ফ্রি টাকা ইনকাম: ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার উপায় কি? ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার উপায়বর্তমানে ফ্রি টাকা ইনকাম কথাটি শুনলেই আমাদের কাছে কেমন যেন মনে হয়। কারণ আগেকার মতো এখন আর ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার জন্য তেমন কোন উপায় খুঁজে পাওয়া যায়না। আর যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই ভুয়া হয়। আবার এমনও রয়েছে যে, কেউ আপনাকে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার কথা বলবে অথচ অবশেষে সেটিতে টাকা খরচ করতে হয়।
তবে কিছু কাজ রয়েছে যেগুলোতে কোন প্রকার টাকা খরচ ছাড়াই আপনি ফ্রিতে কাজগুলো শুরু করতে পারবেন। আর নিয়মমাফিক কাজগুলোতে কিছু সময় দিলে এক পর্যায়ে এগুলো থেকে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে সক্ষম হবেন। অনেকের কাছে কথাগুলো সত্যি মনে নাও হতে পারে। তবে আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়েন, তাহলে এ ব্যাপারে আপনি বিস্তারিত একটি ধারণা পেয়ে যাবেন।
মূলত আজকের এই টপিকটিতে কোন কাজগুলো করে ফ্রি টাকা ইনকাম করা যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। অনলাইনের বাইরে অফলাইনেও হয়তো অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো থেকে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করা যায়। তবে এখানে শুধুমাত্র ঘরে বসে ফ্রিতে অনলাইনে টাকা আয় করার মাধ্যমগুলো তুলে ধরেছি।
আরো পড়ুন:
- গেম খেলে টাকা আয় করার উপায়
- অনলাইনে আয় বিকাশে পেমেন্ট
- বাংলা আর্টিকেল লিখে টাকা আয়
কিভাবে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করা যায়?
যদিও এখানে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার কথা বলা হচ্ছে কিন্তু এটি সম্পূর্ন ফ্রি নয়। কারণ যে কোন কাজ করতে গেলে কাজটি যদি ফ্রীও সেখানে আপনার সবচেয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ অনলাইনে কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনার একটি স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার থাকতে হবে। তৃতীয়তঃ যেহেতু এখানে অনলাইনে টাকা ইনকামের কথা বলবো, সেহেতু আপনাকে এখানে অবশ্যই ইন্টারনেট খরচ করতে হবে। আর ইন্টারনেট অবশ্যই টাকা দিয়ে কিনতে হয় তাই না? তাছাড়া আপনি যদি একজন ওয়াইফাই ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে মাস ভিত্তিক একটি চার্জ কোম্পানিকে দিতে হচ্ছে।
সাধারণত আমরা প্রায় সকলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করি। আর আপনি এখন যেই লেখাটি পড়েছেন সেটিও ইন্টারনেট ব্যবহার করেই পড়ছেন। তবে অনলাইন টাকা উপার্জন করার ক্ষেত্রে উপরের তিনটি বিষয় বাদেও কাজ করতে গেলে আরো অনেক টাকা ইনভেস্ট করতে হয়। ধরে নিলাম, আপনার উপরের তিনটি জিনিসই আছে। এখন আপনি কোন প্রকার ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া ফ্রি টাকা আয় করতে চান। সেটা কিভাবে করবেন?
অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করার নানান উপায় রয়েছে। তবে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার জন্য খুব কম মাধ্যমই রয়েছে। আর যেগুলো রয়েছে সেগুলো আমরা সকলেই জানি না। তবে আজকে এই ব্যাপারে জানতে পারবেন। অনলাইনে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার জন্য নানা উপায় রয়েছে। আর আজকে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা তিনটি উপায় আপনাদের কাছে তুলে ধরব। যার মধ্যে রয়েছে-
- ব্লগিং করে আয়
- ছবি বিক্রি করে আয়
- টি-শার্ট ডিজাইন বিক্রি করে আয়
আরো পড়ুন: অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
ব্লগিং করে টাকা আয়
অনেকেই হয়তো ব্লগিং সম্পর্কে আগে থেকেই জানেন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে ব্লগিং সম্পর্কে নানান ধরনের আর্টিকেল রয়েছে। তাছাড়াও অনেকেই হয়ত এই ব্লগিং কথাটি আজকের নতুন শুনেছেন। যারা আজকে প্রথম শুনেছেন তাদেরকে ব্লগিং সম্পর্কে এক কথায় বলতে গেলে এটি হলো লেখালেখির কাজ। মূলত ব্লগের মাধ্যমে লেখালেখি করে আয় করা হয়। তাছাড়া একটি ব্লগ থেকে আরো বিভিন্নভাবে টাকা আয় করা যায়। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ব্লগিং করে আয় পর্ব 1 ভালোভাবে পড়ে নিবেন।
ব্লগিং হলো মুক্ত-স্বাধীন একটি পেশা। বর্তমান বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অনেক মানুষ ব্লগিংকে তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কারণ ব্লগিং থেকে সহজেই ভালো পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব। এখানে একজন লেখক তার মনের মাধুরী মিশিয়ে পছন্দের বিষয়ে কনটেন্ট রাইটিং করে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে হবে। আপনার নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট থাকবে সেটাতে আপনি এখানে কি করবেন।
আর ব্লগিং এর দ্বিতীয় পর্বতে কিভাবে ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় সে সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে। আপনারা সেটি দেখে নিতে পারেন। ব্লগিং করে টাকা উপার্জন সম্পর্কে ফ্রিতে এ টু জেড সম্পূর্ণ কোর্স করতে চাইলে আমাদের ব্লগিং লেবেলটি ঘুরে আসতে পারেন।
আপনি চাইলে ব্লগিং সম্পূর্ণ ফ্রিতে করতে পারেন আবার চাইলে ডোমেইন হোস্টিং কিনে কিনতে পারেন। এখন প্রশ্ন হল- ডোমেইন হোস্টিং কি? সংক্ষিপ্ত ভাষায় বলতে গেলে ডোমেইন হল কোন একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা। আর হোস্টিং হল একটি নির্দিষ্ট স্পেস বা জায়গা যেখানে আপনার কনটেন্ট বা লেখাগুলো থাকবে।
তবে নতুন অবস্থায় আপনি গুগলের প্রডাক্ট ব্লগারের মাধ্যমে ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। এতে করে আপনি যখন মোটামুটি একজন দক্ষতা সম্পন্ন ব্লগার হয়ে যাবেন এবং অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন তারপর আপনি ডোমেইন হোস্টিং কিনে নিতে পারেন। আর ব্লগার সম্পূর্ণ ফ্রিতে আপনাকে ডোমেইন-হোষ্টিং দিচ্ছে। শুধুমাত্র তাই নয়, ব্লগার সম্পূর্ণ ফ্রি হলেও এটি আপনাকে আয় করার সুযোগ দিচ্ছে। তাই আপনিও ব্লগিং শুরু করে এখানে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ছবি বিক্রি করে আয়
অনেকেই অনলাইনে ফ্রি লটারী খেলে টাকা ইনকাম করতে চান। আবার কেউবা টাকা ইনকাম করার জন্য বিভিন্ন ধরনের আর্নিং apps নানা জায়গায় খুঁজে থাকেন। কিন্তু এ সকল ব্যক্তি হয়তো জানেন না যে, তারা যে মোবাইলটি ব্যবহার করে এসব জিনিস খোঁজাখুঁজি করছেন চাইলেই সেই মোবাইলটা দিয়ে ছবি তুলে তারা অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন।
এটি খুব সহজ একটি কাজ। চাইলেই যে কেউ এই কাজটি করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে তেমন কোন কাজ করতে হবে না। শুধুমাত্র ছবি তুলবেন এবং সেই ছবিগুলো মার্কেটপ্লেসে আপলোড করে রেখে দিবেন। একসময় অটোমেটিকলি সেই ছবিগুলো বিক্রি হতে থাকবে।
ছবি বিক্রি করার সাইট
ছবি বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে। যে ওয়েবসাইটগুলোতে ফ্রিতে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। আর সেই অ্যাকাউন্টটিতে পছন্দের ছবিগুলো আপলোড করে বিক্রি করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনি সব ধরনের ছবি বিক্রি করতে পারবেন না। আবার সব ধরনের ছবি বেশি বিক্রি হয় না। আপনাকে এমন ধরনের ক্যাটাগরির ছবি নিয়ে কাজ করতে হবে যেগুলোর মার্কেটে অনেক চাহিদা রয়েছে।
আপনি যে সকল ক্যাটাগরির ছবি নিয়ে কাজ করতে পারবেন এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- এবস্ট্রাক্ট, আর্ট – চিত্রাঙ্কন, ফ্যাশন, নেচার বা প্রকৃতি, ট্রাভেল বা ভ্রমন, ফুড (খাবার), ব্যবসা, কালচার ও লাইফস্টাইল, ভালোবাসা, বিনোদন ইত্যাদি।
ছবি কোথায় বিক্রি করবেন?
আগেই বলেছি ছবি বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ছবি বিক্রি করার ওয়েবসাইট কোনগুলো? মূলত ছবি বিক্রি করার অসংখ্য ওয়েবসাইট রয়েছে। তবে এখানে আমি আপনাদের জন্য সবচেয়ে সেরা সাইটগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সাইটগুলো হল-
উপরের সাইটগুলোতে ছবি আপলোড করে টাকা ইনকাম করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করে নিতে হবে। একাউন্ট এপ্রুভ করার জন্য সর্বপ্রথম তাদের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে সেখানে ভাল মানের কয়েকটি ছবি আপলোড দিতে হবে। আপনার ছবির মান যদি ভাল হয় তাহলে তারা অটোমেটিকলি আপনার ছবিগুলোসহ অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করে দিবে।
টি-শার্ট ডিজাইন বিক্রি করে আয়
ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার জন্য টি-শার্ট ডিজাইন সেল হল অন্যতম একটি মাধ্যম। ঠিক ছবি বিক্রি করে যেভাবে আয় করা যায়, কেমন করে টি-শার্ট ডিজাইন বিক্রি করেও ভালো পরিমাণ টাকা আয় করা যায়। তবে এর জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম টি-শার্ট ডিজাইন ভালোভাবে শিখিয়ে নিতে হবে। আপনাকে কোনো একটি টি-শার্ট নিচের ছবিটির মত করে নানান ধরনের ডিজাইন করে মার্কেটপ্লেস এ আপলোড করতে হবে।
একটি টি-শার্ট ডিজাইন কোন একটি কোম্পানি খুব উচ্চ দামে কিনে থাকে। যে কারণে প্রতিটি টি-শার্ট ডিজাইন সেল থেকে অনেক ভালো পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব। আর একটি ডিজাইন আপলোড করার পর যে একবারই বিক্রি হবে ব্যাপারটা এমন নয়। আপনার একটি টি-শার্ট ডিজাইন যতবার বিক্রি হবে ততোবারই আপনি প্রফিট পেতে থাকবেন। আর আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানেন তাহলে আপনার সেলকে বহুগুণ বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
কোথায় বিক্রি করব?
আপনি যদি টি শার্ট ডিজাইন করতে পারেন তাহলে বুদ্ধি খাটিয়ে আপনি কোন না কোনভাবে সহজেই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন। তবে আপনি যদি শুধুমাত্র টি-শার্ট ডিজাইন আপলোড করে টাকা আয় করতে চান, সে ক্ষেত্রে আমি আপনাকে Spreadshirt ওয়েবসাইটটি সাজেস্ট করব। কারণ এখানে এক একটি টি-শার্ট ডিজাইন অনেক উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে। আপনি যদি খুব সুন্দর করে 20 থেকে 25টি টি-শার্ট এখানে আপলোড করে রাখেন, সে ক্ষেত্রে আপনি একসময় এখান থেকে অনেক ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে সক্ষম হবেন। যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
তাছাড়া টি-শার্ট ডিজাইন শিখে আপনি ফাইবার, আপওয়ার্ক, গুরু, পিপল পার আওয়ার, ফ্রিল্যান্সার ডটকমআরো বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি নানান দিক দিয়ে সুবিধা পাবেন। টি শার্ট ডিজাইন এর ক্ষেত্রে কম্পিটিশন অনেক কম। কিন্তু চাহিদা অনেক বেশি। যার কারণে সহজে সাকসেস আসতে পারে। আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথা
ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার জন্য আরো বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। তবে সেরা মাধ্যমগুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। উপরের মাধ্যমগুলোর মধ্য থেকে ফ্রি টাকা ইনকাম করার জন্যও ব্লগিং আমার কাছে সবচেয়ে সেরা মনে হয়েছে। তাই আমি আপনাকে ব্লগিং করতে সাজেস্ট করব। বাকি যে দুটি কাজ রয়েছে সেগুলো আপনি পার্ট টাইম হিসেবে নিতে পারেন। দেখবেন এক সময় প্রতিটি কাজ থেকেই খুব ভালো পরিমাণ প্রফিট আসতে শুরু করেছে।
Comments (No)