Freelancer Shaheen’s income is five lakh taka per month
ফ্রিল্যান্সার শাহিনের আয় মাসে পাঁচ লাখ টাকা/Freelancer Shaheen’s income is five lakh taka per m0nth সাত বছর আগে বাবাকে হারান। পরিবারে আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের পথ খুঁজতে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি কাজ করেছেন বিদেশি কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে। নিজেও খুলেছেন একটি প্রতিষ্ঠান । মাসে তার আয় ১০-১২ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ১০- ১২ লাখ টাকা। অফিস স্টাফদের বেতন ও অন্যান্য খরচ বাদে মাসে ৫-৬ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। জীবনযুদ্ধে সফল এ ফ্রিল্যান্সারের নাম মো. শাহীন।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বলড়া ইউনিয়নের পিপুলিয়া গ্রামে বাড়ি। ২০১৭ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আজ স্বাবলম্বী। নিজের পাশাপাশি এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলেছেন শাহিন।
জানা যায়, উপজেলার বলড়া ইউনিয়নের বলড়া মুন্নু আদর্শ উচ্চ বিদ্যানিকেতন থেকে ২০১৩ সালে এসএসসি ও খাবাশপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে স্নাতক শেষ করেন। বর্তমানে মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সম্ভাবনা দেখে ‘বেকারত্বকে না বলি, ঘরে বসে আয় করি’ স্লোগানে শাহীন উপজেলার বলড়া বাজারে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর অ্যাডভান্স ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে কাজ করছেন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির এক হাজার শিক্ষার্থী আয় করেছে প্রায় ২০-২৫ লাখ ডলার।
ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে মো. শাহীন জানান, ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জ শহরে বাংলাদেশ সরকারের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রজেক্টের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ বিষয়ক একটি বিজ্ঞাপনের লিফলেট দেখে আগ্রহী হন। তারপর লিফলেটে দেওয়া ওয়েবসাইট এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে অনলাইনে একটি পরীক্ষা দেন।
দুদিন পর প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন। পাঁচ হাজার রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষার্থীদের থেকে ৪০ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হলে হরিরামপুর উপজেলা থেকে তিনি নির্বাচিত হন। পরে ২০১৭ সালে প্রথম কাজে পাঁচ ডলার আয় হয় তার। ছয় মাসের মধ্যে আয় বাড়তে থাকে। ২০১৯ সাল থেকেই ৩-৪ লাখ টাকা আয় শুরু হয় তার। নিজের স্ত্রী আশা আক্তারও ফ্রিল্যান্সিং করতেন।
তিনি জানান, অনলাইনেও যে আয় করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, তা গ্রামাঞ্চলের মানুষ কম জানে। আমার প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় দেখে আমার গ্রামের লোকেরা মনে করতো, আমি কোনো অবৈধ উপায়ে উপার্জন করছি। ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ে একটি সম্মানজনক পেশা হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে অনেকের ধারণা নেই।
কর্মহীন বেকারদের উদ্দেশ্যে মো. শাহীন বলেন, বর্তমানে চাকরি পাওয়া খুবই কঠিন। হাজার হাজার বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনলাইনে প্রচুর কাজ রয়েছে। এখান থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে, সঠিক পথে পরিশ্রম করে কাজ করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়। বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং শিখুক।
তার অফিসের ডিজাইনার মামুন হোসেন জানান, ২০১৯ সাল থেকে শাহিনের সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করলেও এ বছরের জুলাই মাসে শাহিনের অফিসে যোগদান করেন। দিনে ৪-৫ টি ডিজাইনের কাজ করেন। শাহিন তাকে মাসে এক লাখ টাকা বেতন দেন।
শাহিনের স্ত্রী আশা আক্তার জানান, আমি নিজেও ফ্রিল্যান্সিং করে ২৫ লাখ টাকার মতো আয় করেছি। আমাদের সংসারে কোন অভাব নেই। আমরা ভালো আছি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো শাহরিয়ার রহমান বলেন, শাহিন মিয়া আমাদের উপজেলার সম্পদ। আশা করি বেকারত্ব সমস্যা দূরীকরণে তিনি আরও ভূমিকা রাখতে পারবেন।