ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার ১০টি উপায়, স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম 10 Ways to Make Money Online for Students, Student Online Income শিক্ষাজীবনে পড়াশোনার চাপ সামলে নিয়ে অনলাইন উপার্জনে আগ্রহী হলে, লেখাটি আপনার জন্যই। আসলে স্টুডেন্ট অবস্থায় কিছু হালকা পাতলা পকেট মানির দরকারও আছে বৈকি!এই লেখায় আমরা আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিতে যাচ্ছি দশটি সাইটের সাথে, যেখানে আপনি ছাত্রাবস্থাতেই কাজ করে জুটিয়ে নিতে পারছেন আপনার পকেট মানি। পকেট মানি বললে ভুল হবে হয়তো, লেখাপড়ার ক্ষতি না করেও স্টুডেন্ট হিসেবে বেশ ভালো একটা এমাউন্টই ইনকাম করতে পারবেন। এসব কাজ করে মাসিক ১০০ মার্কিন ডলার কিংবা তার থেকেও বেশি উপার্জন করতে পারবেন। ছাত্রদের জন্য এই পরিমাণ অনলাইনে আয় করাটা নিশ্চয়ই খারাপ নাহ!
সূচীপত্র
স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম কিভাবে করবো?
ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার দুই ধরনের উপায় আছে, ১) সক্রিয় উপার্জন এবং ২) প্রচ্ছন্ন বা প্যাসিভ উপার্জন।
সক্রিয় উপার্জন অর্থাৎ এই ধরনের কাজে আপনি শুধু ততোটুকুই আয় করতে পারবেন ,যতোটুকু আপনি কাজ করেছেন। অর্থাৎ কাজের ভিত্তিতে টাকা! অনেকটা ওই ৯ টা থেকে ৫ টা অফিস জবের মতোই।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ফাইভার, আপওয়ার্ক কিংবা ফ্রিল্যান্সারের মতো আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে যে ধরনের কাজ হয়ে থাকে আর কি!
তবে এখন বর্তমান বিশ্বে প্রচুর সংখ্যক ফ্রিল্যান্সারদের আনাগোনা আছে বলে সক্রিয় কাজ জোটানো একটু প্রতিযোগিতাপূর্ণও হয়ে গেছে।
আর প্রচ্ছন্ন উপায়ে যেটা হয় আর কি, আপনি একবার কাজ করলেন, সেই কাজেই একটা নির্দিষ্ট রেভিনিউ আপনার অ্যাকাউন্টে যোগ হতে থাকবে। উদাহরণ হিসেবে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কথা বলতে পারি।
এখানেও যে একদম আপনাকে কাজ করতে হচ্ছে না, এমনটা কিন্তু নয়। আপনাকে কিন্তু ঠিকই কাজ করতে হচ্ছে। আপনি অন্য কারো পণ্যের প্রোমোশন করছেন, আর আপনার প্রচারণার দরুণ কিছু বিক্রিবাট্টা হলো, সেখান থেকে আপনি রেভিনিউ পাচ্ছেন। তবে এই কাজটা আপনাকে বারবার না করলেও চলছে।
ফ্যানের সুইচ দিয়ে রাখার মতো আর কি। ফ্যানটা দোকান থেকে এনে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে সুইচ দেওয়া পর্যন্ত আপনার কাজ, এরপর সেই আপনাকে বাতাস দিতে থাকবে।
ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার উপায়
ছাত্রদের জন্য পার্ট টাইম জব করার সুযোগ থাকলেও ঘরের বাইরে গিয়ে কাজে করায় ক্লান্তিসহ নানা কারণে কাজের সময় ছাড়াও আরো অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। স্টুডেন্ট হিসেবে অনলাইন ইনকাম করলে এইদিক থেকে বেশ সুবিধা পাওয়া যায়।
কাজ করতে গিয়ে কোনোভাবেই পড়াশোনার ক্ষতি করা যাবেনা, সময় কম দিয়ে যেটুকু সম্ভব করতে হবে। কথা না বাড়িয়ে চলুন ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার উপায়গুলো দেখে নেওয়া যাক।
আপওয়ার্ক ডট কম
আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সারদের স্বর্গরাজ্য। ব্যক্তিবিশেষ কিংবা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত বিরতিতে আপওয়ার্কে কাজ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে আর্টিকেল লেখার কাজ, ভিডিও ইডিটিং এর কাজ, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভলপমেন্ট, ট্রান্সলেট, ফেসবুক পেজ কভার ডিজাইন ইত্যাদি ইত্যাদি।
আপওয়ার্কের সৌন্দর্য্য হচ্ছে, খুব সহজেই আপনি এখানে নিজের জাত চেনাতে পারবেন, এখানে জটিল কাজই যে আছে তা কিন্তু নয় আপনি পারেন এমন অনেক ছোট ছোট কাজ রয়েছে যেগুলোর প্রতিটির জন্য ৫ থেকে ১০ডলার আয় করে নিতে পারবেন।
এমন যদি হয় যে আপনার বিশেষ কোনো দক্ষতা আছে, হতে পারে আপনার টাইপিং স্পিড ভালো কিংবা ভয়েস সুন্দর, তাহলে ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারবেন। আপনার অন্য চাহিদাসম্পন্ন কোনো দক্ষতা আছে, তাহলে চাইলেই ছাত্র অবস্থায় আপওয়ার্কে আয় করতে পারবেন।
স্টুডেন্ট হিসেবে আপনার অনলাইন ইনকাম করার মতো অনেক বিষয়েই আইডিয়া রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আপনাকে শুধু কোনো একটা বিষয়ে দক্ষ হতে হবে।
ছোট্ট একটা টিপ্স
যতো দক্ষতাই থাকুক না কেন, নিজের প্রোফাইল সঠিকভাবে না সাজালে ভাঁড়ে ভবানী। তাই সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়েই সাজিয়ে নিন নিজের প্রোফাইল, যা আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে।
আপনার করা সবথেকে ভালো কাজটা প্রদর্শনীতে রাখুন এবং বিশেষ দক্ষতাগুলো প্রোফাইলে ফুটিয়ে তুলুন। যদি নিজেকে সবার থেকে একটু আলাদা উপরে দেখতে চান আর কি!
ইউটিউব
ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার যত উপায় রয়েছে তার মধ্যে ট্রেন্ডিং মিডিয়া বলা যায় ইউটিউবকে। অনেকেই হয়তো ইউটিউব থেকে আয়ের কথা জানেন ই না! কারণ বাংলাদেশের যত ইউটিউবার আছেন তাদের অধিকাংশই ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী, অর্থাৎ ছাত্র।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে যদি আপনিও স্টুডেন্ট হিসেবে অনলাইন ইনকাম শুরু করতে চান, একটা ব্যাপার খুব ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নেবেন, ইউটিউবের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী আপনাকে ইউটিউবের শর্ত যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে।
উপার্জনের জন্য মনোনীত হতে হলে আপনার চ্যানেলে কমপক্ষে ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ জন নিয়মিত গ্রাহক (সাবস্ক্রাইবার) থাকতে হবে। শর্ত পূরণ করতে পারলেই মিলবে উপার্জনের সুযোগ। ইউটিউব থেকে কেমন উপার্জন সম্ভব?
সত্যি বলতে, সীমাহীন! আপনার যতো ইচ্ছে ততো উপার্জন করতে পারবেন আপনি ইউটিউব থেকে, যতোদিন আর কি ভালো কন্টেন্ট আপলোড করবেন আপনার চ্যানেলে আর মানুষ তা দেখবে। আর ভিডিও যতো দীর্ঘ হবে আর মানুষ যতো দীর্ঘ সময় ধরে আপনার ভিডিও দেখবে,আপনার উপার্জন ও সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকবে।
১ ডলার থেকে শুরু করে উপার্জনের শেষ কোথায় জানা নেই। ইউটিউব থেকে এই আয়ই আদতে প্রচ্ছন্ন আয়! সুন্দর কন্টেণ্ট আপলোড করে রাখলেন, আর কোনো কাজ নেই, মানুষ দেখলো আর আপনার আয়ও বাড়তে থাকলো। সুন্দর নাহ!
এছাড়াও কিন্তু ইউটিউব থেকে আয় করা যায়। হ্যাঁ, পেইড স্পন্সরশিপ! অর্থাৎ বিভিন্ন কোম্পানির থেকে বিজ্ঞাপন এনে দেবে আপনাকে ইউটিউব আর আপনি সেই কোম্পানির প্রচারণা চালাবেন আপনার কন্টেন্টে, কিন্তু তা করতে আপনার দরকার হবে ন্যূনতম ১০০০০ গ্রাহক। সাথে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সুযোগও থাকছে ইউটিউবে।
অ্যামাজন
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস বই বিক্রির মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো প্রতিষ্ঠানটির, কিন্তু অ্যামাজন এখন আপনার মাথায় আসতে পারে কিংবা আপনার কাজে লাগতে পারে এমন সব কিছুই বিক্রি করছে।
আপনার প্রিয় খেলনা কেনার জায়গা নয় শুধু এটা, আপনি তো এখানে টাকাও কামাতে পারছেন। অ্যাামাজনের সাথে অনলাইনে টাকা আয় করার জন্য রয়েছে বিশেষ তিনটি উপায়।
অ্যামাজন মেকানিক্যাল টার্ক
অ্যামাজনের এই প্ল্যাটফর্মটা মূলত আপওয়ার্কের মতোই যেখানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো আউটসোর্সের জন্য কাজ দিয়ে থাকে। কিন্তু এখানে বিশেষ করে শুধু মাত্র সেই কাজগুলোই দেওয়া হয়, যেগুলো আসলে কোনো বিশেষায়িত কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে করা সম্ভবপর না হয়।
এই যেমন ধরুন, অডিও ইডিটিং, অডিও ট্রান্সক্রাইবিং, অডিও থেকে অনুবাদ কিংবা কোনো ভিডিও থেকে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ, ওয়েব পেইজের টেস্টিং, রিভিউ লেখার কাজসহ ইত্যাদি ইত্যাদি অন্য অনেক আরো পরিষেবাসমূহ।
আপনি এখানে দেয়া এসব কাজগুলোর মধ্যে যেকোনো কাজ নিয়ে ঘণ্টায় চাইলেই ২০ ডলার থেকে ৩০ ডলার পর্যন্ত কামাই করে নিতে পারবেন। তারা সত্যিকার অর্থেই কাজের বিনিময়ে টাকা দিয়ে থাকে। নিঃসন্দেহে স্টুডেন্ট অবস্থায় অনলাইন ইনকাম করার সেরা একটি উপায়। Online income Tunes
অ্যামাজন কিন্ডেল পাবলিশিং
আপনার মাথায় ভালো কোনো আইডিয়া আছে? ই-বুক বানিয়ে ফেলুন। পাবলিশ করে দিন অ্যামাজনে আর শুরু করে দিন উপার্জন। যখনই আপনি অ্যামাজনে কোনো ই-বুক প্রকাশ করবেন, অ্যামাজন টাকা কামাচ্ছে, সাথে ইনকাম করছেন আপনিও। শুধু বিক্রিটা হইতে হবে আর কি, ঠিকঠাক।
নিজেই লিখতে পারেন বই। এজন্য আপনাকে কিন্তু প্রতিষ্ঠিত কোনো লেখক হইতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আবার আপনার কোনো প্রকাশনা সংস্থার কোনো প্রকার সাহায্যেরও দরকার পড়ছে না, সবকিছু করতে পারছেন আপনি নিজেই।
আর দারুণ ব্যাপার হলো, এটা সম্পূর্ণভাবে ফ্রি। সাইন আপ করুন, ই-বুক আপলোড দিন, উপার্জন শুরু করুন। অ্যামাজনই অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক সব দিক থেকে আপনার হয়ে নজর রাখবে। আপলোড দেওয়ার পর পড়াশোনায় মনোযোগ দিতেপারেন।
তাছাড়া যেটা অনেকেই জানেনা, অ্যামাজন কিন্ডেল পাবলিশিং এ আপনি প্রকাশ করতে পারছেন পেপারব্যাক ডিজাইনও। আয়ের অন্যতম বিশেষ একটি উৎস এই পেপারব্যাক ডিজাইন।
আপনি চাইলে এ ব্যাপারে জানতে ইন্টারনেটে, ইউটিউবেও খানিকটা ঘাঁটাঘাঁটি করতে পারেন। তবে আপনি এ সম্পর্কে এক্সপার্টদের সান্নিধ্য পেতে চাইলে আপনাকে হয়তো কিছু টাকা পয়সা ব্যয় করে কোর্সে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে।
কিছু কিছু মানুষ তো ১০০০০ মার্কিন ডলারের বেশিও আয় করে থাকে অ্যামাজনে। অবশ্যই এটা আপনার বিবেচনাধীন রাখার মতোই একটা মার্কেট, যদি আপনার অনলাইনে আয় করার আগ্রহ থাকে আর কি!
অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটস প্রোগ্রাম
প্রচ্ছন্ন উপার্জনের খুবই জনপ্রিয় এবং সহজ উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপায় এটি। আপনাকে যা করতে হবে, শুধুমাত্র অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েট প্রোগ্রাম এ সাইন আপ করতে হবে, সম্পূর্ণভাবে ফ্রি অর্থাৎ এজন্য আপনাকে কোনো পয়সা কড়ি গুনতে হবেনা।
এরপর যা করতে হবে, অ্যামাজনের বিশাল অনলাইন গুদাম থেকে আপনার ইচ্ছেমতো যেকোনো পণ্য আপনি বেছে নিতে পারেন এবং আপনার ওয়েব সাইটে প্রচারণার জন্য বেছে নিতে পারেন। সেই সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতেও অ্যামাজনের দেয়া লিঙ্ক ব্যবহার করে প্রচারণা চালিয়ে স্টুডেন্ট অনলাইন উপার্জন শুরু করতে পারেন।
আপনার দেয়া লিঙ্ক থেকে কেউ কোনো পণ্য কিনলে অ্যামাজন আপনাকে দেবে ওই পণ্যের দামের ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন। আর ওই পণ্য কেউ ক্রয়ের ৬০ দিনের মধ্যে অ্যামাজন আপনার টাকা আপনাকে দিয়ে দিবে। আপনি চাইলে অ্যামাজন গিফট কার্ড দিয়ে অ্যামাজন থেকেই কিছু কিনে সেই টাকা উশুল করতে পারবেন, আবার চাইলে অ্যামাজন থেকে ব্যাংক ট্রান্সফার, পেপ্যাল কিংবা পেয়োনিয়ারের মাধ্যমেও পেমেন্ট নেওয়া যাবে।
ফ্লিপপা ডট কম (flippa.com)
অনলাইন ব্যবসায় কেনাবেচার বাজারের কর্তৃত্ব করা ওয়েব সাইট এই ফ্লিপ্পা। বৃহত্তর পরিসরের দর্শক টানে এই সাইট, তাছাড়া আপনার ওয়েব সাইট কিংবা ব্যবসাকে সবার কাছে প্রদর্শিত হবার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।
এটা অনেকটা ই-বে’র মতোই নিলামের সাইট, তবে তাদের জন্য যারা ডিজিটাল সম্পত্তি (উদাহরণস্বরূপ: ওয়েবসাইট, অ্যাপস, ডোমেইন) কেনাবেচায় আগ্রহী।
আপনি যদি ভালো অ্যাপস বানাতে পারেন, চাইলে তা অনলাইনে বিক্রিও করতে পারেন। কিংবা এধরনের কোনো ডিজিটাল পণ্য যদি কিনতে চান, যা দ্বারা ইতোমধ্যেই অর্থ উপার্জন হচ্ছে, তাহলেও আপনার জায়গা ওই ফ্লিপপাতেই।
এখানে আপনাকে ওই ই-বের মতোই বিড করতে হবে। আপনার বিড জিতে গেছে মানে অর্থ উপার্জন ইতোমধ্যেই চলমান আছে এমন কোনো ডিজিটাল পণ্য আপনার হয়ে গেলো। সেখান থেকে আপনার উপার্জন চলমান রাখতে পারছেন।
তাছাড়া একই সাথে, আপনার যদি এমন কোনো পণ্য থেকে থাকে, তা আপনি এখানে বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করতে পারছেন।
শাটারস্টক
ছাত্র অবস্থায় আমরা প্রায়শই ঘুরতে যাই, এখানে সেখানে ট্যুর দিতে বের হই। আপনার মোবাইলের ক্যামেরা যদি ভালো হয় কিংবা একটি ক্যামেরা থাকে, তবে স্টুডেন্ট হিসেবে অনলাইন থেকে ইনকাম করার সেরা উপায় হতে পারে শাটারস্টক।
শাটারস্টক এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ডিজিটাল মিডিয়া কেনা বেচা করতে পারবেন। এই ধরুন, ছবি, অডিও মিউজিক কিংবা ভিডিও ক্লিপ। প্রধানত ফ্রিল্যান্সার কিংবা তৃতীয় কোনো পক্ষই তৈরি করে থাকে শাটারস্টকের সব কন্টেন্ট।
আপনি যদি বিশেষভাবে দক্ষ হয়ে থাকেন ফটোগ্রাফিতে, দারুণ দারুণ সব ছবি তুলতে পারেন কিংবা ভিডিও বানাতে পারেন, তাহলে আপনি কিন্তু আপনার এই প্রতিভাকেই টাকায় রুপান্তর করে নিতে পারছেন শাটারস্টকে। কেউ আপনার ছবি কিনছে অর্থই হলো আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা আসছে।
তবে শাটারস্টকে প্রচুর পরিমাণে আয় করার একটা কৌশল হলো, আপনাকে নিয়মিতভাবে উচ্চ মানসম্পন্ন ছবি আপলোড দিয়ে যেতে হবে। শাটারস্টক অ্যালগরিদম তবেই আপনার কন্টেন্টকেই অগ্রাধিকার দিয়ে মানুষের সম্মুখে বেশি বেশি হাজির করবে।
ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার জন্য ফটোগ্রাফি আমার কাছে সেরা অপশন। তাই শাটারস্টকে কাজ করতে সমস্যা মনে হলে ছবি বিক্রি করে আয় করার অন্যান্য সাইটগুলোও দেখতে পারেন।
টেইকলেসনস ডট কম
প্রত্যেকেরই কোনো না কোনো দক্ষতা আছে, যা তারা অন্য কাউকে শিখাতে চায় কিংবা পারে। হতে পারে কাউকে নতুন কোনো ভাষা শেখানো, রান্না শেখানো, গান শেখানো ,গিটার বাজানো শেখানো কিংবা জটিল জটিল সব গণিতের সমাধান কীভাবে করতে হয়, সেসব সহ যেকোনো কিছু!
যাই আপনার মনে হবে যে অন্য অনেকেই হয়তো জানেনা, পারেনা, সেসব কিছুই আপনি অন্যদেরকে শেখাতে পারছেন টেইকলেসনস ডট কমে।
ফাইভার
ফাইভারে ছাত্রদের অনলাইনে আয় করার অনেক বেশি এবং বহুমুখী সুযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে খুব অল্প কিছু উল্লেখ করতে গেলে অ্যানিমেশন, লোগো ডিজাইন, প্যাকেজিং ডিজাইন, ওয়েব অ্যান্ড মোবাইল ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া ডিজাইন, ফটোশপ ইডিটিং, আর্কিটেকচার অ্যান্ড ফ্লোর প্ল্যানিং, থ্রি ডি মডেল অ্যান্ড প্রোডাক্ট ডিজাইন, টিশার্ট কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস এসইও সহ আরো হাজার রকমের কাজের কথা বলা যায়, যা স্টুডেন্ট হিসেবে অনলাইনে ইনকাম করার জন্য করতে পারবেন।
আউটসোর্স করা যেতে পারে এমন যেকোনো কিছু যদি থাকে, আপনি তা অবশ্যই খুঁজে পেতে পারেন ফাইভারে। ছাত্র হিসেবে অনলাইন আয়ের দারুণ একটা জায়গা ফাইভার।
ড্রপ শিপিং
ড্রপ শিপিং এ আপনি বিক্রি করতে পারবেন অন্য কারো জিনিসপত্র তথা পণ্য। শিপিং এর কোনো ঝক্কি ঝামেলা ছাড়াই ছাত্র অবস্থায় আপনি অনেক বড় রকমের লাভের মুখ দেখতে চাইলে অনলাইন আয়ের স্বর্গ ড্রপ শিপিং শুরু করতে পারেন।
ড্রপ শিপিং এমন একটি পদ্ধতি যেব্যবসা করার জন্য প্রোডাক্ট প্রয়োজন হয়না। অর্ডার পাওয়ার পর সেটি অন্য কোনো ব্যবসায়ীকে অর্ডারটি ট্রান্সফার করে দিতে হয়।
এখানে আপনার কাজ অনেকটাই কোনো ব্রোকার তথা কোনো মধ্যস্থতাকারীর মতোই। আপনি কোনো শপিফাই স্টোর করে সেটাকে ওবারলো এর সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমেই এটি করতে পারেন।
ওবারলো হচ্ছে শপিফাইয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি অ্যাপ, যেটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ তাদের পণ্যগুলো তাদের অনলাইন স্টোরে বিক্রি করার জন্য ব্যবহার করে থাকে।
আপনি প্রথমে ড্রপ শিপিংয়ে গিয়ে এমন কোনো স্টোর অথবা চ্যানেল তৈরি করুন যেখান থেকে কিনা মানুষ আপনার থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনতে পারবে। আপনাকে অর্ডার করলে ওই পণ্যের মূল উৎপাদনকারীকে মূল্য পাঠিয়ে অর্ডারটা ট্রন্সফার করে দিবেন। উৎপাদনকারী বা ই-কমার্স ব্যবসায়ী পণ্যটি পৌঁছিয়ে দেবে। ড্রপ শিপিংয়ের মূলনীতি এটাই।
আপনার কাজ শুধু পণ্যের অর্ডার নেওয়া এবং ট্রান্সফার করা। এখানে পণ্য আপনার দেখা বা স্পর্শ ছাড়াই বিক্রি হয়ে গেলো। আর আপনার উপার্জন ও বাড়লো! স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম করার জন্য এরচেয়ে সোজা কোনো উপায় আছে কি?
শেষ কথা
উপরে উল্লেখ করা ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার উপায় গুলো থেকে আশা করি আপনি উপার্জনের কোনো একটি রাস্তা পেয়ে গেছেন।
চাকরির বাজারের যে অবস্থা এবং একইসাথে মানুষ আরো বেশি অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ায় সামনের দিনগুলোতে যে ৯টা ৫ টার জব সার্কুলার কমে গিয়ে চাকরিদাতারাও ফ্রিল্যান্সারদের উপর বেশি ভরসা করতে শুরু করবে, তা কিন্তু বলাই যায়।
ছাত্র অবস্থায় অনলাইন ইনকামের সাথে পরিচয় থাকলে ভবিষ্যতেও বেশ সুবিধা পাবেন। ভালো একটি ওয়েবসাইট, বা চ্যানেল তৈরি করতে পারলে, কিংবা ফ্রিল্যান্সিং শিখে এই মার্কেটে মোটামুটি রেটিং সম্পন্ন একটি প্রোফাইল থাকলে পড়াশোনা শেষে আগ্রহ আর অভিজ্ঞতার কারণে কোনো রকম স্ট্রাগল না করেই পেশাদার চাকুরিজীবী না হয়ে পুরোদস্তুর ফ্রিল্যান্সার বনে যেতে পারবেন।
Comments (No)