ফেসবুক সম্পর্কিত একটি সতর্কতা মূলক পোষ্ট

আপনার ফেসবুক একাউন্টি আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলা যায়। এজন্য ফেসবুকের সঠিক ব্যবহার জানা অত্যান্ত জরুরী। এতে জড়িয়ে আছে আপনার পরিচয়, ব্যাক্তিত্ব, ভাল মন্দ সহ আরও অনেক কিছু। আপনার একটু ভুল আর অসাবধানতা বয়ে আনতে পারে অনেক বড় বিপদ। ফেসবুকে ভাল কিছুর পাশাপাশি খারাপ কিছুর কমতি নেই। বুদ্ধিমান ব্যাক্তির কাজ হল খারাপ এবং মন্দকে এরিয়ে চলা।

মনে রাখবেন, আপনার ফেসবুকের প্রতিটা এক্টিভিটি আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা সবার নিকট চলে যায়। অর্থাৎ আপনি যদি কোন একটা একটা ছবিতে লাইকে দেন সেটা আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা বন্ধুরা সহজেই দেখতে পারে। একই ভাবে আপনি কোথায় কমেন্ট করছেন তাও তারা জানতে পারে। তাই লাইক, শেয়ার, কমেন্ট ইত্যাদি করতে গিয়ে একটু সাবধান থাকবেন এবং ভেবে চিন্তে করবেন কেননা ভাল হলে তো খুব ভাল, কিন্তু খারাপ কিছু হলে একবার চিন্তা করে দেখুন আপনার সম্পর্কে তাদের কি মনোভাব তৈরী হবে। তাহলে এবার চলুন দেখা নেওয়া যাক ফেসবুক সম্পর্কিত কি কি বিষয়ে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

১। ফেসবুক লাইক (Facebook Like):

ফেসবুক লাইক অনেক দামি একটা বিষয়। ভাল পেইজ এবং ভাল কিছুতে লাইক দিন। দেখবেন এমন কিছু বিষয় আপনার ফেসবুক ওয়ালে আসবে যা আপনার জীবন যাত্রাকে তরান্বিত করবে, সহজ করে দেবে, অনেক কিছু শিখতে পারবেন, জানতে পারবেন এবং উপকারে আসবে।

আর এমন কিছু পেইজ বা পোষ্টে আপনি লাইক দিয়েছেন যা খারাপ। তাহলে কি হবে? আপনার এই লাইক দেয়া ছবি, পোষ্ট, পেইজ সাথে সাথে আপনার বন্ধুদের, পরিবারের মানুষ জনের কাছে তা চলে যাবে। তখন আপনার সম্মান কোথায় যাবে? এতে আপনার সম্মান এবং সময় নষ্ট হবে পাশাপাশি পাপের পাল্লাটাও ভারি হবে। দিন দিন আপনি খারাপের দিকে দাবিত হবেন। মানসিক ভাবে আপনি অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন। তাই ফেসবুক লাইক ভাল মন্দ বিচার করে দিবেন। যা সামনে আসলো তাতেই লাইক দেওয়ার কোন মানে হয় না।

২। ফেসবুক গ্রুপে যোগদান (Joining a Group):

লাইকের মতোই বিভিন্ন গ্রুপে যোগ দেয়ার বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। গ্রুপে যোগ দেওয়ার পূর্বে দেখে নিন গ্রুপটি ভাল কিনা, আপনার প্রয়োজন কিনা ইত্যাদি। কেননা খারাপ এবং অপ্রয়োজনীয় কোন কিছু আপনাকে ভাল কিছু দিতে পারে না।

৩। ফেসবুক ফ্রেন্ড (Fcebook Friends):

ফেসবুকে আপনি কাকে ফ্রেন্ড বানাবেন আর কার ফ্রেন্ড হবেন সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট গ্রহণ করার পূর্বে দেখে নিন তাকে আপনি চেনেন কিনা অথবা আপনার ভাল বন্ধুদের বন্ধু কিনা। অপরিচিত কাউকে নিজে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠাবেন না এবং গ্রহণও করবেন না।

কেননা এমন একজন এর ফ্রেন্ড হলেন যে কিনা সন্ত্রাস বা খারাপ ব্যাক্তি তাহলে এর পরিনাম আপনার ভাল হবে না। আপনার বাড়িতে পুলিশ আসলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না তখন, কেননা এটা হতে পারে আপনার লাইক, শেয়ার, গ্রুপ জয়েন কিংবা ফেসবুক ফ্রেন্ডের কারণ। আজকেই আপনার ফ্রেন্ড লিষ্ট চেক করুন আর আপরিচিত এবং অপ্রয়োজনীয় বন্ধু আনফ্রেন্ড করে দিন।

৪। ফেসবুক চ্যাট (Facebook Chat):

ফেসবুক চ্যাটে কথা বলার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুণ। অযথা যে কারো সাথে কথা বলে কোন লাভ নেই। প্রয়োজনে এবং ভাল কাজে ফেসবুক চ্যাটকে ব্যবহার করুণ। পরিচিত কারো সাথে আপনি অনেকক্ষন কথা বলতে পারবেন বা আপনার কথা থাকতে পারে। কিন্তু অপরিচিত ব্যক্তির সাথে কেমন আছেন, কি করেন, এর পর আর তেমন কোন কথাই থাকতে পারে না। তাই অপরিচিত কার ফ্রেন্ড রিকিয়েষ্ট এবং কথা না বলাই আপনার জন্য ভাল।

আপনার জন্যও জেনে রাখা ভাল যে, আপনার কথা গুলোর স্ক্রীনশর্ট নিয়ে ফেসবুকে বা অন্য কোথাও ছেড়ে দিলে তখন আপনার আর কিছুই করার থাকবে না।

৫। ফেসবুক পরিচয় এবং দেখা সাক্ষাতঃ

অনেকেই আছেন যারা ফেসবুকে পরিচয় হয়েছে এমন কারো সাথে দেখা করতে যান। এটা হতে পারে ছেলে বা মেয়ে। যারা এমনটি করছেন বা করার চিন্তা করবেন মনে রাখবেন এটি নিরাপদ নয়। টাকা পয়শা, মোবাইল সহ আপনার মহা মূল্যবান জীবনটিও চলে যেতে পারে। তাই সাবধান!!

৬। অযথা ছবি আপলোড এবং চেক ইন দেওয়াঃ

এটা আজকাল একটা রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, যেখানেই আছে সেখান থেকেই একটা সেলফি তুলে আপলোড দিয়ে চেক ইন দেওয়া। এমনও দেখেছি, পরিবারের কেউ মারা যাবে সেই মহুর্তে সেলফি তুলে আপলোড দিয়েছে। আপনার এমন পোষ্ট গুলো অন্যরা কিভাবে নেয় সেটা কি একবার ভেবে দেখেছেন? বেশি বেশি চেক ইন আপনার ক্ষতি করতে চায় এমন কারো জন্য উপকার হয় আপনার অবস্থান চিহ্নিত করতে। বিশেষ করে মেয়েদের এবং বাচ্চাদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার না করাই উত্তম। আমার ছোট বোনের একটা ছবি আমাদের সবার সাথে ছিল। আমি ততটা চিন্তা করি নাই ছবিটা ফেসবুকে শেয়ার করেছিলাম।

ফলাফলঃ কিছু দিন পর ঐ ছবি থেকে আমার বোনের ছবিটা কেটে একটা ফেসবুক আকাউন্ট খুলে আমাকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠিয়েছিল। তবে অল্প দিনের জন্য আপনার বিশেষ মহুর্তের ছবি আপনি আপলোড করতে পারেন। পরে আবার তা হাইড করে দিলেন।

৭। ফেসবুক স্ট্যাটাস (Facebook Status):

ফেসবুক স্ট্যাটাস আপনার পরিচয়ের অনেক কিছুই বহন করে। যথা সম্ভব গুছিয়ে, সঠিক ভাবে, ভাল কিছু, প্রয়োজনীয় স্ট্যাটাস দিন। এমন কিছু লিখা থেকে বিরত থাকুন যা কোন ব্যক্তি, গোষ্টি বা সম্প্রদায়কে আঘাত করে।

পরিশেষে বলতে চাই, আল্লাহকে ভয় করুন, ভাল চিন্তা করুন, ভাল কাজ করুন এবং মানুষকে ভালবাসতে শিখুন। আর এই পোষ্টটি আপনার ভাল লাগলে এবং উপকারী পোষ্ট মনে হলে শেয়ার করুন। তাতে অন্যদেরও উপকার হবে। সবাই ভাল থাকুন।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ