গুগল অ্যাডসেন্স কি?
অ্যাডসেন্স হল বিশ্ব বিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগল এর একটি অ্যাডভারটাইজিং এজেন্সি। বিভিন্ন পণ্য ও সেবা সমূহের প্রচার এবং বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান গুগল অ্যাডসেন্স এর নিকট চুক্তিবদ্ধ হয়। গুগল অ্যাডসেন্স ঐ সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচার করে। এই বিজ্ঞাপন প্রচার বাবদ গুগল অ্যাডসেন্স কর্তৃপক্ষ তার প্রাপ্য অর্থের একটি অংশ ওয়েবসাইটের মালিক গণকে প্রদান করে। বিজ্ঞাপন দাতা ও বিজ্ঞাপন প্রচারকারী উভয়ের জন্য গুগল অ্যাডসেন্স একটি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। নিম্নে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাওয়ার এ টু জেড টিউটোরিয়াল
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়া তেমন কোন কষ্টের কিছুই না, আবার কোন যাদু বা মন্ত্ররের কাজ তাও কিন্তু না। তবে এর জন্য আপনাকে কিছু সঠিক পদ্ধতি মেনে ধাপে ধাপে আগাতে হবে। সেক্ষেত্রে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি থাকে। আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যখন গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট করেন, তখন গুগল আপনার অ্যাপলিকেশনটি চেক করে দেখবে যে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স এর Terms and Conditions ফলো করেছেন কিনা।
যদি গুগল অ্যাডসেন্স এর সকল Terms and Conditions ফলো করে থাকেন, তাহলে আপনার অ্যাপলিকেশনটি এপ্রুভ করে দিবে এবং একটি কনফরমেশন ইমেইল পাঠাবে। আর যদি গুগল অ্যাডসেন্স এর Terms and Conditions ফলো না অ্যাপলিকেশন করে থাকেন, তাহলে আপনার অ্যাপলিকেশনটি এপ্রুভ করবে না এবং আপনার Page type error বা insufficient content এর কারণে অ্যাডসেন্স এ অংশ নিতে পারছেন না এই জাতীয় একটি ইমেইল পাঠাবে। নিচে দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সকল বিষয় আপনাদের জন্য ধাপে ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
টপ লেভেল ডোমেইন :
অনেকেই মনে করেন ফ্রি ডোমেইন দিয়ে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাওয়া সম্ভব। কিন্তু দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি কাস্টম বা টপ লেভেল ডোমেইন ব্যবহার করতে হবে। অ্যাডসেন্স খুব কমই ফ্রি বা সাব ডোমেইনের ওয়েবসাইটের অ্যাপলিকেশন গ্রহণ করে। কারণ এধরনের সাইটের ভিজিটর বিশস্ত হয় না। আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট যদি কাস্টম ডোমেইন বা টপ লেভেল ডোমেইনের হয়ে থাকে তাহলে এর মাধ্যমে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। .com, .org, .net, .info ইত্যাদি এক্সটেনশন যুক্ত ডোমেইন গুলো হলো টপ লেভেল ডোমেইন।
পর্যাপ্ত কন্টেন্ট :
অধিকাংশ ক্ষেত্রে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন না পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কন্টেন্ট না থাকা। তাই গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটি কন্টেন্ট দ্বারা সমৃদ্ধ করুন। আপনার ওয়েবসাইটে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ টি কন্টেন্ট/আর্টিকেল থাকতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট এর পরিমাণ যত বেশি হবে গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনাও ততো বেড়ে যাবে। প্রতিটি আর্টিকেল কমপক্ষে ৫০০ ওয়ার্ডে রাখার চেষ্টা করুন। দুই একটা আর্টিকেল ৫০০ ওয়ার্ড এর কম হলেও খুব একটা অসুবিধা নেই। তবে প্রতিটি আর্টিকেলে ওয়ার্ডের সংখ্যা যত বেশি হবে ততোই ভাল।
উইনিক কন্টেন্ট :
আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে সব সময় উইনিক এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন কনটেন্ট যুক্ত করুন। কোন প্রকার কপি পেস্ট করা থেকে সর্বদা বিরত থাকুন। একটি নতুন আর্টিকেল তৈরির করা সময় অবশ্যই গুগল অ্যাডসেন্স এর Terms and Conditions এর বিষয় গুলো মেনে চলুন। আপনি যদি কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটে উইনিক কন্টেন্ট থাকতে হবে। পাশাপাশি আর্টিকেলের মান অবশ্যই ভাল হতে হবে এবং যেখানে ছবির প্রয়োজন সেখানে ছবি ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি ছবি ব্যবহার করার সময় অবশ্যই কপিরাইট মুক্ত ছবি ব্যবহার করুন।
গুরুত্বপূর্ণ পেজ :
গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য এই অংশটুকু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই About Us, Contact Us, Privacy Policy, Terms of Use, Disclaimer Policy ইত্যাদি পেজ তৈরি করতে হবে। কারণ আপনার ওয়েবসাইটে যদি এই পেজ গুলো না থাকে তাহলে আপনার পরিচয় কি, আপনার ওয়েবসাইট কেন তৈরী করা হয়েছে, ব্যবহারকারীরা কিভাবে আপনার ওয়েবসাইট থেকে উপকৃত হতে পারে ইত্যাদি বিষয় গুলো জানতে পারবে না। এজন্য আপনাকে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পেতে চাইলে অবশ্যই এই পেজ গুলো তৈরি করতে হবে।
সঠিক বিষয় :
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে স্বাস্থ্য, টেকনোলজি, লাইফস্টাইল, ব্যবসা, ইন্টারনেট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া, উদ্যোক্তা, আইন, ভ্রমন ইত্যাদি কন্টেন্ট যুক্ত ব্লগ বা ওয়েবসাইট গুলোতে খুব দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ হয়ে যায়। এজন্য অবশ্য আপনার ওয়েবসাইটে যেন গুগলের নিষিদ্ধ বিষয়ের উপর কোন প্রকার কন্টেন্ট না থাকে সেদিকও খেয়াল রাখতে হবে। কারণ গুগলের নিষিদ্ধ বিষয়ের উপর কোন কন্টেন্ট থাকলে আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ করবে না। এছাড়াও অ্যাডসেন্স অনুমোদন পাওয়ার একটি ভাল উপায় হচ্ছে নিদির্ষ্ট বিষয় নিয়ে ব্লগিং করা।
বিজ্ঞাপন :
আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করার পূর্বে ভাল করে দেখে নিন, আপনার ওয়েবসাইটে অন্য কোন ৩য় পক্ষের বিজ্ঞাপন আছে কিনা। গুগল এই বিষয়টিকে অনেক বেশি গুরুত্ব প্রদান করে। আপনার ওয়েবসাইটে যদি ইয়াহু, চিটিকা বা ইনফোলিংক অথবা অন্যকোন ৩য় পক্ষের বিজ্ঞাপন থাকে তবে তা সরিয়ে ফেলুন। এছাড়াও বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট লিংক যেমন- অ্যামাজন, ক্লিক ব্যাংক ইত্যাদির বিজ্ঞাপন বা লিংক অ্যাডসেন্স এপ্রুভ হওয়ার আগ পর্যন্ত সরিয়ে রাখুন। কেননা এই জাতীয় বিজ্ঞাপন এবং লিংক থাকলে গুগল আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ করবে না।
সুন্দর ডিজাইন :
গুগল সব সময়ই চাই ওযেবসাইটের ডিজাইন যেন সুন্দর হয় এবং ওয়েবসাইট ভিজিট/ব্রাউজ করার সময় ব্যবহারকারীরা যেন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এক্ষেত্রে ভাল নেভিগেশন সিস্টেম, পরিষ্কার পরিছন্ন ওয়েবসাইট গুগল অ্যাডসেন্স এর প্রথম আবেদনেই অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আপনি ব্লগে যে টেম্পলেটটি ব্যবহার করছেন তা ভালভাবে কাস্টোমাইজ করে নিন। এবং খেয়াল রাখবেন এতে যেন কোন প্রকার ডিজাইনিং এর ত্রুটি না থাকে। আপনি নিজে যদি ডিজাইন করতে না পারেন, তাহলে সুন্দর ডিজাইন দেখে একটি টেম্পলেট ডাউনলোড করে নিন অথবা কোন ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে সুন্দর ডিজাইন এর একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট করে নিন।
ভিজিটর :
ভিজিটর বা ট্রাফিক হল একটি ওয়েবসাইট এর প্রাণ সেই সাথে আয়ের প্রধান উৎস। যদি মানসম্মত কন্টেন্ট দ্বারা আপনার ওয়েবসাইট পরিপূর্ণ থাকে কিন্তু কোন ভিজিটর না থাকে তাহলে আপনার সেই কন্টেন্ট এর কোন মূল্য নেই। ভিজিটর ছাড়া শুধুমাত্র গুগল নয়, বিজ্ঞাপন দাতারাও সবাই অনাগ্রহ প্রকাশ করবে আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিতে। এজন্য যখন প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ জনের অধিক ভিজিটর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট ভিজিট করবে সেই সময়ে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
ল্যাংগুয়েজ বা ভাষা :
আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর ল্যাংগুয়েজ অবশ্যই ইংলিশ অথবা গুগল অ্যাডসেন্স সাপোর্টেড ল্যাংগুয়েজ হতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটের ল্যাংগুয়েজ যদি বাংলা হয় তাহলেও আপনার গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পেতে কোন সমেস্যা হবে না। কারণ বর্তমানে গুগল অ্যাডসেন্স বাংলা ল্যাংগুয়েজ সাপোর্ট করে। এছাড়াও আপনি গুগল অ্যাডসেন্স সাপোর্টেড ল্যাংগুয়েজ দ্বারা অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পাওয়ার পর অন্যকোন ভাষাও আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন।
বয়স :
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য ব্লগ বা ওয়েবসাইটের বয়স নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম মত প্রকাশ করেছেন। কেউ বলেন দুই থেকে তিন মাস, আবার কেউ কেউ বলেন তিন থেকে চার মাস, অনেকেই আবার বলেন পাঁচ থেকে ছয় মাস, এক বছর ইত্যাদি বয়স হলে তারপর গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য আবেদন করুন। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল আপনার ওয়েবসাইট এর বয়স কমপক্ষে ৬ মাস হলে তারপর অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য আবেদন করা ভাল। এর ফলে আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।
সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি :
যেহেতু গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়ার পূর্বশর্ত হল একটি ভাল এবং সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট। তাই ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় আপনার ওয়েবসাইটটি যাতে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি হয় সেদিকে অবশ্যই গুরুত্ব দিন। এক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস ব্যবহার করলে অনেক ভাল ফলাফল আশা করা যায়। কারণ ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস এর রয়েছে কোন প্রকার কোডিং ছাড়াই একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট করার উপায়। এছাড়াও সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি স্ট্রাকচার সহ আরো অনেক কিছুই। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন পাবেন যা দিয়ে খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটিকে সুন্দর ভাবে সাজাতে পারবেন।
অনপেজ অপটিমাইজেশন :
সার্চ ইঞ্জিন গুলো সব সময় অনপেজ অপটিমাইজেশনকে বেশি পছন্দ করে এবং গুরুত্ব দেয়। কারণ একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তখন সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব হয়, যখন ব্লগ বা ওয়েবসাইটটি সঠিক ভাবে অনপেজ অপটিমাইজেশন করা হয়। তাই গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য অ্যাপ্লিকেশন করার পূর্বে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটটিকে সঠিক ভাবে অনপেজ অপটিমাইজেশন করে নিন। এতে করে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন এবং গুগল অ্যাডসেন্স এর কাছে আপানার ব্লগ বা ওয়েবসাইটির গুরুত্ব বেড়ে যাবে।
শেয়ারিং এবং সাবক্রিপশন বাটন :
আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে শেয়ারিং বাটন যোগ করার মাধ্যমে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট গুলো সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবেন। ফলে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট সম্পর্কে সবাই জানতে পারবে। তাছাড়া আপানার আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর ভিজিটর এবং জনপ্রিয়তা উভয়ই বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে সাবক্রিপশন বাটন যোগ করার ফলে, আপনি যখন কোন কন্টেন্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করবেন, তখন আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রাইবাররা অটোমেটিক আপডেট পেয়ে যাবে। এছাড়াও শেয়ারিং এবং সাবক্রিপশন বাটন গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়ার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
গুগলের সার্ভিস :
আপনার ওয়েবসাইট এবং অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য গুগলের সম্ভব্য সকল সার্ভিস গুলো ব্যবহার করুন। এর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো গুগল প্লাস অ্যাকাউন্টটি কমপ্লিট করা। আপনি যে ইমেইল দিয়ে গুগল অ্যাডসেন্স এর আবেদন করবেন সেই ইমেইল দিয়েই আপনার গুগল প্লাস অ্যাকাউন্ট এর প্রোফাইল ১০০% কমপ্লিট করার চেষ্টা করুন। এতে করে গুগলের কাছে আপনার পরিচয় বিশ্বাসযোগ্য হবে। এছাড়াও আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এনালাইটিক্স, গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস, এক্সএমএল সাইটম্যাপ ইত্যাদি সার্ভিস গুলো যোগ করুন।
গুগল অ্যানালাইটিক্স :
গুগল অ্যানালাইটিক্স কোড আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এবং গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য বিশ্বস্ততার প্রতীক। গুগল অ্যানালাইটিক্স কোড আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যুক্ত করার ফলে আপনি নিয়মিত ভিজিটরদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এবং গুগল মনে করে, আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট প্রতি অনেক বেশি যত্নবান।
গুগল ওয়েবমাষ্টার টুলস :
আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটিকে গুগল ওয়েবমাষ্টার টুলসে ভেরিফাই করে নিন। গুগল ওয়েবমাষ্টার টুলস এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর বিভিন্ন ত্রুটি সম্পর্কে জানতে পারবেন। পাশাপাশি নিয়মিত এগুলো ঠিক করেও নিতে পারবেন। এছাড়াও বিং ওয়েবমাষ্টার টুলসে আপনার ওয়েবসাইটকে যুক্ত করার ফলে ওয়েবসাইটের প্রতি যত্ন ও দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায় এবং সার্চ ফলাফলে আপনার সাইটটি পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। গুগল ওয়েবমাষ্টার ও বিং ভেরিফিকেশন গুগল অ্যানালাইটিক্স এর মতই।
এক্সএমএল সাইটম্যাপ :
এক্সএমএল সাইটম্যাপ তৈরী করা খুব বেশী সময়সাপেক্ষ বা কষ্টকর ব্যাপার নয়। অনলাইন থেকে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য এক্সএমএল সাইটম্যাপ ফাইল তৈরি করে আপনার ওয়েবসাইটে আপলোড করে গুগল ওয়েবমাষ্টার টুলস দিয়ে ভেরিফাই করে নিন। এছাড়া আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস ব্যবহার করে থাকেন তাহলে গুগল এক্সএমএল সাইটম্যাপ প্লাগিন ব্যবহার করতে পারেন। এক্সএমএল সাইটম্যাপ আপনার ওয়েবসাইট এর বিশ্বস্ততাকে বাড়িয়ে দিবে।
রোবট ডট টেক্সট ফাইল :
কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটে রোবট ডট টেক্সট ফাইল ব্যবহারের মাধ্যমে ওয়েবসাইট এর অপ্রয়োজনীয় পেজ বা পোষ্ট গুগল ইনডেক্স করা থেকে বিরত রাখা যায়। আপনি যদি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে রোবট টেক্সট ফাইল ব্যবহারের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় পেজ বা পোষ্ট ইনডেক্স করা থেকে গুগলকে বিরত রাখেন, তাহলে তা আপনার ওয়েবসাইটের এসইও এর মান অনেকাংশে বৃদ্ধি করবে।
পেজ ইনডেক্স :
এই অংশে যেয়ে আমারা অনেকেই ভুল করে থাকি। এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই প্রথম দিনেই ২৫ থেকে ৩০টা কন্টেন্ট বা আর্টিকেল দিয়ে পরের দিনেই গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য আবেদন করি। যা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা। আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য আবেদন করার পূর্বে পেজ গুলো ইনডেক্স করিয়ে নিন। এজন্য ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে প্রতিদিন একটা দুইটা করে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে সকল কন্টেন্ট পাবলিশ করুন। তারপর আরো ৫ থেকে ৭ দিন সময় দিন সকল পেজ গুলো ইনডেক্স হতে, এরপর গুগলে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য আবেদন করুন।
অ্যালেক্সা রাঙ্ক :
গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য অ্যালেক্সা রাঙ্ক নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। অনেকেই মনে করেন অ্যালেক্সা রাঙ্ক গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য কোন প্রকার গুরুত্ব বহন করে না। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি, যদি আপনি ম্যানুয়ালি কোন ওয়েবসাইট সম্পর্কে যাচাই করতে চান এক্ষেত্রে অ্যালেক্সা রাঙ্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করার পূর্বে যত দ্রুত সম্ভব আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর অ্যালেক্সা রাঙ্ক কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন।
নতুন Gmail অ্যাকাউন্ট :
আপনি যখন গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ করানোর জন্য আবেদন করবেন। তখন একটি নতুন Gmail অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন এবং সেটি অবশ্যই মোবাইল ভেরিফাইড করে নেওয়া উচিত। গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য সবসময় আলাদা ইমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা ভাল। এতে করে আপনার ইমেইল এর ইনবক্সে অনাকাঙ্ক্ষিত ইমেইল এর ঝামেলা ছাড়াই গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল সমূহ খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।
উপরোক্ত নিয়ম বা শর্ত গুলো মেনে অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করলে আশা করা যায় আপনি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পেয়ে যাবেন। একটা বিষয় মনে রাখবেন আমরা গুগলে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এর জন্য যে অ্যাপ্লিকেশন গুলো সাবমিট করি, সেই অ্যাপ্লিকেশন গুলো কোন মানুষ চেক করে না। এই কাজের জন্য রয়েছে গুগলের বোট। এই বোট একটা মেশিনের মত কাজ করে। এজন্য সবকিছু ঠিক থাকলে খুব দ্রুতই আপানার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ হয়ে যাবে। আশা করি যারা অনেক চেষ্টা করেও অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পাচ্ছেন না। তারা এবার উপরের টিপস গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ পেয়ে যাবেন, ইনশাল্লাহ।