“গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে ৪র্থ আর্টিকেলে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। এটি মূলত একটি সিরিজ আর্টিকেল। এর আগে যারা এখনো “গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে আমার লেখা ১ম , ২য় এবং ৩য় আর্টিকেল টি পড়েন নি, আশাকরি তারা এই সিরিজির আগের আর্টিকেল গুলো পড়ে নিবেন।
- গুগলের র্যাকিং ফ্যাক্টর : পর্ব ০১
- গুগলের র্যাকিং ফ্যাক্টর : পর্ব ০২
- গুগলের র্যাকিং ফ্যাক্টর : পর্ব ০৩
যদি আপনি আমার সাইটের রেগুলার ভিজিটর হয়ে থাকেন আমি ধরে নিতে পারি “গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে পূর্বের আর্টিকেল গুলো আপনি পড়েছেন। সর্বশেষ প্রকাশিত ৩টি আর্টিকেলে আমরা গুগলের র্যাকিং সম্পর্কিত মোট ৪০ টি ফ্যাক্টর সম্পর্কে ধারনা পেয়েছি। আজকের আর্টিকেলেও আমরা গুরুত্বপূর্ন আরো ১০ টি র্যাকিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে ধারনা পাবো।
চলুন শুরু করা যাক….
৪১. ব্রেডক্রাম্ব নেভিগেশন – ব্রেডক্রাম্ব বলতে বোঝায় একটা ওয়েবসাইটের নিদৃষ্ট পেজের নির্দেশিকা। অর্থাৎ একটি নিদৃষ্ট পেজ বা পোষ্টের নেভিগেশন কে ব্রেডক্রাম্ব বলা যেতে পারে।
Top10BD এই ওয়েবসাইটটিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একটি নিদৃষ্ট পেজকে “হোমপেজ -> ক্যাটাগরি -> পেজ” ব্রেডক্রাম্ব দ্বারা নেভিগেট করা হয়েছে। SEO বিষয়ক জনপ্রিয় পোর্টাল সার্চইন্জিন জার্নাল এবং ইথিকাল SEO এর দাবীমতে ব্রেডক্রাম্ব একটি র্যাকিং ফ্যাক্টর।
৪২. সাইট ইউজেবিলেটি/ইউজার ইন্টারফেস – এটি খুব সাধারান ব্যাপার যে, কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করার পর যদি আপনার সেটা খুব বেশি কমপ্লেক্স মনেহয় অর্থাৎ সাইটের ইউজার ইন্টারফেস যদি খারাপ হয় তাহলে গুগল ওই সাইটকে র্যাংক দেয় না। তাই সার্চ রেজাল্টে ভালো পজিশনে আসার জন্য ভালো ইউজার ইন্টারফেসের বিকল্প নেই।
৪৩. ইউটিউব – ইউটিউব গুগলের একটি সার্ভিস। কোনো কন্টেন্টে /আর্টিকেলে ইউটিউব ভিডিও থাকলে ওই কন্টেন্ট অন্য কন্টেন্ট/আর্টিকেলের থেকে তাড়াতাড়ি র্যাংক করে
৪৪. ইউজার রিভিউ / সাইট রেপুটেশন – র্যাকিং এর জন্য যে কোনো ওয়েবাসইটের রেপুটেশন অনেক গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে Google, Yelp, RipofReport এর মত গুরুত্বপূর্ন ওয়েবসাইটে আপনার ওয়েবসাইটের ভালো রিভিউ থাকলে সেটি র্যাংকি বুষ্টে সাহায্য করবে।
ব্যাকলিংক ফ্যাক্টর
সার্চরেজাল্টে কোনো ওয়েবসাইট র্যাংক করাতে যে ফ্যাক্টর গুলো আছে তার মধ্যে সবথেকে বেশি এবং গুরুত্বপূর্ন হলো এই ব্যাকলিংক ফ্যাক্টর
৪৫. লিংকি ডোমেইনের বয়স – কোনো একটা ওয়েবাসইট থেকে আপনি যদি ব্যাকলিংক নিয়ে থাকেন তবে সেই ওয়েবসাইটের বয়সের উপর লিংকের ভ্যালু অনেকটা নির্ভর হয়ে থাকে। ধরা যাক ২টি ওয়েবসাইট থেকে আপনার লিংক নেয়ার সুযোগ আছে। এর মধ্যে ১টি ওয়েবসাইটের বয়স ৩বছর অন্যটির ৬মাস। এখানে ৬মাস বয়সী ওয়েবসাইট থেকে ৩বছর বয়সী ওয়েবসাইট থেকে লিংক নিলে তার ফলাফল বেশি ভালো হবে।
৪৬. লিংকিং ডোমেইনের অথরিটি/রেটিং – যে ওয়েবসাইট থেকে লিংক নিচ্ছেন তার বয়স বেশি হলেই যে ভালো শুধু তা কিন্ত নয়। বয়সের পাশাপাশি ডোমেইনের অথরিটিও এখানে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। ধরা যাক একটা ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথরিটি ৫০ আরেকটির ১৫। এখানে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে ১৫ অথরিটি ডোমেইনের থেকে ৫০ অথরিটির ডোমেইনের লিংকের ভ্যালু বেশি।
ডোমেইনের অথরিটি/রেটিং চেক করার জন্য বিভিন্নধরনের টুলস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফ্রি হিসেবে Moz এর লিংক এক্সপ্লোরার ব্যবহার করতে পারেন লিংক – https://moz.com/link-explorer
এর বাইরে যারা Ahrefs ব্যাবহার করেন তারা এটির ডোমেইন রেটিং ফিচার দেখে ডোমেইনের অথরিটি সম্পর্কে ধারনা নিতে পারেন।
৪৭. ভিন্ন ভিন্ন আইপি থেকে লিংক নেয়া– শুধু লিংক করলেই সাইট সার্চ রেজাল্টে বুষ্ট করবে ব্যাপারটা এমন না। যদি এমন হয় আপনি ৩টা ওয়েবসাইট থেকে লিংক নিয়েছেন। কিন্ত সবগুলো ওয়েবসাইট একটি হোস্টিং কোম্পানীর আন্ডারে এবং সবার আইপি এক। তাহলে সে ওয়েবসাইট গুলোর লিংকের খুব বেশি ভ্যেলু থাকবে না। তাই নিশ্চিত করতে হবে লিংক নেয়া ওয়বেসোইটের আইপি যেনো ভিন্ন হয়।
৪৮. .EDU .GOV ব্যাকলিংক – যারা SEO ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন তারা অণেকেই হয়তো পাকিস্তানের লুকমান খানের বিখ্যাত এফিলিয়েট ওয়েবসাইট 10beast.com এর কথা জানেন। এই ওয়েবসাইট টি ২০১৭সালের ডিসেম্বরে ৫মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয় (বাংলাদেশি টাকায় ৪২ কোটি টাকা)
লুকমান খান একটি শাক্ষাতকারে SEO স্পেশালিস্ট ম্যাট ডিগিটিকে তার 10beast.com ওয়েবসাইট টি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা দেন। এবং তিনি উল্লেখ করেন তার ওয়বেসাইটের র্যাংকিং বুষ্ট করার জন্য .EDU ডোমেইন খুবই গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রেখেছিলো।
পুরো ইন্টারভিউ টি দেখতে পারেন এখান থেকে
তবে এটি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে যে, এখনো.EDU লিংক কাজ করে কিনা। তবে ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনেকরি এটি এখনো কাজ করে।
৪৯. টোটল লিংকিং ROOT ডোমেইন – ধরা যাক একটা সাইট ৩০টা Root ডোমেইন থেকে লিংক পেয়েছে আরেকটা ডোমেইন একই মানের ২০টা Root ডোমেইন থেকে লিংক পেয়েছে এক্ষেত্রে যেটা হবে। যে সাইটি বেশি ডোমেইর থেকে লিংক পেয়েছে সেটি আগে র্যাংক করবে। কারন আমরা জানি যে সাইটের অথরিটি যত বেশি সে সাইট গুগলে র সার্চ রেজাল্টের উপরে র্যাংক করে।
কিন্ত তাই বলে আপনি যেখানে খুশি সেখান থেকে লিংক নিতে পারবেন না। টোটল লিংকিং Root ডোমেইন যেমন গুরুত্বপূর্ন তেমনি লিংক রিলেভেন্সি থাকাটা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন।
৫০. লিংক রিলেভেন্সি – ২০১২ এর আগে একটা সময় ছিলো যখন স্পামিং লিংক, বাজে এংকর এবং ওভার অপটিমাইজ কীওয়ার্ড দিয়ে আর্টিকেল দিয়ে সাইট র্যাংক করা হতো। কিন্ত ২০১১ এর ফেব্রুয়ারীতে পান্ডা আপডেট (https://moz.com/learn/seo/google-panda) এর পর বলাযায় SEO ব্যাপার টি আর আগের মত সহজ নেই। আমরা আগের আর্টিকেল গুলো থেকে জেনেছি কোনো ওয়েবসাইট র্যাংক করার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ন ফ্যাক্টর হচ্ছে ব্যাকলিংক। কিন্ত সে লিংক হতে হবে রিলেভেন্ট।
ধরা যাক আপনি হোম এবং গার্ডেন নিশে সাইট বানাচ্ছেন কিন্ত ব্যাকলিংকের কোনো রিলেভেন্সি নেই। আপনার সাইটের অধিকাংশ লিংক ফিশিং কিংবা হান্টিং রিলেটেড ওয়েবসাইট থেকে। তাহলে যেকোনো গুগল আপডেটে এই সাইটের পেনাল্টি খাওয়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে। তাই লিংক রিলেভেন্সির বিকল্প নেই। যদি আপনি বেবি নিশে সাইট করেন তাহলে চেষ্টা করতে হবে বেবি নিশের সাইট থেকে ব্যাকলিংক নেয়ার। অথবা অন্য কোনো নিশ থেকে লিংক নিলেও সেটি যেনো আপনার নিশের সাথে রিলেভেন্ট কোনো পোষ্ট হয় এটা খেয়াল রাখতে হবে।
গুগলের গুরুত্বপূর্ন ৫০টি র্যাকিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি। যারা নতুন SEO নিয়ে কাজ করছেন আশাকরি তাদের জন্য আর্টিকেল গুলো উপকারে আসছে। খুব শীঘ্রই “গুগলের গুরুত্বপূর্ন র্যাকিং ফ্যাক্টর” সম্পর্কিত ৫ম আর্টিকেলটি পাবলিশ করা হবে।
আর্টিকেল সম্পর্কিত আপনাদের যেকোন মতমত কন্টেন্টে জানতে পারেন, সময় নিয়ে আর্টিকেল টি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
Comments (No)