হ্যালো!!! “গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাংকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে ২য় আর্টিকেলে সবাইকে স্বাগতম। যারা এখনো “গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাংকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে আমার ১ম আর্টিকেল টি এখনো পড়েন নি, তারা আগে এটি পড়ে নিতে পারেন।
গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাংকিং ফ্যাক্টর – পর্ব ০১
এর আগের আর্টিকেলে আমরা গুগলের ডোমেন লেভেল এবং পেজ লেভেল র্যাংকিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে ধারনা পেয়েছি, এখন আমরা পেজ লেভেল র্যাংকিং ফ্যাক্টর এর বাকি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা শুরু করবো।
চলুন শুরু করা যাক…
১৬. ইমেজ অপটিমাইজেশন
আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, সার্চ রেজাল্টে ইমেজ থেকেও প্রচুর পরিমান ভিজিটর ওয়েবসাইটে আসে। তাই কন্টেন্ট এর ইমেজ ঠিক ভাবে অপটিমাইজ হওয়া চাই। ইমেজ ঠিকভাবে অপটিমাইজ করাও গুগলের র্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে।
আপনাদের আগ্রহ থাকলে ইমেজ অপটিমাইজশেন নিয়ে বিস্তারিত একটা আর্টিকেল লিখবো ভবিষৎ এ, আশাকরি কমেন্ট এ মতামত জানাবেন।
১৭. কন্টেন্ট আপডেট
গুগল সবসময় চায় তার ভিজিটর দের একুরেট ইনফরমেশন দিতে। এজন্য কন্টেন্ট আপডেট করা জরুরী। ধরাযাক আপনি ৩ বছর আগে একটা বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখেছেন, আপনি যদি মাসখানেক পর পর নতুন কিছু ইনফরমেশন এবং আপডেট আর্টিকেলে এড করেন এটা গুগল পছন্দ করে। কন্টেন্ট আপডেট করা গুগলের একটি প্র্রুভেন র্যাংকিং ফ্যাক্টর।
১৮. কী-ওয়ার্ড প্রমিনেন্স
একটি ওয়েব পেজের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আপনার কাংখিত কী-ওয়ার্ডটি বসানোকেই কী-ওয়ার্ড প্রমিনেন্স (Keyword Prominence) বলা হয়।
অর্থাৎ, আপনি পেজের/পোষ্টের লেখা শুরুর ১০০ ওয়ার্ডের মধ্যে আপনার মেইন কী-ওয়ার্ডটি বসিয়েছেন কিনা অথবা, পেজের হেডিং ট্যাগ এ কী-ওয়ার্ড আছে কিনা এগুলি লক্ষ্য রাখাই কী-ওয়ার্ড প্রমিনেন্স।
১৯. আউটবাউন্ড/এক্সটারনাল লিংক
একটি সাইটের মধ্যে ইনবাউন্ড বা ইন্টারনাল লিংক থাকা যেমন জরুরী ঠিক তেমনি আউটবাউন্ড বা এক্সটারনাল লিংক থাকাটাও দরকার।
কিন্তু, অনেকেই এক্সটারনাল লিংক করতে উৎসাহী হন না। মনে করেন যে, এক্সটারনাল লিংক করলে আমার সাইটের জন্য কোনো লাভ হয় না।
তবে বর্তমানে এ ধারনাটি গুগল পাল্টে দিয়েছে। আপনার সাইটে ইন্টারনাল লিংক থাকার পাশাপাশি এক্সটারনাল লিংকও থাকাটা জরুরী। এতে করে আপনার সাইটরে প্রতি ভিজিটরদের এবং গুগলের ট্রাষ্ট বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি একজন ইউজারকে আরো তথ্যবহুল একটি সাইটে নিয়ে যেতে পারেন সেটা অনেক ভালো আপনার ট্রাষ্ট বৃদ্ধি করার জন্য।
২০. গ্রামার এবং স্পেলিং
আর্টিকেলের গ্রামার এবং স্পেলিং মিসটেক ওয়েবসাইটের র্যাংকিং এ ভূমিকা রাখে। যেহেতু গুগল এখন সার্চ রেজাল্টে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ব্যবহার করছে, তাই এ ধরনের ছোটখাটো ভুলগুলো গুগল এলাউ করে না। অর্থাৎ আপনার আর্টিকেলে যদি গ্রামার বা স্পেলিং মিসটেক থাকে তবে তা সাইটের এবং গুগলের উভয়ের জন্যই নেগেটিভ ভুমিকা পালন করবে।
এটি আমার অনেক পছন্দের একটি টুল, আপনারা চাইলে ব্যবহার করে দেখতে পারেন:
- Grammarly (Paid tool)
- Grammarly Google Chorme Extension
২১. মাল্টিমিডিয়া
মানুষ পড়ার চেয়ে দেখতে বা শুনতে পছন্দ করে। গুগল ও প্রেফার করে কন্টেন্টের মধ্যে ইমেজ, ভিডিও, অডিও এগুলো রাখার জন্য। যেহেতু একজন ভিজিটর কত সময় সাইটে থাকছে এটা গুরুত্বপূর্ন র্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচিত হয়, তাই ইমেজ, ভিডিও কিংবা অডিওর মত মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্টে এড করলে ভিজিটর বেশি সময় সাইটে থাকবে। যেটা সাইটের র্যাংকিং বাড়াতে সাহায্য করবে।
২২. ইন্টার্নাল লিংক
কিছুদিন আগেই আমি ব্যাকলিংক (Backlink) নিয়ে বিস্তারিত একটি কন্টেন্ট আমার সাইটে পাবলিশ করেছি। যেখানে ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিংক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে।
তবুও বলছি, ইন্টারনাল লিংক (Internal Link): আপনি যখন একটি ওয়েবসাইটের ভিতরের একটি পেজের/পোষ্টের সাথে অপর পেজের/পোষ্টের লিংক করবেন তখন তাকে ইন্টারনাল লিংক বলে। একে Inbound Link ও বলে। এটি আপনার সাইটের সকল পেজের/পোষ্টের মধ্যে লিংক জুস সঠিক ভাবে পাস হতে সাহায্য করে, যার ফলে আপনার সাইটটি গুগলে র্যাংক পেয়ে থাকে।
২৩. ব্রোকেন লিংক
ব্রোকেন লিংক কিংবা ডেড লিংক একই জিনিস। মনে করুন আপনি আপনার সাইটের একটি পেজের সাথে আর একটি পেজের ইন্টরনাল লিংক করেছেন। পরবর্তীতে, কোনো এক সময়ে আপনি রিংক করা পেজটিকে ডিলিট করে দিয়েছেন বা URL টি পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তাহলে এখন আর ঐ এ্যাংকর টেক্সটিতে ক্লিক করলে কাংখিত পেজের পরিবর্তে 404 Error দেখাচ্ছে, এটিই ব্রোকেন লিংক।
এটি আবার এক্সটারনাল লিংকের ক্ষেত্রেও হতে পারে।
যেমন ধরুন, আপনি যে পেজের সাথে এক্সটারনাল লিংক করেছেন ঐ পেজটি এখন আর লাইভ নেই, তাহলে তখন ঐ লিংকটিকেও ব্রোকেন লিংক বলে।
একটি সাইটের জন্য ব্রোকেন লিংক থাকা কখনই ভালো নয়। আপনার উচিত এই লিংকগুলিকে 301 Redirect করে দেয়া রিলিভেন্ট পেজের সাথে।
- ব্রোকেন লিংক চেকার গুগল ক্রম এক্সটেনশন: Check My Link
২৪. রিডিং লেভেল (রিডেবিলেটি)
একটা কন্টেন্ট পড়া কতটা সহজ বা কঠিন এটা বোঝার জন্য রিডিং লেভেল (রিডেবিলেটি) টেস্ট করা হয়। অনলাইন মার্কেটার এবং SEO এক্সপার্টরা সবসময় ই বলে থাকেন কন্টেন্ট সবসময় সহজ ভাবে লিখতে। যাতেকরে একজন PHD হোল্ডার এবং হাইস্কুল পড়ুয়া স্টুডেন্ট ২জনই যেন আর্টিকেল পড়ে বুঝতে পারে।
আর্টিকেলে আপনি অনেক কমপ্লেক্স ওয়ার্ড ব্যবহার করলেন।একজন PHD হোল্ডার / ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট আর্টিকেল টি বুঝতেপারলেও হাইস্কুল পড়ুয়া একজন স্টুডেন্ট এর পক্ষে আর্টিকেলের কিছু শব্দ বোঝা কঠিন হয়ে যাবে। তাহলে সে আর আর্টিকেল পড়তে আগ্রহী হবে না। যেহেতু “একজন ভিজিটর সাইটে কতক্ষন থাকছে এটা গুগলের চোখে গুরুত্বপূর্ন” তাই বলা যায় আর্টিকেলের রিডিং লেভেল গুগল র্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে।
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে থাকেন তাহলে দেথতে পাবেন যে, Yoast SEO Plugin এর মধ্যে একটি অপশন আছে রিডেবিলিটি।
আপনি চাইলে এই টুলটিও ব্যবহার করে দেখতে পারেন: Hemingway Editor
আমি চেষ্টা করি হ্যামিংওয়ে টুল এ আমার আর্টিকেলের রিডেবিলেটি গ্রেড ৫-৬ এর মধ্যে রাখতে। সাইট টা নিয়ে আরেকটু ঘাটাঘাটি করলে আরো মজার কিছু ব্যাপার সম্পর্কে ধারনা পাবেন আশাকরি।
২৫. URL Length
খুব বড় URL লেংথ ওয়েবসাইট র্যাংকিং এর জন্য নেগেটিভ রেজাল্ট দেয়। তাই আপনার উচিত URL যতটা সম্ভব ছোট রাখা। এবং কখনই URL ৫০ ক্যারেক্টারের বেশী না যাওয়া, এটি ম্যাক্সিমাম।
২৬. URL এ কী-ওয়ার্ড থাকা
URL এ কীওয়ার্ড থাকাটা র্যাংকিং এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। মূলত গুগল যে যে যায়গা গুলো থেকে র্যাংকিং এর জন্য সিগন্যাল নেয় URL তার মধ্যে অন্যমত। আপনি URL এ যদি ফোকাস কীওয়ার্ড না রাখেন তবে গুগলের কাছে কনফিউশন ক্রিয়েট হবে যে আপনি কি কীওয়ার্ড এ র্যাংক করতে চাচ্ছেন।
URL সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে: URL Structure Rules পড়ে দেখতে পারেন।
২৭. রেফারেন্স / সোর্স
আমরা সচারচর আর্টিকেলে রেফারেন্স কিংবা সোর্স উল্লেখ করি না। অনেকসময় ই গুগল থেকে ইমেজ নিয়ে কোন কার্টেসি ছাড়া ব্যবহার করি। এর পিছনে প্রধান যে কারন টা কাজ করে তা হলো লিংক দিতে ভয় পাওয়া। এটা একটা ভুল প্র্যাকটিস। “গুগল কোয়ালিটি গাইডলাইন” অনুযায়ী যেকোনো আর্টিকেল বিশেষ করে রিসার্চ টাইপের আর্টিকেলে রেফারেন্স বা সোর্স উল্লেখ করে দেয়াটা পজেটিভ সাইন হিসেবে বলা হয়েছে।
২৮. সাইটম্যাপে অবস্থান
এটা যদিও কোন প্রুভেন সাইন না। তবে মনে করা হয় সাইটম্যাপের শুরুর দিতে থাকা পেজগুলো গুগল আগে ইনডেক্স করে। বলা হয়, সাইটম্যাপে উপরে থাকা পেজের র্যাংক পাওয়া নিচের দিকে থাকা পেজের তুলনায় সহজ।
ছোট সাইট যেমন ৫০০ পেজের কম সাইটের জন্য সাইট ম্যাপ ব্যবহার করা এতটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।
২৯. র্যাংক করা অন্য কীওয়ার্ড এর কোয়ালিটি
মেইন কীওয়ার্ড এ র্যাংক করার জন্য গুগল সিমিলার অন্য কীওয়ার্ড গুলো খেয়াল করে। যদি মনে করি আপনার কিচেন নিশে একটা সাইট আছে যেখানে আপনি কিচেন রিলেটেড প্রোডাক্ট নিয়ে লেখালেখি করেন। এখানে, ধরে নেয়াই যায় তাহলে আপানার এই নিশের রিলেভেন্ট কিছু কীওয়ার্ড এ আপনি আগে থেকেই র্যাংক করে আছেন। এই মুহুর্তে নতুন আর্টিকেলের জন্য র্যাংক করাটা সহজ হয়ে যাবে।
৩০.পেজের বয়স
এটি অনেক গুরুত্বপূর্ন। গুগলে র্যাংক করার জন্য পেজ এর বয়স কিছুটা ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে শুরুর দিকে গুগল একটা পেজ বা ওয়েবসাইট কে বোঝার জন্য হলেও কিছুটা সময় নেয়। তবে পেজের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সময় টা কম লাগে। কারন ততদিনে গুগলের চোখে আপনি অথরিটি সাইট হিসেবে নিজেকে প্রমান করতে পেরেছেন।
“গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাংকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে ২য় আর্টিকেল টি এখানেই শেষ করছি। আশাকরি খুব শীঘ্রই গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাংকিং ফ্যাক্টর – পর্ব ৩ আর্টিকেল পাবলিশ করা হবে। আপনারা কমেন্ট বক্সে মতামত জানাবেন।
সবাই ভালো এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।
Post by: mdfarukkhan.com
Comments (No)