সূর্যডিম বা মিয়াজাকি হলো জাপানিজ আম। বিশ্ব বাজারে এটি ‘রেড ম্যাংগো’ নামে পরিচিত। যা বর্তমানে নোয়াল ফার্ম বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম। আমটির স্বাদ অন্য আমের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি।
চাষ পদ্ধতি: মিয়াজাকি আমের চাষ করে আপনি হতে পারেন কোটিপতি। আমটি স্বাদের চেয়ে চাষ পদ্ধতির কারণে বেশি দামি। সূর্যডিম আমটির মজাদার চাষ পদ্ধতি হচ্ছে-
একটি গাছের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ মাটি ব্যবহার করা হয় (টবের মতো)।
পুরো বাগানকে স্বচ্ছ ছাউনি বা অফসেড দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। মুকুল গুলো মৌমাছি দ্বারা পরাগায়ন হয়ে থাকে।একটি মুকুলে মাত্র একটি আম রেখে বাকি আমগুলো ছাঁটাই করা হয়।আম পরিপক্ক হলে প্রতিটি আমকে উপরের ছাউনির সাথে বেঁধে রাখা হয়।একটি নেট ব্যাগের মধ্যে আমটি আলতোভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়।আমটি ন্যাচারালি একা একা পাকে।আমটি মাটিতে না পড়ে অক্ষত অবস্থায় ঝুলন্ত নেট ব্যাগের মধ্যে পড়ে।মাটির স্পর্শ ছাড়াই আমটি বাজারজাত করা হয়।
একেকটি আমের ওজন প্রায় ৩৫০ গ্রাম। মাত্র দুটি আমের একটি বাক্সের মূল্য দাঁড়ায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আমের দামের উত্তাপে যেন পুরো শরীরই পুড়ে যায় আম প্রেমিকদের। আমের নাম ‘মিয়াজাকি’। এক কেজি আমের দাম পৌনে তিন লাখ টাকা। মূল্যবান এই আম পাহারায় গাছের কাছে রাখা হয়েছে সশস্ত্র রক্ষী।
বিশেষজ্ঞদের বিচারে এই আম বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম। ১৯৭০-১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিয়াজাকির ফলন শুরু হয় জাপানে। দেশটিতে এই আম দামি উপহার হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে। দেখতে টকটকে লাল রং, মাঝে হালকা বেগুনি আভা। এর তুলনা টানা হয় দামি পাথর চুনার সঙ্গে।
এই আমকে প্রথম দেখায় বিশালাকৃতির ডিম ভেবে ভুল করতেও পারেন আপনি। তবে জাপানে এই আমকে ভালোবেসে ‘তাইও-নো-তোমাগো’ অর্থাৎ ‘সূর্য কিরণের ডিম’ বলা হয়।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক দম্পতির বাগানে এই ‘মিয়াজাকি’ আম রয়েছে। কিন্তু এই গাছ দুটিই এখন তাদের সকল চিন্তার কারণ হয়েছে। এক গয়না ব্যবসায়ী আম কেনার জন্য প্রস্তাব দেন তাদের। কিন্তু প্রস্তাবে রাজি হয়নি মধ্যপ্রদেশের ওই দম্পতি।
দম্পতি জানিয়েছেন, এই আম বিক্রি করবেন না তারা। আমের বীজ থেকে গাছের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এমনকি গাছ থেকে কেউ যেন আম চুরি করতে না পারে সেজন্য রক্ষী রেখেছেন। চারজন সশস্ত্র পাহারাদার এবং ছয়টি কুকুর দিনরাত পাহারা দেয় ‘মিয়াজাকি’ আমগাছগুলো।
অত্যন্ত মিষ্টি এই আম এই আমগুলি জাপানের কিউশু প্রদেশের মিয়াজাকি শহরে প্রথম ফলতে দেখা গিয়েছিল, তাই এই শহরের নামেই এই আমের নাম। এই আমগুলির এক-একটির ওজন ৩৫০ গ্রামের ওপর এবং এই আমে ১৫ শতাংশ বা তার বেশি মিষ্টির ভাগ থাকে।
প্রতি কেজির মূল্য ২.৭০ লক্ষ জাপানের মিয়াজাকির স্থানীয় পণ্য ও বাণিজ্য প্রচার কেন্দ্র অনুসারে, এই আমগুলি এপ্রিল ও অগাস্টের মাঝে উচ্চ পরিমাণে ফলন হয়। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দামি এই আম, যা গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে ২.৭০ লক্ষ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল। ভারতে এই প্রজাতির প্রত্যেক আমের দাম ১৫ হাজার টাকা করে।
সাধারণ আমের চেয়ে অনেকটাই আলাদা জাপানের পণ্য উপাদন কেন্দ্র অনুসারে, এই মিয়াজাকি আম ‘ইরভিন’ আম, যা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ব্যাপকভাবে ফলিত হলুদ বর্ণের ‘পেলিকান আম’-এর চেয়ে অনেকটাই আলাদা। এই আম জাপানের সর্বত্র চালান হয় এবং ওকিনাওয়ার পর জাপান এই আম চালানে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
এই আমের গুণাগুণ এই আমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ ও রয়েছে বেটা-ক্যারোটিন এবং ফলিক আ্যাসিড, যা ক্লান্ত চোখের জন্য দারুণ উপকার দেয়। এই আম চোখের দৃষ্টিকেও আরও জোরালো করে।
আমের ফলন শুরু হয় কবে এই মিয়াজাকি আমের ফলন শুরু হয় ১৯৭০ সালের শেষের দিকে এবং ১৯৮০ সালের প্রথমদিকে। এই মিয়াজাকি শহরের উষ্ণ আবহাওয়া, দীর্ঘ সময় ধরে থাকা সূর্যের রশ্মি এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি কৃষকদের এই আম ফলন করতে সম্ভব করেছে। বিশেষ তাপমাত্রা, নির্দিষ্ট পরিমাণে জল, পরিমিত সার-সহ একাধিক জিনিসের সমন্বয়ে মিয়াজাকি আম চাষ করতে হয়। এটি এখন এখানে বেশ প্রভাবশালী উৎপাদন।
ডায়নাসোরের ডিমের মতো আকার জাপান দ্বীপপুঞ্জে এই আম রপ্তানির পূর্বে কড়া পরীক্ষা ও চেখে নেওয়া হয়। অত্যন্ত উন্নত মানের গুণ বজায় রেখে এই ‘সূর্যের ডিম’ বা ‘এগ অফ দ্য সান’ গোটা জাপান জুড়ে রপ্তানি হয়। এই আমের রং জ্বলন্ত লাল এবং এটি দেখতে খানিকটা ডায়নাসোরের ডিমের মতো।
আপনি যদি এই আমের চাষ করতে চান তাহলে চারা পাবেন যুব এগ্রো তে।
Comments (No)