নতুন ইউটিউবারদের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন YouTube ভিউ আসছেনা কেন? নতুন চ্যানেল খোলার পর কিছু ভিডিও আপলোড করার পরই একজন ইউটিউবারের প্রথম চিন্তা আসে কিভাবে YouTube ভিডিওর ভিউ বাড়বে।
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট YouTube। YouTube এমন একটি প্ল্যাটফর্ম বা সোশ্যাল মিডিয়া যেখানে আপনি নিজের তৈরী করা ভিডিও গুলো অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিতে পারেন।
আপনি আপনার নিজের তৈরী করা ভিডিও গুলো থেকে আয় করার সুযোগও পাবেন। তবে এই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা সাইটে ভিডিও সাইট থেকে আয় করা কি এতটাই সোজা? ভিডিও আপলোড করলেই কি YouTube ভিউ বাড়বে? আয় করা যাবে?
জ্বী না! বিষয়টি মোটেই সোজা না। YouTube চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওতে ভিউ বাড়ানোর জন্য গাইডলাইন মেনে ভিডিও আপলোড করার পাশাপাশি কনটেন্ট ভ্যালু এবং চাহিদা থাকতে।
আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে সবথেকে বেশী সুবিধা লুফে নিবেন নতুন YouTube। আজকের আর্টিকেলটির মূল বিষয় কিভাবে ইউটিউব ভিউ বৃদ্ধি করা যায়?
YouTube ভিডিওর ভিউ বাড়ানো দরকার কেন?
আমরা YouTube ভিডিও আপলোড করি কেন? ৯৫% এরও বেশি মানুষ আমার সাথে একমত হবেন যে অনলাইনে ইনকাম করার ইচ্ছা থেকেই YouTube হবার চেষ্টা করা।
YouTube থেকে আয় করার সবচেয়ে বড় উপায় গুগল অ্যাডসেন্স। কিন্তু YouTube থেকে মনিটাইজেশন পেতে ১২ মাসের মধ্যে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ওয়াচটাইম পেতে হবে।
৪০০০ঘন্টা ওয়াচটাইম মানে হচ্ছে আপনার চ্যানেলের ভিডিও গুলো সর্বমোট ৪০০০ঘন্টা দেখতে হবে। YouTube প্রতি ভিডিও অন্ততপক্ষে ৩০ সেকেন্ড দেখলে তবেই ১টি ভিউ কাউন্ট হয়। যদি কেউ ৩০ সেকেন্ডের কম সময় ভিডিওটি দেখে তবে ইউটিউব সেই ভিউটি কাউন্ট করবে না।
এখন ধরে নিলাম আপনি মনিটাইজেশন পেয়েছেন, তারপর কি YouTube ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর জন্য উপায় খুঁজতে হবে?
যি, অবশ্যই। আপনি দোকানে জিনিসে রাখলে লাভ হবে? বিক্রি করতে হবে তো! যত বিক্রি, ততো লাভ।
আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্ট থেকে ইনকাম করার জন্য হলেও YouTube ভিউ প্রয়োজন। কারণ ভিডিও না দেখলে অ্যাড ইম্প্রেশন হবে না, আর আপনিও টাকা পাবেননা।
YouTube ভিউ কি?
YouTube যেকোনো একটি চ্যানেলের একটি ভিডিও যতজন মানুষ দেখবে ততজন মানুষকে আলাদা আলাদা ভাবে ইউটিউব গণনা করবে এবং এটিকেই ইউটিউব ভিউ বলা হয়।
একটি ভিডিও নূন্যতম ৩০ সেকেন্ড দেখা হলে ভিডিওটির ১ টি ভিউ গণনা করা হয়। ৩০ সেকেন্ডের কম সময় কেউ ভিডিওটি দেখলে ভিডিওর ভিউ গণনা করা হয়। তবে যদি কোনো ভিডিওর দৈর্ঘ্য মাত্র ৩০ সেকেন্ডই হয় তবে সে ক্ষেত্রে হিসেব নিকাশটা কিছুটা পরিবর্তিত হয়।
চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওতে ভিউ বাড়ানোর উপায়
একটি ভিডিও কতভাবে ভিউ আসতে পারে কখনো ভেবে দেখেছেন? প্রধান ৪টি সোর্স থেকে ভিডিওতে ভিউ আসে।
- চ্যানেল সাবস্ক্রাইবার
- ট্রেন্ডিং / ভাইরাল
- সার্চ রেজাল্ট
- শেয়ার / ব্যাকলিঙ্ক
ভিউ নিয়ে আসার এই ৪টি সোর্সের মধ্যে সার্চ রেজাল্ট এবং সাবস্ক্রাইবার হলো সবচেয়ে ভালো উপায়। YouTube চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি করতে পারলে তাদের কাছে আপনার প্রতিটি ভিডিও পৌছে যাবে, কিন্তু সার্চ রেজাল্টে নিয়ে আসার জন্য ভিডিও Rank করতে হবে।
কিভাবে YouTube ভিডিওর ভিউ বাড়বে?
আমরা যারা YouTube ভিডিও দেখি তারা প্রায়ই শুনি ভিডিওর শুরুতে এবং শেষে দুইবার বা এরও বেশী বার ইউটিউবাররা বলে থাকেন লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ও সাবস্ক্রাইব করার জন্য। আমরা অনেকে হয়তো বিরক্ত হই।
তবে YouTube যেকোনো চ্যানেলের গ্রোথ নির্ভর করে লাইক,কমেন্ট, শেয়ার ও সাবস্ক্রাইব করার মধ্য দিয়েই।
আপনার চ্যানেলের একেকটি ভিউ আপনার জন্য অনেক দামী। যারা YouTube বহু বছর ধরে আছেন তারাই জানেন যে প্রতিটা ভিউ কত বেশী মূল্যবান।
তাছাড়া একজন দর্শক হিসেবেও আপনি সেই ভিডিওগুলোই বেশী দেখতে চাইবেন যেই ভিডিও গুলো আপনার আগে বহু মানুষ দেখেছে। আপনার কাছে ঐ ভিডিওগুলোই সবথেকে বেশী গ্রহনযোগ্য পাবে। YouTube ভিডিওর ভিউ বৃদ্ধি করার উপায় নিয়ে কার্যকরী কিছু উপায়:
কীওয়ার্ড রিসার্চ করা
আপনি নিশ্চয়ই আলাদা আলাদা বিষয়বস্তু টার্গেট করে ভিডিও তৈরী করেন। প্রতিটি বিষয়ে সার্চ করার জন্য কিছু টার্ম থাকে যা প্রায় সকলেই ব্যবহার করি।
যেমন ‘মোবাইলে অনলাইনে ইনকাম কিভাবে করা যায়’ এটা লিখে আমি সার্চ দিলাম, আপনি হয়তো সার্চ করবেন মোবাইলে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়।
এখানে কমন কিছু ওয়ার্ড হলো ‘মোবাইলে অনলাইনে ইনকাম’, এই কমন টার্মকে বলা হয় কিওয়ার্ড। ভিডিওর কিওয়ার্ড বাছাই করার জন্য দুইটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়।
- কোন কিওয়ার্ডটি বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে?
- কিওয়ার্ডটির সার্চ ভলিয়্যুম কত?
আপনি যদি এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করেন, যে বিষয়ে আসলে খুব কম সার্চ করা হয়, সেই ভিডিও নিয়ে Rank করেও কোনো লাভ নেই। সার্চ রেজাল্ট থেকে ভিডিওতে তেমন ভিউ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কিংবা আপনি ভিডিও তৈরি করলেন ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি করার উপায় নিয়ে কিন্তু কিওয়ার্ড দিলেন ‘কিভাবে সাবস্ক্রাইব বাড়বেন’! তাহলে ভিডিওতে ভিউ পাওয়ার আশা চেড়ে দিতে হবে, কারণ এই কিওয়ার্ডে কোনো সার্চই হয় না।
আপনার ভিডিওর কিওয়ার্ডগুলো যদি আপনার Targeted Audience Reach করতে না পারে তবে তো আপনার ভিউ বাড়বে না, এটাই স্বাভাবিক।
ইউটিউব কিওয়ার্ড রিসার্চের জন্য নিচের কিছু টুল ব্যবহার করা যেতে পারে :
- TubeBuddy
- Goggle trends
- Keywordtool.io
- VidlQ
- YouTube auto-suggest
- ahrefs
- Keywords Everywhere
ভিডিও টাইটেল স্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত রাখুন
একটি ভিডিও তৈরী করার আগে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। দেখা যায় অনেক সময় এক সপ্তাহ সময় ব্যয় করতে হয় একটি সুন্দর ভিডিও তৈরী করার জন্য।
আপনি ভিডিও আপলোডও করলেন। কিন্তু আপলোড করা ভিডিওর সাথে যদি টাইটেল সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় তবে ভিউ তুলনামূলক কম হবে। একইসাথে যেসব ভিউ টাইটেল দেখে আসবে তারা দ্রুতই ভিডিও বন্ধ করে দিবে, যা আপনার চ্যানেলের Rank হারানোর কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন ইউটিউব কোনো টপিক সার্চ করার সময় প্রথমেই টাইটেলটাই দেখবে। তাই টাইটেল হতে হবে স্পষ্ট। একই সাথে টাইটেলে অবশ্যই রিসার্চ করা মেইন কিওয়ার্ডটি রাখবেন।
ভিডিও ডেস্ক্রিপশন
টাইটেল দিয়ে বুঝানোর পাশাপাশি প্রতিটি ভিডিওর বিষয়বস্তু বুঝাতে ইউটিউব আমাদেরকে ডেস্ক্রিশন অপশন ব্যবহার করতে বলে। যা ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি এসইও ফিচার।
এতে আপনার ভিউ বাড়ার পাশাপাশি আপনার ভিডিওটি খুঁজে পেতে দর্শকদের সুবিধাও হবে। কারণ এখানে আপনি কিওয়ার্ড এর পাশাপাশি রিলেটেড কিওয়ার্ডগুলোও ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছেন।
যেমন ইউটিউবে টাকা ইনকাম কিওয়ার্ডের পাশাপাশি ইউটিউবে আয়, ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জন এমন রিলেটেড কিওয়ার্ড আপনার ভিডিওকে মাল্টি কিওয়ার্ডে Rank করার সুযোগ করে দিতে পারে। কিন্তু অলসতা কিংবা না জানায় আমরা অনেকেই এই সুবিধা নেই না।
অবশ্যই মনে রাখতে হবে ভিডিও Description ৩০০-৫০০ শব্দের মধ্যে রাখতে হবে। আপনার ভিডিও Description – এ আপনার ভিডিওর Script এর কিছু অংশ থাকলে ভালো। ভিডিওর Description এ আপনি বিভিন্ন হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করতে পারেন।
সঠিক ট্যাগ ব্যবহার
যারা ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করেছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন যে চ্যানেলে আপলোড করা প্রতিটি ভিডিওর সাথে ট্যাগ দিতে হয়। এখানে প্রচলিত যে ভুলটি আমরা করি সেটি হলো অনেকেই না বুঝে সঠিক ট্যাগ ব্যবেহারের পরিবর্তে ট্রেন্ডিং/ভাইরাল ট্যাগগুলো ব্যবহার করি।
ভিডিওর সাথে ট্যাগ দেওয়ার কারণ সার্চ রেজাল্ট রিচ করা। সেখানে যদি এলোমেলো একটির সাথে অপরটির সম্পর্কহীন ট্যাগ ব্যবহার করা হয়, তখন ইউটিউব ভিডিওর আসল বিষয়বস্তু নিয়ে কনফিউজড হয়ে যায়।
ফলাফলস্বরূপ ইউটিউবে আপলোড করা ভিডিওটি থেকে ভিউ আসা কিংবা Rank করার পরিবর্তে সার্চ রেজাল্ট থেকেই হারিয়ে যায়।
তাহলে প্রশ্ন হলো ভিডিওতে ভিউ বাড়ানোর জন্য কিভাবে সঠিক ট্যাগ পছন্দ করবেন?
আমরা যখন কীওয়ার্ড রিসার্চ করেছিলাম তখন সবচেয়ে ভালো কীওয়ার্ডটি মেইন কিওয়ার্ড হিসেবে নিয়েছি। কিন্তু আরো অনেক কিওয়ার্ড ছিলো যেগুলো দিয়েও সার্চ করা হয়।
যেমন আমাদের একটি ভিডিওর মেইন কীওয়ার্ড “কম দামে ভালো ফোন ২০২১”। তাহলে আমাদের ট্যাগগুলো হতে পারে
- কম দামে ভালো ফোন ২০২১ বাংলাদেশ
- কম দামে ভালো ক্যামেরা মোবাইল ২০২১
- ১০ হাজার টাকায় সেরা মোবাইল
- ১০ থেকে ১৫ টাকায় গেমিং মোবাইল
- অল্প টাকার মধ্যে ভালো ফোন, ইত্যাদি।
এরকম আরো কিছু ট্যাগ বা কীওয়ার্ড খুেঁজে বের করে ভিডিওতে ব্যবহার করুন। ইউটিউবে ভিউ বাড়ানোর জন্য এটি অনেক কার্যকরী একটি উপায়।
ভিডিওতে সাবটাইটেল (Subtitle) ব্যবহার করা
আমরা ইউটিউবে যে শুধু বাংলা, হিন্দি বা ইংরেজী ভাষার ভিডিওই দেখি বিষয়টা এমন নয়। যদি আপনি ব্লগিং বিষয়ক বিভিন্ন টিপস নিতে ইউটিউবে সার্চ করেন তবে দেখবেন বেশিরভাগ ইউটিউব চ্যানেল-ই হিন্দী ভাষার।
আপনি নিশ্চয়ই হিন্দীতে লিকে সার্চ করেননি, তারপরেও তাদের ভিডিও সার্চ রেজাল্টে আসার কারণ সাবটাইটেল ব্যবহার।
যদি আপনার ভিডিওতে Subtitle না থেকে তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভিউয়াররা আপনার ভিডিওটি এড়িয়ে যাবে। ইউটিউব মেশিন ট্রান্সলেট করা যায়।
তাই আপনি যদি আপনার ভিডিও আপলোড করার সময় ইংরেজীতে আপনার স্ক্রিপটির হুবুহু Subtitle হিসেবে ব্যবহার করেন তবে অনেকেরই আপনার ভিডিওর কথাগুলো বুঝতে অসুবিধা হবে না।
দেখা যাবে অন্যান্য দেশ থেকেও ইউটিউব ভিউ আসছে। উন্নত দেশ থেকে ভিউয়ারস পেলে ইউটিউব থেকে ইনকাম বৃদ্ধি পাবে।
তাই ভিডিও তৈরীর ক্ষেত্রে ভিডিওর স্ক্রিপ্টে যতটুকু সম্ভব ইংরেজি ভাষার ব্যবহার করতে হবে। এতে ইউটিউব নিজে থেকেই আপনার দেওয়া Subtitle গ্রহণ করে অন্যান্য ভাষায় তা ট্রান্সলেট করে দিতে পারবে।
আপনার টাইটেলটি যদি বাংলায় হয়, তবে পাশাপাশি ইংরেজিতেও লিখে দিন। যেমন: কিভাবে অনলাইনে আয় করা যায় : How to earn From online.
ইউনিক, যথার্থ এবং সুন্দর থাম্বনেইল (Thumbnail) ব্যবহার
First impression is the Last impression. ইংরেজিতে কথাটি যুগ যুগ ধরে সত্য বলে প্রমাণিত হয়ে আসছে।
আমরা যখন কোনোকিছু ইউটিউবে সার্চ করি তখন টাইটেল এর চেয়ে থাম্বনেইলের দিকেই আমাদের চোখ যায়। প্রথম Rank এ থাকা ইউটিউব ভিডিওর থাম্বনেইল যদি দ্বিতীয়টির চেয়ে ভালো না হয়, তবে সাধারণত দ্বিতীয়টিতে ক্লিক বেশি পরে।
আপনি ঠিক যেই বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরী করছেন সেই বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাম্বনেইলই আপনাকে তৈরী করতে হবে।
Thumbnail -এ কখনই মিথ্যা তথ্য বা বানোয়াট কোনো কিওয়ার্ড দেওয়া ঠিক নয়। এতে দর্শকরা বিরক্ত হয়।
থাম্বনাইলে তৈরীর ক্ষেত্রে HIGH QUALITY IMAGE ব্যবহার করা উচিৎ যেন যেকোনো বড় ডিভাইসেও ছবি ফেটে না যায়।
ইউটিউব ভিডিওর থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার করার জন্য ছবির সাইজ 1280 x 720 হওয়া উচিৎ। তাছাড়া থাম্বনাইলের ছবিটির লেখা স্পষ্ট করার জন্য আকর্ষণীয় ফন্ট ব্যবহার করুন।
- থাম্বনেইল ছবির সাইজ ২ এমবির কম নিতে হবে
- ছবির ফরম্যাট .JPG, .PNG, .BMP or .GIF
- ছবির রেজ্যুলেশান 1280 x 720
- লেখা স্পষ্ট করার জন্য উজ্জ্বল রঙ যেমন Yellow, Red or Orange ব্যবহার করুন।
ভিডিও কনটেন্ট
এতক্ষণ মূলত আমরা ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর উপায় নয়, বরং ভিউয়ারস বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। আমরা শুরুতেই বলেছিলাম ইউটিউব কোনো ভিডিওর একটি ভিউ ৩০ সেকেন্ড দেখা হলে তারপর কাউন্ট করে।
ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানেরা জন্য ভিউয়ার্স ধরে রাখতে হবে এবং এজন্য প্রথম ২০ সেকেন্ড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মাঝে আপনার ভিউয়ারসকে বুঝাতে হবে যে আপনি আসলে তাদেরকে কী দিতে যাচ্ছেন। একটি কনটন্টে ভাল্যুয়াবল হওয়ার শর্ত:
- ভিউয়ার্স এর প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার ক্ষমতা
- সহজভাবে উপস্থাপন
- ভিডিও কোয়ালি কোয়ালিটি
- অডিও কোয়ালিটি
- ভালো উপস্থাপনা
এই কয়টি রিকুয়ারমেন্ট পূরণ করে যদি অন্যান্য উপায় অবলম্বন করেন তবে ইউটিউবে ভিউ বাড়ানোর জন্য আপনাকে খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবেনা।
এখন প্রশ্ন হলো যদি আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি ভালো না হয়, তবুও আপনার ইউটিউব এসইও ভালো হওয়ার জন্য Rank করলো, তখন কি লাভ হবেনা?
না হবে না। বরং খুব দ্রুত পজিশনও হারিয়ে ফেলবেন। কারণ প্রথম দিকে আপনার চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওতে ভিউ বাড়ানো গেলেও ওয়াচটাইম বৃদ্ধি করতে পারবেননা।
ভিউয়ারস দ্রুতই আপনার ভিডিওটি থেকে চলে যাবে, ইউটিউব অ্যালগরিদম ভেবে নিবে আপনার ভিডিওটি এই টপিকের জন্য সঠিক নয়, ভিজিটরস এক্সপেরিয়েন্স ভালো করার জন্য তারা ভিডিওটি সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজ থেকেই সরিয়ে দিবে।
এজন্যই বলা হয় কনটেন্ট ইজ দ্যা কিং!
ব্যাকলিঙ্ক তৈরি করুন
ইউটিউবে ভিউ পাওয়ার অন্যতম একটি সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে ভিডিও শেয়ার করা। আপনি যখন একটি ভিডিও দেখছেন তখন আপনি যদি ভিডিওটি আপনার কোনো বন্ধুকে বা অন্য কাউকে দেখাতে চান তবে ভিডিওটি আপনার শেয়ার করতে হবে।
ইউটিউবে প্রতিটি চ্যানেলের নিচে শেয়ার আইকন থাকে যেখানে আপনি ক্লিক করলে বিভিন্ম অপশন পাবেন যেখানে যেখানে আপনি শেয়ার করতে চান। চ্যানেলের লিংক কপি করে কাউকে পাঠানোর সুযোগ থাকে।
শুধুমাত্র ইউটিউবে ভিউ বাড়ানোর জন্যই নয় বরং গুগল সার্চ রেজাল্ট কিংবা ইউটিবে Rank করার জন্যও ব্যাকলিঙ্ক জরুরী।
ব্যাকলিঙ্ক হলো ইউটিউবের বাইরে গিয়ে অন্য কোনো সাইটে ভিডিওটি লিঙ্ক যুক্ত করা কিংবা এমবেড করা।
ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর উপায় হিসেবে বিভিন্ন সাইটে পোস্ট করা এবং সোশ্যাল সাইটে শেয়ারের মাধ্যমে ব্যাকলিঙ্ক পাওয়া যায়।
সোশ্যাল সাইটের পেজে শেয়ার করা
আপনার ভিডিওটি যদি আরো মানুষের কাছে পৌছাতে চান তবে শেয়ার করুন আপনার বিভিন্ন সোশ্যাল সাইট ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট, টুইটার কিংবা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তবে অতিরিক্ত লিঙ্ক শেয়ার করলে স্পামিং কেস এ পরে যেতে পারেন, তাই সাধানতার সাথে শেয়ার করবেন।
গ্রুপে ভিডিও শেয়ার করা
আপনার ভিডিওগুলো আপনি যখন বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করেন তখন মানুষ আপনার ভিডিওগুলো খুব স্বাভাবিক ভাবেই গ্রহন করবে। তবে যেকোনো ভিডিওই যেকোনো গ্রুপে শেয়ার করা যাবে না। দেখা যাবে বিরক্ত হয়ে রিপোর্টও করতে পারে।
ভিডিও বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তা কোন গ্রুপে শেয়ার করা যাবে। যেমন, আপনি খাওয়াদাওয়া বা ফুড ব্লগিংয়ের গ্রুপে শিক্ষণীয় কোনো ভিডিও পোস্ট করলে তা গ্রুপের সদস্যরা দেখবে না।
Blog এ শেয়ার করুন
আপনি যে বিষয়টি নিয়ে ভিডিও তৈরী করছেনে তা নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখতে পারেন। সেখানে আপনার Script এর কিছু অংশ থাকলে মন্দ হয় না আপনার ব্লগে আর্টিকেলটি লিখে তাতে Video Embed করে দিতে পারেন।
ব্লগ আর্টিকেলে সংশ্লিষ্ট ভিডিও থাকলে Rank করার সম্ভাবণা বেড়ে যায়। এতে ব্লগের ভিউ + ইউটিউব ভিউ দুটোই পাবেন। আপনার যদি নিজস্ব কোনো ব্লগ না থাকে তবে যারা গেস্ট ব্লগিং করতে দেয় সেখানে লিঙ্ক করুন।
প্রশ্ন উত্তর সাইট
ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর উপায় হিসেবে প্রশ্নত্তোর সাইটগুলোর তুলনা হয় না। এটা এমন জায়গা যেখানে প্রশ্ন কর্তাই আপনার কাছে সমাধান ভিডিও চাচ্ছে।
যিনি প্রশ্ন করছেন শুধু তিনিই আপনার ইউটিউ ভিডিও ভিউ করবেন তা কিন্তু নয়। এই উত্তরটি একটি ব্লগ রাইটিং এর মতো। যাদের এ বিষয়ে ইন্টারেস্ট আছে তাদের কাছেও পৌছে যাবে।
এসব প্রশ্নোত্তর সাইটের ব্যাকলিঙ্কও যথেষ্ট শক্তিশালী। কিছু জনপ্রিয় বাংলা প্রশ্নত্তোর সাইট যেমন কোরা, বিস্ময় প্রভৃতিতে মেম্বার হয়ে চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওতে ভিউ বাড়ানো যায়।
ভিডিও প্লে লিস্ট
নতুন ভিডিও আপলোড করার সময় প্লে-লিস্ট ইউটিউব ক্রাওলারকে ভিডিও সম্পর্কে আরো স্পেসিফিক আইডিয়া দেয়। আপনার ভিডিওটি কী নিয়ে তা ইউটিউবকে জানানোর জন্য প্লেলিস্ট এর সঠিক ব্যবহার করা উচিৎ।
একটি প্লেলিস্ট আপনার ইউটিবে ভিউ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। একটি ভিডিও দেখে আমাদের খুব বেশি পছন্দ হলে সেই প্লেলিস্ট এর অন্যান্য ভিডিওগুলোও দেখতে অনুপ্রাণিত হই, অর্থাৎ ইউটিউবে ভিউ বাড়বে।
শেষ কথা
একজন ইউটিউবার হিসেবে আপনার ভিডিও গুলোকে ৩টি ধাপে ভাগ করতে হবে। ১ম ধাপে আপনি আপনার ভিডিওটি সম্পর্কে ধারণা দিবেন। ২য় ধাপে আপনাকে ভিডিওর মূল বিষয়বস্তু গুলো রাখতে হবে। ৩য় ধাপে আপনি ভিডিওটি শেষ করবেন।
কিভাবে ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়বে, বুঝতে পারলেন?
তবে সকল ট্রিকস ও কৌশলের উর্দ্ধে হলো ভালো কন্টেন্ট। বর্তমানে ইউটিউবে ভালো কন্টেন্টের প্রচুর অভাব। আপনার ভিডিওর কনসেপ্ট ও কন্টেন্ট যতবেশী ভালো এবং ইউনিক হবে ততবেশী ভিউয়ার বাড়বে।
যেমনটা আলোচনায় বলেছি কনটেন্ট ভালো না হলে ইউটিউব ভিউ প্রথমদিকে ভিউ বৃদ্ধি পেলেও স্থায়ী হয়না। একইভাবে আপনার ভালো কোনো কনটেন্ট প্রথমদিকে পিছনে থাকলেও ভিউয়ারস ওয়াচটাইম ভালো থাকায় ভবিষ্যতে প্রথমদিকে উঠে আসবে।
আশা করি এখানে উল্লেখ করা আমাদের ইউটিউব ভিডিওর ভিউ বাড়ানোর উপায়গুলো আপনার চ্যানেলের জন্য অনেকটা সহায়ক হবে।
Comments (No)