Content রাইটিং কথাটি আপনি হয়ত অনেক জায়গায় শুনেছেন। কিন্তু এই কন্টেন্ট রাইটিং কি? কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করা যায়? কন্টেন্ট রাইটিং কিভাবে শিখব? কন্টেন্ট রাইটিং কেন করব? কন্টেন্ট রাইটিং এর ভবিষ্যৎ কী? কন্টেন্ট রাইটাররা কোথায় কাজ করেন? একজন কন্টেন্ট রাইটারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে? এই সকল প্রশ্নের উত্তর থাকছে আজকের এই টপিকটিতে। তবে তার আগে কন্টেন্ট রাইটার সম্পর্কে এক নজরে জেনে নেয়া যাক। আর সবার শেষে বোনাস হিসেবে থাকছে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় সম্পর্কে অসাধারণ একটি ভিডিও।
Content রাইটিং কি
এক নজরে একজন Content রাইটার
সাধারণ পদবী: Content বা আর্টিকেল রাইটার, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, কন্টেন্ট ডেভেলপার,
বিভাগ: গণমাধ্যম, মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন ও সেলস
প্রতিষ্ঠানের ধরন: ফ্রিল্যান্সিং, প্রাইভেট ফার্ম/কোম্পানি
কাজের ধরন: ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম
লেভেল: মিড, এন্ট্রি
সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: 0 – 1 বছর
সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳10,000 – ৳1,00,000+ যা কাজ, অভিজ্ঞতা এবং অভিজ্ঞতা সাপেক্ষে
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: 18 -35 বছর
মূল স্কিল: আকর্ষণীয়, সুন্দর বা সাজিয়ে গুজিয়ে লিখতে পারা, রিসার্চ করার দক্ষতা বা ক্ষমতা
বিশেষ স্কিল: অনলাইনে লেখার পারদর্শিতা
আরো পড়ুন: অনলাইনে গল্প লিখে টাকা আয়
কন্টেন্ট রাইটিং কি?
Content রাইটিং এর সংজ্ঞা স্থানভেদে ভিন্ন রকম হতে পারে। তবে সকল সংজ্ঞার মূলে একটি সংজ্ঞা হচ্ছে- কোন কিছু লেখাকেই কন্টেন্ট রাইটিং। আর যারা কন্টেন্ট রাইটিং করেন তাদেরকে বলা হয় কন্টেন্ট রাইটার। আবার অনেকে এটিকে আর্টিকেল রাইটিংও বলে থাকেন।
Content রাইটিং
Content রাইটিং হলো নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে কোন একটি বিষয় সর্ম্পকে বিস্তারিত লিখে প্রকাশ করা। কন্টেন্ট রাইটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ। তবে কন্টেন্ট রাইটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আপনাকে জানতে হবে যে, কন্টেন্ট কত প্রকার?
Content প্রকারভেদ
সাধারণত Content হচ্ছে চার প্রকার। যথা:
লিখিত Content
ছবি Content
অডিও Content এবং
ভিডিও Content
আপনি এখন যে বিষয়টি পড়ছেন সেটিই হচ্ছে লিখিত কন্টেন্ট বা কন্টেন্ট রাইটিং। অন্যদিকে আপনি এই লিখিত কনটেন্টের পাশাপাশি ছবিও দেখতে পাবেন। আর ইন্টারনেটে যতসব ছবি দেখতে পাবেন, সেগুলি হচ্ছে ছবি বা ইমেজ কন্টেন্ট। ঠিক একইভাবে যতরকম অডিও এবং ভিডিও রয়েছে সেগুলো হচ্ছে অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট।
কন্টেন্ট রাইটিং কত ধরনের?
লেখালেখির কাজ বা কন্টেন্ট রাইটিং নানা ধরনের হতে পারে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
ওয়েব কন্টেন্ট রাইটিং
এস ই ও কন্টেন্ট রাইটিং
ব্লগ রাইটিং
অ্যাফিলিয়েট কন্টেন্ট রাইটিং
ই-বুক রাইটিং
টেকনিক্যাল কন্টেন্ট রাইটিং
প্রোডাক্ট রিভিউ রাইটিং
একাডেমিক কন্টেন্ট রাইটিং
প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশান রাইটিং
শর্ট আর্টিকেল রাইটিং বা স্নিপেট রাইটিং
প্রুফরিডিং ও এডিটিং
রি-রাইটিং
সিভি বা রিজিউম রাইটিং
নিউজ কন্টেন্ট রাইটিং
স্ক্রিপ রাইটিং
কোম্পানির নিউজ লেটার রাইটিং
ট্রান্সলেশন
সামারাইজেশন রাইটিং
ট্রান্সক্রিপশন বা অডিও ও ভিডিও থেকে টেক্সট রাইটিং
প্রেস রিলিজ রাইটিং
কোম্পানির ই-মেইল রাইটিং
কোন বই বা হার্ড কপি থেকে সফট কপি রাইটিং
কোম্পানির অ্যাড বা ব্রশিউর রাইটিং
পাওয়ার পয়েন্ট প্রেসেন্টেশান রাইটিং ইত্যাদি
এসকল বিষয়গুলোর উপরে আমাদের দেশের মানুষ সাধারণত দুটি ভাষায় কন্টেন্ট রাইটিং করে থাকেন। একটি হল বাংলায় কন্টেন্ট রাইটিং এবং অপরটি হল ইংরেজিতে কন্টেন্ট রাইটিং।
কন্টেন্ট রাইটিং কেন করব?
ঘরে বসে অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করার জন্য সৃজনশীল এবং দারুণ একটি পেশা হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং। কন্টেন্ট রাইটিং এর মধ্যে দক্ষতার পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতাকেও কাজে লাগাতে হয়। তবে কন্টেন্ট রাইটিং একদমই সহজ একটি বিষয়। নতুন অবস্থায় এটি সম্পর্কে কিছুদিন চর্চা করলেই সম্পূর্ণ বিষয়টি আয়ত্তে এসে যাবে।
কন্টেন্ট রাইটিং করে দারুন একটি ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ রয়েছে। চাইলেই যে কেউ কন্টেন্ট রাইটিং দক্ষতা অর্জন করার মাধ্যমে প্রফিটেবল ক্যারিয়ার গঠন করতে পারে। আর কন্টেন্ট রাইটিং থেকে লাইফটাইম প্যাসিভ ইনকাম করার উপায় রয়েছে। তাছাড়া একজন কন্টেন্ট রাইটারের ভালো জব অপরচুনিটি রয়েছে। কন্টেন্ট রাইটাররা শুধুমাত্র কন্টেন্ট রাইটিং জব করেও মাস শেষে মোটা অংকের টাকা আয় করে থাকেন। তবে তার জন্য একজন দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার হতে হয়।
কন্টেন্ট রাইটিং করে স্বাধীনভাবে কাজ করার মাধ্যমে মোটা টাকা আয় করারও সুযোগ রয়েছে। এসকল কারণেই কন্টেন্ট রাইটিং শেখার প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক বেশি থাকে। যার ফলে দিনদিন কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টরটিকে প্রতিযোগিতা বেড়েই চলেছে।
কন্টেন্ট রাইটিং এর ভবিষ্যৎ কী?
ইন্টারনেট বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়ে চলেছে কন্টেন্ট রাইটিং এর চাহিদা। আর বাড়বেই না কেন! যেকোনো ধরনের ডিজিটাল উপস্থিতি অথবা ইন্টারনেটের উপস্থিতি নিশ্চিত করণের পূর্বেই প্রয়োজন পড়ে কন্টেন্টের।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় থাকা বিল গেটস 1996 সালের এক বক্তব্যে বলেন, কন্টেন্ট ইজ কিং। বিষয়টি হয়তো এমনই রয়ে যাবে। কারণ নানা ধরনের কাজে রুবট বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা গেলেও লেখালেখির ক্ষেত্রে তা এখনও অসম্ভবই রয়ে গেছে। আর ভবিষ্যতেও হবে কিনা এ ব্যাপারে এখনও সন্দেহ রয়েছে।
কন্টেন্ট রাইটিং কিভাবে শিখব?
কন্টেন্ট রাইটিং খুবই ক্রিয়েটিভ একটি পেশা। তাই এটিকে চর্চার মাধ্যমে শিখতে হবে। চর্চা করার মাধ্যমে চাইলে যে কেউ প্রফেশনালভাবে কন্টেন্ট রাইটিং শিখে ফেলতে পারেন। তার জন্য আপনি ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে লেখালেখি শুরু করতে পারেন। আবার অন্যদিকে আপনি চাইলে সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত নিচে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে সেখানে আপনি আপনার পছন্দের বিষয়ের উপরে লেখালেখি শুরু করে দিন। প্রথম অবস্থায় দেখবেন আপনি অন্যদের মতো প্রফেশনালভাবে কন্টেন্ট লিখতে পারছেন না। তবে আপনি যত লিখবেন ততই আপনার লেখার মধ্যে উন্নতি লক্ষ্য করতে থাকবেন। কন্টেন্ট লেখার পূর্বে আমাদের ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট লেখার নিয়ম সম্পর্কে আর্টিকেলটি পড়ে নিবেন। তাহলে আপনি খুব সহজেই প্রফেশনালভাবে কিভাবে একটি কন্টেন্ট লিখতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন।
তাছাড়া আপনি ইন্টারনেটে নানা বিষয়ের উপরে সার্চ করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেগুলোর কন্টেন্ট পড়তে পারেন। এতে করে কন্টেন্ট সম্পর্কে আপনার আইডিয়া তৈরি হবে। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটাররা কোথায় কাজ করেন?
একজন কন্টেন্ট রাইটার বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে থাকেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
কমার্শিয়াল ব্লগ এবং অনলাইন পোর্টাল
বিজ্ঞাপনী সংস্থা
ম্যাগাজিন এবং পত্রিকা
অনলাইন মার্কেটপ্লেস
নানান ধরনের টিভি চ্যানেল অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে তাদের খবরাখবর প্রকাশ করে থাকে। আর এই খবরাখবর গুলো তারা ফ্রীলান্স কন্টেন্ট রাইটারদের দ্বারা লিখিয়ে থাকে। যেখানে একজন কন্টেন্ট রাইটার কন্টেন্ট রাইটিং জব করার মাধ্যমে পত্রিকায় লিখে আয় করে থাকেন।
আপনি যদি স্বাধীনভাবে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনি দুইটি উপায় অবলম্বন করে স্মার্ট ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। আর এই দুইটি উপায় হল:
ব্লগ লিখে আয়
অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
ব্লগ লিখে কিভাবে আয় করা যায়?
কন্টেন্ট রাইটিং করে অনলাইনে আয় করার জন্য সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ব্লগ লিখে আয় করা। তবে ব্লগিং করে টাকা আয় করার জন্য সর্বপ্রথম একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। আর ওয়েবসাইট তৈরি করার একটি সহজ একটি কাজ। কিভাবে সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সবার প্রথমে সেই বিষয়টি জেনে নিন।
অনেকেই হয়তো ব্লগিং শব্দটি আজকেই প্রথম শুনেছেন। ব্লগ কি, ব্লগিং কেন করবেন, ব্লগ লিখে কিভাবে আয় করা যায়, কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন, ব্লগিং শুরু করতে কি কি লাগে, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়, আমি কত টাকা আয় করি? এসকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ব্লগিং করে আয় পর্ব 1 পড়ে নিতে পারেন। তাহলে ব্লগিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
Marketplace Freelancing করে আয়
আপনি যখন একজন ভাল কন্টেন্ট রাইটার হয়ে যাবেন, তখন কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করে ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, গুরু ডটকম সহ নানা ধরনের মার্কেটপ্লেসে কাজ করে রয়েলটি ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।
মার্কেটপ্লেসগুলোতে একজন অভিজ্ঞ কন্টেন্ট রাইটারের অনেক ডিমান্ড রয়েছে। আর একজন অভিজ্ঞ কন্টেন্ট রাইটার শুধুমাত্র মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করে প্রতি মাসে কত টাকা আয় করেন তা একজন সাধারন মানুষের কল্পনার বাইরে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে একজন দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার প্রতি ঘন্টায় 15 থেকে 20 ডলার ক্লায়েন্টের কাছ থেকে চার্জ করে থাকে
তবে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে গেলে অবশ্যই ভালো ইংরেজি জানতে হবে। কিন্তু আপনি হয়তো ভালো ইংরেজি জানেন না। সেক্ষেত্রে আমি আপনাকে বাংলা ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোকে সাজেস্ট করব। যেখানে আপনি অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোর মত বাংলাতে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন। যেহেতু এগুলো বাংলা ফ্রিল্যান্সিং সাইট সেহেতু এখানে আপনি বাংলা আর্টিকেল লিখে আয় করার সুযোগ পাবেন। বাংলা ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলো হল:
কাজ কি ডটকম
বিল্যান্সার ডটকম
ট্রুল্যান্সার ডটকম
স্বাধীন কাজ ডটকম
এছাড়াও আপনি যদি কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে আয় করতে চান, তাহলে অনলাইনে আয় বিকাশে পেমেন্ট এই আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ে নিবেন। এখানে আপনি লেখালেখি করে আয় করার ওয়েবসাইটগুলো পেয়ে যাবেন।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
পত্রিকা বা অনলাইন পোর্টালগুলোর মধ্যে এন্ট্রি লেভেলে কন্টেন্ট রাইটার হিসাবে যোগদান দেওয়ার পর সাব-এডিটর কিংবা সিনিয়র রাইটার পদে উন্নীত হবেন। সবচেয়ে ভালো ক্ষেত্রে চীফ এডিটর হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অ্যাড এজেন্সিতে কাজ করলে ৪-৫ বছর পর সিনিয়র কপিরাইটার অথবা মার্কেটিং ম্যানেজার পদ পাবার সুযোগ তো থাকছেই। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে পদের কোন ব্যাপার নেই। তবে এক্ষেত্রে পোর্টফোলিও অনেক ভালো হলে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ আসতে পারে। এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখুন।
Comments (No)