ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার ১২টি উপায়
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে নিচের যোগ্যতাগুলো খুব জরুরী: –
টাকাকে নয় কাজকে ভালবাসতে হবে। – ফ্রিল্যান্সিংকে শুধু পার্টটাইম হিসেবে না ফুলটাইম ক্যারিয়ার ভাবা শুরু করতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায় যে অনেক ফ্রিল্যান্সার যখন কাজ পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করে চলেছে, তখন কিছু সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার কাজ নিয়ে চরম ব্যস্ত থাকে, তাঁদের কাছে ক্লায়েন্টের অসম্ভব রকম ভিড়।
আপনি তাদের প্রোফাইল গিয়ে কাজের হিস্ট্রি দেখলেই তা বুঝতে পারবেন। সেখানে আরও একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় তা হচ্ছে তারা সব সময় পজিটিভ ধ্যান ধারণা পোষন করে। সামাজিক স্বকৃতি না থাকলেও আমি ব্যক্তিগত ভাবে এদেরকেই বলি সফল ফ্রিল্যান্সার।
কারণ তাদের কাজ পাওয়ার প্রতি স্পৃহা, সেই কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করে নির্দিস্ট সময়ের মধ্যে ক্লায়েন্টকে জমা দেওয়ার টেন্ডেন্সি অনেক অনেক বেশি থাকে।
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার কি করে, যা আপনি করেন না?
আরো গুরুত্বপূর্ণ যে, তারা যা পারে আপনি কিভাবে তা পেতে পারেন? এই পোস্টে, ক্লায়েন্টকে ভাল ভাবে আকর্ষণ করার ১২টি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।
১. সঠিক ক্লায়েন্ট নির্বাচন করাঃ যদি আপনার ক্লায়েন্ট আপনার কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তখন তাকে তার চাহিদা অনুযায়ী খুশি করা অনেক সহজ হয়ে যায় এবং সে আপনার কাজের প্রতি সন্তুষ্টও থাকে । ক্লায়েন্টের চাহিদা আপনার স্কিল এর সাথে সংগতি পূর্ণ কিনা সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ।
২. ক্লায়েন্টের মেইল এর জবাব দ্রুততার সঙ্গে দেওয়াঃ ক্লায়েন্টের কাজ করার জন্য কখনো তাকে অপেক্ষমান রাখবেন না । ক্লায়েন্টের মেইল এর জবাব যত দ্রুততার সঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, যদি সম্ভব হয় সেটা অবশ্যই ওই দিনের মধ্যেই দেয়া । যত দ্রুত ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ হবে, তত তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারবেন । আপনি যদি বেশি করে ফেলেন, তাহলে ক্লায়েন্ট ভাবতে পারে, আপনি তার কাজের প্রতি ইন্টারেস্টেড না ।
৩. ক্লায়েন্টের কথা মনোযোগ সহকারে শোনাঃ আপনি যদি আপনার সেবার দিক দিয়ে ক্লায়েন্টের কাছে অধিকতর পছন্দনীয় হতে চান, তবে আপনাকে অন্যদের তুলনায় আলাদা হতে হবে । ক্লায়েন্ট কি বলে সেদিকে অবশ্যই মনোযোগ দিতে হবে । যদি আপনি বুঝতে না পারেন, তবে তাকে প্রশ্ন করে সব বিষয় পরিষ্কার করে নিতে হবে ।
৪. সকল ক্লায়েন্টকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করাঃ ক্লায়েন্ট ছাড়া আপনার পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয় । ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য একজন ক্লায়েন্ট কতটা গুরুত্বপুর্ণ, এটা সব সময় মনে রেখে তাদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা উচিত ।
৫. নির্ভরযোগ্যতা দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করাঃ ক্লায়েন্ট যদি আপনার উপর নির্ভর করতে চায় তবে সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করুন । কখনো তাদের হতাশ করবেন না । সব সময় চেষ্টা করবেন সময়মত মানসম্মত কাজ হস্তান্তর করা ।বিশ্বাস দিয়েই একজন ফ্রিল্যান্সার ও ক্লায়েন্টের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে । আপনি যে নির্ভরযোগ্য এটা আপনার ক্লায়েন্টকে আপনার কাজের মাধ্যমে দেখান ।
৬. নিজেকে সব সময় অন্যের চেয়ে একধাপ এগিয়ে রাখুনঃ একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার সবসময় ক্লায়েন্টের আগ্রহের দিকে খেয়াল রাখে । এটা করার জন্য আপনি মাঝে মাঝে এমন কিছু লিংক আপনার ক্লায়েন্ট এর সাথে শেয়ার করতে পারেন যাতে সে আনন্দ পায় । হয়ত বা এটা আপনার কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়, এটা করতে আপনার তেমন সময়ও নষ্ট হবে না । তবে এতে আপনার ক্লায়েন্টের জন্য তা ভাল হবে ।
৭. আপনার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা আনন্দময় করাঃ একজন ক্লায়েন্টকে সবসময় পেশাদার সৌজন্য নিয়ে বিবেচনা করতে হবে । একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহায়ক জায়গা তৈরি করতে সচেষ্ট থাকা । ক্লায়েন্ট যদি আপনার সাথে কাজ করে আনন্দ পায় তবে পুনরায় আপনাকে তার অন্য কাজের জন্য বিবেচনা করার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায় ।
৮. ক্লায়েন্টকে ধন্যবাদ দেওয়াঃ আমরা সমাজে বাস করি, যেখানে আমাদের সমাজের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয় । হয়ত আমাদের সবাইকে পছন্দ হয় না । তারপরও একজন ক্লায়েন্টকে আপনার সাথে কাজ করার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে তার কাছে আপনার স্বত্যন্ততা প্রকাশ করতে পারেন ।
৯. সব সময় যোগাযোগের মাধ্যমগুলো খোলা রাখাঃ আপনি যদি একজন ক্লায়েন্টের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ না করেন, তারপরও তার সাথে যোগাযোগ রাখাটা অবশ্যই দরকার । ক্লায়েন্টের নিউজ লেটার হতে পারে এই যোগাযোগের একটা বিশ্বস্ত মাধ্যম । আপনার ক্যালেন্ডোরে একটি রিমাইন্ডার দিয়ে রাখুন, যাতে সাবেক ক্লায়েন্টদের মাঝে মাঝে মনে করতে ভুলে না যান ।
১০. ক্লায়েন্টের তালিকা সাজিয়ে গুছিয়ে রাখাঃ যদি আপনি আপনার ক্লায়েন্টেরদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হারিয়ে ফেলেন, তবে তাদের সাথে দরকারের সময় যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হবে না । এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করুন যার মাধ্যমে আপনি আপনার ক্লায়েন্টের তালিকা ও প্রস্পেক্টাস গুছিয়ে রাখতে পারেন । আর এটা যাতে না হারিয়ে যায় তার জন্য এর একটি কপি অবশ্যই যত্ন সহকারে রাখতে হবে ।
১১. ক্লায়েন্টকে বিশেষ সুবিধা প্রদানঃ একজন ক্লায়েন্টকে যদি আপনার ভাল লাগে এবং সে যদি অনেক নির্ভরযোগ্য হয় তবে তাদেরকে উৎসাহব্যঞ্জক কোন বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে পারেন । এছাড়াও আপনি এমন কিছু কাজ করতে পারেন যা শুধু আপনার ভাল ক্লায়েন্টদের জন্যই পেতে পারেন ।
১২. আরো কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করাঃ অনেক ফ্রিল্যান্সার তাদের ক্লায়েন্টের কাছ থেকে একই কাজ পুনরায় পায় না । কারণ, তার এ সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা করে না । আরো কাজ সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে জিজ্ঞাসা করতে কখনো সংকোচ করবেন না।
লেখাটি ভালো লাগলো বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দেওয়া অনুরোধ রইলো। সব ফ্রিল্যান্সার বন্ধুদের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো
Comments (No)