ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় করুন সহজে

ক্রিপ্টোকারেন্সি কী?

ক্রিপ্টোকারেন্সি আসলে একপ্রকার ডিজিটাল মুদ্রা যার কোনো বাহ্যিক রূপ নেই। অত্যন্ত সুরক্ষিত ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে এর বিনিময় হয় বলে এতে কোনোরূপ হ্যাকিং বা অর্থহানির ভয় নেই। বরং ক্রিপ্টোগ্রাফির এ বিনিময় প্রক্রিয়ার সাথে নিজেকে সংযুক্ত করে ঘরে বসেই অর্থ আয় করা সম্ভব।
ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় করুন সহজে

চলুন তাহলে জেনে নিই ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অর্থ আয়ের কিছু উপায়

কেনা, সংরক্ষণ এবং বিক্রয়

শেয়ার বাজারে সাধারণত বিনিয়োগের উপায় কী? আপনি কিছু শেয়ার কিনবেন এবং সেগুলোর মূল্যবৃদ্ধি পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। যখন সেগুলোর মূল্য আপনার ক্রয় মূল্যের চেয়ে সন্তোষজনক পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তখন সেগুলো বিক্রি করে দিলেই ভালো অঙ্কের মুনাফা হয়ে যাবে।

ICO এবং IEO কি?

ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যাপারটাও একইরকম। আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় করে দীর্ঘ সময়ের জন্য রেখে দিন। যখন মূল্য এতোটা বৃদ্ধি পাবে যে আপনার মনে হয় এই দামে বিক্রয় করলে আপনি লাভবান হচ্ছেন, তখন বিক্রি করে দিন। উপরন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে এটি শেয়ারবাজারের চেয়ে সুবিধাজনক। কেননা, শেয়ার বাজারে শেয়ার কিনে সংরক্ষণ করার সময় শেয়ারের মূল্য উল্টো কমেও যেতে পারে। কিন্তু, ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য পড়ে যাওয়াটা বিরলই বলতে গেলে।

ডিভিডেন্ড থেকে আয়

ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনে তা রেখে দিলে দাম বৃদ্ধি পাবে এবং সেটি বিক্রয় করে অর্থ আয় হবে দুটোই সত্য। তবে এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এ দীর্ঘ সময় আপনি কোনোরূপ আয় ছাড়া বসে না থেকে আয় করতে পারেন ডিভিডেন্ড থেকে। সেক্ষেত্রে আপনার কিছু নির্দিষ্ট প্রকারের ক্রিপ্টো (নিও, কুকয়েন) ক্রয় করতে হবে যেগুলো আপনার মালিকানায় থেকে অনলাইন সার্কুলেশনে থাকবে এবং আপনি নিয়মিত ডিভিডেন্ড অর্থাৎ ক্ষুদ্র লভ্যাংশ পাবেন।

মাইনিং

ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় করুন সহজে

ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে যারা অর্থ উপার্জন করতে চান, তাদের সবার নিকটই মাইনিং সবচেয়ে সহজ একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কোনো কিছু করার ছাড়াই আপনার অ্যাকাউন্টে ক্রিপ্টো যোগ হবে। এ প্রক্রিয়ায় আপনাকে কিছুই করতে হবে না। কেবল আপনার কম্পিউটারটি জটিল জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে দেবে আর তাতে আপনি পুরস্কার হিসেবে জিতবেন ক্রিপ্টো। একেই বলে মাইনিং।

আপনি যত ক্রিপ্টো জিততে থাকবেন, গাণিতিক সমস্যাগুলো জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকবে। এই সহজ প্রক্রিয়াটির একটিই সমস্যা। সেটি হলো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা। জটিল এসব গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে অবশ্যই অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন উচ্চমূল্যের কম্পিউটার ক্রয় করতে হবে।

কম শক্তিশালী কম্পিউটারেও সমস্যাগুলোর সমাধান হয়, তবে ধীর গতিতে। এক্ষেত্রে আপনি পিছিয়ে পড়বেন এবং আপনার ক্রিপ্টো আয়ের সম্ভাবনা কমে যাবে। কেননা একই সমস্যার একই সময়ে একাধিক কম্পিউটারে সমাধান চলতে থাকে। আপনার কম্পিউটারটি যদি ধীর গতির হয়, তাহলে আপনার আগেই অন্য কেউ সমাধান করে ক্রিপ্টো জিতে নেবে।

ডে ট্রেডিং

ক্রিপ্টোকারেন্সি বিক্রয় করে অর্থ আয়ের এটি একটি দ্রুততর তবে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ উপায়। এক্ষেত্রে আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যমানের চার্টের সামনে বসে দিন কাটাতে হবে। ক্রিপ্টোকারেন্সি মূল্য অত্যন্ত উদ্বায়ী অর্থাৎ প্রতি মূহুর্তে পরিবর্তনশীল। আপনার কাজ হবে কোনো একটি ক্রিপ্টোর দাম যখন পড়তি, তখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকা অবস্থায় সেটি বেশি পরিমাণে কিনে ফেলা।

এরপর যখন কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দাম পুনঃরায় বাড়তে থাকবে, তখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকা অবস্থায় বিক্রয় করে মুনাফার্জন। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত এটি করতে হলে আপনাকে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ক্রিপ্টোর দাম ওঠানামা সম্বন্ধে। আপনাকে অনুমান করতে হবে সর্বোচ্চ কিংবা সর্বনিম্ন ট্রেন্ড। অন্যদিকে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দামের পার্থক্য খুব বেশি হবে না। এই অল্প সময়ে মুনাফা পেতে হলে বেশি সংখ্যক ক্রিপ্ট ক্রয় করতে হবে। যদি ট্রেন্ড ধরতে না পারেন, তাহলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনাও রয়েছে!

মাইক্রোটাস্কিং

ক্রিপ্টো জমানোর আরেকটি উপায় হলো মাইক্রোটাস্কিং। আপনি বিভিন্ন ক্রিপ্টো সাইটে ক্লায়েন্টদের ছোট ছোট কাজ করে দিতে পারেন, বিনিময়ে ক্রিপ্টো পেতে পারেন। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে অ্যাপ টেস্ট করা, ডিবাগ করা, সার্ভে পূরণ করে দেয়া, ইত্যাদি।

ট্র্যাকিং

আপনার হাতে যদি অফুরন্ত সময় থাকে, তাহলে কম্পিউটারের সামনে বসে পড়ুন এবং ক্রিপ্টো বেচাকেনার লিস্টে চোখ রাখুন। একই ক্রিপ্টো একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন দামে বেচাকেনা হয়। তাই যেকোনো একটি ক্রিপ্টো ঠিক করে সেটির দরদামের উপর নজর রাখুন।

ধরুন আপনি বিটকয়েনের উপর নজর রাখছেন। একই সময়ে ১০ জন ব্যক্তি বিটকয়েন বিক্রয়ের ঘোষণা করতে পারে। আপনি প্রতিটির খোঁজ রাখতে পারলে সহজেই সবচেয়ে সবচেয়ে কমদামে বিটকয়েন কিনে ফেলতে পারবেন। কেনা হয়ে গেলে এবার বিক্রয় সংক্রান্ত চার্টে চোখ রাখুন। দেখবেন একই সময়ে বিটকয়েন একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন দামে ক্রয় করছেন। যিনি সর্বোচ্চ দামে কিনছেন, অবশ্যই তার কাছেই বিক্রয় করুন।

এ পদ্ধতিটিও ডে ট্রেডিং এর মতো তবে এখানে সরাসরি কেনাবেচার প্রক্রিয়ার চার্ট থেকে ট্রেড করবেন আপনি। তাছাড়া, ডে ট্রেডিংয়ে আপনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ না হলে ভুল সময়ে ক্রয় করে এবং সঠিক সময়ে বিক্রয় করতে না পেরে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তবে ট্র্যাকিং করার ক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। যার কাছ থেকে সবচেয় কমে পাচ্ছেন, তার কাছ থেকে ক্রয় করে যার কাছে সবচেয়ে বেশি মূল্য পাবেন তার নিকট বিক্রয় করে দিন।

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ