ঘন্টায় ১ ডলার দিয়ে শুরু, এখন ঘন্টায় ৩৩ ডলার আয় করছেন।

ফ্রীল্যান্সার ফ্রীল্যন্সিং শুরু করেছিলেন খুব অল্প আয় দিয়ে। তখন ঘন্টায় মাত্র ১ ডলার বা ৮৫ টাকা আয় করতেন। হাল ছাড়েননি তিনি। কষ্ট করে গেছেন চেষ্টা করে গেছেন এখন ঘন্টায় আয় করেন ৩৩ ডলার বা ২৮০০ টাকা। তার সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন নতুনদের সহযোগীতা করার উদ্দেশ্যে। তার লেখাটি হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো।

আমার এই আয় কারো জন্য হয়তো কিছুই না; আবার যারা নতুন তাদের জন্য হয়তো অনেক কিছু। আমার এই কেস স্টাডি পড়ে হয়তো কেউ নতুন উদ্দমে কাজ করার শক্তি পাবে।

২০০৯ সালের দিকে আমি অলরেডি ব্লগিং করে টাকা আয় করছি। আমি তখন মাসে মাত্র ৫০-৬০ ডলার আয় করতাম।একদিন আমি একটা ওয়েবসাইটে ওডেস্ক এর একটা ব্যানার দেখতে পাই।

আমি ওডেস্কে গিয়ে দেখি যে সেখানে মানুষ ১০ ডলার করে ঘন্টায় আয় করছে।আমি দেখে ভাবলাম, আরে এরা এত টাকা আয় করছে? আমি যদি ঘন্টায় ১০ ডলার করে আয় করতে পারি তাহলে তো আর কোন চিন্তাই নাই। আমি একটা আইডি খুলে ফেললাম।

ফ্রিল্যান্সিং মানেই আপনাকে কিছু কাজ করে টাকা আয় করতে হবে। আমি ব্লগ সেটাপ, গ্রাফিক্স ডিজাইন পারতাম, তাই এসকল কাজে বিড করা শুরু করে দিলাম। এখন ওডেস্কে একাউন্ট খোলা আর বিড করা সহজ কিন্তু কাজ পেতে হলে আরো কিছু করতে হবে।

যেহেতু আমার কোন ওয়ার্ক হিস্টরি নেই, তাই আমি কোন কাজ পাচ্ছিলাম না।আমি কি করলাম আমার কম্পিউটারের থেকে আমার সব কাজ যেমন লোগো, ওয়েব ডিজাইনের স্যাম্পল ইত্যাদি আমার ওডেস্ক প্রোফাইলে এড করে নিলাম। এরপর বিড করতে থাকলাম ১ মাস। তেমন কোন সাড়া পেলাম না, তাও বিড করতেই থাকলাম।

১ মাস পর…

একটা কাজ পেয়ে গেলাম যেখানে কিছু ব্যানার ডিজাইন করতে হবে। আমার পে হবে ১ ডলার প্রতি ঘন্টা। আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম সেদিন। এজন্য না যে আমি টাকা পাচ্ছি, এজন্য কারন এখন আমার প্রোফাইলে কিছু অভিজ্ঞতা যোগ হবে। এটা খুবই জরুরী!

অনলাইনে কাজ করতে হলে আপনার ট্র্যাক রেকর্ড যেমন কয় ঘন্টা কাজ করলেন, ফিডব্যাক ইত্যাদি এর দিকে খেয়াল রাখবেন।

আমি ৭ ঘন্টা কাজ করে ৫-৬ টা ব্যানার বানালাম। আর ৭ ডলার আয় করলাম। এই নতুন অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমি আরো কাজে বিড করলাম। এর পরে আমি যে কাজ পেলাম সেটি ছিল ৬ ডলার প্রতি ঘন্টা। আমি একসাথে এরকম ২টা কাজ পেলাম।

আমার কাজ ছিল ব্লগ এর কিছু কাজ আর টেমপ্লেট কাস্টোমাইজেশন।তখন আমি সপ্তাহে প্রায় ৫০-৬০ ডলার আয় করছিলাম। এরপর আমি যে কাজটা নেই সেটা ছিল ৮ ডলার প্রতি ঘন্টার। আমি এই রেটে বেশ কয়েকটা কাজ করলাম। আমি এখন ওয়ার্ডপ্রেস ডিজাইনের কাজ করছিলাম।

এরপরের জবে আমার পারিশ্রমিক ছিল ১০ ডলার।

আমি আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে ফেললাম! কিন্তু থেমে থাকি নি… এরপর ১২ ডলার/ঘন্টা

এরপর ১৫…ততদিনে আমি বুঝে গেছি যে ওডেস্কে কাজ করে বেশিদূর আগানো যাবে না।

অডেস্ক যদি কোন কারনে আমার একাউন্ট বাতিল করে দেয় তাহলে আমার সব কাজ আর ট্র্যাক রেকর্ড শেষ হয়ে যাবে।আমি আমার ব্লগে একটা পেজ খুললাম যে আমি ওয়ার্ডপ্রেসের কাজ করি। ব্লগের মাধ্যমে আমি অনেক নতুন ক্লায়েন্ট পেলাম।

অনেক ক্লায়েন্ট আমাকে গুগলে খুজে পেতে লাগলো।আমি এক একটা ওয়েব সাইটের জন্য ১০০ ডলার চার্জ করলাম। এরপর ২০০, ৩০০, ৪০০ এবং ৫০০ ডলার পার ওয়েবসাইটে কাজ করলাম।ওডেস্কে আমি আমার রেট ২৫ ডলার করলাম। আমি এই রেটে সেখানে ১-২ টা কাজ পেলাম কিন্তু বেশিরভাগ কাজ আমি আমার ওয়েবসাইটেই পেলাম যেটা আমি এত বছর ধরে তৈরী করেছি।

কিছু টিপস দিয়ে লেখাটা শেষ করে দিচ্ছিঃ-

আমি ১ ডলার ঘন্টা থেকে ৩৩ ডলার ঘন্টায় গিয়েছি। আপনিও ইচ্ছা করলে এমনটি করতে পারেন,

১) ছোট খাট কোন কাজ দিয়ে শুরু করুন, যদিও সেটা হয় মাত্র ১ ডলার
২) অভিজ্ঞতা অর্জন করুন, নিজের ট্র্যাক রেকর্ড তৈরী করুন
৩) নতুন নতুন স্কিল অর্জন করুন; প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন
আমি আমার সল্প জ্ঞ্যান দিয়ে ১০ ডলারের কাজ পাইনি, আমি ওয়ার্ডপ্রেসের কাজ শিখে সেই কাজটা পেয়েছি

৪) জব সাইটের ওপর ভরসা করে বসে থাকবেন না, নিজের প্ল্যাটফরম তৈরী করুন
৫) ধৈর্য ধরুন
৬) টাকার চেয়েও বেশি নিজের ক্লায়েন্টকে মূল্য দিন
৭) বেশি টাকা চাওয়ার জন্য বিব্রত/ইতস্থত বোধ করবেন না কারন,
৮) আমি ১০ ডলার প্রতি ঘন্টায় আয় করেছি কারন আমি সেটা চেয়েছি

বেশ কয়েক বছর আগে আমার ক্ষেত্রে যেটা কাজে লেগেছে সেটা হয়তো আপনার ক্ষেত্রে কাজে লাগবে না কারন এখন ওডেস্কে (এখন আপওয়ার্ক) অনেক ভিড়।কিন্তু যতদিন পর্যন্ত আপনার কিছু স্কিল আছে আর আপনি নতুন নতুন স্কিল শিখছেন, আপনার কাজের কোন অভাব হবে না।

আশা করি আমার এই লেখাটা আজ কোন একজনের কাজে দেবে।

আপনি সবজায়গাতে ব্যর্থ, শেষ গন্তব্য ফ্রিল্যান্সিং

একজন সফল ইউটিউবার হওয়ার উপায়।

ফ্রিল্যান্সার সুমন, ৫ ডলারে শুরু এখন মাসিক আয় ৬০০০ ডলার

দৈনিক আয় ৭০ লাখ ডলার!

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ