টেলিগ্রাম থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন?

অনেকেই হয়তো আশ্চর্য হতে পারেন কিন্তূ এটা সম্পূর্ণ সত্যি যে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে ঘরে অনেকেই অনলাইনে থেকে টাকা ইনকাম করছে।টেলিগ্রাম হলো একটি মেসেজিং অ্যাপ , এখানে টেক্সট, ভিডিও, অডিও এসবকিছু পাঠাতে পারবেন। ঠিক হোয়াটসঅ্যাপের মতো।

Income করার জন্য আপনার একটি telegram channel থাকা জরুরি। আপনার channel / group এর মধ্যে কমেও ৫০০০ member / followers থাকতে হবে।এবং ওই চ্যানেলটি যদি পাবলিক করা থাকে তাহলে যে কেউ ওই চ্যানেলটি খুঁজে যুক্ত হতে পারবে ওই চ্যানেলের সঙ্গে। যত বেশি channel members থাকবে, ততটাই বেশি ইনকাম এর সুযোগ থাকবে।

আজকে আমরা জানবো টেলিগ্রাম থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। শুধু আপনার মোবাইল ব্যবহার করে।

টেলিগ্রাম থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন? 1

সংক্ষিপ্তভাবে বলতে গেলে-

  • প্রথমে টেলিগ্রাম চ্যানেল বানাবো।
  • তারপর, ওই চ্যানেলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করবো। যারফলে ভিজিটর আমার চ্যানেলে যুক্ত হয়।
  • এরপর বিভিন্ন প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবো।

আশাকরি আপনি কিছুটা অনুমান করতে পেরেছেন। এবার পুরোটা পড়ে নিন তাহলে বুঝতে পারবেন, কিভাবে আয় করবেন তার প্রতিটি স্টেপ।

স্টেপ ১:

প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল অথবা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিয়ে হবে।

  • কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল বানাবেন?
  • কিভাবে ওয়েবসাইট বানাবেন

স্টেপ ২:

এরপরের ধাপ হলো, আপনাকে টেলিগ্রাম অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে গুগল প্লেস্টোর থেকে অথবা কম্পিউটারের টেলিগ্রাম  ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

স্টেপ ২:

এরপর, টেলিগ্রামে নতুন চ্যানেল বানানোর জন্য new channel অপশনটিতে ক্লিক করুন।

স্টেপ ৪:

এরপর, চ্যানেলের নাম ও ডেসক্রিপশন লেখার জায়গাতে, আপনাকে চ্যানেলের নাম লিখতে হবে।

আপনার ইনকাম নির্ভর করবে চ্যানেলের নামের ওপরের। তাই নামটি এমন হতে হবে যার মাধ্যমে আপনি অনেক ভিজিটর পান আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে।

এবং ওই ভিজিটরকে কোনো প্রোডাক্ট কেনার জন্য অ্যাফিলিয়েট লিংক দিতে পারেন।

যখনই ওই লিঙ্কের মাধ্যমে কোনো ভিজিটর, কোনো প্রোডাক্ট কিনবে, আপনি ওই প্রোডাক্টের বিক্রির জন্য কমিশন পাবেন। তাই চ্যানেলের নাম এমন রাখতে হবে যা মানুষ সচরাচর সার্চ (Search) করে থাকে অনলাইনে।

বিভিন্ন রকমের প্রোডাক্ট ব্যবহারকারী খুঁজে থাকে অনলাইনে। তাই ওই সব প্রোডাক্টের নাম দিয়ে কোনো চ্যানেল বানালে মন্দ হবে না।

আমার ক্ষেত্রে আমি উদাহরণ হিসেবে Room Heater আমার চ্যানেলের নাম দিলাম। একইভাবে ডেসক্রিপশনে (Description) room heater লিখলাম। কিন্তূ একটা কথা মনে রাখবেন রুম হিটার শুধুমাত্র শীতকালেই ব্যবহারকারীরা অনলাইনে খুঁজে থাকে।

তাই চেষ্টা করবেন , এমন কোনো নাম যা সারাবছর মানুষ অনলাইনে খুঁজে থাকে। যার ফলে সারাবছরই যাতে আপনার ইনকাম হতে থাকে।

স্টেপ ৫:

চ্যানেলটি বানানোর পর। যখনই কোনো ব্যবহারকারী টেলিগ্রাম অ্যাপ খুলে (open) search করবে, ” room heater” লিখে আপনার চ্যানেলটি দেখাবে।

কিন্তূ আয় করার জন্য শুধু চ্যানেল যথেষ্ট নয়। চ্যানেলের মধ্যে অনেক পোস্ট করতে হবে যার ফলে ইউজার (user) কে আকর্ষিত করা যায়।

যেমন: রুম হিটার সমন্ধে তথ্য দিতে পারেন অথবা আপনার কোনো ওয়েবসাইটের অথবা ইউটিউব চ্যানেলের লিংক দিতে পারেন।

ওই ওয়েবসাইট অথবা চ্যানেলে ওই প্রোডাক্ট সমন্ধে তথ্য দিতে পারেন ও সেই সঙ্গে কিছু প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক দিতে পারেন।

  • পড়ুন: অ্যাফিলিয়েট লিংক (মার্কেটিং) কি? ইনকাম?

যদি লেখাটি পড়ে পছন্দ হয় অথবা কোনোভাবে যদি আপনার ওয়েবসাইটে/ইউটিউব চ্যানেল এ থাকা লিংকটিতে যখন কেউ ক্লিক করে কোনো প্রোডাক্ট কিনবে তখন আপনি ওই প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য কিছু শতাংশ অথবা নির্ধারিত কিছু টাকা পাবেন।

আর এভাবেই টেলিগ্রাম (Telegram) থেকে আয় (income) করা সম্ভব।

একদম সহজ ভাষাতে বলতে গেলে, টেলিগ্রাম থেকে কোনো নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ইনকাম করার এরকম কোনো নিয়ম নেই।

ধরুন আপনি একটা চ্যানেল বানালেন যার নাম রাখলেন ” সেরা এয়ার কন্ডিশনার (Best air conditioner)” এবং ওই পোষ্টটিতে আমেরিকা থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর আসছে।

তাহলে আপনি আমেরিকার আমাজন অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট বানায় পারেন amazon.com ওয়েবসাইটে গিয়ে।

এবং এয়ার কন্ডিশনারের লিংকটি আপনার কোনো ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল দিয়ে পারেন।

আর ওই ইউটিউব অথবা ওয়েবসাইটের লিংকটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে দিতে পারেন।

যার ফলে যখনই কেউ আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে আসবে , ওই user আপনার চ্যানেলে টাকা লিংকটিতে ক্লিক করে প্রথমে ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেলে যাবে।

তারপর ওয়েবসাইট অথবা চ্যানেলে টাকা অ্যাফিলিয়েট লিংকটিতে ক্লিক করে কোনো জিনিস কিনলে তাহলে আপনার আয় হবে।

তাই যত বেশি ভিজিটর তেমনি ইনকাম এছাড়াও আমেরিকা ও বাইরের দেশগুলোতে বেশি অনলাইনে শপিং করে থাকে। তাই বিক্রি হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি।

আরো একটি কারণে আমেরিকা আমাদের কাছে ভালো, কারণ ওখানে জিনিসপত্রের দাম আমাদের টাকায় অনেক বেশি।

ওদের কাছে ১০০ ডলার খুব বেশি নয়। তাই ১০০ ডলার এর জিনিস বিক্রিতে, আপনি যদি ৪ ডলার পান । ওই ৪ ডলার টাকাতে অনেক বেশি।

এ কারণেই, অনেকেই আমেরিকা ও অন্যান্য উন্নত অর্থব্যবস্থা দেশগুলিতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার চেষ্টা করে।

তাই সহজ কথাতে উত্তর হলো: আপনার চ্যানেলে যত বেশি ভিজিটর আসবে তত ইনকাম, সেই সঙ্গে বাইরের দেশ থেকে ভিজিটর এলে আরো বেশি ইনকাম করা যায়।

অবশ্যই আছে, আমি টেলিগ্রাম থেকে মাসে ১ লাখ টাকার ওপরের পর্যন্ত ইনকাম করে অনেকে দেখেছি।

এমনকি আমি নিজেও আমাজন থেকে টেলিগ্রামের মাধ্যমে ইনকাম করেছি। যদিও আয় টা খুবই কম। কিন্তূ পরীক্ষামলকভাবে চেষ্টা করেছিলাম। এবং ইনকাম হয়েছে খুব সহজেই।

না, একদমই না। আমার মতে, টেলিগ্রাম থেকে যদি ইনকাম খুব হয় তাহলে করতে থাকুন কিন্তূ ভবিষ্যত হিসেবে না নেওয়াই ভালো।

টেলিগ্রামের সঙ্গে সঙ্গে অন্য কাজও করতে পারেন। যদি আপনি অনেকদিন ধরে টেলিগ্রাম থেকে প্রতিনিয়ত আয় করে থাকেন এবং সম্পূর্ণ ভরসা থাকে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করবেন শুধু। তাহলে করতে পারেন।

টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম এর কিছু সুবিধা ও অসুবিধা গুলি।

  • সহজেই ভিজিটর পাওয়া যায়, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
  • খুব কম সময়ে টেলিগ্রাম থেকে ভিজিটর (Visitor) পাওয়া যায়। ও ভিজিটর থেকে আয় করা যায়।
  • অনেক চ্যানেল বানিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন । কোন চ্যানেলে বেশি ভিজিটর আসছে। সেই অনুযায়ী পোস্ট লিখতে পারেন। এতে পরিশ্রম কম ও আয় বেশি হওয়ার সম্ভাবনা।ভবিষ্যত পরিষ্কার নয়।
  • যেহেতু টেলিগ্রাম কোনো সার্চ ইঞ্জিন নয় তাই ট্রাফিক আসবে কিনা এর ওপর ভরসা করা যায়না।
  • কোনো নির্দিষ্ট দেশ থেকে ভিজিটর আসবে না। যার ফলে বিভিন্ন দেশের অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটে visit করতে হবে।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ