যেভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং… 1

প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার এই সময়ে বলা হচ্ছে, আগামীতে আয়ের বড় উৎসও কর্মসংস্থানের বৃহৎ সেক্টরহবে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং। বাংলাদেশের প্রায় ৩০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশলী অনলাইনে বিশ্বের সহস্রাধিক প্রতিষ্ঠানেরহয়ে কাজ করছেন। এছাড়া দেশের লক্ষাধিক তরুণ আউটসোর্সিং এ জড়িত আছে।

এইপরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। তাদের এ সফলতায় অনুপ্রানিত হয়ে অনেকেই না বুঝে ফ্রিল্যান্সিংয়ে নেমে পড়েন। তবে এইসেক্টরে সফলতার জন্য আগে থেকেই বিষয়গুলো জেনে নেয়া উচিত। কিভাবে,কোথায় বা কোনমাধ্যমে কাজ করতে হবে এসব বিষয় বিবেচনা করে ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসলে সফলতা অনেকটাই নিশ্চিত।

এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাক।

ফ্রিল্যান্সিংফ্রিল্যান্সিং এ আসার আগেই যে বিষয় প্রথমেই করা উচিত তা হলো ফ্রিল্যান্সিং কি সেটা ভালোভাবে জানা। মূলত

গতানুগতিক চাকরির বাইরে নিজের ইচ্ছেমত কাজ করার নামই ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা। আর এই পেশায় যিনি জড়িত থাকেন তাকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। একজন ফ্রিল্যান্সার কোনো প্রতিষ্ঠানেরচাকরিজীবি হিসেবে নয়, কাজের ধরণ বা প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী স্বল্পকালীন কাজ করে থাকেন।এক্ষেত্রে তাকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়। তিনি চুক্তিভিত্তিক পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন, যা সময় অথবা নিদ্দিষ্ট পরিমানের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা থাকে।

মূলত বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেস বা ওয়েবের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি ফ্রিল্যান্সিং কাজ দেওয়া নেওয়া হয়।

ইন্টারনেটে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস(ওয়েবসাইট,

যেমন: ওডেস্ক)-এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্স কর্মীদের মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানেরকাজগুলো করিয়ে নিয়ে থাকেন।

মূলত স্বল্প সময়ের কাজগুলোই আউটসোর্স বেশি করা হয়েথাকে। অনেক প্রতিষ্ঠান স্থায়ী কর্মী নিয়োগ দেয়ার চেয়ে স্বল্প সময়ের ফ্রিল্যান্স কর্মীদের দিয়ে কাজ করাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করে।

এক্ষেত্রে একজন কর্মীকে কেবল তাঁর কাজের জন্যই অর্থ পরিশোধ করতে হয়, কাজ না করলে কোন ধরণের অর্থ পরিশোধ করতে হয় না। প্রতিষ্ঠান চাইলেই যেকোন ফ্রিল্যান্স কর্মীকে তাঁর প্রকল্প শেষে/মাঝামাঝি সময়ে বাদ দিয়ে দিতে পারে, চাইলে যেকোন সময় নতুন কর্মীও নিয়োগ দিতে পারে।

এটিকে স্থায়ী কর্মীর চেয়ে অনেক নমনীয় মনে করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, দিন দিন তাই আউটসোর্সিংয়ের পরিমাণ বাড়ছে বিশ্বব্যাপী।ইন্টারনেটের কল্যানে এখন উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানীর কাজ উন্নয়নশীল দেশগুলোর কর্মীরাও ঘরে বসেই করার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে সরাসরি কাজের বিষয়ও রয়েছে।

মোটকথা ফ্রিল্যান্সিং হলো ঘরে বসে বাইরের তথা দেশ বিদেশের কাজ করা ও অর্থ উপার্জন করা।
যেভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং… 2

যেসব কর্মীরা এধরণের কাজ করছেন, তারাই মূলত ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কর্মী।ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থানফ্রিল্যন্সিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ সন্তোষজনক পর্যায়ে। ওডেস্কের এক জরিপে প্রকাশ,সাইটটিতে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারের হিসাব অনুযায়ী আমরা বিশ্বব্যাপী তৃতীয় অবস্থানে রয়েছি। বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের সম্পর্কে ম্যাট কুপার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা খুব ভালো কাজ করছেন, দ্রুত তাঁদের উন্নতি হচ্ছে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কাজ পাওয়ার হার উল্লেখ করার মতো কিছু ছিল না। মাত্র তিনবছরে ওডেস্কে বাংলাদেশ শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে। এছাড়া ওডেস্কে মোট কাজের ১২ শতাংশ বাংলাদেশিরাইসম্পন্ন করছে। এটা খুববড় ধরনের উন্নতি।ম্যাট কুপার জানান, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করছেন। কেউবা চাকরির পাশাপাশি আবার কেউবা লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দিয়েও কাজ করছেন। ওডেক্সে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ১০হাজার ঘন্টার উপরে কাজ করেছেন এমন কয়েকজনকে পাওয়া যাবে।

প্রত্যেকে আয় করছেন হাজার হাজার ডলার। এমনকি ৩০ হাজার ডলারের উপরে আয়ের রেকর্ডও রয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য গর্বের। আরেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট ফ্রিল্যান্সার.কমে ২৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছে বলে জানা গেছে। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন তাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় এই সাইটটিতে ক্রমেই বাংলাদেশি ফ্রিল্যন্সারদের পরিমাণ বাড়ছে।

অপর জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইট রেন্ট-এ-কোডারে রয়েছে ৫ হাজারের অধিক ফ্রিল্যান্সার। এদের মধ্যেঅনেকেরই ১০০টির বেশি প্রজেক্ট সম্পন্ন করার অভিজ্ঞতা আছে শতাধিক ফ্রিল্যান্সারের। বাংলাদেশ থেকে ৫০০ এর বেশি প্রজেক্ট সম্পন্নকারীওরয়েছেন এই মার্কেটপ্লেসে।বাংলাদেশের ওভারাল অবস্থান নিয়ে বলতে গেলে, আমরা সাধারণ ডাটা এন্ট্রির কাজ থেকে শুরু করেউচু মানের কারিগরি কাজেও আমরা বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছি। প্রতিটা জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসেই আমাদের অবস্থান তৃতীয় থেকে পঞ্চমের মধ্যে।কেন ফ্রিল্যান্সিং করবেন?ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন এটা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। অনেকে প্রথাগত নয়টা-পাঁচটা চাকরিতে আগ্রহী নয়, তার জন্য হয়তকাজের সময়ের নমনীয়তার জন্যই ফ্রিল্যান্সিং সবচেয়ে আকর্ষনীয়। আবার অনেকে অফিসে চাকরির ক্ষেত্রে যত টাকা আয় করেনফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় করেনতারচেয়ে পাঁচ থেকে ছয়গুন বেশি।

এমন অনেকেই রয়েছেন যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করেন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা, অথচ কর্পোরেট চাকরি করলে হয়ত তাদের বেতন হত ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০/৬০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে হয়ত উনি বেশিটাকার জন্যই ফ্রিল্যান্সিং করেন এটিই তাঁর কাছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক।

তবে সাধারণত ফ্রিলান্সিংয়ে যেসব সুবিধার কারণে সবাই আগ্রহী হয়ে থাকেন সেগুলো হলো, নিজেই নিজের বস হওয়ার সুযোগ!যখন খুশি কাজ করবেন, যখন ইচ্ছে বন্ধ করবেন। রয়েছে কাজের স্বাধীনতা, কিকাজ করবেন, কার সঙ্গে কাজকরবেন এটি একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। যেহেতু আপনি কাজের উপর নির্ভর করেই টাকা পাবেন তাই এতে প্রোডাকটিভিটি বাড়ে। আপনিযেহেতু অনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করবেন তাই বাড়বে আপনার কমিউনিটির পরিধিও।

যেহেতু অফিসের একই কাজ আপনাকে প্রতিদিন করতে হচ্ছেনা,প্রতিদিন নতুন নতুন কাজের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন নিশ্চিত তাই এটি আপনার দক্ষতা বাড়াবে।কি করা যাবেইন্টারনেটের মাধ্যমে যেসব কাজ করা সম্ভবতার সবই করতে পারেন একজন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কর্মী।

অনেকে মনে করে থাকেনফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কেবল ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের মতো কাজগুলোতেই সীমাবদ্ধ। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের একজন একজন শিক্ষার্থী চাইলে কোন প্রতিষ্ঠানেরহিসাব নিকাশ করে কিংবা অর্থনৈতিক অবস্থার বিশ্লেষণ করেও বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। অনলাইন মার্কেট প্লেসে বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে।

একজন ফ্রিল্যান্সার তার দক্ষতা অনুযায়ি সংশ্লিষ্ঠ কাজ করতে পারেন।

এ ধরণের কাজের মধ্যে রয়েছে-ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন,সফটওয়্যার/অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ব্লগ রাইটিং/আর্টিকেল রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কাস্টমার সাপোর্ট, সেলস/অনলাইন মার্কেটিং, অনলাইন সার্ভে, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টইত্যাদি। যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন করতেচান তারা ওয়ার্ডপ্রেস, সিএসএস, পিএইচপি, এইচ.টি.এম.এল, জুমলাসহ নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিভাগ বেছে নিতে পারেন। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন, মোবাইল অ্যাপস নির্বাচন করতে পারেন।

যারা ইংরেজিতে ভালো দক্ষ ও যেকোনো লেখা লিখতে পারেন তারা ব্লগ/আর্টিকেল রাইটিং করতেপারেন। এক্ষেত্রে কোনো ব্লগের জন্য পোস্ট, রিভিউ রাইটিং করা যাবে। ডাটা এন্ট্রি ক্ষেত্রে রয়েছে পিডিফ থেকে এক্সেল শিট সম্পাদন, ক্যাপচা এন্ট্রি ইত্যাদি। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে অ্যাডোব ইলাস্ট্রেটর, ফটোশপ ইত্যাদি যেকোনো বিষয় নির্বাচন করতে পারেন। আর কাস্টমার ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেরইমেইল রেসপন্স, কল রেসপন্স বা কলসেন্টার সার্ভিস দেয়া যাবে। জনপ্রিয় আরেকটি বিষয় সেলস মার্কেটিং ক্যাটাগরিতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

[এসইও], মার্কেট রিসার্চ, সোশ্যাল মার্কেটি ইত্যাদি করা যাবে।যা প্রয়োজনফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার মুলমন্ত্র হলো মেধা বা দক্ষতা। থাকতে হবে ধৈর্য্য। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলো ইংরেজি না জানা বা কম জানা। গার্টনারের জরিপে দেখা গেছে, দেশের তরুণেরা আউটসোর্সিংয়ে পিছিয়ে থাকার পেছনে ইংরেজি দুর্বলতা দায়ী।

আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণবিষয় সেটি অনেকে বুঝতে চান না। যেহেতু বিদেশী বায়ারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয় সে জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। নতুবা কোনভাবেই আপনি আপনার বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট যেমন বুঝতে পারবেন না তেমনি কোন সমস্যাও তাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন না। ইংরেজিতে দূর্বলরা উপরের কথা পড়ে হয়ত ভড়কে যেতে পারেন, তবে তাদের জন্য বলতে পারি যে আপনাকে কিন্তু ইংরেজিতে পন্ডিত হতে হবে এমনটি নয়। ভাব বিনিময় এবং ব্যবসায়িক কাজগুলোর জন্য সাধারণত যে ইংরেজি ব্যবহৃত হয় সেটি জানলেই চলবে। যারা ইংরেজিতে দূর্বল তাদের এটি দূর করতে খুব বেশি যে সময় লাগবে এমনটি নয়, ২ থেকে ৩ মাস একটু চেষ্টা করলেই এ ধরণেরইংরেজি রপ্ত করা সম্ভব। এছাড়া প্রয়োজনীয়ভাবে সংশ্লিষ্ঠ কাজের পাশাপাশি ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডেডলাইনের দিকে নজর রাখাজরুরী।

পারলে ডেডলাইনের আগে ভাগেই কাজটি শেষ করেবায়ারের কাছে জমা দেওয়া ভালো। এছাড়া ভালো রেটিং পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা রাখতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পরিমাণ কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আর হ্যাঁ, দ্রুত কাজের জন্য অবশ্যই অপেক্ষাকৃত ভালোমানের কম্পিউটার ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট থাকতে হবে। আরকাজের ধরণ অনুযায়ি স্ক্যানার, ডিজিটাল ক্যামেরা বা অন্য কোনো যন্ত্রেরও প্রয়োজন পড়তে পারে।দক্ষতা অনুযায়ি কাজ বেছেForex Brokers My Friendsনেওয়াফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতার পিছনে প্রথমে যে কাজটি কাজ করে সেটি হলো নিজের দক্ষতা বা পছন্দের বিষয় অনুসারে কাজ খুঁজে বের করা। একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রথম কাজহলো তিনি কি করবেন সেটি আগে নির্ধারণ করা। বিষয় নির্ধারণ করে সেক্ষেত্রে নিজেকে যে বিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের হিসেবে গড়ে তুলেছেন বা তুলতে পারার মতো মনোবল আছে সেটি প্রাধাণ্য দেয়া উচিত।
কারণ তাকে আন্তর্জাতিক মার্কেটে অভিজ্ঞদের সাথে বিড করে কাজ পেতে হবে।অভিজ্ঞ নন, সে বিষয়ে নিয়ে কাজ করতে যাওয়া মানেই বোকামির পরিচয়।প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ নেয়াসফটওয়্যার বা ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট কিংবা কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট যাই হোক না কেনো সে বিষয়ে যথেষ্ঠ জ্ঞান থাকতে হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে প্রশিক্ষণ নেয়া যেতে পারে।
সম্প্রতি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসফ্রিল্যান্সার.কম আয়োজিত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও কন্টেন্ট রাইটিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী বাংলাদেশি সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান ডেভসটিম লিমিটেড ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
৩মাস মেয়াদী এসব প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা পেতে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টারের ১২ তলায় অবস্থিত ডেভসটিম অফিস ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়া বেসিসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ফ্রিল্যান্সার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিডি জবস, ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটি।

মার্কেটপ্লেসনির্বাচনফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে মার্কেটপ্লেসবলতে বোঝায় যেখান থেকে ফ্রিল্যান্স কাজ পাওয়া যায় বা দেয়াযায়। যারা এসব সাইটে কাজদেয় তাদের বলা হয় বায়ার বা ক্লায়েন্ট।হ্যাশ ফাংশন 2আর যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদের বলা হয়কোডার বা প্রোভাইডার। কোডার একটি কাজের জন্য বাপ্রজেক্টের জন্য বিড বা আবেদন করে। কতদিনের মধ্যে প্রজেক্ট জমা দিতে হবে, কত টাকায় তা সম্পন্ন করতে হবে সব বিষয় পরিস্কার উল্লেখ থাকে।

কোডাররা আবেদন করার পরক্লায়েন্ট যাকে ইচ্ছা তাকে কাজটির জন্য নির্বাচন করতে পারে। ক্লায়েন্ট সাধারণত কোডারের পূর্ব অভিজ্ঞতা, বিডকরার সময় কোডারের মন্তব্য ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। কোডার নির্বাচিত হবার পর ক্লায়েন্ট কাজের টাকা সাইটগুলোতে জমা করে দেয়।কোডার কাজ শেষকরার সাথে সাথে টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে যান। যেসাইটির মাধ্যমে কাজটি পাওয়া গেছে সে সাইটটি নির্দিষ্ট কমিশন রেখে বাকি টাকা কোডারের অ্যাকাউন্টে জমা করে দেয়।আর এসব কাজে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে মার্কেটপ্লেস। ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক সাইট রয়েছে।

এ ধরণের জনপ্রিয় কিছু সাইট হলো-
ওডেস্ক.কম, ফ্রিল্যান্সার.কম, স্কিপ্টল্যান্সার.কম, রেন্ট-এ-কোডার.কম, ইল্যান্স.কম, জুমলাল্যান্সার.কম, গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার.কম। এসব সাইটে বিনামুল্যে নিবন্ধণ করে শুরু করা যেতেপারে ফ্রিল্যান্সিং কাজ। নিবন্ধনের আগে অবশ্যই সাইটটির বিভিন্ন নিয়মাবলি, কাজ পাবার যোগ্যতা, পেমেন্ট মেথড বা বিভিন্ন চার্জ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।আবেদনের প্রস্তুতিমার্কেট প্লেসে নিবন্ধনের পরপরই ভালো একটা কাভার লেটার তৈরি করা উচিত, যা ক্লায়েন্টেরকাছে কাজের আবেদনের সময় লাগবে। সাথে আগে সম্পন্ন করা উল্লেখযোগ্য কাজের লিস্ট বা একটি ভালো পোর্টফলিও তৈরি করা।

বায়ার কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে মূলত এই পোর্টফলিও বা কাজের অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিবেচনা করেন। রেজিস্ট্রেশনকরার সময় ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি সঠিকভাবে দিতে হবে। রেজিষ্ট্রেশনের একটি ধাপে আপনার একটি প্রোফাইল/রিজ্যুম তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে পারদর্শী তা উল্লেখ করবেন। এখানে আপনি আপনার পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা, ওয়েবসাইট লিংক ইত্যাদি দিতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, আপনার প্রোফাইলটি যত প্রফেশনালি এবং বেশি তথ্যদিয়ে সাজাতে পারবেন আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনাও তত বেশি হবে। তবেকোনো মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে যে বিষয়ে দক্ষতা আছে সেটি ভালোভাবে তুলে ধরা উচিত। কোনো কাজ গ্রহণের আগে সেটির সময়সীমা, বাজেট ও সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। আর ক্লায়েন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

ফ্লো চার্ট (Flow Chart)পারলে সেই ক্লায়েন্টেরপূর্বের কোনো রিভিউ দেখে নেয়া। কারণ অনেক সময় ক্লায়েন্ট প্রতারক হলে কাজটি করিয়ে প্রতারণা করতে পারেন।কাজ বিড করার আগেসফলভাবে রেজিস্ট্রেশনসম্পন্ন হবার পর, এখন আপনি বিড করা শুরু করে দিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতি মূহুর্তে নতুন কাজ আসছে। আপনার পারদর্শীতা আনুযায়ী প্রতিটা কাজ দেখতে থাকুন।

প্রথম কয়েক দিন বিড করার কোন প্রয়োজন নেই। এই কয়েকদিন ওয়েবসাইটি ভাল করে দেখে নিন। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং সাহায্যকারী আর্টিকেল পড়ে ফেলতে পারেন। একটি কথা মনে রাখবেন, প্রথমদিকে কাজ পাওয়া কিন্তু সহজ নয়। তাই আপনাকে ধর্য্যসহকারেবিড করে যেতে হবে। প্রথম কাজ পেতে হয়ত১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কয়েকটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। তখন ক্লায়েন্টরাই আপনাকে খোঁজে বের করবে।


Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ