অনলাইন মার্কেটারদের কাছে বর্তমান সময়ে CPA মার্কেটিং একটি আলোচিত বিষয়। এফিলিয়েট
মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি যা অনেকটা CPA মার্কেটিং এর কাছাকাছি একটা টার্ম বুঝায়।
আমার মনে হয় আপনি হয়তো নতুন ধরণের এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কথা শুনে থাকবেন যেখানে
কোনো রকম ডিল না করেই কাজ করে টাকা আয় করা যায়, যাকে আমরা CPA মার্কেটিং বলি।এটা
নতুন ধরণের অনলাইন মার্কেটিং যেখানে কাজ করে আপনি প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। আজ এ
পোষ্টে আমি আপনাদের জন্য CPA মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করেছি যেখান থেকে
আপনি জানতে পারবেন কিভাবে সিপিএ মার্কেটিং থেকে আয় করা যায় তার বিষ্তারিত আলোচনা।
CPA মার্কেটিং বলতে কি বুঝায়:
CPA মার্কেটিং এর ফুল ফরম হচ্ছে “কস্ট পার অ্যাকশন”। এটি একটি অনলাইন মার্কেটিং এবং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর একটি ধরণ বলা যায়। একটি কোম্পানির গ্রোথ হয়ে থাকে মার্কেটার বা
পাবলিশারের মাধ্যমে এবং প্রতিটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস পাবলিশ করার জন্য কোম্পানি থেকে মার্কেটার
বা পাবলিশারকে পেমেন্ট করা হয়। তবে CPA মার্কেটিং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে যে-দিক দিয়ে
আলাদা তা হলো, Affiliate Marketing এ আপনি কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রমোট করলে এবং সেটা
সেল হলে আপনি পেমেন্ট পাবেন। কিন্তু CPA মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এমন কোনো শর্ত থাকে না। CPA
মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কোনো প্রোডাক্ট সেল করার চেয়ে বেশি জোর দেয়া হয় প্রমোটিং এর ক্ষেত্রে। CPA
মার্কেটিং মূলত নিচের বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে-
- ভিজিটরদের ইমেইল প্রবেশ করা বা শুধু জিপ কোড প্রদান করা
** টুলবার, সফটওয়্যার বা গেইম ডাউনলোড করা
*** সাইটে সাইন আপ করা
****অনলাইন কোনো গেইমের জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করা
* নিউজলেটারের জন্য সাইন আপ করা, ইত্যাদি।
আরো পড়ুন:
CPA মার্কেটিং এর নিশ :
আপনি চাইলে যে কোনো নিশ নিয়ে কাজ করে ভালো আয় করতে পারবেন না। তাই আপনাকে খুঁজে
নিতে হবে সবচেয়ে ভালো আয় করা যায় এমন সব নিশ। আমি আপনাদের সুবিধার জন্য এখানে টপ
কয়েকটি নিশের নাম বলে দিচ্ছি জেনে রাখন:
1.মোবাইল অ্যাপস
- ডেটিং
3.ওয়েট লস
4.ফিনান্স
5.ইনস্যুরেন্স - হাউজিং
7.জবস - সফটওয়্যার
9.বিজনেস - গেমিং
11.গ্যাম্বলিং
আপনি কত আয় করতে পারবেন সিপিএ মার্কেটিং থেকে:
সিপিএ মার্কেটিং আপনাকে পেমেন্ট দিয়ে থাকবে আপনি কিভাবে পরিচালনা করছেন তার উপর। তবে
সাধারণত প্রতিটি কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তারা দিয়ে থাকে। অর্ডারের উপর ভিত্তি করে
আপনি ১ ডলার থেকে ৬ ডলার পর্যন্ত আশা করতে পারেন। প্রতিটি ইমেইল ক্যাপচার করা থেকে আপনি
৪ ডালার থেকে ২৫ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। অন্যান্য মার্কেট যেমন, ইনস্যুরেন্স মার্কেটে আপনি প্রতি
কাজের জন্য ২২ ডলার পেতে পারেন। তবে আপনার একটি অফারে যদি একের অধিক মানুষ রেসপন্স
করে, তবে অই কাজের জন্য আপনাকে যে সিঙ্গেল একটা এ্যামাউন্ট দেয়া হতো তার সাথে ক্রেতার সংখ্যা
গুণ করে আপনাকে পেইড করা হবে। তাহলে এখন বুঝতেই পারছেন আপনি ৫ ডলারের একটি কাজ
শেয়ার করলে যদি ৪ জন রেসপন্স করে, তবে আপনি ২০ ডলার পেয়ে যাবেন।
নতুন জন্য CPA মার্কেটিং শুরু করার জন্য কিছু মূল্যবান টিপস:
CPA মার্কেটিং আপনি কিভাবে শুরু করবেন? শুরু করার জন্য অবশ্যই কিছু স্টেপ আপনাকে ফলো
করতে হবে।তার বিষয়ে এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।
উপযুক্ত স্থান বেছে নিতে হবে:
সিপিএ মার্কেটিং শুরু করার আগে আপনাকে প্রথমেই একটি উপযুক্ত স্থান বেছে নিতে হবে যেখানে থেকে
আপনি ভালমতো কাজ করতে পারবেন এবং আমার মনে হয় মার্কেটিং শুরু করা আগে আপনার উচিৎ
সিপিএ মার্কেটিং এর ভালো স্থানগুলো সম্পর্কে রিসার্চ করে তারপর যেটি আপনার কাছে সহজ মনে হবে
সেটি ফলো করা। আপনাকে অবশ্যই এই বিষয়ে ধারণা নিতে হবে। আপনি চাইলে এসব সাইটগুলোতে
ভিজিট করে জানতে পারেন তার কাজের বিষয়ে Affplus.com; Odigger.com, এবং
OfferVault.com.
সিপিএ নেটওয়ার্কে সাইটে সাইন আপ করে নিতে হবে:
সিপিএ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও আপনাকে এফিলিয়েট বা পাবলিশারের মতোই অ্যাপ্লিকেশন ফরম ফিল আপ
করতে হবে। আপনাকে কিছু বেস্ট সিপিএ নেটওয়ার্ক এবং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।
আপনি চাইলে ‘AffPaying.com’ এই সাইটে ভিজিট করতে পারেন। এটি একটি অ্যাফিলিয়েট
নেটওয়ার্ক রিভিউ সাইট। এই সাইট আপনাকে অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক, পেমেন্ট ম্যাথড বা রেফারেল
কমিশন সম্পর্কে অনেক ধারণা দিয়ে থাকবে। আপনি চাইলে শুধু সিপিএ নেটওয়ার্ক সম্পর্কেও সার্চ
করতে পারেন।
আবার আপনি চাইলে ‘oDigger.com’ এই সাইটও ব্যবহার করতে পারেন, এখানেও অনেক রিভিও
পাবেন সিপিএ নেটওয়ার্ক সম্পর্কে। আপনি যখন নেটওয়ার্ক রিভিও সম্পর্কে জানতে পারবেন, তখন
আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কোনটিতে আপনার সাইনআপ করা উচিত।
আমি এখানে আপনাদের সিপিএ মার্কেটিং নিয়ে সব কিছু বলতে পারিনি। লেখাটি বড় হয়ে যাওয়ায় আমি
দ্বিতীয় পর্বে বাকি অংশ লিখেছি। ২য় পর্বটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন। তবে আপনার যে বন্ধুরা সিপিএ
মার্কেটিং শিখতে চায় বা জানতে আগ্রহী তাদের সাথে লেখাটি শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
আরো পড়ুন:
আবার অনেক সিপিএ নেটওয়ার্ক আছে যেগুলোতে সাইন আপ করার পর একটা ভাইবা দিয়ে পাস
করলে, তখন অ্যাকাউন্ট এপ্রোভ করা হয়। এগুলো বিগেনার বা নতুন যারা কাজ শুরু করেছে তাদের
জন্য না।
আপনার অ্যাকাউন্ট কিভবে এপ্রোভ করবেন এই সম্পর্কে কিছু টিপস নিচে দেয়া হলোঃ
সিপিএ মার্কেটিংয়ে কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কোন না কোন সিপি নেটওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট
খুলতে হবে। আবার শুধু অ্যাকাউন্ট খুললেই যে আপনি কাজ পেয়ে যাবেন, কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করে
ফেলবেন, এমন নয়। কারণ, আপনার অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভালের ব্যাপার আছে, তাই আগে জানুন
কিভাবে অ্যাকাউন্ট সফলভাবে অ্যাপ্রুভ করবেন।
1.সৎ থাকতে হবে:
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি যখন ফরম ফিল আপ করবেন তখন আপনাকে সব সঠিক ইনর্ফমেশন
দিতে হবে। যেমন, আপনার নাম, ঠিকানা, ইমেইল অ্যাড্রেস ইত্যাদি। সিপিএ নেটওয়ার্কগুলো সব সময়
চায় ফেইক অ্যাকাউন্টগুলো ডিলিট করতে। তাই অবশ্যই ফেইক ইনর্ফমেশন দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
2.কি নিয়ে মার্কেটিং করতে চান সে সর্ম্পকে জানুন:
সিপিএ নেটওয়ার্কগুলোতে অনেক ধরণের নিশ বা কাজের ক্ষেত্র থেকে থাকে। আপনি আগে ঠিক করে
নিতে হবে আপনি কি নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন। এ-সব নিয়ে ধারণা পেতে হলে আপনাকে গুগলে সার্চ
করতে হবে। দেখুন কোন কাজটি আপনারন জন্য উপযুক্ত মনে হয় বা কোন কাজ করলে আপনি বেশি
টাকা আয় করতে পারবেন। সে কাজটি করার সিদ্ধান্ত নিন।
3.নিশ নির্বাচন করতে হবে:
আপনি যে বিষযের উপর কাজ করতে চান তার উপর র্নিভর করে নিশ নির্বাচন করুন। তাহলে
আপনার কাজের যেমন সুবিধা হবে তেমনি আপনি খুব সহজে আয়ের রাস্তা বের করতে পারবেন।
4.নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করুন:
আপনার নিজের যদি কোনো ওয়েবসাইট থেকে থাকে, তাহলে তো ভালো। আর যদি না থাকে, তাহলে
অবশ্যই আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিন। এর কারণ হলো আপনার যদি নিজের একটা
ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে আপনি চাইলে আপনার নিজের ওয়েবসাইটেও মার্কেটিং করতে পারবেন। এবং
আয় করতে পারবেন।
5.আপনি নতুন হলে জানাতে হবে:
আপনি যে কোনো সিপিএ নেটওয়ার্কেই অ্যাকাউন্ট সাইন আপ করেন না কেনো , আপনার অবশ্যই
তাদেরকে জানানো উচিৎ যে আপনি নতুন র্মাকেটর নাকি এক্সপার্ট লেভেলের। কারণ এর উপর
আপনার বিজনেসের অনেক কিছুই নির্ভর করে। তবে আপনাকে অবশ্যই বলে দিতে হবে আপনি একজন
নতুন মার্কেটর।তাহলে তারা তার উপর ভিক্তি করে আপনাকে কাজ দিবে।
6.সিপিএ নেটওয়ার্ক ইন্টার্ভিউ দেওয়া:
এমন অনেক সিপিএ নেটওয়ার্ক আছে, যেখানে আপনি সাইন আপ করার পরের আপনাকে ইন্টার্ভিউ
দিতে হবে। তখন অবশ্যই আপনি প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর কনফিডেন্টের সাথে দিবেন। তারা আপনার
সম্পর্কে, আপনার কাজ সম্পর্কে জানতে চাইবে।আসলে বুঝতে চাইবে আপনি কেমন বা কাজ করতে
পারবেন কিনা। এমন ধরণের ইন্টার্ভিউ সব নেটওয়ার্কে হয় না, কিছু টপ সিপিএ নেটওয়ার্ক ছাড়া।
বিগেনার হিসেবে আপনার এসব সিপিএ নেটওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট না করাই ভালো।
7.এ্যাফিলিয়েট ম্যানেজারের কথা শুনতে হবে:
প্রত্যেক সিপিএ নেটওয়ার্কে সব মার্কেটারের জন্যই একজন করে অ্যাফিলিয়েট ম্যানেজার থাকে, যারা
আপনাকে সব সময় সাহায্য করবে। তাদের কাছে আপনি আপনার সমস্যার কথা বলতে পারবেন। তবে
অবশ্যই তাদের নেটওয়ার্ক বা ব্যাক্তিগত বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। বিজেনেসের উপর প্রভাব
ফেলবে। তাই বুঝে কাজ করবেন না।
8.নিজেকে সব সময় আপডেট রাখুন:
এখন দেখা যায় দিন দিন সিপিএ মার্কেটারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে । তাই আপনার উচিৎ সব সময়
নিজেকে আপডেট করা। সব সময় একই প্রোডাক্ট বা অফার নিয়ে কাজ করলে চলবে না। আপনাকে
প্রতিদিন খুঁজ নিতে হবে কখন কোন অফার মানুষ বেশি চাচ্ছে। এছাড়াও জানার কোনো শেষ নেই।
আমি আপনাদের সব কিছু বলতে পারিনি। আপনি গুগল, ইউটিউবে সার্চ করলে সিপিএ মার্কেটিং সম্পর্কে
আরো অনেক কিছুই জানতে পারবেন। সিপিএ মার্কেটিং এর আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে আমি আপনাদের
জন্য লিখবো। তাই চোখ রাখুন এই সাইটে আর আপনাদের মতামত কমেন্টে জানান। আজ এ পযর্ন্ত ভাল
থাকবেন।
Comments (No)