ফেসবুক থেকে ব্যারিস্টার সুমনের আয় কত? 1

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ফেসবুক লাইভ করে খুব কম সময়ের মধ্যেই সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তার ভিডিও গুলোতে সমাজের নানান অংসঙ্গতি তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ফেসবুক থেকে আয় করছেন এই ভিডিও গুলো থেকে। কত আয় করছেন সেই প্রশ্ন করেছিলেন রাইজিংবিডির সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদক মেহেদী হাসান ডালিম । তার নেয়া সাক্ষাতকারটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো।

রাইজিংবিডি: ফেসবুক লাইভে আসার চিন্তাটা প্রথমে কীভাবে আসে ?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:ফেসবুক লাইভ ওই সময় নতুন কনসেপ্ট। আমার বন্ধু ছিল তখন দুই হাজারের মত। হঠাৎ করে একজন বলল ভাই, এখন লাইভ করা যায়। লাইভে আসলে নাকি আমার ভাল কাজগুলো সব বন্ধুরা দেখতে পাবেন। তখন আমার মনে হল আমার ভাল কাজগুলো তো বন্ধুদের দেখাতে পারি। চিন্তা করলাম, আমার লাইভ যদি এক হাজার লোকও দেখে আর এর মধ্যে ১০টা লোক যদি অনুপ্রাণিত হয় তাতেই আমি খুশি। এটাই ছিল আমার ইচ্ছা। আমি একা ব্যারিস্টার না আর ফ্রেন্ড লিস্টে আরো অনেক ব্যারিস্টার আছে। অনেক ধনী লোকের ছেলে আছে। আমি চাইছিলাম তারা কিছু শুনুক। আর এটা শোনাতে গিয়ে আমার হয়ে গেছে ২২ লাখ ফেসবুক ফলোয়ার।

রাইজিংবিডি: ফেসবুকে ২২ লাখ মানুষ আপনাকে অনুসরণ করে- এতে আপনার অনুভূতি ক, বলুন?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:অনুভুতিটা খুব টাফ। কারণ, ২২ লাখ ফলোয়ার কাঁধে নিয়ে হাটা। কারণ, আপনি বুঝতে পারবেন একটা মহাসমাবেশে আপনি সর্বোচ্চ ৫০ হাজার লোক পাবেন। তাও ম্যানেজ করতে কত কষ্ট। আমি লাইভে গেলেই ২২ লাখ মানুষের কাছে গিয়ে ক্লিক করে। এটা আমার ওপর পেশার গ্রুপের মত কাজ করে।

রাইজিংবিডি: প্রথম ফেসবুক লাইভে কোন বিষয়টা নিয়ে আসলেন, সেই গল্পটা বলুন …।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:প্রথম একটা ব্রিজ নিয়ে লাইভে এসেছিলাম। আমার এলাকায় বাচ্চারা স্কুলে যায় পানির উপর দিয়ে। আমি বলছিলাম পানির উপর দিয়ে যাবে কেন। পাকা ব্রিজ না পারি আমরা তো কাঠের ব্রিজ করে দিতে পারি। সিস্টেম আছে একটা বাঁশের উপর দিয়ে হাটার। তাতে অনেক মানুষ পড়ে যায়, বাচ্চারা যেতে পারে না। ওইখানে কাঠের ব্রিজ করতে গিয়ে আমি প্রথমে লাইভে যাই।

রাইজিংবিডি: প্রথম লাইভে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন ?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:নেগেটিভ সাড়া পেয়েছিলাম বেশি। লোকজন বলছিল, দেখ ব্যারিস্টার এখন নাটক করে। ব্যারিস্টার এখন নেতা হতে চায়, এসব কারণে এগুলো করে দেখাচ্ছে। প্রথমে আমাকে মেনে নিতে, বিশ্বাস করতে অনেকেরই কষ্ট হয়েছে। কিন্তু কে বিশ্বাস করলো না করলো তা কেয়ার করি না। আমি মনে করি আমার কাজটুকু আর আমার জবাবদিহিতা আমাকেই করতে হবে। অন্য কারো মুখাপেক্ষী নই। মুখাপেক্ষী স্বয়ং রাব্বুল আলামীনের।

রাইজিংবিডি: প্রথম কোন লাইভটা ভাইরাল হয়েছিল?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:আমি একটা স্কুলে বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে একটা বক্তব্য দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, এই স্কুলের যে ছেলেটা বা যে মেয়েটা প্রথম ব্যারিস্টার হবে তাকে আমি ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটা গাড়ি কিনে দেব। তাদেরকে মোটিভেশন করতে গিয়ে মনে হয়েছিল তারা আমার ছেলে, আমার মেয়ে। এই যে আমার এক্সপ্রেশন ছিল, সম্ভবত ওই এক্সপ্রেশনই ভাইরাল হওয়ার কারণ। ওই ভিডিওটা প্রথম ভাইরাল হয়।

রাইজিংবিডি: ওই সমেয়র অনুভুতি বলেন?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:যে কোন একটি স্টেজ থেকে পরবর্তী স্টেজে যাওয়ার আনন্দ তো আছেই।

রাইজিংবিডি: আপনার দৃষ্টিতে ফেসবুক লাইভে অর্জন কি?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:এখন আমার ২২ লাখ ফলোয়ার। আমি যদি কোন যৌক্তিক সমস্যা লাইভে নিয়ে আসি তা অনেক মানুষ। ফলে সরকারের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট কাজগুলো দ্রুত করার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। যখন আমি লাইভ করি তখন এটা প্রেশার হিসেবে কাজ করে। আমি যা নিয়েই লাইভ করি না কেন, ওইসব ডিপার্টমেন্টের ওপর প্রেশার পরে। এটা আমার একটা বড় অর্জন।

রাইজিংবিডি: ফেসবুক লাইভ নিয়ে মজার বা বিব্রতকর ঘটনা বলুন ?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন: রমনা পার্কে একবার লাইভ চলাকালে একজন আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ভাই আমি আপনার খুব ভক্ত। আমি একটা ছবি তুলতে চাই আপনার সাথে। তখন আমি তাকে সরিয়ে দিয়েছি। আরেকবার লাইভ করছি এসময় আমার এক ব্যারিস্টার কলিগ বলছেন, আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই। অনেক সময় এসব কারণে অপ্রস্তুত হই।

রাইজিংবিডি: আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে ইফেকটিভ লাইভ কোনটা?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন: ধরে নিতে পারেন সবচেয়ে ইফেকটিভ লাইভ ছিল বাবুর বাজার ব্রিজ। এটা অনেক বড় একটা ব্রিজ। ব্রিজের উপর কোন লাইট ছিল না। আমার লাইভের পরে দুই তিন দিনের মধ্যে পুরো এক কিলোমিটারে লাইট জ্বলে গেছে। এখনও গিয়ে দেখবেন। এটা ছিল সবচেয়ে ইফেকটিভ।

রাইজিংবিডি: আপনার সামাজিক কাজগুলো সম্পর্কে জানতে চাই …

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন: আজকে পর্যন্ত আমার এলাকায় ২৫টি কাঠের ব্রিজ বানিয়েছি। ৪২টা রোড আমি সংষ্কার করেছি। একটা রোড আমি নিজে বানাচ্ছি। তারপর আমার এলাকায় বলা আছে, এলাকার যে কেউ অভাবে পড়লে পড়াশোনার ব্যাপারে আমি পাশে দাঁড়াবো। যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন এটা করবো।

রাইজিংবিডি: এই যে আপনি সামাজিক কাজগুলো করেন, এর জন্য অর্থ কোথা থেকে পান?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন: আপনি জানেন, আমি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। আবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর। আমি ট্রাইব্যুনাল থেকে ৯০ হাজার টাকা বেতন পাই। পারিবারিক যে আয় সেখান থেকে অল্প টাকা পাই। আর আইনজীবী হিসেবে অনেকে আমার কাছে মামলা নিয়ে আসেন, আমি অনেক সময় নিজে করতে না পারলেও আমার চেম্বারমেটরা করেন। সেখানে আমি একটা অংশ পাই।

রাইজিংবিডি: আপনি ফেসবুক সেলিব্রেটি।আমরা জানি বর্তমানে অনলাইন হচ্ছে আয়ের বড় উস, ফেসবুক থেকে আপনার আয় কত, যদি বলতেন?

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন:আগে থেকে আমাকে অনেকেই বলেছেন আপনি ইন্টারনেট থেকে কেন আয়ের ব্যবস্থা করেন না। আমার ইউটিউবে কোন চ্যানেল নেই। শুধু ফেসবুকে যে একাউন্ট দেখছেন এটাই আছে। কিছু দিন আগে আমি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি, আমার লাইভের কারণে যদি টাকা দেওয়া হয় তাহলে দেবেন। গত দুই মাসে ফেসবুক থেকে আমি ৬০ হাজার টাকা পেয়েছি। এখান থেকে ইনকাম শুরু হয়েছে বলতে পারেন।

রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সব মিলিয়ে যা ইনকাম হয়, শুক্র ও শনিবার আমার এলাকায় গিয়ে ব্যয় করি। এভাবে আমার প্রায় ৫ বছর ধরে চলছে।

ইউটিউব থেকে আয়

ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে আয়

ছবি বিক্রি করে অনলাইনে আয় করার উপায়

By Muhammad Rakibul Islam

Founder and CEO of EshoAyKori.com Founder and CEO of Jibonpata.com https://www.jibonpata.com/rakib

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ