Android Cartoon Apps (মোবাইল দিয়ে কার্টুন তৈরি)
সত্যিই কি মোবাইল দিয়ে কার্টুন তৈরি করা সম্ভব? যদি সম্ভব হয়, তাহলে কার্টুন ভিডিও কিভাবে তৈরি করবেন? আজকে সে বিষয়েই পূনাঙ্গ আলোচনা করবো যে, কিভাবে আপনি আপনার হাতে থাকা এন্ড্রয়েড ফোনের সাহায্য কার্টুন ভিডিও তৈরি করবেন।
স্বাগতম আপনাকে টোটো বাংলার একটি নতুন এপিসোডে।বর্তমানে কার্টুন ভিডিও দেখতে ভালোবাসে না।এমন মানুষ খুজে পাওয়া মুশকিল। কথায় আছে, আট থেকে আশি, সব বয়সের মানুষরাই কার্টুন দেখতে ভালোবাসি।
আর এ কার্টুনের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আপনার মনেও সেরকম কার্টুন বানানোর ইচ্ছা জাগতেই পারে।এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।আর সেই কার্টুন ভিডিওগুলো যদি আপনি আপনার কাছে থাকা Android ফোন দিয়েই করতে পারেন।তাহলে ব্যাপারটা আরও সহজ হয়ে যায়, তাইনা?
অনলাইন কিংবা Google Play Store এ মোবাইল দিয়ে কার্টুন বানানোর অনেক Apps পাবেন।কিন্তু সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ Apps গুলো ভুয়া।আবার সেগুলো তেমন একটা প্রফেশনাল মানের না।তবে কিছু কিছু এপস আছে,সেগুলোতে কার্টুন বানাতে পারবেন।সেই এপসগুলোর সাহায্য প্রফেশনাল মানের কার্টুন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।কিন্তু সমস্যা হলো,এই এপস গুলো পেইড ভার্সন।মানে টাকা দিয়ে সেই এপসগুলো ব্যবহার করতে হবে।
💡Tips: তবে আজকে আপনাদের যে এপসগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো।সেগুলো সম্পূর্ন ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। আর আপনার ফোনে মোটামুটি ১ জিবি র্যাম হলেই যথেষ্ট।
আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে কিভাবে প্রফেশনাল কার্টুন ভিডিও/এনিমেশন তৈরি করবেন।সে বিষয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো ।যা আপনার কার্টুন বানানোর ই্চ্ছাকে অনেকটাই সহজ করে তুলবে।
সত্যি কথা বলতে আমাদের সবার মাঝেই কিছু না কিছু প্রতিভা থাকে। কিন্তু সবাই তা প্রকাশ করতে পারিনা।আর প্রতিভা যে প্রকাশেই বিকশিত হয়।সেটা তো ভালোভাবেই জানেন।
যদি আপনার ভেতরে তেমন কোনো প্রতিভা থাকে এবং আপনি আপনার প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য ক্যামেরার সামনে আসতে পারছেন না।আবার আসলেও ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। মনে মনে যা ভাবেন, সেই ভাবনাকে উপাস্থাপন করতে খুব কঠিন মনে করছেন।তাহলে আমি বলবো আপনার জন্য এনিমেশন/কার্টুন ভিডিও নিয়ে কাজ করাই হবে উওম পন্থা।
পাশাপাশি যদি আপনি একজন ইউটিউবার হয়ে থাকেন। তাহলে ইউটিউব ক্যারিয়ারে সাফল্য এনে দিতে পারবেন কার্টুন ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমেই।
বলা বাহুল্য যে, কম্পিউটারে এনিমেশন বানানোর জন্য বিভিন্ন কোর্স এবং অনেক সময় ব্যায় করতে হয়।কিন্তু আমরা তো তার কোনোটাই করতে আগ্রহী নই।কারন, আমরা সবসময় শর্টকার্ট রাস্তা থেকে ইনকাম করতে ভালোবাসি।
তাই আপনাদের বিষয়টি মাথায় রেখে আজকের পোষ্টে এমন ৮ টি মোবাইল এপস নিয়ে আলোচনা করবো।যা দিয়ে আপনি খুব সহজেই ও স্বল্প সময়েই ভালো মানের কার্টুন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
1. Plotogan
কার্টুন এনিমেশনের জন্য সবচেয়ে ভালো ও সহজ এপ হলো প্লোটাগন।এই এপটি আপনি পেইড ভার্সন এবং ফ্রি ভার্সন দুটিই পাবেন।একটি Plotogan Story আর আরেকটি Plotogan Education.আপনি যে কোনো একটা ব্যবহার করতে পারেন আপনার সুবিধামতো।Plotogan এপটির বিশেষত্ব হলো,এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ভালো মানের এনিমেশন,কার্টুন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
💡Tips: যদি আপনি পেইড ভার্সনের সুবিধা পেতে চান।তাহলে প্লোটোগন এপস এর মুড ভার্সন ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন।
এছাড়াও এই এপসটিতে এমন অনেক উপকরন পাবেন যা আপনার কার্টুন তৈরির ধারনাকে আরও সহজ করে তুলবে।যেমন,Plotogan তাদের নিজস্ব কিছু ক্যারেক্টার আছে,অনেক প্রকার ইমোশন এবং একশন পাবেন।
প্লোটাগন এপসটির সবচেয়ে ভালো দিক হলো আপনি চাইলে নতুন নতুন ক্যারেক্টার,ব্যাকগ্রাউন্ডের স্কিন,ইমোশন নেট কানেকশনের মাধ্যমে ডাউনলোড করতে পারবেন।
আপনি চাইলে এই এপটির মধ্যে আপনার ভয়েজ রেকর্ড করে ডায়লগ যোগ করতে পারবেন।প্লোটাগন এপটি নেট কানেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় বলে,প্লোটাগন এপটিকে বিভিন্ন ভাষাতে ব্যবহার করার সুবিধা পাওয়া যায়।
2.Toontastic 3D
আমাদের দ্বিতীয় এপটির নাম হলো,টুনটেষ্টিক থ্রিডি।এই এপটি মূলত গুগল কোম্পানির।Toontastic 3D এপটি সাধারনত ছোট বাচ্চার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।যার কারনে এই এপটি ব্যবহার করা অনেক সহজ মনে হতে পারে।প্লোটাগনের মতো Toontastic 3D এপেও কার্টুন বানানোর বিভিন্ন উপকরন পাবেন।
বিভিন্ন নজর কাড়ানো সিন,ক্যারেক্টার,ইমোশন ও একশনে একটা পরিপূর্ণ এপস।আপনি চাইলে ক্যারেক্টারের মাধ্যমে আপনার রেকর্ড করা ভয়েজ ডায়লগ হিসেবে হিসেবে যোগ করতে পারবেন।তবে প্লোটাগনের মতো টুনটেষ্টিক থ্রিডি এপকে বিভিন্ন ভাষাতে ব্যবহার করতে পারবেন না।
এই এপটি গুগল প্লে স্টোরে ৪.৫ রেটিং এবং ১ মিলিয়নের উপরে ডাউনলোড হয়েছে।তাই এসব থেকে বলা যায় মোবাইল থেকে কার্টুন ভিডিও তৈরির জন্য Toontastic 3D এপটিও মানসম্মত।আপনি চাইলে এই এপটিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
3.Jerkey Motion
আমাদের তৃতীয় এপ হলো জারকি মোশন।উপরে আলোচিত অন্যান্য এপসগুলোর থেকে এই এপটি একটু আলাদা।Jerkey Motion এপটির মূল বিশেষত্ব হলো,আপনি এই এপটিতে প্রফেশনালি বড় বড় এনিমেশন সফটওয়্যারের মতো অনেক ছোট ছোট বিষয়গুলো ধরে ধরে কাজ করতে পারবেন।
যেমন,ক্যারেক্টারের চলাফেরা করা,ক্যারেক্টারের কথা বলার ভঙ্গি,ডায়লগ অনুযায়ী ইমোশন।তাই নতুন অবস্থায় এই এপটিকে ব্যবহার করাটা একটু কঠিন মনে হতে পারে।
তবে আপনাকে এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার করা দরকার যে,Jerkey Motion এপটিতে ,প্লোটাগনের চেয়ে কিছু উপকরন কম পাবেন।
তারপরও আপনি এই এপটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।এমনও তো হতে পারে এই এপে এমন কিছু পাবেন যা আপনার অন্য কোনো ভিডিওতে কাজে লাগতে পারে।
4.Anim 8
আমাদের চতুর্থ এপটি হলো,এনিম ৮।অন্যান্য এপগুলোর মতো Anim 8 এপটিও বেশ জনপ্রিয়।প্লে স্টোরে এই এপটি একশ হাজরের বেশি ডাউনলোড হয়েছে এবং এর রেটিং ৪.৬।উপরে আলোচিত অন্যান্য এপগুলোর মতো Anim 8 ও ব্যবহার করা সহজ।
Anim 8 কোম্পানি তাদের ইউজারদের সহজে ব্যবহার করার দিকটা বেশি নজর দিয়েছেন।যার ফলে এনিম ৮ এপটিতে নির্দিষ্ট কিছু ফিচারের মধ্যে আপনাকে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।যা আমাদের জন্য প্রধান সমস্যা।
এই এপটিতে আপনি কোনো ক্যারেক্টার যোগ করতে পারবেন না,পাশাপাশি কোনো প্রকার ডায়লগ,ইমোশন,একশন যোগ করতে পারবেন না।যেটা আমার কাছে সবচেয়ে খারাপ লেগেছে।তবে আপনি এই এপটিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
5.Animate It
আমাদের পঞ্চম এপটির নাম হলো এনিমেট ইট।সবার আগে এই এপটির রেটিং আর ডাউনলোড সম্পর্কে বলে নেই।আমাদের পরিচিত গুগল প্লে স্টোরে এই এপটি ডাউনলোড হয়েছে ৫ মিলিয়ন আর এই এপটির রেটিং ৪.৮।বুঝতেই পারছেন এই এপটা কতটা জনপ্রিয়।
আপনি যেন আপনার কার্টুন ভিডিওকে মানসম্মতভাবে সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারেন।সেদিকে এই এপের কোম্পানি বিশেষভাবে খেয়াল রেখেছে ।এই এপের মাধ্যমে আপনি আপনার কার্টুন ভিডিওতে ভিন্নধর্মী সিন,ক্যারেক্টার আর অবজেক্ট পাবেন।যা আপনার কার্টুন ভিডিওকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য যথেষ্ট।
Animate It এপের বিশেষ গুন হলো,এনিমেট ইটে প্রফেশনাল টাইপের কিছু টুলস আছে ।যার মাধ্যমে সঠিকভাবে ক্যারেক্টারকে উপস্থাপন করতে পারবেন।তবে Animate It এ্যাপসে কিছু কিছু প্রফেশনাল টাইপের টুলস থাকার কারনে নতুন অবস্থাতে আপনাকে কঠিন মনে হতে পারে।
এনিমেট ইটের অসুবিধা হলো, এখানে কোনো ক্যারেক্টার,সাউন্ড ইফেক্ট এবং অবজেক্ট যুক্ত করতে পারবেন না।যেটা আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগেনি।তবে শেখার উদ্দেশ্যে, আপনি চাইলে এই এপটিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
6.Animate Me
আমাদের ষষ্ঠ এপটির নাম হলো এনিমেট মি।এই এপটিও মূলত বাচ্চাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।Animate Me এপটিতে ফ্রেম বাই ফ্রেম বা স্টপ মোশন এনিমেশন বানাতে পারবেন।এই এপটি গুগল প্লে স্টোরে ১০০ হাজারের বেশী ডাউনলোড হয়েছে।পাশাপাশি প্লে স্টোরে এর রেটিং ৩.৩
7.Make Joke Of
আমাদের সপ্তম এপের নাম হলো মেক জোক অফ।সত্যি কথা বলতে এই এপটির নামটা অনেক মজার ,তাইনা?
আসল বিষয় হলো এই নামটি এসেছে একটি ইউটিউব চ্যানেলের নাম অনুসারে।প্লোটাগনের মতো এই এপেও আপনি আপনার ভয়েজ প্রদানের মাধ্যমে হাসির কার্টুন ভিডিও তৈরি করতে পরবেন।
সবচেয়ে ভালো দিক হলো এই এপটি তৈরি করেছে কার্টুন সফটওয়্যারের সবচেয়ে বড় কোম্পানি Meya. তাই এই এপটিতে এমন অনেক ফিচার পাবেন যা দিয়ে আপনি খুব ভালো মানের ভিডিও কোয়ালিটি সহো কার্টুন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।তাই আপনি এই এপটি ব্যবহার করে দেখতে
পারেন।
8.MJOC 2
আমাদের অষ্টম এপ এবং সর্বশেষ এপটি হলো এমজেওসি টু।এই এপটিকেও আমি ভালো বলবো কারন,এই এপে আপনি অনেক প্রকার সিন,ক্যারেক্টার,একশন,অবজেক্ট পাবেন।গুগল প্লে স্টোরে এই এপটি ১০০ হাজারের বেশী ডাউনলোড হয়েছে আর এর রেটিং ৩.৫ থেকে ৪.১ হয়েছে।তাই আপনি এই এপটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
আজকের পোষ্ট এখানেই শেষ।আশা করি পোষ্টটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে।এই পোষ্টটি যদি সামান্যতম আপনার উপকার হয়ে থাকে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।
আমাদের আলোচিত এপগুলোর বাইরে যদি কোনো ভালো Android Cartoon Apps থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।আমরা আমাদের পোষ্টকে আপডেট করার চেষ্টা করবো।