পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন?পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন?

আর্থিক ক্ষতি মেটাতে পারসোনাল লোন একটি অন্যতম উপায়। হোমলোন কিংবা গাড়ি ক্রয় লোনের বাইরেও পারসোনাল লোনের যথেস্ট চাহিদা রয়েছে। ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন পাওয়া তুলনামূলক সহজ। তবে পার্সোনাল লোন-এর রেট অফ ইন্টারেস্ট বেশি।

পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন? 1

ব্যাংকগুলো পার্সোনাল লোন প্রদান করে সহজ শর্তে। পার্সোনাল লোন আপনি যে কোন উদ্দেশ্যে বা প্রয়োজনে নিতে পারবেন। যেমন –বিদেশে ভ্রমন বা জরুরি চিকিৎসার জন্য, বিবাহ খরচ ব্যয় করার জন্য বা যে কোন জরুরি দরকারে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন। এই লোনের টাকা গ্রাহক তার ইচ্ছানুসারে ব্যবহার করতে পারবেন।

Personal Loan কি?

ব্যক্তিগত লোন হল এক ধরনের অনিরাপদ ঋণ এবং আপনার বর্তমান আর্থিক চাহিদা মেটাতে আপনাকে সহায়তা করে। ব্যক্তিগত লোন নেয়ার সময় সাধারণত কোন সুরক্ষা বা জামানত গ্রহনের প্রয়োজন হয় না এবং ঋণ প্রদানকারী আপনাকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ি তহবিল ব্যবহার করার নমনীয়তা সরবরাহ করে। একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অথবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নিজের জন্য কোন ইমার্জেন্সী বা কোন কাজের জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকেই ব্যক্তিগত ঋণ বা (Personal Loan) বলে।

পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন? 2

পরিবারের জন্য বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আর্থিক সমস্যা দেখা দিলে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ থেকে আমরা পার্সোনাল লোন নিতে পারি । ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক যে কোন প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকসমূহ পার্সোনাল লোন দিয়ে থাকে। এই লোন নিতে পারবে যে কোন উদ্যোক্তা এবং খরচ ও করতে পারবে তার ইচ্ছা অনুযায়ী। পার্সোনাল লোনের সুদের হার অন্যান্য ঋণের তুলনায় একটু বেশি পরিলক্ষিত হয়। সুদের হার বেশি হওয়ার কারনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্যারান্টার ছাড়াই প্রথমবার ঋণ দেওয়া হয়। ব্যাংকগুলো ১১%-১৬% হারে সুদের মাধ্যমে পার্সোনাল লোন দিয়ে থাকে। সুতরাং সুদের হারের ব্যপারে সম্পূর্ণ অবগত হয়ে তবেই ঋণের জন্য আবেদন করা উচিত।

Personal Loan কারা দিচ্ছে?

সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক সমূহ (সিটি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, আইসিআইসি আই ইত্যাদি) পার্সোনাল লোন দিয়ে থাকে। অধিকাংশ ব্যাংক সর্বনিম্ন ১০.৭৫% হারে ব্যক্তিগত ঋণ ও পার্সোনাল লোন দিয়ে থাকে। যদিও ব্যক্তিগত ঋণের পরিমাণ প্রত্যেকের ক্ষেত্রে এক নয় অর্থাৎ শর্তসাপেক্ষে পরিবর্তনশীল।ব্যক্তির বার্ষিক আয়ের উপর নির্ভর করে। সর্বনিম্ন ৫০,০০০টাকা এবং সর্বোচ্চ ২০,০০,০০০ টাকা (প্রায়) পর্যন্ত ৬ মাস থেকে ৫ বছর মেয়াদী পার্সোনাল লোন পাওয়া সম্ভব। লোন দেবার পূর্বে ব্যাংক গ্রাহকের লোন পরিশোধ করার যোগ্যতা যাচাই করে নিয়ে লোন দেয়ার ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। সুতরাং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন অনেক বিচার বিবেচনা করে ব্যক্তিগত লোন প্রদান করে। নিয়মিত ও স্থায়ী বা সরকারী চাকুরিজীবীরা অন্যদের চেয়ে তাড়াতাড়ি লোন পায়। ব্যবসায়ী বা আত্মকর্মসংস্থানকারী ব্যক্তিদের কমপক্ষে ৩০,০০০টাকা আয় থাকতে হবে। চাকরিজীবিদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২৫০০০ টাকা আয় থাকতে হবে।

পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন? 3

রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে ব্যক্তিগত ঋণের সুদহার প্রায় ১৩ শতাংশের মধ্যে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক এশিয়ায় সুদের হার ১০ থেকে ১৩ শতাংশ, এক্সিমে ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ, আইএফআইসিতে ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ, মার্কেন্টাইলে ১০ থেকে ১৩ শতাংশ, মিউচুয়াল ট্রাস্টে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকে ১১ থেকে ১৫ শতাংশ, প্রাইমে সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ, সিটি ব্যাংকে ১৩ শতাংশ,ব্র্যাক ও ঢাকা ব্যাংকে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ, ডাচ্–বাংলা ও ইউসিবিএল সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ, ইস্টার্নে ১০ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ ।

Personal Loan কারা নিচ্ছে?

পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই আবেদনকারী ব্যক্তির আয় থাকতে হবে। মাসিক কিংবা বার্ষিক আয় না থাকলে কোন ব্যক্তি পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে না। বাংলাদেশে পার্সোনাল লোনের আবেদনের জন্য নূন্যতম বয়স ২১ বছর। আর সর্বোচ্চ বয়স ৬০ বছর পর্যন্ত লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে। সরকারি, বেসরকারি কিংবা MNC তে যারা কাজ করে সে সকল ব্যক্তিদের জন্য ব্যক্তিগত ঋণের পদ্ধতি তুলনামূলক ভাবে সহজ হয়। পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করা ব্যক্তির মাসিক কিংবা বার্ষিক নির্দিষ্ট পরিমানের আয় থাকতে হবে। আবেদনকারীর ক্রেডিট স্কোর পার্সোনাল লোনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষত বেসরকারি ব্যাংক সমূহের ক্ষেত্রে।

পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন? 4

Personal Loan পাবার Eligibility /যোগ্যতাঃ

১. সরকারি জাতীয় পরিচয়পত্র ও ঠিকানার প্রমাণ (ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট) থাকতে হবে।
২. চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে আইডি থাকতে হবে।
৩. পূর্বে যদি কোন ঋণ থাকে তবে EMI তথ্য রয়েছে এমন ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে।
৪. শেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ক্লিয়ার থাকতে হবে।
৫. চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সেলারি স্লিপ ক্লিয়ার রাখতে হবে।
৬. উপযুক্ত জামিনদার /গ্যারান্টার থাকতে হবে।
৭. গ্রাহকের সই করা আবেদনপত্র থাকতে হবে।
৮. আবেদনকারী ও গ্যারান্টারের সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকতে হবে।
৯. ইউটিলিটি বিলের কাগজ ফযেমন (গ্যাস বিল,টেলিফোন বিল,বিদ্যুৎ বিল,ওয়াসা বিল) ইত্যাদি থাকতে হবে।
১০. অন্যান্য ইনকাম সম্পর্কিত ডকুমেন্ট (যদি থাকে) থাকতে হবে।
১১. ই- টিন কপি থাকতে হবে।
১২. চাকরিজীবীদের সেলারি একাউন্ট থাকতে হবে।
১৩. চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে নিয়োগপত্র থাকতে হবে।
১৪. চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে পে স্লিপ থাকতে হবে।
১৫. পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রির সনদপত্র থাকতে হবে।
১৬. বাড়ির মালিকের ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকানার দলিলপত্র থাকতে হবে।
১৭. বাড়ির মালিকের ক্ষেত্রে ভাড়া প্রাপ্তির রশিদ কিংবা ভাড়াটিয়ার সাথে চুক্তিপত্র থাকতে হবে।
১৮. ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ থাকতে হবে।
১৯. ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সকল হিসাব যথাযথভাবে দেখাতে হবে।
২০. আবেদনকারী ও গ্যারান্টারের ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক ও নির্ভূল হতে হবে।
২১. অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ও জামানত (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ