Work From Home মাসে দু’দিন বেশি চাকরি দেশে ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর কারণে কর্মচারীদের দৈনিক ‘অফিসটাইম’ একটু-একটু করে বেড়েই চলেছে। বিশ্বজুড়ে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।প্রতীকী ছবি এই সময়: করোনা আসার আগে সে এক দিন ছিল। এর-ওর মুখে ছুটকো-ছাটকা শোনা যেত, ওয়ার্ক-ফ্রম-হোমের কথা। কেমন যেন একটা ‘সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন’ এর মতো অন্ত্যজ শ্রেণির চাকরি। অফিসই যেতে হয় না, সে কেমন চাকরির মতো ব্যাপার…।
তা করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিশ্বজয়ে বেরিয়ে পড়ার পর ভয়ে বাধ্য হয়ে মানুষজনকে সেঁধিয়ে যেতে হয়েছে ঘরে। শুনশান পথঘাট। সংক্রামিত হওয়া এবং ছড়ানোর ভয়ে, নিউ-নর্ম্যালে ঘরই এখন অফিস।
প্রথম প্রথম বেশ একটা ‘থ্রিল’ ছিল। বাইরে যাওয়া নেই, বাসে-ট্রামে-ট্রেনে গুঁতোগুতি নেই। পান চিবুতে চিবুতে সোফায় ঠেসান দিয়ে কম্পিউটার অন করলেই ‘জিনের’ মতো নিমেষে আপনি পৌঁছে যাচ্ছিলেন অফিসের কিউবিকলে। প্রয়োজনমতো ঘড়ি ধরে অনলাইন মিটিং-মিছিল হচ্ছিল। তা সেকি অফিস যাওয়ার খাটনির থেকে বেশি?
ভালোই কাটছিল দিনগুলো। টুক করে বেরিয়ে দোকানটা-বাজারটাও হয়ে যাচ্ছিল। গৃহস্থালির কাজে আরও অ্যাক্টিভ পার্টিসিপেশন দিতে পারায় গিন্নিও খুশি, সংসারেও অপার শান্তি।
কিন্তু সেই সুখের দিন অনেকের কাছেই এখন ‘কাঁটার মুকুট’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়। যেখানে ৬৫টি দেশের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ব্যবস্থায় কাজ করা কর্মীদের উপর গবেষণা চালিয়ে ওয়ার্কপ্লেস সফটওয়্যার ডেভেলপার অ্যাটলাসিয়ানের তরফে জানানো হয়েছে, অনলাইনে কাজ করতে হওয়ায় দৈনিক ‘অফিসটাইম’ একটু-একটু করে বেড়েই চলেছে বিশ্ববাসীর। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো (৭ মিনিট) সুবিধা পাচ্ছেন না সবাই। আফ্রিকায় ৩৮ মিনিটের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতেও ‘অফিস আওয়ার্স’ বেড়ে গিয়েছে দৈনিক ৩২ মিনিট। অঙ্কের বিচারে যার জেরে সপ্তাহে এক দিন ‘ডে-অফ’ ধরলে, ২৬ দিনের মাসে প্রায় ১৪ ঘণ্টা বা পাক্কা দু’দিন অজান্তেই বেশি কাজ করছেন ভারতবাসী। ‘মি-টাইম’ কমে যাওয়ার পাশাপাশি বেতনটাও কিন্তু আগের জায়গাতেই রয়েছে।
অন্য দিকে, গ্লোবাল প্রযুক্তি সংস্থা এনটিটি’র ‘২০২০ ইন্টেলিজেন্ট ওয়ার্কপ্লেস রিপোর্ট’-এও দাবি করা হয়েছে, ৯০% কর্তৃপক্ষই এখন মনে করছেন, বাড়ি বসে কাজ করা কর্মীদের পক্ষে অনেক বেশি শক্ত হয়ে পড়ছে। কাজ সম্পাদনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকলেও পাশে ‘কলিগদের’ অনুপস্থিতি, ঘরে ‘কাজ করার’ পৃথক জায়গা না থাকা এবং বিশেষ করে ইন্টারনেট নেটওয়ার্কজনিত সমস্যায় নাজেহাল হতে হচ্ছে তাঁদের। যদিও ৯৬% সংস্থা কর্তৃপক্ষই আগামী দিনে কোথা থেকে তাঁরা কাজ করবেন, সেই সিদ্ধান্ত কর্মীর উপরেই ছেড়ে দিতে চান। Online Income Tunes
এনটিটি’র সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৯টি ক্ষেত্রের ১,৩৫০টি সংস্থার মধ্যে ৯২% সংস্থা কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, ভার্চুয়াল দুনিয়ার বদলে অফিসে থাকলে কর্মদক্ষতা বেশি থাকে কর্মীদের। সেখানে ৪৯% আবার ‘অফিসে কম, বাড়িতে বেশি’ স্ট্র্যাটেজির পক্ষেই মত দিচ্ছে ওভারহেড খরচ অনেকাংশে কমে যাওয়ায়। সমীক্ষায় এও দেখা গিয়েছে ৫৯% আগামী দিনে অফিসের আয়তন কমানোর পক্ষেও ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন।
Comments (No)