব বিষয়ে। কোর্সভেদে ১১ থেকে ১৩ মাস মেয়াদি এসব প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হলে আবেদনকারীকে স্নাতক/ফাজিল/মাস্টার্স/কামিল/ডিপ্লোমা (সিভিল/আর্কিটেকচার/কনস্ট্রাকশন/সার্ভে) পাস হতে হবে। তবে এক বছরমেয়াদি মাস্টার্সে অধ্যয়নরত এবং দুই বছরমেয়াদি মাস্টার্স/কামিলে যাঁরা শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন, তাঁরাও আবেদনের সুযোগ পাবেন।
আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে apply.idb-bisew.info এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের যেকোনো শাখা থেকে আবেদনপত্র পাওয়া যাবে। এই আবেদনপত্র যথাযথভাবে পূরণ করে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ডাকযোগে পাঠাতে হবে। এখানে প্রতি ব্যাচে ৩০০ জন করে বছরে ১ হাজার ২০০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারেন। আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউরপ্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ রায়হান বাশার বলেন, আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে।
এমসিকিউ পদ্ধতিতে ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হবে। এই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। সপ্তাহে ছয় দিন চার ঘণ্টা করে এসব প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে মনোনীত প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোতে। এসব প্রশিক্ষণগুলো দেবেন দেশের বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। এখানে প্রফেশনাল কোর্সটির আগে দুই মাসের ফান্ডামেন্টাল কোর্স করতে হবে। এতে ভালো করতে পারলে পরে মূল প্রফেশনাল কোর্সগুলোতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানান রায়হান বাশার।
এখান থেকে নেটওয়ার্কিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন শাহেদ হাছিব ভূঁইয়া। তিনি বর্তমানে একটি আইটি ফার্মের চিফ টেকনোলজি অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আইটিতে অভিজ্ঞ লোকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। যাঁরা তথ্যপ্রযুক্তিতে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাঁদের জন্য এই প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও এই প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণার্থীরা অনেকাংশে এগিয়ে থাকেন।’
এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা কোম্পানি, বায়িং হাউস, আইটি ফার্ম, এনজিও ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অনেক সুযোগ পাওয়া যাবে। সবচেয়ে সুযোগ আছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোতে। এতে ভালো বেতনের পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও পাওয়া যাবে। এ ছাড়া নিজে ব্যবসা করেও ভালো আয় করা সম্ভব।
Comments (No)