কম টাকা বাজেটে শুরু করতে পারবেন যে সব ব্যবসা

ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকলেও ভাবছেন যে, আপনার ব্যবসা করার মতো প্রচুর টাকা নেই। কোনও চিন্তা করবেন না। আপনার জন্য অনেক মার্কেটিং কৌশল আছে যা ব্যবহার করে আপনি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আপনি যদি সঠিক প্ল্যান এবং সঠিকভাবে আপনার পরিশ্রমকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে আপনিই ব্যবসায় সাফল্য পাবেন। দেখবেন অনেকেই প্রচুর টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে নামে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সফলতা পায় না। একটি ছোট ব্যবসার মালিক হিসাবে বাজারে আপনার ব্যবসাকে প্রসারিত করার জন্য প্রাথমিক এবং ছোট কিছু স্মার্ট উপায় জেনে রাখা ভালো। কম টাকা বাজেটে শুরু করতে পারবেন যে সব ব্যবসা

কম টাকা বাজেটে শুরু করতে পারবেন যে সব ব্যবসা


এখন আপনার এই অল্প পুঁজিতে আপনি কী ধরনের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন তার জন্য রইলো কিছু টিপস–
শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করুন: ভিডিও কন্টেন্ট সত্যিই মূল্যবান এবং আপনি যে কোনও বিষয়ের উপর শিক্ষামূলক ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন। বর্তমানে অনেকেই এই ধরনের ব্যবসা করছে। কম টাকা বাজেটে শুরু করতে পারবেন যে সব ব্যবসা

অনলাইন ট্যুরিজম: আমাদের দেশের ভ্রমণ উপযোগী বিভিন্ন স্থানের ডাটা সংগ্রহ করে, ভালো ছবি তুলে ওয়েবসাইট তৈরি করা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাইরের বিশ্বের কাছে তা তুলে ধরা। পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেল এবং টু্যরিজম কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা। এক কথায় নিজের ফিজিক্যাল এক্সিস্টেন্স না থেকেও মিডলম্যান হিসেবে কাজ করা।

ওয়েব হোস্টিংয়ের ব্যবসা: ওয়েবসাইট হোস্টিং কিনে তা আবার বিক্রি করা। ইন্টারনেটে দখল থাকতে হবে, বিদেশে টাকা পরিশোধের সিস্টেম থাকতে হবে। মার্কেটিংয়ে খরচ আছে।

প্যাকেজিংয়ের ব্যবসা: গ্রাম বা শহর সব জায়গার শাড়ি, জুতো, মিষ্টি, খাবার প্রভৃতির দোকানে প্যাকেট দরকার হয়। ভালো প্যাকেজিং ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি সম্ভব হয় না। উন্নতমানের প্যাকেজিং বাক্স তৈরি করে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী বাজারজাত এবং আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্যাকেট ব্যবহৃত হয়। যেমন– শাড়ির বাক্স, জুতোর বাক্স, মিষ্টির বাক্স, বিরিয়ানীর বাক্স ইত্যাদি। মোটা, শক্ত কাগজ দিয়ে এসব প্যাকেট তৈরি করাকে প্যাকেজিং বলা হয়।

টেলারিং বা দর্জির কাজ: আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নারী-পুরুষ উভয়েই বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় পরার প্রতি আগ্রহী। তাই পোশাক কেনার পাশাপাশি তারা দর্জির কাছ থেকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মাপ ও ডিজাইন দিয়ে বিভিন্ন পোশাক তৈরি করে নেয়। এ কারণে কাপড় সেলাই বা দর্জির চাহিদা সব সময়ই থাকে। কাপড় সেলাই শুরুর আগে দক্ষতা অর্জন করা অবশ্যই প্রয়োজন। তাই কাপড় কাটা ও সেলাইয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকা: একটি ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে আপনাকে নিয়মিত মানুষের সাথে কথা বলা অর্থাত্ যোগাযোগের যে ব্যাপার থাকে এজন্য আপনাকে নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে। যেমন আপনি কোনও পণ্যের অফার করলেন বা আপনার কোনও পণ্যের জন্য মার্কেটিং করলেন এখন কোনও ক্লায়েন্ট আপনাকে সার্ভিস-এর জন্য বা পণ্য কেনার জন্য খুঁজল আর আপনাকে পেল না। তখন সে আপনার রিপ্লাইয়ের জন্য অপেক্ষা করবে না। সেক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা ছড়াবে না। এবং ব্যবসাতে সফল হতে পারবেন না। এ জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করুন।

ছবি বাঁধাইয়ের ব্যবসা: ছবি বাঁধিয়ে রাখার মূল উদ্দেশ্য হল দৃষ্টি আকর্ষণ, গৃহসজ্জা ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ। ছবি বাঁধানো এখন একটি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। সারাদেশে অনেক মানুষ এই পেশার সাথে যুক্ত আছে। মানুষ দিন দিন তার গৃহসজ্জার প্রতি সচেতন হয়ে উঠছে। ফলে এর অংশ হিসাবে বাড়ছে ছবি বাঁধাইয়ের কাজ। বিভিন্ন ডিজাইন ও রঙের ফ্রেমে এখন ছবি বাঁধাই করা হচ্ছে।

ওয়েবসাইট তৈরির ব্যবসা: বর্তমানে গ্রাম, মফস্সল ও বড় শহরগুলোর আশপাশে অনেক সরকারি ও বেসরকারি কলেজ রয়েছে। প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে আরও নতুন বেসরকারি কলেজ যাদের নিজস্ব কোনও ওয়েবসাইট নেই। যাঁরা এই কাজে দক্ষ তারা ওয়েবসাইট তৈরির কাজে নেমে পড়তে পারেন। কলেজ কর্তৃপক্ষও নিশ্চয় এটা সাদরে গ্রহণ করবেন।

স্টেশনারি দোকান: বইপত্র, খাতা-কলমের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের উন্নতির সাথে সাথে বাড়ছে অফিস আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোও। এসব প্রতিষ্ঠানে রেজিস্টার খাতা, পেনসিল, কলম, ফাইল ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। স্টেশনারিতে এই সব প্রয়োজনীয় খাতা, কলম, পেনসিল, স্কেল ইত্যাদি পাওয়া যায়। এসব উপকরণের চাহিদা সব সময়ই থাকে।

স্ক্রিন প্রিন্টের ব্যবসা: ব্লক প্রিন্ট, বাটিক, টাই-ডাই ইত্যাদির পাশাপাশি বর্তমানে কাপড় ছাপার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে স্ক্রিন প্রিন্ট। স্ক্রিন প্রিন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল শুধু কাপড়ই নয়, কাগজেও ছাপা বা প্রিন্ট করা যায়। স্ক্রিন প্রিন্ট এক ধরনের ছাপার পদ্ধতি। স্ক্রিন প্রিন্ট অনেকদিন আগে থেকেই ছাপার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে এটি খুবই জনপ্রিয়।

আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা আমরা গ্রাহক সেবার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে। আমরা গ্রাহকদেরকে তাদের চাহিদা মতো সাপোর্ট দিতে পারি না। আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল আপনি যা করেন তাতে সবচেয়ে ভালো দিকগুলো বের করা। এবং আপনার কাজের উপর শতভাগ আত্মবিশ্বাস থাকা। আগামী বছরের জন্য উন্নত গ্রাহক সেবা লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং দেখুন আপনার লক্ষ্যে কী কী সমস্যা থাকতে পারে এবং সেগুলো পর‌্যালোচনা করে তার থেকে উত্তরণের উপায় বের করুন।

যখন আপনি স্মল বিজনেস মার্কেটিংয়ে আসবেন তখন গুগল ম্যাপের লোকাল লিস্টে আপনার কোম্পানির নাম ওঠানোর অনেকগুলো কারণ আছে। গ্রাহক আপনার কোম্পানির স্থাপিত হওয়াটা দেখতে পারে এবং এটি গুগল র‌্যাঙ্কিং-এও ভালো অবস্থানে আসতে সাহায্য করবে। চূড়ান্তভাবে গ্রাহক কোম্পানির রিভিউ দেখতে পারে এবং সে তার মতামত প্রকাশ করতে পারবে আর এটি আপনাকে আপনার গ্রাহককে বুঝতে সাহায্য করবে।

আপনি ক্ষুদ্র ব্যবসা নিয়ে শুরু করলেন এখন আপনার ব্যবসার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনও ব্যবসা যদি আপনার পাশের কোনও ব্যক্তি করে তাহলে আপনি তাদের সাথে অংশীদারের ভিত্তিতে কাজ করতে পারেন। তাহলে আপনার কোনও ক্লায়েন্ট হাতছাড়া হবে না। আপনি আপনার ব্যবসার যদি একজন নিয়মিত ক্লায়েন্ট খুঁজে পান তাহলে আপনার ব্যবসা দ্রুত এগিয়ে যাবে।

আপনাকে ব্যবসার জন্য উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কী ব্যবসা করতে যাচ্ছেন, ওই ব্যবসার জন্য আপনার আশে পাশের পরিবেশ পারফেক্ট কিনা। যেমন সব খাবারের দোকানের মধ্যে কেউ যদি চশমার দোকান নিয়ে বসে, তাহলে সে ব্যবসায় খুব একটা সুবিধে করতে পারবে না।

এরকম আপনি আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত জায়গা এবং উপযুক্ত পরিবেশ নির্ধারণ করুন। যেন আপনার কাস্টমার এবং আপনার কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পায়। আপনি ইচ্ছে করলে এটার জন্য আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারেন। 

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ