ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত…

ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত... 1

ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত নিজেকে এগিয়ে রাখতে ছাত্রাবস্থায়ই কিছু কিছু সফটওয়্যারের কাজ শেখা শুরু করা উচিত। জেনে নিন এমন কিছু সফটওয়্যারের কথা।

১. লেখালেখির জন্য:

খনকার সময়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড না শিখে, না জেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হওয়া এক রকম অসম্ভব। শুধু লেখালেখা নয়, মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে আরও নানা ধরনের কাজ করা যায়। চাইলে ছবি, নকশা, গ্রাফ বসিয়ে কোনো গবেষণাপত্র চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা যায় এই সফটওয়্যারে।

২. প্রেজেন্টেশনের জন্য:

বিজ্ঞান, বাণিজ্য বা মানবিক যে বিভাগেই পড়ুন না কেন, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন তৈরি ও উপস্থাপন আপনাকে জানতেই হবে। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সব বিষয়ের কোনো না কোনো কোর্সে প্রেজেন্টেশন বাধ্যতামূলক থাকে। মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট নিজে না জানলে পরবর্তী সময়ে কর্মক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত... 2

৩. হিসাব-নিকাশে উপকারী:

মাইক্রোসফট এক্সেল সফটওয়্যারটির ব্যবহার ও প্রয়োগ জানা এখন বেশ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। একটা সময় ধারণা ছিল, মাইক্রোসফট এক্সেল শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জানা থাকলেই হলো। সময় এখন অনেক বদলেছে। বিজ্ঞান কিংবা বাণিজ্য যা-ই পড়ুন না কেন, তথ্য-উপাত্ত সঠিকভাবে সাজিয়ে উপস্থাপনের জন্য মাইক্রোসফট এক্সেল শেখা খুব জরুরি। মাইক্রোসফট এক্সেলের কাজ জানা থাকলে আপনি সেটি সিভিতেও যোগ করতে পারবেন।

৪. বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য:

বিজ্ঞান, প্রকৌশল কিংবা গণিতে পড়ুয়াদের জন্য এমএটিল্যাব বা ম্যাটল্যাব সফটওয়্যার সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। ডেটা বিশ্লেষণ, অ্যালগরিদম তৈরি কিংবা গাণিতিক মডেল তৈরির জন্য ম্যাটল্যাব খুব কাজের। এখন বিশ্লেষণধর্মী পড়াশোনা ও গবেষণার গুরুত্ব বাড়ছে, কর্মক্ষেত্রেও তথ্য বিশ্লেষণ-অ্যালগরিদম নিয়ে কাজের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। বিজ্ঞানের সব শিক্ষার্থীরই ম্যাটল্যাব সম্পর্কে জানা উচিত।

৫. ছবি সম্পাদনা:

প্রেজেন্টেশনে ভালো ছবি উপস্থাপনের জন্য কিংবা কর্মক্ষেত্রেও হঠাৎ ছবি সম্পাদনার কাজ প্রয়োজন হতে পারে। প্রেজেন্টেশনে আপনি যা বোঝাতে চাইছেন, ঠিক আপনার মনের মতো ছবি হয়তো গুগলে পাবেন না। অ্যাডোব ফটোশপের কাজ জানা থাকলে ছবিগুলো একটু সাজিয়ে নিতে পারবেন। এতে আপনার প্রেজেন্টেশন আরও আকর্ষণীয় হবে।

ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত... 3

৬. ভিডিও সম্পাদনাও জরুরি:

এখন শখের কাজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রজেক্টেও শিক্ষার্থীরা ভিডিওচিত্রের সাহায্য নেন। ভিডিও সম্পাদনা আর দৃষ্টিনন্দন ভিডিও ক্লিপ তৈরির জন্য প্রাথমিকভাবে মাইক্রোসফট মুভি মেকার দিয়ে কাজ চালানো যায়। আরেকটু ভালো মানের কাজের জন্য অ্যাডোব প্রিমিয়ারের মতো সফটওয়্যার শিখে নিতে পারেন।

ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত... 4

৭. আঁকাআঁকি, নকশা ও গ্রাফিকস:

টুকটাক নকশার কাজ নানা প্রয়োজনেই আমাদের করতে হয়। নিজের প্রয়োজনে অ্যাডোব ইলাস্ট্রেটরের কাজ শিখে নিলে গ্রাফিকস-সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ বেশ সহজ হয়ে যায়। বিজ্ঞান ও স্থাপত্য বিষয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন বা সিএডি সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। কর্মক্ষেত্রে নানান প্রজেক্ট আর গবেষণায় সিএডি ধরনের সফটওয়্যারগুলোর বিভিন্ন প্রয়োগ দেখা যায়। অটোক্যাড আর ভেক্টরওয়ার্কসও শিখে রাখতে পারেন।

৮. তথ্য গবেষণার জন্য:

বাজার বিশ্লেষণ, গবেষণা ব্যাখ্যা কিংবা তথ্য বিশ্লেষণের জন্য এসপিএসএস স্ট্যাটিস্টিকস সফটওয়্যার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার শুরু থেকেই এ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা উচিত। এই সফটওয়্যারটির বহুমাত্রিক ব্যবহার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় নয়, যেকোন ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রয়োগ করা হয়।

৯. ব্যবসা-বিপণনে যা প্রয়োজন:

যারা ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়ছেন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে নিজের উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করবেন, তাঁদের জন্য হিসাববিজ্ঞান ও গ্রাহক সেবাসম্পর্কিত সফটওয়্যার জানা থাকা ভালো। এখন ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোটাই অনলাইনে চলে এসেছে। এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স সফটওয়্যার এসএপি, গ্রাহক সেবাসম্পর্কিত সফটওয়্যার সেলসফোর্স এবং অ্যাকাউন্টিংয়ের জন্য ট্যালি সফটওয়্যার সম্পর্কে ব্যবহারিক জ্ঞান থাকা দরকার।

ছাত্রজীবনেই যে সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা উচিত... 5

১০. আরও যা জানা জরুরি:

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও রেফারেন্সিংয়ের জন্য এন্ডনোট সফটওয়্যারটি শিখে নিতে পারেন। নিজের পোর্টফোলিও বা জীবনবৃত্তান্ত নিখুঁতভাবে তৈরির জন্য অ্যাডোব অ্যাক্রোব্যাট রিডার-এডিটর ও ফক্সিট পিডিএফ এডিটরের কাজ শিখলে সেটিও কাজে আসবে।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ