বাড়িতে তৈরি খাবারের Business করেই মাসে 20000-25000 টাকা আয় করুন আপনি কি বাড়িতে খাবার প্রস্তুত করেই মাসে বড় পরিমাণ উপার্জন করতে চান? তাহলে দেখে নিন আমাদের সম্পূর্ণ পোস্ট আর চেষ্টা করুন এই পদ্ধতি।সময়ের সাথে সাথে ব্যবসায়ের ধরনে আসে পরিবর্তন। এখন মানুষ হোটেল বা রেষ্টুরেন্টের তেল ঝাল, মশলাযুক্ত খাবার রোজ খেয়ে পেটের অসুখে পড়তে চায় না। আবার নতুন খাবারের স্বাদ থেকে নিজের জিহবাকে বিরত রাখতেও চায় না। ব্যস্ত এই সময়ে নিজে রান্না করে সব ধরনের আইটেম খাওয়া সম্ভবও হয়ে ওঠেনা।
বাড়িতে তৈরি খাবারের Business করেই মাসে ২০০০০-২৫০০০ টাকা আয় করুন আপনি যদি গৃহিনী হয়ে থাকেন এবং খুব ভাল রান্না করতে পারেন তাহলে আপনি যেসব আইটেম ভাল রান্না করেন সেগুলো নিয়ে হোম কিচেন শুরু করতে পারেন। হোম কিচেন বর্তমানে খুবই লাভজনক ব্যবসায়। এটা শুরু করা যতটা ঝামেলার মনে করেন ততটা ঝামেলার নয়। কিছু বিষয় মাথায় রেখে কাজ করলে খুব সহজেই হোম কিচেন খুলে মাসে ২০০০০-২৫০০০ টাকা অনায়াসেই আয় করতে পারবেন।
এখন নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন জেগেছে যে, কিভাবে শুরু করবেন, কোথায় শুরু করবেন, কি আইটেম থাকবে, ঝামেলা কেমন হবে, দাম কেমন রাখবেন, কিভাবে ডেলিভারী করবেন। এই সব প্রশ্নের উত্তর জানাতেই আমাদের আজকের পোস্ট। চলুন প্রিয় পাঠক, দেরী না করে আমাদের মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
বাড়িতে তৈরি খাবারের Business করেই মাসে ২০০০০-২৫০০০ টাকা আয় করার উপায়:
১.খাবারের আইটেম সিলেক্ট করুন
খাবারের Business করতে পুজি বা অন্যকিছু নিয়ে চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথমেই যে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবেন তা হল, আপনি কোন খাবারের আইটেমগুলো রান্না করে ডেলিভারি দিতে চান। খাবারের আইটেম সিলেক্ট করতে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে,
যেমন আপনি যে অঞ্চলে বাস করেন সেখানকার মানুষের প্রিয় খাবার কি, কোন খাবারগুলো মানুষ খুব পছন্দ করে কিন্তু বাইরের খাবার অস্বাস্থ্যকর বলে খেতে পারেনা, কোন খাবার রান্নায় আপনি পারদর্শী, আপনার এলাকায় সেই খাবারের কাচামাল পাওয়া যায় কিনা, ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করে আপনাকে Business শুরু করতে হবে। মনে করুন আপনার এলাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে তন্দুরী চিকেন, আর মুরগীও খুব সাশ্রয়ী মুল্যে পাওয়া যায় এখানে।
তাহলে আপনি তন্দুরী চিকেন এর সাথে পাতলা চালের রুটি রাখতে পারেন আইটেম হিসেবে। এভাবে শুরু করতে পারেন। আস্তে আস্তে অর্ডার এবং প্রসার অনুযায়ী আইটেম বাড়াতে পারেন। আর এখন তো ইউটিউব এর কল্যানে যেকোন রান্না শেখা খুবই সহজ।
আরও পড়ুন: ঘরোয়া কাজ আরও দ্রুত ও সহজে করার কিছু দারুন টিপস
২. টার্গেটেড কাস্টমার
কোন ধরনের কাস্টমারদের জন্য আপনি খাবার প্রস্তুত করবেন তার উপর রন্ধন প্রনালী বা ডেকোরেশন অনেকটাই নির্ভর করবে। যেমন আপনার রান্না যদি হয় কর্মজীবী মহিলাদের জন্য তাহলে তা একেবারেই ঘরোয়াভাবে রান্নার মত হতে হবে। যাতে অল্প তেল বা মশলা ব্যবহার হবে, রান্না হবে স্বাস্থ্যসম্মত।
কাস্টমার যদি হয় মেসবাড়ির ছেলেরা তাহলে তারা একটু স্পাইসি বা রেস্টুরেন্ট টেস্ট পছন্দ করবে। যদি স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা হয় তবে তারা ক্যাফে লুকের খাবার পছন্দ করবে। খাবারে প্যাকেজিং এবং ছবিগুলোও কাস্টমার ভেদে আলাদা আলাদা হবে।
৩. প্যাকেজিং
শুকনো ঝোল ছাড়া খাবারের জন্য নরমাল শোলা বা কাগজের প্যাকেট ব্যবহার করুন। ঝোল সহ খাবারের জন্য প্লাস্টিকের বাটি ব্যবহার করুন যা খুবই কমমূল্যে বাজার থেকে পাইকারি দরে কিনতে পারবেন। চাইলে সালাদ, সস বা তরকারীর জন্য কাগজের প্যাকেটের ভিতর ছোট মোটা পলিথিন ব্যবহার করতে পারেন।
প্যাকেজিং খরচটাও খাবারের দামের সাথেই যেহেতু অ্যাড হবে সেহেতু সেটা সাশ্রয়ী ও নিরাপদ হওয়া আবশ্যক।
আরও পড়ুন: ২০২১ সালের সেরা ৫ টি 5G ফোন সম্বন্ধে জেনে নিন
৪. পন্যের দাম
যেহেতু হোম কিচেন সেহেতু প্রসার বাড়ানোর জন্য শুরুতে রেস্টুরেন্টের চেয়ে অবশ্যই কমদামে খাবার সরবরাহ করতে হবে। সাথে কোন ছোটখাট আইটেম ফ্রি বা গিফট দিতে পারেন। প্রথমে আপনার খাবারের স্বাদ ও মান সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে।
তারপরেই মানুষ আপনার রান্না খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তখন আস্তে আস্তে যৌক্তিকভাবে খাবারের দাম বৃদ্ধি করতে পারেন। কিন্তু প্রসার জমাতে প্রথমে দামের ব্যাপারে অবশ্যই নমনীয় হতে হবে। তা নাহলে হোম কিচেনের ব্যবসায়িক সফলতা আসবেনা।
৫. খাবারের স্বাদ
খাবারে রেস্টুরেন্টের মত স্বাদ কিন্তু ঘরোয়া আমেজ ও পরিচ্ছন্ন উপায়ে রান্নার জন্যই মূলত হোম কিচেনে মানুষ খাবার অর্ডার দেয়। তাই স্বাদ ও খাবারের মানের সাথে কোন আপোষ করবেন না। খাবারের স্বাদ ভাল হলে প্রচুর রিপিট কাস্টমার পাবেন। স্বাদের খাবার পেলে কাস্টমাররা বারবার খাবার অর্ডার করবে।
৬. ফেসবুক পেজ
নিজের ব্যবসায়ের প্রচার ও প্রসারে ফেসবুকের কোন বিকল্প নেই। তাই নিজের রান্না করা খাবারের আকর্ষনীয় সব ছবি ও নাম দিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করুন। এখানে ডেলিভারীর নিয়ম, অর্ডারের নিয়ম, খাবারের নাম, কি কি উপকরন দিয়ে বানানো হয়েছে এগুলো প্রতিদিন পোস্ট আকারে আপলোড দিন।
প্রচুর কাস্টমার এখান থেকে পন্য অর্ডার করতে পারবে। আর মূলত এখন ফেসবুকের মাধ্যমেই পন্য ও হোম কিচেনগুলো পরিচিতি পায়। কাস্টমার পেতে বিভিন্ন ইকমার্স বা উদ্যেক্তা গ্রুপগুলোও খুবই কার্যকরী।
৭. অর্ডারের নিয়ম
আপনার রান্নার পরিমান, পুজি, প্রস্তুতি, লোকবল ইত্যাদির উপর নির্ভর করে অর্ডাএ নেওয়ার নিয়মাবলি তৈরি করুন। যেমন খাবার ডেলিভারী নেওয়ার আগের দিন অর্ডার করতে হবে, বা কমপক্ষে একঘন্টা আগে অর্ডার দিতে হবে এরকম নিয়ম করতে পারেন। কতক্ষনের মধ্যে খাবার ডেলিভারী দেবেন তাও উল্লেখ করে দিন।
খাবারের দাম কিভাবে পরিশোধ করা হবে, অগ্রিম নাকি ক্যাশ অন ডেলিভারিতে তাও উল্লেখ করুন।এভাবেই শুরুটা করুন। তারপর ক্রেতাদের পছন্দ হলে একসময় প্রচুর অর্ডার পাবেন।
৮. ডেলিভারী
রান্না করা খাবার পৌছে দেওয়ার জন্য ডেলিভারী সার্ভিস আবশ্যক। এরজন্য আপনি বাড়ির কাউকে এ ব্যাপারে হেল্প করতে বলতে পারেন যদি তাদের সাইকেল বা বাইক থাকে, তাহলে খুব সহজে কাজটি করতে পারবেন।
আর যদি এরকম লোকবল না থাকে, সেক্ষেত্রে আজকাল অনেক অঞ্চলভিত্তিক ডেলিভারী সার্ভিস রয়েছে, তাদের মাধ্যমে খাবার ডেলিভারী দিতে পারেন। এটা সাশ্রয়ী এবং সঠিক সময়ে খাবার পৌছানো নিশ্চিত করে।
আরও পড়ুন: আপনার মোবাইল ফোন কেন এত দ্রুত নষ্ট হচ্ছে? দেখে নিন
উপসংহার
রান্না করা খাবারের ব্যবসায়ে তেমন কোন মূলধনের প্রয়োজন নেই। নিজেদের মত রান্না করে খাবারের ছবি নিয়ে প্রচারের ফলে কাস্টমার আকর্ষন করতে পারলে অর্ডার আসতে শুরু করবে। ফলে আপনাকে বিজ্ঞাপন বা প্রচুর মূলধন বিনিয়োগ করতে হবেনা। শুরুতে আপনি একাই রান্না করতে পারেন।
পরে অর্ডার বেড়ে গেলে বিভিন্ন আইটেম বৃদ্ধির সাথে রান্নার জন্য সহকারী নিয়োগ দিতে পারেন। বর্তমানে হোম কিচেন করে অনেক নারীই সাবলম্বী। প্রথমে অল্প কিছু কাস্টমারদের জন্য রান্না করলেও পরবর্তীতে অনুষ্ঠানের জন্যও অর্ডার নিতে পারেন।
এভাবে ব্যবসায় অনেক প্রসার লাভ করবে। আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে। ।এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
Comments (No)