গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন

ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে যাদের অবস্থার উত্তরণ ঘটেছে, তাদেরউত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে ব্যাংকটির নতুন কর্মসূচি গ্রহণের উপর জোর দিচ্ছেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহকেরা এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঋণের টাকা গ্রহণ, কিস্তি পরিশোধ ও সঞ্চয় জমা করতে পারবেন। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন 1

বৃহস্পতিবার সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এসডিএফ)‘লোন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এলএমএস)’ এর উদ্বোধনঅনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কথা বলেন মুহিত।

ঢাকার আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনের আরডিইসি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে এসডিএফ চেয়ারম্যান এমআই চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোহা. ইউনুসুর রহমান ও বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখন আর আগের মতো (ছোট ঋণ গ্রহীতা) ডিফল্ট করে না। কিন্তু এখনও গ্রামীণের সিস্টেমে ওই ডিফল্ট কালচারের উপর বেইজ করে প্রতি সপ্তায় মিটিং করে প্রতি মাসের কিস্তির কালচার ছিল।

“আমার মনে হয় এগুলোর আর প্রয়োজন নাই। এগুলোকে বদলানো যায়। এগুলো আমার চিন্তার কথা।”

তিনি বলেন, “গ্রামীণ ব্যাংকের মৌলিক কাজটা আগের মতোই আছে। ঋণের রেঞ্জএখন মনে হয় ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন 2

“আমার মনে হয়, এখন গ্রামীণ ব্যাংকের যে পদ্ধতি আছে, তা নতুন করে চিন্তা করা প্রয়োজন। গ্রামীণ ব্যংকের গ্রহীতা যখন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের হয়, ব্যাংকিং সিস্টেমের ক্লায়েন্ট কীভাবে হবে, তার একটা ব্যবস্থা বোধহয় আমাদের আবিষ্কার করা দরকার।”

তিন দশক আগে মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকার সময় মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়, যার অংশীদার হয় সরকারও।

বয়সসীমা অতিক্রম করায় কয়েক বছর আগে ব্যবপন্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে নোবেলজয়ী ইউনূসকে সরিয়ে দেওয়ার পর এই ব্যাংকটি নিয়ে তার সঙ্গে সরকারের টানাপড়েন চলছে।

মুহিত বলেন, “আমি আপনাদের খোলাখুলি বলছি একারণে যে আমি এটি নিয়ে বেশ চিন্তিত। গত দুই বছর ধরে আমি চিন্তা করছি যে উপায় বের করা যায়।

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন 3

“তবে অল্টারনেটিভ সলিউশন না হওয়া পর্যন্ত যেমন আছে তেমনই থাকবে। এখনও আমরা কোনো সলিউশন বের করতে পারিনি।”

গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণ দারিদ্র্য বিমোচনে সফল হয়নি বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করলেও অনুষ্ঠানে বক্তব্যে মুহিত দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রশংসা করেন।

গ্রামীণের সঙ্গে ব্রাকেরও প্রশংসা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “একসময় এদেশে ৭০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। সেখান থেকে এখন ২২ শতাংশে নেমে এসেছে।

“গ্রামীণ ব্যাংক এ ভূমিকাটি সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছে। হত দরিদ্র লোকের ঋণ পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। দারিদ্র্য কমাতে অবদান রাখা আরেকটি সংস্থা ব্র্যাক।”

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন 4

দারিদ্র্য হটানোর চেষ্টার মধ্যে চিকিৎসাসহ পারিবারিক কয়েকটি কারণে ঝুঁকি এখনও রয়ে যাওয়ার কথা বলেন মুহিত।

“সুতরাং এখান থেকে উত্তরণে আমাদের এখন চিন্তা করা প্রয়োজন।”

বৃহস্পতিবার পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)আয়োজিত ‘প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’শীর্ষক আরেকটি অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী সংস্থাটির চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের উদ্দেশে বলেন, “আপনি দরিদ্র মানুষকে ঋণ দিয়ে একটু উত্তরণ করে দিলেন, কিন্তু সেই উত্তরণটা যাতে পার্মানেন্ট হয় তার জন্য আপনার কাজ করা দরকার।

“সেই ব্যবস্থা কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকসহ ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো করতে পারেনি। এটার দায়িত্ব পিকেএসএফ নিল।”

পিকেএসএফের ‘প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’কে উদ্ভাবনী উদ্যোগ অভিহিত করে এর প্রশংসাও করেন মুহিত।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ