কম্পিউটার হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? চলুন সমাধান খুঁজি কি করা উচিত

মানুষের শরীরের সুস্থতার সাথে আশপাশের পরিবেশের বেশ ভাল সম্পর্ক। গরমকালে এক ধরনের প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা নিতে হয়, শীতে বা বর্ষাকালে আরেক রকম। বিভিন্ন ঋতুতে ক্ষতিকর প্রভাব গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকলেই নানা রকম রোগ ব্যাধি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। শরীরকে রক্ষা করার জন্য যেমন বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হয়। তেমনি আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস কম্পিউটারের প্রতিও সেই রকম যত্বশীল হতে হবে। সেজন্য অবশ্য খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে না, শুধু কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই হবে। নিচের এই নিয়ম গুলো মেনে চললে কম্পিউটার হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও কম্পিউটারের অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

পেটের এক তৃতীয়াংশ খালি রাখা :

কম্পিউটারের আবার পেট? ভাবছেন আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। না আমার মাথা এখনও ঠিক আছে, হার্ডডিস্কই হলো কম্পিউটারের পেট। অবশ্য হার্ডডিস্ক বা মেমরিকে আবার আমাদের মাথার মগজের সাথে তুলনা করা হয়। ভিডিও গান, মুভি আর গেমস দিয়ে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ভর্তি করে রাখার কোন মানে হয় না। প্রয়োজনীয় ফাইল গুলো রেখে বাকি গুলো ডিলিট করে দেওয়াই ভালো। বিশেষ করে কম্পিউটারের সি ড্রাইভ যতটা ফাঁকা রাখা যায় ততই ভালো। কারণ কম্পিউটার চালু অবস্থায় সি ড্রাইভে অনেক ফাইল তৈরি হতে থাকে। এজন্য কম্পিউটার চালানোর জন্য কমপক্ষে ৫ গিগাবাইট ফাঁকা জায়গা রাখা প্রয়োজন।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ :

নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যেমন প্রতিদিন হাত মুখ ধুয়া, গোসল করা প্রয়োজন। তেমনি কম্পিউটার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কিছু কাজ প্রতিদিন, কিছু কাজ প্রতি সপ্তাহে একদিন, কিছু কাজ মাসে একদিন, কিছু কাজ তিন চার মাস পর একদিন করে করতে হয়। প্রতিদিন কম্পিউটার ব্যবহার করার শেষে ধুলাবালি থেকে রক্ষা করার জন্য ঢেকে রাখতে হবে, পাওয়ার কেবল খুলে রাখতে হবে, ঠিকমতো কম্পিউটার শাটডাউন করতে হবে ইত্যাদি। আবার সপ্তাহে একদিন শুকনো কাপড় দিয়ে কম্পিউটার টেবিল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদির উপরের ধুলাবালি গুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একবার স্ক্যানডিস্ক ও ডিফ্র্যাগমেন্ট প্রোগ্রাম চালু করা উচিত। প্রতি মাসে একবার কম্পিউটার বা সিপিইউ এর ভিতরের অংশ সাবধানে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।

ভাবিয়া করিও কাজ,করিয়া ভাবিও না :

কম্পিউটারের সুস্থতায় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে– কিছু করার আগে ভেবে নাও, জেনে নাও সিদ্ধান্ত সঠিক হচ্ছে কিনা। উদাহরণ- পেনড্রাইভ ব্যবহারের সময় ভাইরাস চেক না করে পেনড্রাইভ ওপেন না করাই উত্তম। ভাল কোন অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে পেনড্রাইভ চেক করিয়ে তারপর ব্যবহার শুরু করা উচিত। অর্থাৎ কম্পিউটারে ভাল অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করে নেওয়া এবং নিয়মিত আপডেট করে নিতে হবে। আপনারা যারা ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করেছেন এবং কেউ কেউ হয়তো ফেসবুকেও অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়েছেন, তাদের অনেক বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। অপরিচিত ওয়েব এড্রেস সংক্রান্ত লিংক ওপেন করা, ফেসবুকে নোংরা কোন ছবি কিংবা ভিডিওতে ক্লিক করা যাবে না। কারণ আপনার অগোচরেই আপনার কম্পিউটারের ক্ষতি করে ফেলবে এই সকল ভাইরাস।

প্রয়োজন বিশ্রাম ও ধৈর্য :

কম্পিউটার ভাল রাখার অন্যতম শর্ত যথার্থ বিশ্রাম প্রদান করা। অর্থাৎ একটানা কম্পিউটার চালু না রেখে ব্যবহার শেষে বন্ধ করে দেওয়া। এর ফলে অপচয়ও হবেনা আবার কম্পিউটারের যন্ত্রাংশও ভাল থাকবে। গেমস খেলা বা গ্রাফিকস এর কাজ করার সময় অন্যকোন অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার না চালানোই উত্তম। কারণ এতে কম্পিউটারের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। আর হ্যাঁ, কম্পিউটার থেকে গেমস বা অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সরাসরি ডিলিট না করে আনইন্সটল করতে হবে। কারণ সরাসরি ডিলিট করলে কিছু ফাইল কম্পিউটারে থেকেই যায়।

সময় কিন্তু আমানত :

এটা কম্পিউটার ভালো রাখার টিপস, কিন্তু প্রয়োগ করতে হবে ব্যবহারকারীর উপর। সময়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে- কম্পিউটার বা ইন্টারনেটে আসক্ত না হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমরা কম্পিউটার ব্যবহার করবো, কিন্তু কম্পিউটার যেন আমাদের ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অপ্রয়োজনে কম্পিউটার চালানো, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা অথবা সময়ের হিসাব ছাড়াই গেমস খেলা এই সকল অভ্যাস বাদ দিতে পারলে কম্পিউটারের সুস্থ থাকার পাশাপাশি আপনিও ভালো থাকবেন। সুস্থ রাখবেন আপনার কম্পিউটারকে। ধন্যবাদ সবাইকে!

আরো পড়ুন

কর্মক্ষেত্রে সফল হতে চান? কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার উপায় জেনে নিন

বিকাশ থেকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নিয়ম জেনে নিন

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ