অতীতে লিঙ্কডইন (LinkedIn) এলগোরিদম নিয়ে কারো মধ্যে তেমন একটা আকর্ষণ কাজ করত না। এদিকে গত বছর থেকেই বিষয়টির মধ্যে বৈপরীত্য দেখা গেছে। তবে এর মানে এই নয় যে অতীতে এই সম্পর্কে তথ্য অনেক কম পাওয়া যেত।
বিগত দুই বছরে লিঙ্কডইন (LinkedIn) তাদের এলগরিদমে বেশ কিছু আপডেট এনেছে। এর ফলে লিঙ্কডইনে ভাইরাল এক্টিভিটি আগের চেয়ে ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ৬৪৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারীর লিঙ্কডইন প্রোফাইল ফিডে প্রায় দুই মিলিয়ন পোস্ট, ভিডিও এবং আর্টিকেল তাদের পছন্দ অনুযায়ী ফিল্টার করে দেখানো হচ্ছে। এতে করে এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটির কার্যকারিতাও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বেড়েছে ব্যবহারকারীর সংখ্যাও।
LinkedIn প্রোফাইল এলগরিদম আপনি কিভাবে কাজে লাগাবেন ?
আপনাদের মনে হয়তো প্রশ্ন জাগছে, এতদিন পর কেনো কর্তৃপক্ষ LinkedIn প্রোফাইল এলগরিদমে পরিবর্তন আনল ?
প্রতিষ্ঠানটির প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর পিট ডেভিসের মতে, লিঙ্কডইন প্রোফাইল ফিডের মূলমন্ত্র হচ্ছে “আপনার পরিচিত লোকেরা আপনার পছন্দের বিষয় নিয়েই কথা বলছে” (“People you know, talking about the things you care about.”)। সহজ করে বললে, লিঙ্কডইন (LinkedIn) এলগরিদম ব্যবহারকারীদের নিজস্ব আগ্রহের ভিত্তিতে ব্যক্তিগত সংযোগকে অগ্রাধিকার দেয়।
AliExpress.com Product – 2021 Top Brand Luxury Men’s Watch 30m Waterproof Date Clock Male Sports Watches Men Quartz Casual Wrist Watch Relogio Masculino
লিঙ্কডইনের এই মূলনীতিটি থিওরিটিক্যালি এবং প্র্যাক্টিক্যালি আপনার কাছে খুবই সহজ মনে হবে যদি আপনি একবার বুঝে ফেলতে পারেন লিঙ্কডইন প্রোফাইল এলগরিদম ঠিক কীভাবে কাজ করে।
এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটিতে সাফল্য পেতে হলে প্রথমেই আপনাকে এর নতুন এলগরিদম মেনে কাজ করতে হবে। সেই সাথে কোন বিষয়গুলো কাজে লাগছে এবং কোনগুলো কাজে লাগছে না সেগুলো ফিল্টার করতে হবে।
লিঙ্কডইন প্রোফাইল এলগরিদম ঠিক কীভাবে কাজ করে ?
লিঙ্কডইন (LinkedIn) এলগরিদমের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো দুইটি। যথা-
১। প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া
২। এংগেজমেন্ট বৃদ্ধি করা
রিলেভেন্সি বা প্রাসঙ্গকিতাকেই লিঙ্কডইন প্রোফাইল এর নতুন এলগরিদমে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আর এজন্যই ব্যবহারকারীদের হোমপেইজে ব্যবহারকারীদের পছন্দ অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক টপ পোস্টগুলো ডিফল্ট হিসেবে শো করানো হয়।
কিন্তু ব্যবহারকারীরা চাইলে অপশন চেঞ্জ করে রিসেন্ট পোস্টগুলো তাদের ফিডে শো করাতে পারবে, এমন ব্যবস্থাও রেখেছে লিঙ্কডইন (LinkedIn)।
টপ এবং রিসেন্ট পোস্ট দেখার নতুন অপশন নিয়ে এসেছে লিঙ্কডইন কর্তৃপক্ষ
লিঙ্কডইন প্রোফাইল এলগরিদমে নতুন আপডেট আসার আগে (২০১৯ সালের পূর্বে) লিঙ্কডইন (LinkedIn) কর্তৃপক্ষ খেয়াল করে যে, তাদের এলগরিদম নিজে নিজেই “সুপারস্টার ইকো চ্যাম্বার” নামে একটা বিষয় তৈরি করছে। যার ফলে রিচার্ড ব্রানসনের মতো মেগা-ইউজাররা তাদের জনপ্রিয়তার দরুন খুব সহজেই একটি পোস্ট ভাইরাল করে ফেলতে পারছে। সেটা প্রাসঙ্গিক হোক বা না হোক।
কিন্তু সাধারণ ব্যবহারকারীদের করা পোস্টগুলো প্রাসঙ্গিক এবং মানসম্পন্ন হওয়া স্বত্বেও সেভাবে সাড়া পাচ্ছিলো না। পূর্বের লিঙ্কডইন প্রোফাইল এলগরিদমটা নিজে নিজেই এমন একটা সিস্টেম তৈরি করে ফেলেছিল যা কেবল জনপ্রিয় ব্যবহারকারীদের আরও জনপ্রিয় করে তুলছিলো তাদের পোস্টগুলোতে রিচ এবং এংগেজমেন্ট বাড়িয়ে।
এতে করে সাধারণ লিঙ্কডইন প্রোফাইল ব্যবহারকারীদের পোস্টে এংগেজমেন্ট ক্রমাগত কমে যাচ্ছিলো এবং তারা ডিমোটিভ হয়ে যাচ্ছিলো।
লিঙ্কডইন (LinkedIn) এলগরিদম পরিবর্তনের আগে পরের পরিসংখ্যান
এই সমস্যার কারণেই সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে লিঙ্কডইন (LinkedIn) এর জনপ্রিয়তায় কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছিলো। তাই এই সমস্যা থেকে উত্তরণ পেতে তারা তাদের এলগরিদমে পরিবর্তন এনেছে। এই এলগরিদমে ব্যবহারকারীরা পছন্দ করে এবং তাদের জানা বিষয়গুলো নিয়ে করা পোস্টগুলো তাদের ফিডে প্রদর্শনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুনঃ
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং টুলস ! প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি কিভাবে বেছে নিবেন?
এই পরিবর্তনের ফলে এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটিতে ব্যবহারকারীদের মিথস্ক্রিয়া যেমন বেড়েছে তেমনি ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশি বেশি প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করার প্রবণতাও বেড়েছে।
নতুন এলগরিদমের ফলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশি বেশি প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করার প্রবণতাও বেড়েছে
বহুল জনপ্রিয় এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটিতে প্রতি সেকেন্ডে কয়েক হাজার নতুন পোস্ট করা হয়। তবে, লিঙ্কডইনের নতুন এলগরিদমটি এমনভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে যা মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে খুব দ্রুত পোস্টগুলো বাছাই করে সেগুলোকে স্কোর দেয় এবং স্কোরের ভিত্তিতেই পোস্টগুলো র্যাংক করায়।
লিঙ্কডইন (LinkedIn) নতুন এলগরিদমে পোস্ট র্যাংক করাতে বিবেচ্য ৩ টি বিষয় হচ্ছে –
লিঙ্কডইনের নতুন এলগরিদমটি ব্যবহারকারীদের করা পোস্টগুলোকে ফিল্টার করে র্যাংক করতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে বেশি নজর দেয়ঃ
১। ব্যক্তিগত সংযোগ
ধরুন আপনি লিঙ্কডইনে ওপরা উইনফ্রে কে ফলো করেন। কিন্তু তাকে ব্যক্তিগতভাবে আপনি জানেন না এটা মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায়।
লিঙ্কডইনের নতুন এলগরিদমে এই বিষয়গুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। আপনার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে এমন মানুষদের পোস্টই আপনার ফিডে বেশি প্রদর্শিত হবে।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক নির্ধারণ করার জন্য এই প্ল্যাটফর্মটি কিছু অন্তর্ভুক্ত এবং স্পষ্ট বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়। যেমন- আপনি কোন কোন ব্যবহারকারীদের পোস্টে কমেন্ট করছেন, কার পোস্ট শেয়ার করছেন ইত্যাদি। এছাড়াও আপনার প্রোফাইলে দেওয়া তথ্যগুলোকেও (আগ্রহ, দক্ষতা, কর্মস্থল, সহকর্মীদের তালিকা ইত্যাদি) বিবেচনায় রাখে নতুন এই এলগরিদম। Online Income Site List
২। পছন্দ এবং প্রাসঙ্গিকতা
লিঙ্কডইনে আপনি ব্যক্তিগতভাবে যে কারো সাথেই সংযুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু এর অর্থ এই না যে আপনি তার সব কনটেন্ট পছন্দ করছেন বা তার সবগুলো কনটেন্টই আপনার ভালো লাগছে।
এই কারণে এই প্ল্যাটফর্মটির নতুন এলগরিদম ব্যবহারকারীদের ফিডে পোস্ট দেখানোর ক্ষেত্রে তারা কোন গ্রুপগুলোতে আছে, সেই গ্রুপ গুলো কোন বিষয় নিয়ে, কোন কোন মানুষকে তারা ফলো করছে, যে পেজগুলোকে ফলো করছে তারা কি কি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছে এসব বিষয় বিবেচনা করে।
এছাড়াও এই নতুন এলগরিদম পোস্টের ভাষা, পোস্টে কোন কোম্পানির নাম উল্লেখ আছে, তাদের এমপ্লয়িদের প্রোফাইলে এবং পোস্টের বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় রাখে।
৩। এংগেজমেন্টের সম্ভাবনা
এলগোরিদমের কার্যকারিতা এবং সাফল্যের মূলে হলো ইন্টার্যাকশন বা মিথস্ক্রিয়া। লিঙ্কডইন প্রোফাইল এলগরিদমে এই উপাদানটিকে দুই ভাগে ভাগ করেছে।
প্রথমত, এলগরিদমটি এমন পোস্টগুলোকেই আপনার জন্য ফিল্টার করে যে পোস্টগুলোতে আপনার শেয়ার, কমেন্ট বা লাইক করার সম্ভাবনা আছে।
পোস্ট ফিল্টার করার ক্ষেত্রে আপনার পূর্বে শেয়ার করা পোস্ট, কমেন্ট, লাইক এবং কোন ব্যক্তিদের সাথে আপনি বেশি ইন্টারিয়াক্ট করছেন সেগুলো বিবেচনায় রাখে। এই প্রক্রিয়াটিকে লিঙ্কডইন “মাল্টি অবজেক্টিভ অপটিমাইজেশন” বলে।
দ্বিতীয়ত, লিঙ্কডইন (LinkedIn) কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই এলগরিদমটি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সময়মত প্রতিক্রিয়াও বিবেচনা করে। সহজ করে বললে, একটি পোস্ট প্রকাশের পর যতো দ্রুত রিয়্যাকশন বাড়বে অধিক সংখ্যক ব্যবহারকারীদের ফিডে সেই পোস্টটি প্রদর্শিত হওয়ার সম্ভাবনাও ততো বাড়বে।
আপনি একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন যে, লিঙ্কডইনের এই নতুন এলগরিদম ইন্সটাগ্রামের এলগরিদমের সাথে অনেকটাই মিলে যায়।
লিঙ্কডইনের এলগরিদমকে পরাস্থ করার ৮ টি কৌশল –
লিঙ্কডইন (LinkedIn) কর্তৃপক্ষ খুব ভালো করেই জানে যে এমন অনেকেই আছে যারা তাদের এই এলগরিদম নিয়ে রীতিমত খেলবে এবং রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করার চেষ্টা করবে। এজন্য এই প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে। লিঙ্কডইনের দেওয়া সেই পরামর্শ এবং আমার ব্যক্তিগত কিছু পরামর্শ নিয়েই এই পর্বটি সাজানো হয়েছে। চলুন শুরু করা যাকঃ
১। প্রাসঙ্গিক হোন
প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করাটা খুব সহজ মনে হলেও অতোটা সহজ না যতোটা আপনই ভাবছেন। কনটেন্ট ক্রিয়েট করার পূর্বে আপনাকে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
প্রথমেই আপনাকে আপনার অডিয়েন্সকে ভালো করে বুঝতে হবে। আপনার অডিয়েন্স কি ধরণের কনটেন্ট চাইছে বা কি টাইপের কনটেন্ট পছন্দ করছে সেগুলো আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। অডিয়েন্সের পছন্দের সম্ভাব্য একটা তালিকা করে সেগুলো ক্রস চেক করে দেখতে হবে।
আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, মানুষজন এখন প্লেইন টেক্সট পড়ার থেকে ছবি বা ভিডিও দেখতেই বেশি পছন্দ করে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ছবিসহ পোস্টগুলি টেক্সট পোস্টের চেয়ে দ্বিগুণ কমেন্ট পায় এবং ভিডিওতে প্রায় পাঁচগুণ বেশি কমেন্ট পায়।
এছাড়াও ভিডিও পোস্টগুলোতে ভিজুয়ালি একটা বিষয় খুব সহজে বুঝানো যায় বলে এতে এংগেজমেন্ট এবং ইন্টারিয়াকশনও অনেক বেশি হয়। এইসব সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করেই আপনাকে কনটেন্ট ক্রিয়েট করতে হবে।
২। পোস্ট প্রমোট করুন
আপনার পোস্টে খুব দ্রুত এংগেজমেন্ট বাড়ানোর অন্যতম সেরা উপায় হলো পোস্ট প্রমোট করা। এছাড়াও অতিরিক্ত আট্র্যাকশন অর্জনের জন্য আপনার পোস্ট রিলেটেড সংস্থা এবং সদস্যদের ট্যাগ করুন, বুঝে শুনে কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং প্রাসঙ্গিক হ্যাশট্যাগ যুক্ত করুন।
তবে ব্র্যান্ডেড হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করলে আপনার পোস্টের রিচ অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এখানে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে, পোস্ট প্রমোশন যে শুধুমাত্র লিঙ্কডইনেরই হতে এমন কিন্তু না। পোস্টের উপর ভিত্তি করে ইউজার টার্গেট করে অন্যকোন প্ল্যাটফর্ম থেকেও প্রমোট করতে পারেন। নতুন এলগরিদম অনুযায়ী এতে করে আপনার র্যাংকিংয়ে উন্নতি হবে।
৩। এংগেজমেন্টে উৎসাহিত করুন
যেসব পোস্টে এংগেজমেন্ট বেশি লিঙ্কডইন অটোমেটিকালি সেই পোস্টগুলো আরও বেশি মানুষের ফিডে ছড়িয়ে দেয়। বিশেষ যেসব পোস্ট ব্যবহারকারীদের “কথোপকথন” করতে উৎসাহিত করে। আপনার পোস্টের মধ্যে এমন কিছু রাখুন যা অডিয়েন্সকে ভাবাতে বাধ্য করে অথবা এমন কোন প্রশ্ন রাখুন যার উত্তর অডিয়েন্স সানন্দে দিতে চায়।
আর আপনি যদি আপনার অডিয়েন্সের সাথে এংগেজড থাকতে চান তাহলে অবশ্যই তাদের সাথে কমেন্টে প্রাসঙ্গিক কথা বলতে হবে এবং তাদের কোন প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে সেগুলোর উত্তর দিতে হবে।
এই ব্যাপারগুলো আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করে এবং অডিয়েন্সের মধ্যে আপনার সম্পর্কে আরও জানার আগ্রহ তৈরি করে।
৪। পাঁচমিশালি জিনিস নাকি নির্দিষ্ট নিশ
এই টিপসটি লিংডইন কর্তৃপক্ষ নিজেরাই শেয়ার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ডিরেক্টর অফ প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট পিট ডেভিস বলেছেন, “আমাদের কাছে থাকা ডাটা বিশ্লেষণ করে আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের ব্যবহারকারীরা তাদের আগ্রহের বিষয়গুলোর আরও গভীরে যেতে পছন্দ করে। এর নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক পোস্টগুলোতে আমরা অধিক কনভারসন রেট খেয়াল করেছি”।
কিন্তু নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক পোস্ট করার আগে প্রাসঙ্গিকতার ব্যাপারটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন। অপ্রাসঙ্গিক কোনকিছু নিয়ে ধারাবাহিক বা ইন ডেপথ কনটেন্ট বানিয়েও কোন লাভ কিন্তু হবে না।
আপনার নিশভিত্তিক ব্র্যান্ডেড হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। সেজন্য আপনাকে আপনার নিশ রিলেটেড হ্যাশট্যাগগুলো খুঁজে বের করতে হবে। তবে এর মানে এই না যে জেনেরিক হ্যাশট্যাগগুলোকে একেবারেই উপেক্ষা করবেন। ওহ, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাই বলা হলো না।
লিঙ্কডইন (LinkedIn) প্রতি পোস্টে সর্বোচ্চ তিনটি হ্যাশট্যাগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। আপনি চাইলে ইচ্ছামতো হ্যাশট্যাগ দিতে পারবেন। কিন্তু ভালো রেজাল্ট পেতে হলে তিনটি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করাই উত্তম।
নতুন এলগরিদমে লিঙ্কডইনের প্রতি পোস্টে তিনটি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা ভাল
৫। সঠিক সময়ে সঠিক পোস্ট
আজকের লেখায় এর আগেও একবার উল্লেখ করেছি যে, আপনার পোস্টে যত দ্রুত বেশি বেশি লাইক এবং কমেন্ট আসা শুরু করবে লিঙ্কডইন (LinkedIn) আপনার পোস্টকে ততো বেশি মানুষের ফিডে ছড়িয়ে দেবে। অর্থাৎ র্যাংক করাবে। সর্বনিম্ন সময়ে সর্বোচ্চ সাড়া পেতে হলে আপনাকে সেই সময়টাতেই পোস্ট করতে হবে যখন আপনার অডিয়েন্সের মধ্যে বেশিরভাগ অনলাইনে থাকে।
হটসুয়েটের তথ্যমতে লিঙ্কডইনে পোস্ট করার সর্বোত্তম সময় নিচে উল্লেখ করা হলো-
পশ্চিমা সময় অনুযায়ী সকালে ৭ঃ৪৫ টা থেকে ১০ঃ৪৫ , দুপুরে ১২ঃ৪৫ এবং বিকেলে ৫ঃ৪৫ মিনিট।
বিজনেস টু বিজনেস ব্র্যান্ডগুলোর পোস্ট দেওয়ার সেরা সময় হলো বুধবার।
বিজনেস টু কাস্টোমার ব্র্যান্ডগুলোর জন্য পোস্ট দেওয়ার সেরা সময় হলো সোমবার এবং বুধবার।
তবে এই সময়ের উপর শতভাগ নির্ভর হয়েই যে পোস্ট করা শুরু করবেন এমনটাও কিন্তু না। আপনার নিজস্ব অডিয়েন্স এবং টাইম জোনের সামঞ্জস্য রেখে নিজে নিজেই পোস্ট করার সবচেয়ে ভালো টাইমগুলো যদি খুঁজে বের করতে পারেন তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়।
৬। কৌশলগত ভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি এবং বৃদ্ধি
এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটিতে সাফল্যের মূলে হলো আপনার কানেকশন এবং প্রাসঙ্গিকতা বা রিলেভেন্সি। এখানে আপনার পটেনশিয়াল এবং কার্যকর একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হলে আপনাকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ
আপনার পার্সোনাল প্রোফাইল এবং পেজ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পূরণ করুন এবং এগুলো নিয়মিত আপডেট রাখুন।
কানেকশন বাড়ান (যাদেরকে আপনি চিনেন এবং যাদের প্রতি আপনার আগ্রহ কাজ করে)
আপনার এমপ্লয়িদের প্রোফাইলে আপনার কোম্পানিতে কাজ করে এই তথ্য দিতে এবং পোস্টে কোম্পানির হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে উৎসাহিত করুন।
অন্যদের ফলো করুন এবং নিজের ফলোয়ার বাড়াতে মনোযোগ দিন।
আপনার ইন্টারেস্ট বেজড গ্রুপগুলোতে এড হন এবং যদি সম্ভব হয় নিজের নিশ রিলেটেড গ্রুপ খুলে সেখানে মেম্বার বাড়াতে থাকেন।
আপনার প্রোফাইলটি সবসময় পাবলিক রাখুন, যাতে আপনাকে অন্যরা খুঁজে পায়।
পোস্টগুলোতে প্রাসঙ্গিক কমেন্ট করুন এবং আপনার কানেকশনদের সাথে এংগেজমেন্ট বাড়াতে চেষ্টা করুন।
আপনার প্রোফাইলটি আপনার ওয়েবসাইট বা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।
যদি সম্ভব হয় তাহলে LinkedIn Showcase page ক্রিয়েট করুন।
৭। লিঙ্কডইন এনালিটিক্সের ব্যবহার
আপনার কোন পোস্টে যদি ভালো রেজাল্ট আসে তাহলে অনুরূপ আরেকটি পোস্ট তৈরি করুন। লিঙ্কডইন এনালিটিক্স ব্যবহার করে দেখার চেষ্টা করুন কেনো এই পোস্টটি এতো ভালো পারফর্ম করছে। নির্দিষ্ট কোন সময়ে আপলোড দেওয়ার জন্য নাকি পোস্টে কোন প্রশ্ন রেখেছিলেন যার উত্তর দিতে ব্যবহারকারীরা আগ্রহী ছিলো, এসব বিষয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। এই বিষয়গুলো বের করে বিশ্লেষণ করলে আপনি বুঝে যাবেন আপনার অডিয়েন্স কোন ধরণের কনটেন্ট কোন সময়ে পছন্দ করছে।
৮। স্বকীয়তা বজায় রাখা
লিঙ্কডইন (LinkedIn) মতে, বিশ্বাসযোগ্যতা হলো সাফল্যের মূল চাবি। প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র অফ প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডেভিস বলেন, রিয়েল এক্সপেরিয়েন্স থেকে জেনুইন একটা পোস্ট করা হলে সেটার গ্রহণযোগ্যতা অবশ্যই বেশি হবে।
রিয়েল এক্সপেরিয়েন্স থেকে যারা কনটেন্ট ক্রিয়েট করেন তাদের কমিউনিটি এবং নেটওয়ার্ক অনেক স্ট্রং হয়। তাই যা করছেন নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তা নিয়েই কনটেন্ট তৈরি করুন। আপনার স্কিল নির্ভর অডিয়েন্স ক্রিয়েট করার চেষ্টা করুন।
Comments (No)