ডিজিটাল মার্কেটিং করে ব্যবসা করুন দ্বিগুণ লাভে 1

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

অনেক আগে হয়ত আমরা দেখতাম যে বিভিন্ন কম্পানি তাদের মার্কেটিং এর কাজ খুব সাধারণ ভাবে করত যেমন হয়ত তাদের কম্পানির কিছু কর্মী বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন মানুষকে বুজাতো তাদের পণ্যটি কেনার জন্য। অথবা বিভিন্ন গলিতে গলিতে মাইকিং করা হতো। যেটা খুবই ব্যয়বহুল একটি মধ্যম এবং এর কার্যকারীতাও খুবই কম। আর এই উপায়ে খুব বেশি মানুষের কাছে পৌছানোও যায় না।

বর্তমানে অবশ্য এইসব খুব একটা দেখা যায় না কারণ এখন মানুষ টেলিভিশন রেডিও তে মুটামুটি ভালোই সময় ব্যয় করে তাই অনেক কম্পানি এখন এইসব জায়গায় তাদের কম্পানির বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু করেছে যদিও এটা আগের উপায়টির চেয়ে বেশি কার্যকর কিন্তু তারপরও এটার খরচ ও এর উপকারিতা আসলেই বেশির ভাগ কম্পানিরই আশানুরুপ সেল নিয়ে আসতে পারে না। কারণ বেশিরভাগ মানুষই এই বিজ্ঞাপনগুলোকে এড়িয়ে চলে এর ফলে তাদের খুব একটা লাভ হয় না ।

আপনার কোন কম্পানি থাকলে সেই কম্পানির প্রচারনা ডিজিটাল উপায়ে করাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।

ডিজিটাল উপায় বলতে ডিজিটাল মিডিয়া যেমন বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়া হতে পারে । এখন বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়াতে কিন্তু প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম থাকে। এইসব সোসিয়াল মিডিয়াগুলোতে যদি আপনি একটি পেজ বা গ্রুপ বিল্ডআপ করতে পারেন, এবং নিয়মিত আপডেট থাকার মাধ্যমে আপনার পেজ বা গ্রুপের মেমবারদের কে সচল রাখতে পারেন তাহলে কিন্তু আপনার কোন প্রকার খরচ ছাড়া ডিজিটাল উপায়ে আপনার কম্পানির পচারণা কাজ চালাতে পারবেন যেটা খুবই কার্যকরী এবং আগের গুলোর তুলনায় খরচ প্রায় নেই বললেই চলে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এ শুধু যে সোসিয়াল মিডিয়াই তা কিন্তু নয় এর আরো অনেক মাধ্যম রয়েছে যে গুলো এর চেয়েও বেশি কার্যকর তবে আমি আপনাদের সহজ করে বুজানোর জন্য একটি সহজ উদাহরণ দিলাম এই সোসিয়াল মিডিয়া দিয়ে। তবে বাস্তবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ছোট একটি পার্ট হলো এই সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং।

বাকি বিষয় গুলো জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই পুরো আটির্কেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

১/ সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশন (SEO)

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে কার্যকরী ফ্রি মেথডটি হলো সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশন(SEO)।

আপনি যদি সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশন করে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনার একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে হবে আর আজকাল খুব সহজে ও খুব অল্প খরচে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচেও এখন খুব ভালোমানেরওয়েবসাইট তৈরিকরা সম্ভব।

আপনি যদি আপনার কম্পানির নামে একটি ওয়েবসাইট করেন এবং সেখানে আপনার কম্পানির পণ্য ও নানান সুবিধা সর্ম্পকে দিয়ে দেন এবং আপনি যদি তা সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশন(SEO) করতে পারেন তাহলে আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না এটা আপনার কম্পানির মার্কেটিং এর জন্য কি পরিমাণ হেল্প করবে।

প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ভিজিটর এনে দিবে সার্চ ইন্জিন যা সম্পূর্ণ ফ্রি । আর এটা অন্য সব মার্কেটিং এর চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী কারণ সাধারণ মার্কেটিং কম্পানি পাবলিকের কাছে গিয়ে প্রচারণা করে, প্রচারণা করলেই যে পণ্য সেল হবে তা কিন্তু নয়।

কারণ একটি এলাকায় আপনি যখন আপনার কোন পণ্য, ”ধরলাম সেটা একটা নতুন মডেলের ওয়াশিং মেশিনে” প্রচারনা করলেন।

আপনি প্রচারণা করলেন এলাকার সবার মাঝে কিন্তু দেখা গেলো মাত্র দুই একজন বাদে কারোই ওয়াশিং মেশিন কেনার কোন আগ্রহ নাই।

কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে পাবলিক কম্পানির কাছে আসে তাদের যখন এই রিলেডেট কোন পণ্যের দরকার হয় তখন তারা গুগল, ইউটিউবে কিংবা ফেসবুকে সার্চ করে তখন যদি কোন কম্পানি খুব ভালোভাবে তার কম্পানির ব্রান্ডিং ডিজিটাল উপায়ে করতে পারে তাহলে সেল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি কারণ কারো ওয়াশিং মেশিন কিনার প্রয়োজন হলে কখনোই সে মোবাইল লিখে সার্চ করবে না। তাই সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশনের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার কম্পানির ডিজিটাল মার্কেটিং করে ফেলতে পারবেন।

২/ সার্চ ইন্জিন মার্কেটিং (SEM)

সার্চ ইন্জিন মার্কেটিং(SEM) এবং সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশন(SEO) প্রায় একই। শুধু একটাই পার্থক্য আর সেটা হলো সার্চ ইন্জিন মার্কেটিং(SEM) এর জন্য সার্চ ইন্জিনকে টাকা দিতে হয় এবং আর সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেশন(SEO) একটি ফ্রি মেথড।

তবে অবশ্যই সার্চ ইন্জিন অবটিমাইজেনের(SEO) চেয়ে সার্চ ইন্জিন মার্কেটিং(SEM) বেশি কার্যকরী। এবং এতে খুব ভালো রের্সাল্ট পাওয়া যায়।

আমরা সকলেই নিশ্চই বিশ্বের বড় বড় সার্চ ইন্জিন যেমন গুগল ইয়াহু বিং বাইদো এর কোন না কোনটা একবার হলেও ব্যবহার করেছি ।

আপনারা হয়ত একটু লক্ষ করে দেখবেন যে আপনি যদি কোন কিছু সার্চ করেন তাহলে সবার উপরের পজিশনে কিছু রের্সাল্ট দেখাচ্ছে যেগুলোর নিচের ছোট করে এড লিখা রয়েছে আর এই এড গুলো জন্য গুগল তাদেরকে সবার প্রথমে দেখাচ্ছে কারণ তারা এই প্রথমে আসার জন্য গুগলকে বা অন্যান্ন সার্চ ইন্জিনকে টাকা দেয়।

যদিও টাকার পরিমাণ খুব বেশি না তবে আপনার প্রতিযোগী এবং আপনি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করছেন তার উপর নির্ভর করে টাকার পরিমাণটা।

তবে এটি একটি অস্থায়ী প্রক্রিয়া কারণ আপনি যতদিন গুগলকে টাকা দিবেন ঠিক তত দিনি তারা আপনার সাইটকে সবার উপরে দেখাবে যে দিন থেকে টাকা দিবেন না সেদিন থেকে আর তারা আপনার কম্পানির ওয়েবসাইট তাদের সার্চ রের্সাল্টে দেখাবে না।

৩/সোসিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং(SMM)

একটা সময় ছিল যখন কিনা কোন কম্পানি ঠিক সেখানেই মার্কেটিং বা প্রচারণা চালাতো যেখানে একটু বেশি মানুষের ভিড় দেখতো। যেমন কোন বাজারে বা কোন মসজিদের পাশে কিংবা পাড়ার এমন কোন জায়গায় যেখানে মানুষ বেশি থাকে।

এরই প্রেক্ষিতে বর্তমানে ডিজিটাল উপায়ে মানুষ যেখানে বেশি থাকে যেখানে মার্কেটিং করতে চায়।

ডিজিটাল মেথডে সবচেয়ে বেশি মানুষ থাকে এখন সোসিয়াল মিডিয়াতে । প্রতিদিন হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় এই সোসিয়াল মিডিয়াতে কিছু জনপ্রিয় সোসিয়াল মিডিয়া হলোফেসবুক,টুইটার,ইনস্টাগ্রাম,লিংকডিনইত্যাদি।

এসব সোসিয়াল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার কম্পানির মার্কেটিং করতে পারেন খুব সহজেই ।

এর জন্য আপনাকে সবার প্রথমে এসব সোসিয়াল মিডিয়াতে রিজিস্টেশন করে এড হতে হবে তারপর আপনি আপনার কম্পানির নামে বিভিন্ন পেজ অথবা গ্রুপ তৈরি করবেন যেখানে হাজার হাজার মানুষ এড হবে এবং আপনার কম্পানির মার্কেটিং এর কাজ অটোমেটিক হতে থাকবে এবং আপনার কম্পানির সেল দিন দিন বাড়তে থাকবে।

৪/ ইমেল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরো একটি কার্যকরী মেথোড হলো ইমেল মার্কেটিং।

এই মেথডে একদম টার্গেটিভ মানুষদের কাছে মার্কেটিং করা যায় তাই খুব সহজেই যে কোন পণ্য সেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যেমন মনে করেন আপনার কম্পানিতে নতুন কিছু পণ্য উঠালেন ডাক্তারি বিষয়ে বা চিকিৎসা বিষয়ে। এখন আপনি যদি সেই পণ্য গুলো সারা দিনও সোসিয়াল মিডিয়া কিংবা বিভিন্ন সাধারণ উপায়ে মার্কেটিং করে যান মনে হয় না মাস শেষে দুই একটা সেল করতে পারবেন।

কিন্তু এই কাজটা যদি আপনি এই ভাবে করেন।

যেমন আপনি সবার প্রথমে সারা দেশের কিছু হাসপাতালের ইমেইল ঠিকানা যোগার করলেন এবং সেই ইমেল গুলোতে আপনার পণ্যের বিবরণ, খরচ, সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করে একটি মেইল প্রত্যেকটি ঠিকানায় পাঠিয়ে দিলেন ।

এতে করে কিন্তু আপনার পণ্যের সেল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫০% এবং এর বেশিও হতে পারে।

কারণ আপনি যদি ১০০০ হাসপাতালে আপনার পণ্যের মার্কেটিং করেন তাহলে হয়ত এখান থেকে ৬০-৭০% সেলের আশা করলে কোন ভুল হবে না।

কিন্তু আপনি যদি সাধারণ ভাবে ১লক্ষ মানুষের কাছেও আপনার পণ্যে মার্কেটিং করেন তাহলে কিন্তু ১% সেল হবে নাকি সন্দেহ আছে।

তাই ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে ইমেল মার্কেটিং সম্পর্কে জানতেই হবে। এর প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ইমেইল গুলো কালেক্ট করা তবে এটাও কিছু উপায় আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই যে কোন ধরনের ইমেল কালেক্ট করতে পারবেন।

এই বিষয়ে অন্য আলাদা একটা আটির্কেলে আলোচনা করবো।

৫/ কন্টেন্ট মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং এর হেড হচ্ছে এই কন্টেন্ট । কারণ আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংএর যাই করেন না কেন মার্কেটিং এর যেই মেথডি অবলম্বন করেন না কেন কোন মেথডি আপনার কাজে আসবে না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার কন্টেন্ট ঠিক হবে।

কারণ কন্টেন্ট ছাড়া আপনি কোন ভাবেই SEO/SEM/SMM এর কোন মার্কেটিং ই করতে পারবেন না।

আপনি যতই মার্কেটিং এর পিছে লেগে থাকেন না কেন আপনার কন্টেন্ট যদি ঠিক না হয় তাহলে কিভাবে সেল নিয়ে আসবেন। কারণ আপনি সবই খুব ভালোভাবে করলেন এখন যদি আপনি একজন মানুষকে সঠিক ভাবে বুজাতে না পারেন আপনার পণ্যটির ব্যাপারে তাহলে কিন্তু আপনার পণ্য সেল হবে না।

আপনাকে অবশ্যই খুব ভালোভাবে বিষয়গুলো লিখতে হবে না হয় কেউ তো আপনার আটির্কেল পড়বেই না, সেল তো পরের কথা।

আর কন্টেন্ট অবশ্যই ইউনিক হওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ যদি আপনি কারো কন্টেন্ট কপি করেন তাহলে আপনার ‍কোন মার্কেটিং মেথড কাজ করবে না । যার ফলে আপনার লোকসান হওয়ার একটা আশংকা থেকে যায়।

তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আগে অবশ্যই আপনার কন্টেন্ট এর উপর বিশেষভাবে জোড় দিবেন।

৬/ ভিডিও মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য ভিডিও মার্কেটিং হতে পারে এক অন্যরকম সেরা উপায়।

কারণ আমরা সকলেই জানি বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ যে কোন কিছু ভিডিও আকারে দেখতে পছন্দ করে থাকে।

যে বিষয়টি একটি ব্লগ আটির্কেল পড়ে যতটা ভালোভাবে বুজবে সেই একই বিষয় সে যদি ভিডিও আকারে দেখে তাহলে কিন্তু তারচেয়ে অনেক ভালোভাবে বুজতে পারবে আর ভিডিও দেখে যে কোন জিনিস সম্পর্কে জানতেও সবাই বেশ পছন্দ করে থাকে।

যেমন মনে করেন আপনি একটি টেলিভিশন আপনার কম্পানিতে পণ্য হিসেবে সেল করতে চাচ্ছেন। এখন এই টেলিভিশনের ভালো মন্দ রিভিউ করে একটা ভিডিও বানিয়ে ফেললেন এবং সেটা ইউটিউবে আপলোড করে দিলেন । এখন কিন্তু দিন দিন আপনার ভিডিওটি ভিউ হতে থাকবে। এবং আপনার পণ্যটির রিভিউ যদি কোন মানুষের কাছে ভালো লাগে তাহলে কিন্তু পন্য সে কিনতে ও পারে এভাবে এখান থেকে বেশ ভালোই আপনার পণ্য সেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যেটা হয়ত আটির্কেল লিখে বুজালে হত না।

৭/ এফিলিয়েট মার্কেটিং

আপনার কম্পানির সেল বৃদ্ধি করতে চাইলে এফিলিয়েটের চেয়ে বেশি সাহায্য কেউ করতে পারবে না।

কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এ এফিলিয়েট হলো এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপানার কম্পানির সেল বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।

যদিও এফিলিয়েট মার্কেটাদের আপনার ব্যবসার লভ্যাংশ থেকে কিছুটা লাভ দিতে হবে তারপরও আপনার কম্পানির মোট আয় হিসেব করলে এফিলিয়েট কিন্তু আপনার কম্পানির জন্য বেশ ভালোই লাভজনক।

এটা অনেকটা অটোমেটিক মার্কেটিং ও বলতে পারেন কারণ এর মাধ্যমে আপনার কোন প্ররিশ্রম ছাড়া আপনার কম্পানির পণ্য মানুষ মার্কেটিং করবে ।

তাই আপনার কম্পানির সেল বৃদ্ধি করতে চাইলে অবশ্যই আপনার কম্পানির এফিলিয়েট সিস্টেমটা চালু করুন।

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ