সাড়ে ৭ হাজার জন কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে

প্রথম বারের মত সারাদেশে ১০০টি উপজেলায় টিএস (টেকনিক্যাল স্কুল) বা ভোকেশনাল স্কুল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি স্কুলে বিভিন্ন বিষয়ে ৭৫ জন করে কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

এসব স্কুলে প্রয়োজন অনুসারে নতুন কিছু বিষয় যুক্ত করা হবে। আর এজন্য সারা দেশে রাজস্ব খাতভুক্ত এসব টেকনিক্যাল স্কুলে মোট সাড়ে ৭ হাজার জন কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান গুলোতে পদসৃজনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এইসব পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জনা গেছে।

বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ, এসএসসি (ভোকেশনাল) সার্টিফিকেট কোর্স ও স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমাদের দেশ ছাড়াও বিদেশের শ্রম বাজারের জন্য চাকরির ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরি। জীবিকা নির্বাহের জন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ এবং স্কুল পর্যায়ে কারিগরি বিষয় ছাড়াও চারটি ট্রেড কোর্সসহ স্বল্পমেয়াদী চাহিদা সম্পন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স প্রবর্তন করা হবে।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৪ কোটি টাকা। যা সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হবে। প্রতিটি স্কুলে ৮৪০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার জন্য প্রতিটি স্কুলে ৭৫ জন কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

গত সাত মাস আগে এসব টেকনিক্যাল স্কুলে ৫০ জন করে কারিগরি শিক্ষক পদসৃজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা সচিব মো. আলমগীরের পরামর্শে প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুলে ৫০ জনের পরিবর্তে ৭৫ জন কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রকল্প থেকে গত মাসের শেষের সপ্তাহে নতুন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে শিক্ষক পদসৃজনের প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেখান থেকে চলতি সপ্তাহে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ক্রমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কারিগরি অধিদপ্তর থেকে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে যেসমস্ত উপজেলায় ভবন তৈরি কাজ আগে শেষ হবে সেসব স্কুলে পর্যায়ক্রমে কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানা যায়।

২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হলোও পিডি (প্রকল্প পরিচালক) নিয়োগে আট মাস বিলম্ব হওয়ায় প্রায় এক বছর পর জমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে ১০০টি একাডেমিক প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ (প্রতিটি ২২৬৫ বর্গমিটার) দেড়শ একর জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, আসবাবপত্র ক্রয়, মেশিনারি ও যন্ত্রপাতি ক্রয়, বাউন্ডারি ওয়াল এবং অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনা করা।

৯৪টি উপজেলায় জমি অধিগ্রহণ শেষ করার পর সেখানে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রতিটির ভবনের জন্য ১৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫ তলা পর্যন্ত ভবন কাঠামো নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে কয়েকটি উপজেলায় তিন থেকে চার তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে সকল উপজেলায় ভবন নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হবে।

এই প্রকল্প সম্পর্কে পরিচালক পিযোশ কান্তি নাথ জানান, যেসব উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নেই কিংবা সরকারি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং সরকারি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নেই সেসব উপজেলা থেকে নির্বাচিত ১০০টি উপজেলায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সকল জেলায় ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে এবং যেসব জায়গায় ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হবে সেসকল স্কুলে কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে স্কুল কার্যক্রমও শুরু হবে। এভাবে পর্যয়ক্রমে সকল উপজেলায় কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। আগামী এপ্রিল মাস থেকেই এই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ