সবার সাধ্যের মধ্যে মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা পৌঁছানোর ব্রত নিয়ে যাত্রা শুরু করে আদ্-দ্বীন হাসপাতাল। ১৯৯৭ সালের ১লা নভেম্বর বহির্বিভাগে মহিলা ও শিশুদের শুধুমাত্র সাধারন চিকিৎসা এবং অন্ত:বিভাগে শুধুমাত্র অপুষ্ট শিশুদের সেবাদানের মাধ্যমে আদ্-দ্বীন হাসপাতাল ঢাকা শাখার কার্যক্রম শুরু করে। এই হাসপাতালের অবস্থান ঢাকার বড় মগবাজার এলাকায়।
উল্লেখ্য আশির দশকে এই হাসপাতালটি যুক্তরাজ্যের ’’সেভ দি চিলড্রেন” কতৃক পরিচালিত ৬০ শয্যা বিশিষ্ট একটি “শিশু পুষ্টি কেন্দ্র” হিসেবে পরিচিত ছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর “সেভ দি চিলড্রেন” কতৃপক্ষ এটি পরিচালনার দায়িত্বভার আদ্-দ্বীন এর উপর ন্যস্ত করে।
আদ্-দ্বীন হাসপাতালের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ কাজ হল মহিলাদের গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সেবা। এখানে খুব কম খরচে মহিলারা গর্ভকালীন সময়ে মানসম্মত সেবা পেয়ে থাকে। গর্ভবতী মা ও গর্ভস্থ শিশুর নিয়মিত পরীক্ষাসহ গর্ভাবস্থার অধিকাংশ সমস্যার চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। এই হাসপাতালে কম খরচে প্রসবের জন্য রয়েছে নিরাপদ প্রসব ইউনিট, যা দেশের নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলাদের নিরাপদ প্রসবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। এই Unit আদ্-দ্বীন হাসপাতালের প্রান বলা যায়।
এটি ২৪ ঘন্টা সার্ভিস দিয়ে থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মহিলাদের যে কোন জরূরী অবস্থা মোকাবেলা করার জন্য এখানে সার্বক্ষনিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার ও নার্স রয়েছে। এখানে স্বাভাবিক প্রসব এবং সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নিরাপদ প্রসবের ব্যবস্থা রয়েছে। এই হাসপাতালে প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্য সেবার জন্য রয়েছে আলাদা কেন্দ্র যা এই হাসপাতালের চতুর্থ তলায় অবস্থিত।
আদ্-দ্বীন হাসপাতালে শিশু চিকিৎসার জন্যও আলাদা গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা বর্হিবিভাগ ও অন্তবিভাগ চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা হয়। শিশুদের যে কোন ধরনের অসুস্থতার চিকিৎসা এই হাসপাতালে দেওয়া হয়।
এছাড়া এই হাসপাতালে অন্যান্য নিয়মিত বিভাগ যেমন: চক্ষু, দন্ত, মেডিসিন, সার্জারী, ইউরোলজী, নাক-কান-গলা, চর্ম ও যৌনরোগ ও অর্থপেডিক্স প্রভৃতি বিভাগে খুব যত্ন সহকারে অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
রোগ পরিক্ষা নিরীক্ষা করানোর জন্য এই হাসপাতালে রয়েছে প্যাথলজি বিভাগ, বায়োকেমেষ্ট্রি বিভাগ ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফী, ইসিজি, এক্স-রে, এবং এন্ডোসকপি ইত্যাদি যন্ত্রপাতি।
আদ্-দ্বীন হাসপাতালের আরও একটি উল্লেখযোগ্য সেবা হল ২৪ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। নিরাপদে ও দ্রুত হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য ২০০৮ সালের জানুয়ারী থেকে নামেমাত্র খরচে চালু হয়েছে ২৪ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স সেবা। দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আদ্-দ্বীন হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স ২৪ ঘন্টা ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থান অবস্থান করছে। রাত দিন যেকোন সময় একটি মাত্র ফোন পেলেই হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স রোগীর নিকট পৌঁছে যাচ্ছে। এই এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সেবা মূল্য ঢাকা মহানগরীর ভিতরে মাত্র ১৬০ টাকা।
আদ্-দ্বীন হাসপাতাল
প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৯৭
অবস্থান: ২ বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭
ফোন: ৯৩৫৩৩৯১-৩
ফ্যাক্স: +৮৮০-২-৮৩১৭৩০৬
ই-মেইল: info@ad-din.org
সেবাসমুহ: গর্ভবতী সেবা, নিরাপদ প্রসব সেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, স্ত্রীরোগ সেবা, নবজাতক সেবা, সাধারন চিকিৎসা সেবা, অপারেশন চিকিৎসা সেবা এবং ২৪ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স সেবা।
লিটন আকন্দ আকন্দ
এটা আমার এক কলিগের লিখা ঘটনা
কিছুদিন আগে আমি আদ-দ্বীন হাসপাতাল, মগবাজারে গিয়েছিলাম আমার একটা সমস্যা নিয়ে। আমার অভিজ্ঞতার বিবরণ দিচ্চি-
প্রথমে বর্হিবিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য কার্ড ইস্যু করতে গেলাম।
কার্ড ইস্যুকারী: আপনার সমস্যা
আমি: ……. সমস্যা
কার্ড ইস্যুকারী: গাইনোকলিস্ট দেখাতে পারেন, কার্ড করবেন
আমি: জ্বি
কার্ড ইস্যুকারী: ১৫০ টাকা
আমি: ৫০০ টাকার নোট দিলাম। কারণ ভাঙ্গতি যা আছে সব মিলিয়ে হয়তো ৫০/৬০ টাকা হবে।
কার্ড ইস্যুকারী: ভাঙ্গতি দেন
আমি: ভাঙ্গতি তো ১৫০ টাকা হবে না আমার কাছে
কার্ড ইস্যুকারী: সকাল বেলাই সবাই এখানে টাকা ভাঙ্গতি করতে আসে। ১৫০টাকা ভাঙ্গতি নিয়ে আসতে পারেন না। ৪ তলায় যান।
ডাক্তারের কক্ষে গেলাম, মুখটা আমাদের দেশের ভাষায় বলে তম্বা করে রেখেছে। ইদানিং প্রায়ই দেখা যায় ডাক্তাররা রোগী দেখলেই মুখটা এমন করে থাকে। রোগীর সাথে সহানূভুতি তো দূরের কথা স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে পারেনা। ডাক্তারের মুখ দেখলেই অর্ধেক রোগের কথা, কষ্টের কথা এমনিতেই রোগী মনে করতে পারবেনা বা ভয়ে বলতে পারবেনা।
ডাক্তার: কি সমস্যা
আমি: …………………
ডাক্তার: এই টেস্ট করে নিয়ে আসবেন
আমি: কি সমস্যা বলবেন?
ডাক্তার: রিপোর্ট দেখে বলতে হবে, ইনফেকশন হতে পারে
আমি: কি জাতীয় ইনফেকশন
ডাক্তার: আগে টেস্ট করিয়ে নিয়ে আসেন
আমি: রিপোর্ট দিতে কত দিন লাগবে?
ডাক্তার: জানিনা
আমি: আপনি কি আমাকে কোন ঔষধ দিবেন না?
ডাক্তার: রিপোর্ট না দেখে ঔষধ দেয়া যাবে না।
আমি: কিন্তু রিপোর্ট দিতে যদি দুই/তিন দিন লাগে আমার তো অনেক অসুবিধা হচ্ছে। আমাকে সময়িক ভাবে কোন ঔষধ দিন।
ডাক্তার: ২টি ঔষধ লিখে দিল। গ্যাসট্রিক এবং ব্যাথার (মনে হচ্ছিল তার অনেক কষ্ট হয়েচ্ছে লিখতে )
এখানে ডাক্তার কিন্তু আমার আরও কোন সমস্যা আছে কিনা বা রোগ নিয়ে কোন প্রশ্ন করেনি। আমি নিজের থেকে যতটুকু সম্ভব বলার চেষ্টা করেছি তবে তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছিলনা যে তিনি কিছু শুনছেন বা কোন শোনার আগ্রহ আছে। সর্বমোট সময় ৩ মিনিটেরও কম
তিন দিন পর রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তার জানালো আমার রিপোর্ট ভাল আছে তিনি যা ভেবেছেন (কি ভেবেছেন আমি পরিষ্কার জানিনা) তা নয়, আমার ইনফেকশন জাতীয় কোন সমস্যা নেই। আমার সমস্যা অন্য কোথায় আমাকে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ দেখাতে বললেন।
আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি তো কয়েকদিন ধরে কষ্ট করছি। আপনারা তো কোন ঔষধ দিলেন না এখন আবার মেডিসিন ডাক্তার দেখাতে হবে?
আপনার সমস্যা না থাকলে কেন ঔষধ দিব। আর যেসব সমস্যা আছে তা মেডিসিন ডির্পামেন্টের ডাক্তার ভাল বলতে পারবেন।
আমার সমস্যা না থাকলে আমি কি এমনি এমনি কষ্ট পাচ্ছি?
সেটা মেডিসিন ডাক্তার বলতে পারবে।