এসো আয় করি

Earn Money Online From Bangladesh. Make Money From Home
Menu
  • Home
  • কিভাবে শুরু করবো?
  • নতুন পোস্ট লিখুন
  • Recent Activity
  • Members

অনলাইন আয়ের সবচেয়ে সহজ উপায়.. সহজ এফিলিয়েটস শুধু মাত্র একটা ফেসবুক পেজ তৈরি করে মাসে আয় করুন ১০-২০ হাজার টাকা।

শুরু করুন এখনই
Home
Offline income
মাছ পালন
লাভজনক পদ্ধতিতে মাছ চাষ কিভাবে করবেন How to do fish farming in a profitable way
মাছ পালন

লাভজনক পদ্ধতিতে মাছ চাষ কিভাবে করবেন How to do fish farming in a profitable way

ইনকাম নিউজ December 19, 2020
64 / 100
Powered by Rank Math SEO

লাভজনক পদ্ধতিতে মাছ চাষ কিভাবে করবেন মাছ আমাদের প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং পুষ্টি সরবরাহে মাছের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। একই পুকুরে নানা জাতের মাছ চাষ করা যায়, খাল ও ডোবায় মাছ চাষ করা যায়, আবার চৌবাচ্চায়, খাঁচায় মাছের চাষ করা যায়। কোনো নির্দিষ্ট জলাশয়ে পরিকল্পিত উপায়ে স্বল্পপুঁজি, অল্পসময় ও লাগসই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছের বিভিন্ন নিয়ম মেনে প্রাকৃতিক উৎপাদনের চেয়ে অধিক মাছ উৎপাদনই মাছ চাষ। মাছ চাষে লাভবান হতে হলে মাছ চাষ পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত প্রতিটি পর্বে মাছ চাষিকে বিশেষ কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। মাছ চাষির অজ্ঞতা বা অবহেলা বা ভুল লাভজনক মাছ চাষের ক্ষেত্রে অন্তরায়। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় মাছ হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মাছের অনেক চাহিদা থাকার কারণে মাছ চাষ করে ভালো আয় করা সম্ভব। স্থানীয় হাট, বাজার ছাড়াও দূরবর্তী বাজারে মাছ বিক্রি করে লাভ করা সম্ভব। তাছাড়া বিদেশে মাছ রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। মাছ চাষে বাংলাদেশ এখন চতুর্থ। এটা আমাদের গর্বের বিষয়।
মাছের গুণাগুণ ও সুষ্ঠু পরিকল্পনা
আমাদের দেশের স্বাদু পানিতে ২৬০টিরও বেশি প্রজাতির মাছ আছে। এছাড়া খাঁড়ি অঞ্চলে ও লোনা পানিতে কয়েকশ‘ প্রজাতির মাছ আছে। তবে চাষযোগ্য মাছগুলো হলো রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, সিলভারকার্প, মিররকার্প, গ্রাসকার্প, কমনকার্প, বিগহেড, রাজপুঁটি, নাইলোটিকা, তেলাপিয়া, বিদেশি মাগুর, থাই পাঙ্গাশ এসব। এসব মাছের কিছু বিশেষ গুণাগুণ আছে। এসব মাছ খুব দ্রুত বাড়ে; খাদ্য ও জায়গার জন্য একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে না; পুকুরে  বেশি সংখ্যায় চাষ করা যায়; পানির সব স্তর থেকে খাবার গ্রহণ করে, পুকুরের পরিবেশ ভালো থাকে; খেতে খুব সুস্বাদু; বাজারে এসব মাছের প্রচুর চাহিদা আছে; সহজে রোগাক্রান্ত হয় না, চাষে লাভ বেশি হয়। এজন্য লাভজনকভাবে এসব মাছে চাষ করা যায় আনয়াসে। মাছ চাষ শুরু করার আগে প্রয়োজন হচ্ছে সঠিক সুষ্ঠু এবং বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা।
মাছ উৎপাদন কৌশল
১. সনাতন পদ্ধতির মাছ চাষ : এ পদ্ধতিতে পুকুরের কোনো ব্যবস্থাপনা ছাড়াই মাটি ও পানির উর্বরতায় পানিতে যে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয় মাছ তাই খেয়ে জীবন ধারণ করে। এক্ষেত্রে আলাদা কোনো পরিচর্যা নিতে হয় না;
 ২. আধানিবিড় পদ্ধতির মাছ চাষ : এ পদ্ধতিতে নিয়মমতো পুকুর প্রস্তুত করে আংশিক সার ও খাদ্য সরবরাহ করে মাছের খাদ্য উৎপন্ন করতে হয়। পুকুরের বিভিন্ন স্তরে উৎপাদিত খাদ্যের সঠিক ব্যবহারের দিকে লক্ষ্য রেখে মাছের পোনা ছাড়তে হয়;
 ৩. নিবিড় পদ্ধতির মাছ চাষ : অল্প জায়গায়, অল্প সময়ে বেশি উৎপাদনের জন্য সুপরিকল্পিতভাবে সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হয়;
 ৪. কার্প জাতীয় মাছের মিশ্রচাষ : পুকুরের বিভিন্ন স্তরে উৎপন্ন খাবার সম্পূর্ণ ব্যবহার করার জন্য রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, বিগহেড, সিলভারকার্প, মিররকার্প, কমনকার্প, কারপিউ এসব নানা প্রজাতির মাছ একসাথে চাষ করা যায়।

পুকুর নির্বাচন
১. পুকুরটি খোলামেলা  রোদ্রউজ্জ্বল জায়গায় এবং বাড়ির আশপাশে হতে হবে যেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়;
২. মাটির গুণাগুণ পুকুরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দো-আঁশ, এঁটেল দো-আঁশ ও এঁটেল মাটি পুকুরের জন্য ভালো;
৩. পুকুরের আয়তন কমপক্ষে ১০ শতাংশ হতে হবে। ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ আকারের পুকুর মাছ চাষের জন্য বেশি উপযোগী;
৪. পুকুরের গভীরতা ২-৩ মিটার রাখতে হবে এবং বছরের পুরো সময় পানি থাকতে হবে;
৫. পুকুর পাড়ে বড় গাছ বা ঝোপঝাড় থাকা যাবে না। বিশেষ করে পাতাঝরা গাছ রাখা যাবে না।
পুকুর খনন তৈরি ও প্রাথমিক কাজ
যেখানে পুকুর খনন করা হবে সেখানকার অবকাঠামো, পরিবেশ, পানির গভীরতা, বর্ষায় বন্যার হুমকি, পুকুর পাড়ের ঢাল, বকচর, শুষ্ক মৌসুমে পানি কতটা থাকে, পানি কমে গেলে বাইরে থেকে পানি দেয়ার ব্যবস্থা আছে কিনা এসব বিষয়ে সঠিক ধারণা নিয়ে শুরু করতে হবে। এজন্য প্রথমেই অভিজ্ঞ মৎস্য চাষি বা মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেয়া  প্রয়োজন। মাছ চাষ শুরু করার আগে বা মাছের পোনা ছাড়ার আগে সঠিক নিয়মে পুকুর তৈরি করা অত্যাবশ্যক। পানিতে প্রাকৃতিক খাবার জন্মানো এবং পুকুরে পানি প্রবেশ এবং নিষ্কাশনের রাস্তা সঠিকভাবে রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে পরবর্তীতে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। পোনা মাছ ছাড়ার আগে পুকুর তৈরি করে নিতে হবে। নতুন পুকুর কাটা কিংবা পুরনো পুকুরই তৈরি করে নেয়া আবশ্যকীয় প্রাথমিক কাজ। পুকুর প্রস্তুতির কাজটি হবে ধাপে ধাপে-
 ১ম ধাপ : জলজ আগাছা কচুরিপানা, কলমিলতা হেলেঞ্চা, অন্যান্য গাছ শেকড়সহ তুলে ফেলতে হবে;
 ২য় ধাপ :  শোল, গজার, বোয়াল, টাকি রাক্ষুসে মাছ এবং অবাঞ্ছিত মাছ মলা, ঢেলা, চান্দা, পুঁটি সরিয়ে ফেলতে হবে;
৩য় ধাপ : প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন পুকুরে পানি থাকলে ড্রামে বা বালতিতে গুলে ঠা-া করে পুরো পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে;
৪র্থ ধাপ : মাটি ও পানির গুণাগুণ বিবেচনায় রেখে চুন দেয়ার এক সপ্তাহ পর জৈবসার বিশেষ করে পচা গোবর দিতে হবে;
৫ম ধাপ : পুকুর শুকনা হলে পুকুরে সার, চুন/জিওলাইট, গোবর ছিটিয়ে দিয়ে লাঙল দিয়ে চাষ করে দুষণমুক্ত পানি ঢুকাতে হবে;
৬ষ্ঠ ধাপ : পোনা মজুদের আগে পুকুরে ক্ষতিকর পোকামাকড় থাকলে তা মেরে ফেলতে হবে;
৭ম ধাপ : পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মালে পোনা মজুদ করতে হবে। মৃত্যুর হার যেন কম থাকে সেজন্য পোনার আকার ৮-১২ সেন্টিমিটার হতে হবে;
৮ম ধাপ : নিয়মমতো পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো- পোনা হাঁড়িতে বা পলিথিন ব্যাগে আনা হলে, পলিথিন ব্যাগটির মুখ খোলার আগে পুকুরের পানিতে ২০-৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখা; তারপর ব্যাগের মুখ খুলে অল্প করে ব্যাগের পানি পুকুরে এবং পুকুরের পানি ব্যাগে ভরতে হবে। ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা যখন সমান হবে তখন পাত্র বা ব্যাগের মুখ আধা পানিতে ডুবিয়ে কাত করে সব পোনা পুকুরে ছাড়া; সকাল ও বিকাল পোনা ছাড়ার ভালো সময়;
 ৯ম ধাপ : দিনে দুইবার সকাল ১০টায় এবং বিকাল ৩টায় খৈল, কুঁড়া, ভুসিসহ সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
 সতর্কতা ও পরিচর্যা
 রোগ প্রতিরোধী মাছের চাষ করতে হবে; সঠিক সংখ্যায় পোনা মজুদ করতে হবে; পোনা ছাড়ার আগে পোনা রোগে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে;  পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং পুকুরে যাতে আগাছা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে; প্রতি ৩-৪ বছর পরপর পুকুর শুকিয়ে ফেলে নতুন করে পুকুর প্রস্তুত করে নিতে হবে; বর্ষার শেষে পুকুরের পানিতে লাল বা সবুজভাব কমে গেলে অবশ্যই পরিমাণমতো সার দিতে হবে; মাঝে মাঝে জাল টেনে মাছের অবস্থা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখতে হবে; পুকুরে জাল টেনে দড়ি টেনে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ানো এবং মাছের ব্যায়াম করাতে হবে। পোনা যত্নও মজুদ
মাছ চাষি হ্যাচারি থেকে যেসব পোনা সংগ্রহ করেন তার অধিকাংশই সরাসরি চাষ পুকুরে ছাড়ার উপযোগী নয়। চাষ পুকুরে ছোট পোনা সরাসরি ছেড়ে অনেক সময় চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হন। এতে ব্যাপক হারে পোনা মারা যায়। এ কারণে পোনা ভালোভাবে নার্সিং করতে হবে। নার্সিং করার পর পোনা বড় ও টেকসই হলে গণনার মাধ্যমে পোনা মজুদ পুকুরে দেয়া যায় এবং পরবর্তীতে খাবার ব্যবস্থাপনার সাথে অন্যান্য ব্যবস্থাপনাও যথার্থ হতে হবে। একক চাষের ক্ষেত্রে বিশেষত শিং, মাগুর, কৈ, তেলাপিয়া প্রভৃতি মাছের পোনা হ্যাচারি থেকে সরাসরি চাষ পুকুরে দিয়ে অনেক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইচ্ছেমতো বা পুকুরের জায়গার তুলনায় অধিক পরিমাণে পোনা ছাড়া আমাদের মৎস্য চাষিদের একটি প্রচলিত ত্রুটি। তাদের ধারণা বেশি পোনা ছাড়া হলেই বেশি উৎপাদন হবে। চাষের ধরন, অবকাঠামো, পানি বদলানোর সুবিধা, খাবারের ধরন, মাছ চাষের মেয়াদ, মাছের প্রজাতি এসব বিবেচনা করে পোনা মজুতের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ চাষি বা অভিজ্ঞ মৎস্য কর্মকর্তার কাছ থেকে তারা পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। বেশি পোনা নয় বরং পরিমিত পরিমাণে পোনা ছেড়ে অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।
পোনা নির্বাচন পরিবহন ও অবমুক্তকরণ
চাষিকে মানসম্মত ব্রুড থেকে উৎপাদিত এবং অন্তঃপ্রজনন মুক্ত  পোনা, একই আকারের ও বয়সের রোগমুক্ত পোনা সংগ্রহ করতে হবে। মানসম্পন্ন পোনা সংগ্রহ করার পর তা সঠিক নিয়মে পরিবহন এবং পরিবহনের পর যথার্থভাবে পুকুরে অবমুক্ত করতে হবে। পরিবহনজনিত ক্রটি থাকায় এবং পরিবহনের আগে পোনা সঠিক নিয়মে টেকসই করা হয় না বলে পোনা ব্যাপক হারে মারা যায়। অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবে মারা না গেলেও পোনা এতই দুর্বল থাকে যে দুই একদিনের মধ্যে অনেক পোনাই মারা যায়। এ কারণে পোনা পরিবহন ও পোনা ছাড়ার ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে।
মিশ্রচাষে জাত নির্বাচন
পুকুরে পানির তিনটি স্তরে একই রকমের মাছ থাকে না। এ কারণে মিশ্রচাষে প্রজাতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওপরের স্তর, মধ্য স্তর এবং নিচের স্তরের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রতিটি স্তর সঠিক ব্যবহারের জন্য সঠিক সংখ্যা সঠিক প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে। অনেক সময় মাছ চাষিরা কোনো একটি স্তরে বেশি মাছ ছেড়ে দেন অথচ অন্য একটি স্তরের উপযোগী মাছ ছাড়েন না। এতে কখনও ভালো ফল আসে না। তাছাড়া একই স্তরে বসবাসকারী বেশি মাছের জন্য তাদের নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাই প্রতিটি স্তরের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য আনুপাতিক হারে মাছ ছাড়তে হবে। পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এমন প্রজাতি এড়িয়ে যাওয়া ভালো। ওপরের স্তরের জন্য কাতলা, সিলভার কার্প, তেলাপিয়া, সরপুঁটি, মধ্য স্তরের জন্য রুই, তেলাপিয়া, সরপুঁটি, নিচের স্তরে মৃগেল, মিররকার্প, কার্পিও, কালো বাউশ এ ধরনের মাছ আবাদ করতে হয়। পোনা ছাড়ার সময় আনুপাতিক হার ঠিক রেখেই পোনা ছাড়তে হবে। একই সাথে মৃগেল এবং গলদা চিংড়ি ছাড়া হলে গলদা চিংড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মাংসভোজী অর্থাৎ একে অপরকে খেয়ে ফেলে এ ধরনের প্রজাতি মিশ্রচাষে দেয়া যাবে না। মিশ্রচাষে রাক্ষুসে প্রজাতিকে এড়িয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক।
পানির গুণাগুণ রক্ষা
মাছ পানিতে থাকে বলেই পানির গুণাগুণ ও পরিবেশ রক্ষা করাটা জরুরি। অথচ অনেক মাছ চাষি পানির গুণাগুণ রক্ষায় সচেষ্ট নন। মাছ চাষের জন্য পানির নির্ধারিত স্থিতিমাপ রয়েছে। এগুলো দক্ষতার সাথে রক্ষা করতে পারলে চাষকালীন নানা সমস্যা এড়ানো সম্ভব। পানির পিএইচ, অ্যামোনিয়া, ক্ষারত্ব, দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রভৃতির আদর্শ মাত্রা রয়েছে। এ মাত্রা অতিক্রম করলে বা অস্বাভাবিক কমবেশি হলেই বিপত্তি ঘটে। চাষিরা টেস্ট কিটের মাধ্যমে মাত্রা  মেপে পানির গুণাগুণ জানতে এবং করণীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এ কারণে সব মাছ চাষিদের জন্য একটি টেস্ট কিট রাখা অতি জরুরি। মাছের খাবার ব্যবস্থাপনা
লাভজনক মাছ চাষের জন্য মানসম্মত খাবার অন্যতম প্রধান শর্ত। কেননা মাছ চাষে ৭০% এর বেশি খরচ হয় খাদ্য সরবরাহে। বাজারের খাদ্য এবং নিজে খাদ্য তৈরি করে সরবরাহ করেন। সঠিক পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং মাছের আকার ও বয়স উপযোগী খাবার সরবরাহ না করলে লাভ হবে না। অনেক চাষি নিম্নমানের খাবার কিনে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া পরীক্ষাগারে খাদ্য পরীক্ষা করালে খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কে জানা যায়। কম খাবার সরবরাহ করলে যেমন মাছের প্রত্যাশিত উৎপাদন পাওয়া যায় না তেমনি বেশি পরিমাণে খাবার সরবরাহে লোকশান হয়। এতে খাবার ও অর্থ দুই-ই অপচয় হয় এবং পানি দূষণের জন্য মাছ মারা যায়। সাধারণত মাছের পোনার সংখ্যা অজানা থাকায় খাদ্য প্রয়োাগের হিসাবে গড়মিল থাকায় সঠিকমাত্রায় খাবার সরবরাহ করতে পারেন না। এজন্য মাছের সংখ্যা এবং গড় ওজন জেনে পানির গুণাগুণের দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পরিমাণে খাবার সরবরাহ করা দরকার। অনেকে নিয়মিত খাবার সরবরাহ করার পরিবর্তে মাঝে মাঝে ও অনিয়মিতভাবে খাবার সরবরাহ করেন। এভাবে খাবার সরবরাহ করলে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা সম্ভব নয়। অর্থাভাবে চাষের মাঝামাঝি সময়ে খাবার সরবরাহে ব্যর্থ হলে চাষি লাভবান হতে পারে না। মাছ চাষে পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনে জৈব ও অজৈব সারের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। অনেক চাষি কেবল সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ চাষ করতে চান। এ ধারণা থেকে অতিরিক্ত সার প্রয়োগে বিপদ ডেকে আনেন। পানিতে প্লাংক্টন বুম বেশি হয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে এক পর্যায়ে পানি নষ্ট হয়ে যায় এবং পুকুরে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে মাছ মারা যায়। সুতরাং প্রয়োজন হলেই সার দেয়া উচিত না হলে দরকার নেই।  মাছের সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা একান্ত জরুরি।
পোলট্রি লিটার ব্যবহার
পোলট্রি লিটারে খাদ্যমান রয়েছে এ চিন্তা থেকে অনেক মাছ চাষি পোলট্রি লিটারকেই কেবল মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু লিটার ব্যবহারের কারণে মাছ চাষিরা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। পোলট্রি লিটারে কাঠের গুঁড়া ব্যবহার করা হয় যা মাছ খেয়ে পরিপাক হয় না এবং তা থেকে বদহজম হয়  পেট ফুলে মাছ মারা যায়। আবার লিটারে কেবল তুষ থাকার কারণে একই সমস্যা হয়। বেশি পরিমাণে লিটার পানির গুণাগুণ নষ্ট করে। পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের কারণে ব্যাপকহারে মাছ মারা যায় এবং পানির গুণাগুণ রক্ষা করতে গিয়ে ওষুধপত্র কিনতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। তাছাড়া এ লিটারের মাধ্যমে মাছে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
 নিয়মিত ওজন নেয়া ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা
প্রতি ১০-১৫ দিন পর পর মাছের গড় ওজন নেয়া আবশ্যক। তা না হলে খাবারের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা যায় না। মাছের ওজন না নিলে চাষিও বুঝতে পারেন না যে মাছের বাড়বাড়তি সন্তোষজনক নাকি হতাশাব্যঞ্জক। পোনা ছেড়ে এবং খাবার সরবরাহ করেই চাষির দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। মাছের স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ একটি বড় কাজ। মাছের অস্বাভাবিক আচরণ বা দেহে অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখা গেলে বা ক্ষত হলে মৎস্য বিশেষজ্ঞ বা মৎস্য কর্মকর্তার শরণাপন্ন হতে হবে। তবে মাছের রোগ হলে চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধে অধিক মনোযোগী হলে মাছচাষি ক্ষতি এড়াতে পারেন। স্বাস্থ্যসম্মত চাষ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে মাছ চাষে চিকিৎসা, নানা ওষুধপত্র এবং পুষ্টিপণ্য পাওয়া যাচ্ছে যা চাষি ব্যবহার করে সুবিধা পেতে পারেন। আমাদের দেশেও নানা  কোম্পানি নানা পণ্য বাজারজাত করছে। অনেক সময় তারা সস্তায় এসব কিনে প্রতারিত হন। আবার সঠিক ব্যবহার বিধি না জানা বা সঠিক মাত্রায় ব্যবহার না করায় সুফল পাচ্ছে না। এ কারণে মৎস্যবিদ বা অভিজ্ঞ চাষির পরামর্শে সঠিক ওষুধ, সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে এবং প্রয়োগ বিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
একই পুকুর থেকে একাধারে কয়েক দিন মাছ ধরলে চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কেননা পরপর কয়েক দিন জাল টানলে অন্য মাছ খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয় বলে মাছের ওজন কমে যায় এবং আঘাতজনিত কারণেও কিছু মাছ মারা যেতে পারে। এ কারণে একটানা কয়েক দিন মাছ না ধরে মাঝে বিরতি দেয়া উচিত।
মাছ পরিবহন
মাছ ধরে সঠিকভাবে বাজারজাত করতে না পারলে মাছ চাষি চাষের শেষ দিকে এসে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যেসব মাছ জীবিত পরিবহন করা হয় সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অধিক সময় পরিবহন বা অন্য কোনো ক্রটির কারণে মারা যায়। এ ক্ষেত্রে প্লাস্টিক ড্রামে পরিষ্কার পানিসহ পরিমিত মাছ পরিবহন করা উচিত। আজকাল ড্রামসহ গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। শিং, মাগুর, কৈ মাছ এভাবে পরিবহন করা হয়। ড্রামে নেয়ার আগে কিছু সময় হাপায় রাখা আবশ্যক। মাছ ধরার ৮-১০ ঘণ্টা আগে খাবার দেয়া বন্ধ রাখলে মাছ অধিক সময় জীবিত থাকে। অন্যান্য মাছ দূরত্ব ভেদে বরফজাত করা উচিত। মাছ চাষিরা একটু সতর্ক হলে এবং চাষকালে প্রতিটি ধাপে দক্ষতার পরিচয় দিলে ক্ষতি বা লোকসান থেকে রক্ষা পেয়ে নিশ্চিত লাভবান হতে পারবেন।

মাছের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ
মাছ প্রক্রিয়াজাতের সময় হাত দিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করা যাবে না; মাছ ধরার পর মাছের আকৃতি অনুযায়ী আলাদা করে ফেলতে হবে; বাক্সে বা পাত্রে বরফ দিয়ে স্তরে স্তরে মাছ সাজাতে হবে; শুকনোভাবে অথবা ভেজা অবস্থায় লবণ দিয়ে মাছ সংরক্ষণ করা যায়; মাছ কেটে নাড়িভুঁড়ি ও মাথা ফেলে দিয়ে চাক করে সেগুলো সিদ্ধ করতে হবে। এরপর লবণ, তেল, মসলা চাকের সাথে মেখে টিনের পাত্রে সুন্দর করে স্তরে স্তরে সাজিয়ে পাত্রটি বায়ুশূন্য করে মুখবন্ধ করতে হবে। একে ফিশকেনিং পদ্ধতি বলে। বরফ ছোট ছোট টুকরা করে ঝুড়ি বা প্যাকিং বাক্সের তলায় ঘন করে স্তরে স্তরে বরফ দিয়ে মাছ প্যাকিং করে দিতে হবে; ব্যবসাভিত্তিক মাছ কোল্ড স্টোরেজে কমদামে একসাথে অনেক সংরক্ষণ করা যায়; বালির ওপর মাছ ছাড়িয়ে দিয়ে অথবা দড়ি টানিয়ে রোদের তাপে ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। তবে তাজা মাছ খাওয়া বেশি সুস্বাদু এবং লাভজনক।
মাছ আমাদের অমূল্য প্রাণিজ জাতীয় সম্পদ। নিজেদের একান্ত প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি পদ্ধতি অনুসরণ এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করলে মাছ চাষে কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায়। মাছ দিয়ে আমরা আমাদের দেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারব। রূপালি সম্পদে দেশকে টইটম্বুর করতে পারব। পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে কৃষি নিয়ে দাঁড়াতে পারব। আমাদের পারিবারিক সামান্য জলসীমা যেন আমরা খালি না রেখে পরিকল্পিত উপায়ে মাছ চাষ করি।

Tweet Pin It
Prev Article

Related Articles

একুরিয়ামে মাছ পালনের মাধ্যমে আয়
বাসাবাড়ি কিংবা অফিসের ভেতরের শোভা বৃদ্ধির জন্যে বহুকাল যাবৎ পৃথিবীর …

একুরিয়ামে মাছ পালনের মাধ্যমে আয়

সমন্বিত খামারে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা আয়
ফেনীর সোনাগাজী বক্তারমুন্সী মির্জাপুর এলাকার যুবক জাকারিয়া হাসান। উচ্চ মাধ্যমিকের …

সমন্বিত খামারে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা আয়

About The Author

ইনকাম নিউজ

আমি একজন ফ্রিল্যান্সার। নিজে আয় করার পাশাপাশি নতুনদের সহযোগীতা করতে ভালবাসি।

Leave a Reply

Cancel reply

You must be logged in to post a comment.



Recent Posts

  • Earning by Translation ট্রান্সলেশন বা অনুবাদের কাজ করে আয়
  • কেন Freelancer হিসাবে Graphics Design Career গড়বেন?
  • OTP কি ? OTP পুরো নাম কি? এটি কি কাজে ব্যবহার করা হয় ? What is OTP? What is the full name of OTP? Is it used for work?
  • মোবাইল দিয়ে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে টাকা আয় ২০২১ Money Income through Instagram with Mobile 2021
  • Logo Design করে আয় করুন মাসে 50,000/- টাকা। লগো ডিজাইন A2Z,

Categories

  • Affiliate Marketing (23)
  • Amazon (2)
  • Android Apps (51)
  • Article Writing (17)
  • Bank Loan (42)
  • Bitcoin (3)
  • Blogging (34)
  • Buy Sell (20)
  • Coinbase (1)
  • Computer Information (22)
  • Cryptocurrency (47)
  • Digital Marketing (12)
  • Domain & Hosting (21)
  • E-commerce (10)
  • Earn for the Real life (39)
  • Earn From Cryptocurrency (5)
  • Earn From Data Entry (6)
  • Earn From Social Site (169)
  • Education (79)
  • Entertainment (27)
  • Facebook (87)
  • Featured (4)
  • Forex Zone (115)
  • Freelancers Zone (200)
  • Freelancing (107)
  • Google (71)
  • Google Adsense (91)
  • Graphic Design (2)
  • Internet (74)
  • Jeneral (3,061)
  • Micro Jobs (56)
  • Microsoft (2)
  • Mobile Banking (9)
  • Newbox (2)
  • Offline income (18)
  • Online Business (15)
  • Online Income (190)
  • Payment Method (105)
  • Play online Games (14)
  • Promotions (11)
  • PTC (16)
  • Revenue Share and invest plan (399)
  • Scam Alert (14)
  • Science and Technology (158)
  • SEO (131)
  • Social Media (6)
  • Social Media Marketing (11)
  • Sponsored Post (3)
  • Tips & tricks (613)
  • Web Design and Development (104)
  • Website (15)
  • wordpress (84)
  • Youtube (64)
  • উদ্যোক্তা (2)
  • খামার (9)
  • পশু পালন (7)
  • মাছ পালন (3)

এসো আয় করি

Earn Money Online From Bangladesh. Make Money From Home

এসোআয়করি ডট কম

এসোআয়করি ডট কম বাংলাদেশের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় অনলাইন আয়মূলক ব্লগ। ৩০০০০+ মেম্বার প্রায় ৬৫০০ পোস্ট লিখেছেন online earings বিষয়ে। Freelancing বা Online income কে সহজ করার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। আপনও আমাদের সাথে যুক্ত হয়ে আপনার Outsourcing অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন নতুন freelancer দের সাথে।

  • Sohoj Affiliates কি?
  • Affiliate marketing
  • আউটসোর্সিং কি?
  • ফ্রীল্যান্সিং কি?
  • বন্ধুত্ব করে টাকা আয় করুন
  • সস্তায় দারুন সব পন্য
  • লেটেস্ট ফোনের তাজা খবর
  • বাংলাদেশের সেরা হোস্টিং
  • Terms of Service
  • FAQ
  • Advertising
  • Sponsored Post কি?
  • মতামত/পরামর্শ
Copyright © 2021 এসো আয় করি
Developed by Jibonpata IT

Ad Blocker Detected

Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please consider supporting us by disabling your ad blocker.

Refresh