একটি গাণিতিক সমস্যা সমাধানে অত্যাধুনিক সুপার-কম্পিউটারের যদি লাগে ১০ হাজার বছর, তবে গুগোলের এই কম্পিউটারটির একই কাজ সারতে লাগবে মাত্র ২০০ সেকেন্ড বা ৩ মিনিট ২০ সেকেন্ড।
প্রযুক্তিবিদদের স্বপ্নের কম্পিউটার ‘কোয়ান্টাম’ তৈরির দাবি করেছে গুগল। সোমবার গুগল জানায়, সাধারণ একটি কম্পিউটার যে হিসাব করতে ১০ হাজার বছর সময় নেবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সেটি দুই মিনিটেরও কম সময়ে (২০০ সেকেন্ড) শেষ করবে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) গুগোল ঘোষণাটি দিলো, তাতে তারা এমনটাই দাবি করেছে। তবে এ তথ্যটি মাসখানেক আগেই ফাঁস হওয়ায় গুগোলের এখনকার ঘোষণাটি কেবল জানা তথ্যকেই সত্য বলে নিশ্চিত করলো।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গুগোল জানায়, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং গবেষণায় অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করা গেলো। এ সাফল্য এলো গুগোলের ৫৪ বিটের সাইকামোর নামক একটি প্রসেসরে কোয়ান্টাম প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে।
এ প্রসেসরে কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা হয়। সমস্যাটি মাত্র ২০০ সেকেন্ড বা ৩ মিনিট ২০ সেকেন্ডে সমাধান করে এই প্রসেসর। গুগোল দাবি করে একই সমস্যা সমাধান করতে ঐতিহ্যবাহী প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম’র সুপার-কম্পিউটারের লাগবে ১০ হাজার বছর।
সাধারণ কম্পিউটার কাজ করে বাইনারি সংখ্যা দিয়ে। বাইনারি পদ্ধতিতে সংখ্যা মাত্র দুটি- ০ ও ১। এই দুটি সংখ্যা দিয়েই যাবতীয় কাজ করে এখনকার কম্পিউটার। বর্তমান ব্যবস্থায় প্রতিবার হয় ০ নতুবা ১ ব্যবহার করতে পারে কম্পিউটার। কিন্তু কোয়ান্টাম কম্পিউটার ০ ও ১ দুটিরই প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। আবার একই সময়ে একই সঙ্গে ০ ও ১’র প্রতিনিধিত্ব করতে পারে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। বিশেষ এই কম্পিউটারের মৌলিক একককে বলা হয় কিউবিটস। বাইনারি সংখ্যা হিসেবে ০ ও ১ ব্যবহারের অনবদ্য বৈশিষ্ট্যের কারণেই কোয়ান্টাম কম্পিউটার জটিল গাণিতিক সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে পারে।
একটি প্রচলিত কম্পিউটারের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে কাজ করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। প্রচলিত বিট হলো ‘ওয়ান’ অথবা ‘জিরো’। কিন্তু কোয়ান্টাম বিট বা কিউবিট একইসঙ্গে ‘জিরো’ বা ‘ওয়ান’ অবস্থায় থাকতে পারে। ফলে প্রসেসরের গতি বেড়ে যায় কয়েকহাজার গুণ। কোয়ান্টাম বিটের এই তত্ত্বটি বাস্তবে প্রমাণ করলো গুগলের এই গবেষণা।
গুগল এই কম্পিউটার আবিষ্কার করতে ১৩ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়েছে।
গুগল কোম্পানির ‘সাফল্যে’ প্রতিযোগী সংস্থাগুলো যারপরনাই ঈর্ষান্বিত। আইবিএম বলছে, ‘গুগল ভুল করছে। তারা যে ১০ হাজার বছরের হিসাবের কথা বলছে, সেটি করতে আসলে আড়াই দিন লাগে!’
রিলেটেড আর্টিকেল………
Comments (No)