সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখে গড়তে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৪.৫৭ বিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর শতকরা হার প্রায় ৫৮.৪।এই বিশাল জনগোষ্ঠীর অনেকেই ইন্টারনেটের সঠিক ও কার্যকরী ব্যবহার করছেন যার চমৎকার একটি উদাহরণ হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্যই হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যমান বিপুল সংখ্যক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর কাছে ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার প্রচার,প্রসার ও বিক্রয় সম্পন্ন করা।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ যেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজ পণ্য/ধারণা/সেবা কে ভোক্তার কাছে সুনিপুণ ও আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করে থাকেন। সাধারণত ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, লিঙ্কডইন , পিন্টারেস্ট, গুগল প্লাস, রিডিট, টার্মলার ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জন্য উল্লেখযোগ্য মাধ্যম, তবে বাংলদেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুক ও ইউটিউবের জনপ্রিয়তা অপেক্ষাকৃত বেশি।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই বিনামূল্যে অথবা তুলনামূলক কম খরচে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে একই সাথে নিজ পণ্য/সেবার প্রচারণা, কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক ভোক্তার সাথে যোগাযোগ এবং বিক্রয় সম্ভব।
- যেখানে লোকাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কোন পণ্যের নির্ধারিত ভোক্তাবর্গের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব সেখানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই নির্ধারিত ভোক্তাবর্গের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছানোর পাশাপাশি পণ্য বিক্রয়ের হার কয়েক গুন বৃদ্ধি সম্ভব।
- নতুন কোন পণ্যের দ্রুত ও সফল প্রচারণার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অন্যতম।
- এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিভিন্ন মার্কেট প্লেস থেকে ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আকর্ষণীয় অংকের অর্থ উপার্জন সম্ভব।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে শেখার উপায়
বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল (Gary Vee, Linkedin, Jay Bear, Neil Patel ইত্যাদি),ই-বুক(Smarter Faster Cheaper, The Dragonfly Effect, The Gen of Social Media Marketing ইত্যাদি) অথবা অনলাইন কোর্সের (Udemy, Quently, Skill Share, GCF Global ইত্যাদি থেকে) মাধ্যমে খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কিভাবে করা হয় ,এর কৌশল গুলো কি কি এগুলো সহজেই শেখা সম্ভব। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়াকে প্রচারণার জন্য ব্যবহারের পাশাপাশি ক্রেতা অথবা সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে কি ভাবে পর্যাপ্ত সুবিধা অর্জনসহ ব্যবসার প্রসার ঘটানো সম্ভব সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
এছাড়াও বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টার থেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ওপর বিভিন্ন কোর্স করে নেওয়া যায়।সে ক্ষেত্রে কোর্সের ধরণ ও মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ গুনতে হবে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জনপ্রিয় কিছু মাধ্যম
ফেসবুক মার্কেটিংঃ
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক মার্কেটিং সব থেকে বেশি কার্যকর ও জনপ্রিয়। আশ্চর্যজনক ভাবে, সব মিলিয়ে প্রায় এক মিলিয়ন এর কাছাকাছি ছোট ও বড় ব্যবসা এই ফেসবুকের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে । সব থেকে বেশি ট্রাফিক ওয়েবসাইটে আনার অন্যতম মাধ্যমও হল ফেসবুক মার্কেটিং। নিজ পণ্য বা সেবা প্রচারণার পাশাপাশি বিভিন্ন এফিলিয়েটেড মার্কেটিং কোম্পানি যেমনঃ আলিবাবা, অ্যামাজন ইত্যাদির সাথে যুক্ত থেকে নিজ ওয়েবসাইটে তাদের পণ্যের প্রচারণার মাধ্যমেও কোম্পানি প্রদত্ত নির্দিষ্ট লভ্যাংশ অর্জন সম্ভব।
ইউটিউব মার্কেটিংঃ
শিক্ষা,সংবাদ,বিনোদন সংক্রান্ত কাজের প্রচারণার ক্ষেত্রে ইউটিউব মার্কেটিং বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয়। ইউটিউব মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টি নন্দন ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে নিজ পণ্য বা সেবা ভোক্তার কাছে সাবলীল ভাবে উপস্থাপন করা যায়। এছাড়া অধিক গ্রাহক সম্বলিত ইউটিউব চ্যানেল গুলোতে চ্যানেল মালিককে অর্থ প্রদানের মাধ্যমেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজ পণ্য /সেবার প্রচারণা করে থাকেন।
গুগল প্লাস মার্কেটিংঃ
নিজ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্যের প্রচারণার ক্ষেত্রে গুগল প্লাস মার্কেটিং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ । গুগল প্লাস গুগলের একটি পণ্য হওয়ায় গুগল প্লাসে কিছু শেয়ার করলে তখন সেটা গুগল এ শেয়ার হয়ে যায় ফলে কোন ক্রেতা উক্ত পণ্যের নাম লিখে সার্চ দিলে গুগল আপনার পণ্যের প্রচারণা মূলক পোস্ট টি প্রথম পাতায় দেখায়।
টুইটার মার্কেটিংঃ
বাংলাদেশে টুইটারের ব্যবহার খুব কম হলেও সারা পৃথিবীতে এর ব্যাপক ব্যবহারের কারণে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের জন্য টুইটার অ্যাকাউন্ট গুরুত্বপূর্ণ কারণ টুইটার অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে একই সাথে দেশে ও দেশের বাহিরে অনেক ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব।
লিঙ্কডইন মার্কেটিংঃ
ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধিতে লিঙ্কডইন মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পণ্য/সেবা সম্পর্কিত আশানুরূপ প্রতিক্রিয়া পেতে লিঙ্কডইন এ নিয়মিত সক্রিয় থাকতে হবে যা একটি ভাল ইমেজ তৈরিতে সাহায্য করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো জনসংযোগের একটি বৃহত্তর উৎস হওয়ায় স্থানীয় মাধ্যম অপেক্ষা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পণ্য/সেবার প্রচারণা ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক ভোক্তার দৃষ্টি আকর্ষণে একটি ফলপ্রসূ মাধ্যম। এজন্য যারা উদ্যোক্তা হতে চান অথবা যারা ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ের সাথে জড়িত তাদের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিষয়ক পারদর্শিতা প্রতিযগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে থাকতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।