Google Meet, Messanger Room নাকি Zoom ,কোনটি সেরা?,করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমান পৃথিবী সামাজিক দূরত্বের পৃথিবী। কিন্তু তাই বলে কি মানুষ সামাজিক হবে না? তাই বলে কি দূরত্ব এক অমোচনীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে? না, কিছুতেই নয়। অন্তত টেকনোলজির এই রমরমা যুগে দূরত্ব যতোই হোক, মানুষের কাছে থাকার নানা উপায় ঠিকই আছে।গত দুই মাসে ভিডিও কলিং সেবার এক রকম চরম উত্থান ঘটেছে। জুম, Google Meet এবং মেসেঞ্জার রুম; কয়েক মাসের ব্যবধানে এই তিনটি সেবা এখন প্রায় সবার ফোনেই ইন্সটল করা হয়ে গেছে।
গত দুই মাসে ভিডিও কলিং সেবার এক রকম চরম উত্থান ঘটেছে। জুম, Google Meet এবং মেসেঞ্জার রুম; কয়েক মাসের ব্যবধানে এই তিনটি সেবা এখন প্রায় সবার ফোনেই ইন্সটল করা হয়ে গেছে। এই অ্যাপগুলো বাড়িতে বসে থাকার সময়ে লোকজনকে কাছের মানুষের সাথে যোগাযোগ সহজ করে দিয়েছে। সামাজিক দূরত্বের বাস্তবতা মেনেই সবাই ভিডিও কলে দেখে নিতে পারছেন পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের মুখ। শুনতে পারছেন কণ্ঠ।
কিন্তু এতো সেবার ভিড়ে সঠিকটি বাছাই করে নেওয়া আসলেই কঠিন। কারণ কোনোটির আছে টাইম লিমিট, কোনোটিতে নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি লোককে যোগ করা যাবে না, কোনোটির আছে হিডেন কস্ট, কোনোটির আবার নিরাপত্তা ত্রুটি। সব দিকে পারফেক্ট একটি ভিডিও কলিং অ্যাপ তাই খুঁজে নেওয়া বেশ কঠিন।
Google Meet
আপনি যদি সব সময় প্রতিষ্ঠিত ব্রান্ডের সেবা নিয়ে আসক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য ভিডিও কলিংয়ের সেরা অপশন হলো গুগল মিট। এটি মূলত গুগল হ্যাংআউটের উন্নত সংস্করণ। এতোদিন পর্যন্ত গুগল মিটের সেবা টাকা দিয়ে কিনতে হতো। কিন্তু ভিডিও কলের প্রচুর চাহিদার কথা খেয়াল করে গুগল সেবাটি ফ্রি করে দিয়েছে।
গুগল মিটে সর্বোচ্চ ১০০ জনকে যোগ করে ভিডিও কল করা যাবে। অর্থাৎ আপনার বন্ধুদের পুরো সার্কেলকে এক সাথে পেয়ে যাবেন এই সেবার মাধ্যমে। এ ছাড়া অফিসের জরুরি মিটিংও সেরে ফেলা যাবে গুগল মিটের বিশাল দুনিয়ায়।
জুমের মতো গুগল মিটে টাইম লিমিট নেই। এ ছাড়া স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের সেবাও আছে। চাইলে কি-বোর্ড চাপার খটখট আওয়াজ ফিল্টারিং করার ব্যবস্থাও রেখেছে গুগল। সব মিলিয়ে ভিডিও কলিংয়ের বাজারের এক নম্বর অ্যাপ হওয়ার সমস্ত যোগ্যতাই আছে গুগল মিটের। আর এটি ফোন বা কম্পিউটার; দুই ধরনের স্ক্রিনেই ব্যবহার করা যাবে।
সাথে আছে গুগলের প্রাইভেসি। অর্থাৎ জুমের বিরুদ্ধে ডাটা লিক হওয়ার যে অভিযোগ এসেছে, গুগলের কাছ থেকে সে রকম কিছুর আশঙ্কা খুবই কম।
মেসেঞ্জার রুম
ভিডিও কলিংয়ের রমরমা সময়কে উপভোগ করতে ফেসবুক তাদের মেসেজিং সেবা মেসেঞ্জারে যোগ করেছে নতুন ফিচার- মেসেঞ্জার রুমস। এর মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারি সর্বোচ্চ ৫০ জনকে যোগ করে ভিডিও কল করতে পারেন।
সম্প্রতি ফেসবুক জানিয়েছে, মেসেঞ্জারে ভিডিও কলের পরিমাণ অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। ফলে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে মেসেঞ্জারে রুমস নামের ফিচারটি যোগ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির যদি মেসেঞ্জার অ্যাকাউন্ট নাও থাকে, তারপরও কলের নির্দিষ্ট ইউআরএল লিংকে ক্লিক করে সেবাটি পাবেন।
কিন্তু ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ডাটা লিক হওয়ার আশঙ্কার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। আপাতত মেসেঞ্জার রুম পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড নয় এবং এতে ডাটা ইনক্রিপশন নেই। ফলে আপনি যে কথা বলছেন বা ভিডিও করছেন, তা তৃতীয় কোনো পক্ষের হাতে চলে যেতে পারে। যদিও সেই আশঙ্কা খুবই কম। তারপরও এই ত্রুটিটুকু আছে।
জুম
ভিডিও কলিং সেবায় ঝড় তোলা অ্যাপের নাম জুম। করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন শুরু হওয়ার পরপর জুম এতো বেশি ব্যবহার শুরু হয়েছে যে, এক রকম বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের জনপ্রিয়তার ধাক্কায়ই ফেসবুক ও গুগল যার যার নিজস্ব ব্যবস্থায় নতুন অ্যাপ আনা শুরু করে। Online income tunes
কিন্তু জুমের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার জুমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বেশির ভাগ অভিযোগে বলা হয়েছে, ভিডিও কলের সময় একজন ব্যবহারকারির ক্যামেরা যা দেখা যাচ্ছে না, অন্য জনকে জুম এমন জিনিসও দেখিয়েছে। অর্থাৎ, আপনি একটি বাগানে বসে আপনার বন্ধুকে জুমে কল করেছেন, কিন্তু আপনার বন্ধু দেখতে পাচ্ছে একটা ক্রিকেট ম্যাচ!
এই ধরনের ত্রুটির কারণে জুম সম্প্রতি একটি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সাথে একশ দিনের চুক্তি করেছে। এই চুক্তির আওতায় তারা সমস্ত ত্রুটি সারিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অনেকে জুম বাদ দিয়ে মেসেঞ্জার ও গুগল মিটের সেবা নেওয়া শুরু করেছেন। অবশ্য সহজ হওয়ার কারণে অনেকে জুমেই থেকে যাচ্ছেন।
এখন পর্যন্ত এটি দুঃখজনক যে, গ্রুপ ভিডিও কলিংয়ের জন্য পারফেক্ট কোনো সেবা আপাতত নেই। কিন্তু গুগল মিট, মেসেঞ্জার রুম ও জুম ভালোভাবেই চাহিদা মেটাতে পারছে। সবচেয়ে বড় কথা, লকডাউনের সময়ে আপনার একাকিত্ব দূর করতে এই সেবাগুলো অতুলনীয়।
Comments (No)