এই আর্টিকেলটি অনেকটা FAQ টাইপ, এখানে আর্টিকেল নিয়ে বেশ কিছু সম্ভাব্য প্রশ্ন যেগুলো প্রায়ই জিজ্ঞেস করা হয় সেগুলোর উত্তর নিয়ে সাজানো।
খুব বেশি ডিটেইলসে আলোচনা করিনি। অল্প কথায় যেখানে যা বুঝানো যায় সেভাবেই চেষ্টা করেছি। মূলত নতুনদের উদ্দেশ্যেই লেখা, তাই যতটা সম্ভব সাদামাটা করে লিখেছি, কোনরকম টেকনিকাল টার্মস ব্যবহার করিনি।
এক নজরে বিস্তারিত:
- 1) আমি কোত্থেকে আর্টিকেল লিখাবো?
- 2) আর্টিকেল রাইটার হিসেবে বাংলাদেশিরা কেমন?
- 3) আর্টিকেলে কিওয়ার্ড ডেনসিটি কেমন থাকবে?
- 4) প্রতি হাজার শব্দের জন্যে কতো পে করবো?
- 5) আর্টিকেল লেখানোর জন্যে কোন ফরম্যাট ব্যবহার করবো?
- 6) আর্টিকেল কপি/ প্ল্যাগারাইজড কিনা কিভাবে বুঝবো? ইউনিকনেস কিভাবে টেস্ট করবো?
- 7) আমি কি নিশ সাইটে স্পিন করা আর্টিকেল ব্যবহার করতে পারবো?
- 8) আর্টিকেলে ব্যবহার করার জন্যে ইমেইজ কোথায় পাবো?
- 9) আমি আর্টিকেলে অন্য কারও ইউটিউব ভিডিও ব্যবহার করতে পারবো?
- 10) নিশ সাইটে কতোগুলো আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে?
- 11) আর্টিকেল কি পোস্ট আকারে দিবো না পেইজ আকারে?
- 12) আপনি কি আমাকে কোন রাইটার সাজেস্ট করতে পারেন?
১) আমি কোত্থেকে আর্টিকেল লিখাবো?
কেউ একটা সাক্সেস স্টোরি শেয়ার করলে তাকে কিছু কমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে নতুনরাই এই প্রশ্ন করে।
- আর্টিকেল কোত্থেকে নিয়েছেন?
- ভাই কি নিজে লিখছেন না কাউকে দিয়ে লিখাইছেন?
- কতগুলা আর্টিকেল পোস্ট করছেন?
- মেইন কিওয়ার্ডের আর্টিকেল কতো বড়?
উত্তর – যে লোক এই ধরণের প্রশ্ন করে সে কম বেশি সব সাক্সেস স্টোরিতেই সেইম প্রশ্ন করবে। এর মূল কারণ সে কনফিউজড যে আসলে কোথা থেকে কন্টেন্ট নিলে তার টাকা মার যাবেনা।
তার চিন্তা-ভাবনা নিঃসন্দেহে ভালো।
কিন্তু “প্যারালাইসিস বায় অ্যানালাইসিস” বলে একটা কথা আছে, তার সেটাই হয়ে যায়।
একজন বলে আম ভালো, আরেকজন বলে জাম ভালো। এখন সে কনফিউজড আম আর জাম এর মধ্যে কোনটা নিবে।
এই দুইটা নিয়ে কনফিউজড থাকা অবস্থায় আবার আরেকজনের পোস্টে উত্তর হিসেবে পায় স্ট্রবেরি, এবার সে তিনটা নিয়েই কনফিউজড।
তার উপর এদিক সেদিক থেকে অনেকেই তাকে মেসেজে জানাচ্ছে সে সস্তায় কন্টেন্ট দিতে পারবে, ৩ ডলার, ৫ ডলারে ১০০০ শব্দ।বেচারা আর যায় কই, সে আবার কনফিউজড।
আল্টিমেটলি দিনের পর দিন চলে যায় তার আর কাজ শুরুই করা হয়না।
কন্টেন্ট নেয়ার জন্যে অনেকগুলো মার্কেটপ্লেস আছে, আপনি চাইলে এর যেকোনোটা থেকেই কন্টেন্ট নিতে পারেন। বাজেট আর ইন্ট্রাকশন এই দুইটা ভালো হলে যেকোনো মার্কেটপ্লেস থেকেই ভালো কন্টেন্ট পাবেন।
আইরাইটার (আইরাইটার থেকেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কন্টেন্ট নিয়েছি, আমার পার্সোনাল রাইটারদের বেশিরভাগকেই এখান থেকেই পেয়েছি), টেক্সটব্রোকার, আপওয়ার্ক, হায়াররাইটার্স, ফ্রিল্যান্সার ডট কম এরকম বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে আপনি আর্টিকেল নিতে পারেন।
শুধু একটাই অনুরোধ, সস্তা কন্টেন্ট নিয়ে হুদাই টাকা নষ্ট করবেন না। কন্টেন্ট আপনার ব্যবসার এসেট, এটা খারাপ হলে সেলও পাবেন না, র্যাংকও না। তাই কন্টেন্টে ইনভেস্ট করুন, দিনশেষে এর ফল আপনিই ভোগ করবেন।
সস্তা কন্টেন্ট কেনা আর বস্তাভরে টাকা গঙ্গাবুড়ির উপর ফেলে আসা একই কথা।
২) আর্টিকেল রাইটার হিসেবে বাংলাদেশিরা কেমন?
ডিপেন্ড করে। ভালো রাইটার সব দেশেই আছে, খারাপ রাইটারেরও তেমনই অভাব নেই।
আমাদের এখানেও ভালো-মন্দ দুই ধরণের রাইটারই আছে। কে কেমন সেটা যাচাই করতে আপনাকে লেখার মান বুঝতে পারতে হবে। তা নাহলে নেটিভ আমেরিকান আপনাকে থার্ড ক্লাস আর্টিকেল দিলেও বুঝবেন না আবার বাংলাদেশি আপনাকে টপ ক্লাস আর্টিকেল দিলেও বুঝবেন না।
নিজে যেন বুঝতে পারেন সেরকম লেভেলে নিয়ে যান, এরপর আপনি নিজেই বুঝবেন কোয়ালিটি আর কেমন।
সেইফ সাইডে থাকার জন্যে মার্কেটপ্লেসে ভালো রিভিউ আছে এমন কাউকে হায়ার করতে পারেন।
৩) আর্টিকেলে কিওয়ার্ড ডেনসিটি কেমন থাকবে?
কিওয়ার্ড ডেনসিটি নিয়ে মাথা না ঘামানোটাই সবচেয়ে ভালো। রাইটারকে বলে দিবেন, আমি কোন এসইও আর্টিকেল চাইনা। কিওয়ার্ড ডেনসিটি নিয়ে ভাবতে হবেনা। ন্যাচারালি যেখানে আসে সেখানে থাকবে।
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশনের জন্যে যেহেতু ৩-৫ ওয়ার্ডের হয় একটা কিওয়ার্ড তাই ০.৩-০.৪% ডেনসিটিও অনেক বেশি হয়ে যায় ক্ষেত্র বিশেষে।
যদি ৩০০০ শব্দের একটা আর্টিকেল হয়, তাহলে সেখানে ৩-৫ বারের বেশি দরকার নেই কিওয়ার্ড।
৫ হাজারে ৫-৭ বারের বেশি দরকার নেই। ছোট কিওয়ার্ড হলে সমস্যা ছিলনা, যেহেতু কিওয়ার্ড ৩ ওয়ার্ড বা তার বেশি শব্দের হয়, তাই কম রাখতে হবে।
৪) প্রতি হাজার শব্দের জন্যে কতো পে করবো?
সস্তার তিন অবস্থা বলে একটা কথা আছে।
অনলাইনে সস্তা আর্টিকেল নিতে গেলে চৌদ্দ অবস্থা হয়ে যাওয়ারও একটা সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আবার বেশি রেট মানেই যে ভালো আর্টিকেল হবে সেটাও না। দেখে নিতে হবে আরকি।
এভারেজ ভালো মানের আর্টিকেলের জন্যে প্রতি হাজারে অন্তত ১০-১২ ডলার পে করা বাঞ্ছনীয়।
আর এর থেকে আরও ভালো মানের জন্যে ১৮-২৫ ডলার পে করা যেতে পারে। এই রেটে নেটিভ রাইটারও পাওয়া যায় ক্ষেত্রবিশেষে।
৫) আর্টিকেল লেখানোর জন্যে কোন ফরম্যাট ব্যবহার করবো?
নির্দিষ্ট কোন ফরম্যাটই ব্যবহার করতে হবে এমন না। আপনার যেভাবে খুশি আপনি সেভাবে সুন্দর করে একটা আর্টিকেলকে সাঁজিয়ে নিতে পারেন।
৫-১০টা নিশ সাইট দেখেন, যদি কোন ফরম্যাট আপনার পছন্দ হয় সেখান থেকে একটা ফরম্যাট আপনি আপনার সাইটে ব্যবহার করেন।
আমি নির্দিষ্ট কোন ফরম্যাট দিলাম না কারণ ম্যাসিভ ভাবে ইউজ হবে আর সব একই স্টাইলে সাইট তৈরি হবে
৬) আর্টিকেল কপি/ প্ল্যাগারাইজড কিনা কিভাবে বুঝবো? ইউনিকনেস কিভাবে টেস্ট করবো?
প্ল্যাগারিজম চেক করার জন্যে কপিস্কেপ সবচেয়ে ভালো টুল। ২০০ প্রিমিয়াম সার্চ করা যাবে মাত্র ১০ ডলার খরচ করেই।
এছাড়া স্মল এসইও টুলস এর ফ্রি প্ল্যাগারিজম চেকার আছে। এটাও বেশ ভালো, ক্ষেত্রবিশেষে হঠাত ফলস প্ল্যাগারিজম দেখায়, সেক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি চেক করে নিতে হবে একটূ।
আর এছাড়া নিজে আর্টিকেলের অল্প ১-২ লাইন কপি করে কমা কোটেশন এর ভিতরে দিয়ে গুগলে সার্চ করতে হবে, একইভাবে আর্টিকেলের ২-৩ জায়গা থেকে কপি করে সার্চ করলে কোন সার্চ রেজাল্ট হুবহু না পেলে কন্টেন্ট ওকে আছে বলে ধরে নেয়া যাবে।
৭) আমি কি নিশ সাইটে স্পিন করা আর্টিকেল ব্যবহার করতে পারবো?
মাথা খারাপ?
আপনি নিশ সাইট তৈরী করাকে ব্যবসা হিসেবে দেখেন। এখানে নিশ্চয়ই আপনার ব্যবসা খারাপ হয় এমন কোন সেলসম্যান রাখবেন না, বেতন বেশি দিয়ে হলেও আপনার প্রতি অনুগত ভালো সেলসম্যান রাখবেন।
আর্টিকেলকে আপনি সেলসম্যান হিসেবে দেখলে উত্তর টা নিজেই পেয়ে যাবেন। আমার বলা লাগবেনা।
৮) আর্টিকেলে ব্যবহার করার জন্যে ইমেইজ কোথায় পাবো?
প্রোডাক্ট এর ইমেইজ আপনি অ্যামাজন থেকে, প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার এর ওয়েবসাইট থেকে কালেক্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে, অ্যামাজনের কাস্টোমার রিভিউ সেকশনে বিভিন্ন কাস্টোমার যে ছবি অ্যাড করেছে, সেটা ব্যবহার করতে পারবেন না।
আর ফিচার্ড আর্টিকেল হিসেবে ব্যবহারের জন্যে পিক্সাবে খুব ভালো সাইট। এখান থেকে কপিরাইট ফ্রি ইমেইজ পাবেন।
গুগল সার্চ করে যে কারও ইমেইজ নিয়ে ব্যবহার করে নিলেই হয়ে গেলো না, লিগাল ইস্যু আছে এখানে।
আর হাতে বাজেট থাকলে বিভিন্ন প্রিমিয়াম স্টক ফটো সাইট থেকে ইমেইজ কিনে নিতে পারেন।
৯) আমি আর্টিকেলে অন্য কারও ইউটিউব ভিডিও ব্যবহার করতে পারবো?
নির্দ্বিধায় পারবেন।
শুধু দেখতে হবে ভিডিওর কোন অংশে নিজের প্রচারণা বা কোন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের কথা বলে দিচ্ছে কিনা। এমন কিছু হলে ওই ভিডিও ব্যবহার না করা ভালো।
এতে আপনার পোটেনশিয়াল কাস্টোমার অন্য কারও কাস্টোমারে পরিণত হবে।
১০) নিশ সাইটে কতোগুলো আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে?
অন্ততপক্ষে ৩০-৪০ টা রাখতেই হবে, এর বেশি রাখলে সেটা আরও ভালো।
১১) আর্টিকেল কি পোস্ট আকারে দিবো না পেইজ আকারে?
পার্সোনাল প্রেফারেন্স এর বিষয় এটা। আমি পোস্ট আকারেই দেই। পেইজ আকারে দিলে যে আপনি সুবিধা বেশি পাবেন বা পোস্ট আকারে দিলে সুবিধা কম পাবেন এমন না।
১২) আপনি কি আমাকে কোন রাইটার সাজেস্ট করতে পারেন?
না ভাই, দুঃখিত।
আমি কোন রাইটারকে পার্সোনালি সাজেস্ট করতে পারবোনা। সবাই এক না, তারপরেও কেউ কেউ কোন কারণে সেই রাইটারের সাথে বাজে এক্সপেরিয়েন্স হলে দোষটা আমার উপরেই বর্তাবে।
আপনার ভালোর ভাগিদার না হতে পারি, দোষের ভাগিদার হতে চাইনা।
আমাদের দেশে অবস্থা এমন যে কাউকে মার্কেটপ্লেস রেফার করলেও সেখানে সঠিক ইন্সট্রাকশন না দিয়ে মনমতো আর্টিকেল না পেলেও দোষারোপ করে।
শেষ কথা
এই জাতীয় প্রশ্ন গুলো ঘুরে ফিরে অনেকবার এসেছে, তাই ভাবলাম উত্তরগুলো একবারে লিখে রেখে দেই, পরবর্তীতে একই প্রশ্ন কেউ করলে লিঙ্ক দিয়ে দেয়া যাবে। এতে আমারও কিছুটা সময় বাঁচবে, কেউ ভুল তথ্য জেনে থাকলে সেটার কারেকশন হবে।
Comments (No)