পেছনের বছরগুলোর দিকে যদি লক্ষ্য করি তবে দেখতে পাব মোবাইল অ্যাপস ইন্ডাস্ট্রি মাল্টি বিলিয়ন ডলার ইনকাম করেছে। আর দিনে দিনে এর চাহিদা প্রচুর পরিমান বাড়ছে। যা বিশাল বড় একটা ইন্ডাস্ট্রিতে পরিনত হচ্ছে। কমস্কোর থেকে নেওয়া একটি ডাটা থেকে এই অ্যাপ ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে যে চার্ট পাওয়া গেছে, সেখানে বলা হয়েছে প্রতি বছর ২৯% এই ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১২ সালে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে ১.২ বিলিয়ন মোবাইল অ্যাপস ইউজার রয়েছে। যা এই ২ বছরে আরও তার দ্বিগুণে পরিণত হয়েছে।
২০১৩ এর আগস্ট পর্যন্ত এক চার্ট এর মাধ্যমে আমরা মোবাইল অ্যাপস স্টোরগুলোর পপুলারিটি সম্পর্কে জানবো।
- এন্ড্রয়েড – ৫১.৬%
- আইওএস স্টোর – ৪০. ৭%
- ব্ল্যাকবেরি – ৪.৮%
- সিম্বিয়ান – ০.৪%
ডব্লিউএসজে এর এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলার এর একটি ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে অ্যাপ ইন্ডাস্ট্রি। ভিশন মোবাইল এর একটি এস্টিমেট রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৬ এর মধ্যে ১৪৩ বিলিয়ন ডলার এর ইন্ডাস্ট্রিতে পরিনত হবে অ্যাপ ইন্ডাস্ট্রি।
এই পর্যন্ত অ্যাপস স্টোরগুলোতে কি অবস্থা রয়েছে তার একটা ছোট্ট ব্রিফঃ
- এখন পর্যন্ত ৩.১ মিলিয়ন+ অ্যাপস রয়েছে অ্যাপস স্টোরগুলোতে। এর মধ্যে গুগল প্লে স্টোরে রয়েছে ১.৩ মিলিয়ন এবং আইওএস স্টোরে রয়েছে ১.২ মিলিয়ন।তথ্যসূত্রঃস্টাটিস্টা
- প্রায় ৭০ বিলিয়ন এর বেশি অ্যাপস ডাউনলোড হয়েছে এখন পর্যন্ত।
- এখন পর্যন্ত প্রায় ২ বিলিয়ন এর মত প্রতি বছরে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারী বাড়ছে।
যাই হোক স্ট্যাটিক নিয়ে অনেকক্ষণ যাবত আলোচনা করলাম। উপরের এই তথ্যটুকু সঠিকভাবে বের করতে সম্পূর্ণ একটাদিন সময় অতিবাহিত করেছি। শুধু এই কারনে যে, এই ইন্ডাস্ট্রি যদি কাজ করেন, তবে আপনার ভবিষ্যৎ কোনদিকে যেতে পারে সেটা যেন নিজে থেকে কল্পনা করতে পারেন তাই।
কেন অ্যাপ অপটিমাইজ করবেনঃ
একটা রিসার্চে দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ অ্যাপস ডাউনলোড হয় সার্চ থেকে। এরপর বন্ধু বা ফ্যামিলির মাধ্যমে। যার ২ টা চার্ট আমি নিচে দিয়ে দিলাম। যা থেকে পুরাপুরি ক্লিয়ার হতে পারবেন যে কিভাবে অ্যাপগুলো ডিসকাভার হয়।
অ্যাপস খোজার জন্য বিভিন্ন ধরনের পথ রয়েছে। কাস্টমার বিভিন্নভাবে অ্যাপস খুজে। কিন্তু আপনাকে প্রয়োজন কাস্টমারের কাছে পৌঁছান। সবথেকে বেস্ট ওয়ের মাধ্যমে যদি আপনি কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারেন তবে এটা বাকী ওয়েগুলোতে ভাইরাল হয়ে যাবে। এখানে সবথেকে বেস্ট ওয়ে কোনটি বা কি ধরনের ওয়েতে অ্যাপসগুলো ভাইরাল হচ্ছে তারও একটি চার্ট দেখে নিই।
উপরের চার্ট থেকে লক্ষণীয় বেশি হইল সবথেকে বেশি ভাইরল হওয়ার মাধ্যম অ্যাপ স্টোর সার্চ। সুতরাং আমাদের যদি সার্চ রেজাল্টে টপ পজিশনে থাকতে হয় সেক্ষেত্রে কোন একজন এওএস (AOS) অপটিমাইজারের সাহায্য নিতে হবে। আর আমার আজকের লেখাটি তাদের জন্য যারা AOS অপটিমাইজার হইতে চাই । মাথায় রাখতে হবে এটি শুধুমাত্রসার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এক্সপার্টবা অ্যাডভান্স লেবেলের অপটিমাইজারদের জন্য।
কারন আমি এখানে শুধুমাত্র টিপস বা ট্রিক্স ছাড়া আর কিছুই শেয়ার করব না। সুতরাং আপনি নতুন হলে, অনুরধ করব আগে এসইও টা শিখুন এরপর এটি পড়ুন। কারন এটি আপনাদের কোন কাজে আসবে না এখন।
এন্ড্রয়েড এবং আইএসও অ্যাপ স্টোর কিভাবে অপটিমাইজ করা যায় সে বিষয়ে আজকে লিখব। মনে রাখবেন, ২ টা অ্যাপ স্টোর এর অপটিমাইজেশন সিস্টেম বা পদ্ধতি একই রকম না কিন্তু খুব কাছাকাছি। শুধু মিথগুলো ফলো করবেন। কয়েকদিন রিসার্চ করলেই ২ টা অ্যাপস স্টোর এর মিথ ধরে ফেলতে পারবেন। সুতরাং আমি এখানে ভিন্ন ভিন্নভাবে ২ টা অ্যাপ স্টোরের অপটিমাইজেশন দেখাচ্ছি না।
অনপেজ অপটিমাইজেশনঃ
অ্যাপস স্টোর অপটিমাইজেশন এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে অনপেজ অপটিমাইজেশন। সার্চ রেজাল্টে যদি আপনাকে টপ পজিশনে থাকতে হয় সেক্ষেত্রে ৬০% কাজ করবে অনপেজ টপ পজিশন থাকার ক্ষেত্রে। সুতরাং অনপেজ করার সময় এটা খুব ভালভাবে খেয়াল করতে হবে।
অ্যাপ টাইটেলঃ
অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশন এর প্রথম পয়েন্টটি টাইটেল। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট। টাইটেল এর লেখার সর্ব প্রথম শর্ত হচ্ছে টাইটেল শর্ট করতে হবে। ২৫ শব্দের মধ্যে টাইটেল শেষ করতে হবে। এতে করে স্ক্রিনে আপনার অ্যাপস সম্পর্কে একজন ইউজার খুব দ্রুত জানতে পারবে, সেই সাথে সার্চ রেজাল্ট আপনাকে ইফেক্টিভ রেজাল্টে রাখবে।
টাইটেল এর মধ্যেকি-ওয়ার্ড ব্যবহারকরতে হবে। এবং সেটা জন্য অবশ্যই অ্যাপস রিলেটেড হয়। টাইটেল যদি অ্যাপস রিলেটেড না হয় তবে সেক্ষেত্রে আপনার উপরে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি ক্লিক থ্রো রেট বাড়াতে চান তবে উপরের বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। একবারে উল্লেখ এর জন্য আমি কিছু পয়েন্ট নিচে উল্লেখ করে দিলাম । কিন্তু তার পূর্বে একটি চার্ট দেখব, যেটা দ্বারা খুব সহজেই বুঝতে পারব টাইটেল এর মধ্যে কি-ওয়ার্ড ব্যবহার এর ইফেক্ট।
- ২৫ শব্দের মধ্যে টাইটেল শেষ করুন।
- টাইটেল যেন ক্রিয়েটিভ হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন।
- টাইটেল এর মধ্যে কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করুন। তবে স্টাফিং করবেন না। তাহলে কিক খাবেন।
- ইউনিক টাইটেল ব্যবহার করুন।
- টাইটেল যেন অ্যাপস সাথে সম্পৃক্ত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
অ্যাপ ডিস্ক্রিপশনঃ
অ্যাপ ডিসক্রিপশন খুবি গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট। প্রথমত এটি ইউজারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারন ইউজার আপনার অ্যাপস ডিসক্রিপশন পড়ার পর আকৃষ্ট হয়ে আপনার অ্যাপস ব্যবহার করতে চাইবে। একই সাথে ডিসক্রিপশন এর মাধ্যমে আপনি অ্যাপস সার্চ রেজাল্টে উপরে উঠতে পারবেন। অ্যাপস ডিসক্রিপশন এর মধ্যে টেকনিক্যালি আপনার কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। শুধু চেষ্টা না অবশ্যই ব্যবহার করবেন। শর্ট ডিস্ক্রিপশনের মধ্যে সমস্ত কিছু ইঙ্কলুড করবেন। যেন ইউজার সহ সার্চ রেজাল্টে কোন সমস্যা যেন না হয়।
অ্যাপ লোগোঃ
ক্রিয়েটিভিটি এক্সপ্রেস করার মত একটি পয়েন্ট হচ্ছে অ্যাপ লোগো। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লোগো এর ভিতরে আপনাকে আপনার অ্যাপ কে বোঝাতে হবে। ক্লিক থ্রো রেটে যদি বাড়াতে চান তবে অ্যাপ লোগোর প্রতি নজর দিতে হবে। লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কদিন, অ্যামাজন তাদের ব্র্যান্ড লোগো ব্যবহার করে। ফলে মানুষ খুব দ্রুত সেটাকে ধরে নিতে পারে এটি অফিসিয়ালি। সুতরাং আকৃষ্ট করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এটি।
অ্যাপ স্ক্রিনশর্টঃ
স্মার্ট ফোনের এই যুগে সবাই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন। আপনি নিজে থেকে চিন্তা করুন যে, আপনি যখন কোন অ্যাপ ডাউনলোড বা কিনতে চান তখন কি করেন ? আপনি অ্যাপটির স্ক্রিনশর্ট দেখে সিদ্ধান্ত নেন ডাউনলোড এর ব্যাপারে। সুতরাং আপনার এই চিন্তাভাবনা টা একই জায়গাতে কাজে লাগাতে হবে।
স্ক্রিনশর্ট যেন সম্পূর্ণ অ্যাপ এর ফিচার কে উল্লেখ করে সেদিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। সিমপ্লি আপনি একটা মুভির ট্রেইলারের কথা চিন্তা করেন। কোন মুভির প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য ট্রেইলারটি আপনাকে কি ধরনের ইন্সপায়ার করে থাকে। একটা ট্রেইলারে সবথেকে বেস্ট পার্টগুলো দেওয়া থাকে। ঠিক তেমনি আপনাকে আপনার অ্যাপ এর জন্য বেস্ট পার্টগুলোর স্ক্রিনশর্ট ব্যবহার করতে হবে।
ক্যাটাগরিঃ
ক্যাটাগরি সিলেকশনে আমরা সবাই ভুল করে থাকি। আমি অ্যাপ অপটিমাইজেশনের যে কাজগুলো করেছি, এর ভিতর মাক্সিমাম ক্লায়েন্ট প্রাধান্য দেই মাল্টিপল ক্যাটাগরি। তারা মনে করে মাল্টিপল ক্যাটাগরিতে দিলে এটি বেশি ব্যবহার হবে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। মাল্টিপল ক্যাটাগরি থেকে একটা ইফেক্টিভ ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা সবথেকে বেস্ট। এতে গুগল সার্চ রেজাল্টেও আপনার অ্যাপটি প্রাধান্য পাবে। আইওএস স্টোর এর ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, কারন ওখানে ২ টি ক্যাটাগরিতে রাখতে হয়। আপনি প্রথম ক্যাটাগরিটা বা প্রাইমারি ক্যাটাগরিটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্যাটাগরিতে রাখবেন। দ্বিতীয় ক্যাটাগরি সিলেক্ট করবেন সিমিলার ক্যাটাগরি।
অ্যাপ ইউটিউব ডেমোঃ
গুগল প্লে স্টোরে আপনি ইউটিউব ভিডিও ডেমো আপলোড করতে পারবেন। এখানে যে ডেমো টি আপলোড করবেন সেটা যেন, মোটেও নন-প্রফেশনাল ভিডিও না হয়। এটার জন্য প্রয়োজনে আপনি একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর কে হায়ার করে কাজ করিয়ে নিন। ভিডিওটা সম্পূর্ণ ক্রিয়েটিভ এবং আকর্ষণীয় হয়। এটা ঠিক অই মুভির ট্রেইলার এর মত। সুতরাং এটাকে না গুরুত্ব দেওয়ার মত কিছু নাই। আপনাকে গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।
একই সাথে যখন ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করবেন তখন আপনার অ্যাপ রিলেটেড কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করে নিয়ে ইউটিউব ভিডিও অপটিমাইজ করবেন। সেক্ষেত্রে গুগল সার্চ রেজাল্টে ভিডিও টপে আসার সম্ভাবনা থাকে। ফলে আপনি ওখান থেকে আপনার অ্যাপকে পপুলার করতে পারেন। এই সুবিধাটা আইওএস স্টোরে পাবেন না। তবে গুগল র্যাঙ্কিং এর জন্য করতে পারেন।
কি -ওয়ার্ডঃ
কি-ওয়ার্ড যে সার্চ রেজাল্টের প্রান সেটা নিশ্চয় অজানা নয়। কিন্তু কি- ওয়ার্ড সিলেকশন থাকতে হবে অবশ্যই। কারন অ্যাপ রিলেটেড কি ধরনের কি-ওয়ার্ড আপনার কাস্টমাররা সার্চ করছে এটা জানা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে একটি টুলস পয়েন্ট পাবেন যেখান থেকে আপনি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ এর জন্য টুলস দ্বারা সঠিক কি-ওয়ার্ড খুজে বের করতে পারবেন। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন আইওএস স্টোর অপটিমাইজ করা একটু কস্টকর কিন্তু আপনি যদি পারফেক্ট কি-ওয়ার্ড দ্বারা অপটিমাইজ করতে পারেন, তবে সার্চ রেজাল্টে উপরে চলে আসবেন ।
অফপেজ অপটিমাজেশনঃ
অ্যাপ অপটিমাইজেশন এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হচ্ছে অফপেস অপটিমাইজেশন। আপনি যদি শুধুমাত্র অনপেজ করে সার্চ রেজাল্টে টপে আসার চিন্তা করে থাকেন তবে সেটা হবে বোকামি। অফপেজ এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় যদি আপনি না করেন সেক্ষেত্রে সার্চ রেজাল্টে ফার্স্ট পজিশনে থাকা খুব কষ্টকর। সুতরাং ৬০% কমপ্লিট করার পর আপনাকে অফপেজ অর্থাৎ বাকী ৪০% কাজও আপনাকে করতে হবে, তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার অ্যাপকে পপুলার করতে পারবেন।
অ্যাপ রেটিংঃ
এএসও (ASO) খুবই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর হচ্ছে রেটিং। যখন ডাউনলোড এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে ৮০% এর উপর রেটিং ৫ থাকে , তখন শিউর থাকেন আপনার অ্যাপ পপুলার হতে চলেছে। অ্যাপ রেটিং এর উপর ডিপেন্ড করে আপনার অ্যাপ এর পাবলিক পারফরম্যান্স। তবে শিউর থাকতে থাকেন যে, আপনি যদি ভুয়া অ্যাপ রিভিউ রাখেন তবে অ্যাপ ফল করবে। হ্যাঁ, আমি একদম নিষেধ করছি না । করবেন তবে তার জন্য আপনি অ্যাপ ইউজার বাড়ান। কিভাবে অ্যাপ ইউজার বাড়াবেন সেটা নিয়ে অফলাইন মার্কেটিং পয়েন্ট টি সাহায্য করবে। এছাড়া আর কিছু সিক্রেট লুকায়িত রাখলাম। চাইলেই আমি এখানে দিতে পারব না। কারন সেটা নিয়ে লিখতে গেলে সম্পূর্ণ টপিকস অন্য দিকে চলে যাবে। যেহেতু এসইও এক্সপার্টদের জন্য লেখা তাই আশা করি বুঝে গেছেন।
অ্যাপ রিভিউসঃ
অ্যাপ রেটিং টা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি রিভিউটা। যখন ইউজার পজেটিভ রিভিউ দিতে থাকবে আর সেটা যদি ৬০-৭০% ডাউনলোড এর মধ্যে হয়, তবে শউর থাকেন আপনার অ্যাপস পপুলার লিস্টে উঠে আসতেছে। আর সার্চ রেজাল্টে তো থাকছেই। সুতরাং আপনাকে এমনভাবে অ্যাপ ডেভেলপ করতে হবে যেন, মানুষ পজেটিভ রিভিউ দেয়। সর্বদা অ্যাপস ডেভেলপার মনে রাখা উচিৎ,যদি অ্যাপ পপুলার করতে চান, সেক্ষেত্রে ইউজার ফ্রেন্ডলি অ্যাপ তৈরি করতে হবে। সেটা যে ধরনের অ্যাপ হোক।
কারন আমি একজন ইউজার হিসেবে তখনি একটা রিভিউ দিই যখন অ্যাপটি ইউজার ফ্রেন্ডলি। আমার কেন জানি ওই টাইমে মনে হয়, যাদের কষ্টের জন্য আমি এত সুন্দর একটা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছি, তাদের জন্য আমি কেন একটা রিভিউ দিব না। সুতরাং অ্যাপস রিভিউ পেতে হলে এর কোন বিকল্প নাই। তবে মাথায় রাখবেন, ভুয়া রিভিউ কিন্তু গ্রহণযোগ্য হয় না।
অ্যাপ ডাউনলোডঃ
অ্যাপ ডাউনলোড এর উপর ভিত্তি করে সার্চ রেজাল্টে আপনার অবস্থান আসবে। দেখবেন বেশিরভাগ অ্যাপ সর্ব প্রথম আসে, যেগুলা সবথেকে বেশি ডাউনলোড হয়েছে। সার্চ পজিশনে ফার্স্টে থাকার সবথেকে প্রাইমারি বিষয় হচ্ছে অ্যাপ ডাউনলোড। সুতরাং অফলাইন মার্কেটিং করতে হবে। অ্যাপ স্টোর ছাড়া অ্যাড নেট-ওয়ার্ক এর মাধ্যমে আপনাকে ইউজারদের কাছে পৌছাতে হবে। এটা আপনার অ্যাপ লঞ্চ করার পরবর্তী স্টেপ হওয়া সাথে উপরের মার্কেটিং পদ্ধতি চলতে থাকবে। তাহলে শিউর থাকেন মার্কেট আপনার অ্যাপ পপুলার অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি হতে চলেছে।
লিঙ্ক বিল্ডিংঃ
গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল আইওএস স্টোরে দুইটার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে লিঙ্ক বিল্ডিং। প্রথমত যেহেতু গুগল এর প্রোডাক্ট এন্ডয়েড, তাই তার সার্চ ইনডেক্স এবং রেজাল্ট খুজে পাওয়ার জন্য এলগোরিদম সাধারনভাবেই কাজ করবে। আর আইওএস স্টোরে সোশ্যাল এঙ্গেজমেন্ট এবং লিঙ্ক ব্যাক এর উপর সার্চ রেজাল্টে আস্তে ডিপেন্ড করে থাকে। সুতরাং অ্যাপ অপটিমাইজ করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই লিঙ্কবিল্ডিং করতে হবে। আর কিভাবে করতে হবে সেটা মনে হয় আমার থেকে এসইও স্পেশালিস্টরা আরও ভাল জানেন।
এএসও (ASO) টুলসসমূহঃ
এই ইন্ডাস্ট্রিতে যেহেতু এখনও মার্কেটারদের পপুলারিটি খুব বেশি হয় নি। তাই খুব কম সংখ্যক টুলস বের হয়েছে। তবে যেগুলো বের হয়েছে সেগুলোর ভিতর থেকে যে টুলসগুলো আওনাকে রিসার্চ করতে সাহায্য করবে সেগুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি এই টুলসগুলো আপনার অ্যাপ মার্কেটিং এর জন্য সাহায্য করবে। আমি এখানে বিস্তারিত আর দিচ্ছি না প্রত্যেকটা টুলস এর। আপনাদের জন্য আমি একটা কম্পেয়ার চার্ট এখানে দিয়ে দিচ্ছি একই সাথে আমি টুলসগুলোর দিয়ে দিচ্ছি। আপনারা এটি থেকেই বুঝে যাবেন কার কি কাজ।
ইমেজটা ঘোলা লাগলেও এটি ঘোলা না। অনুগ্রহ পূর্বক ডাউনলোড করুন এবং জুম করে ফিচারগুলো উপভোগ করুন।
নিচে উপরোক্ত ১০ টি টুলস দিয়ে দিচ্ছি। ধারাবাহিকভাবে। আপনার পছন্দের টুলসটি এখান থেকে বাছাই করে নিতে পারেন। আপনার এএসও আরও শক্তিশালী করতে টুলস বাবহারের বিকল্প নেই।
- সেন্সর টাওয়ার
- সার্চ ম্যান
- অ্যাপনিক
- স্ট্রাপলি
- অ্যাপকোডস
- মোবাইলডেভ এইচকিউ
- মোপাঅ্যাপ
- ম্যাট্রিক্স কাট
- অ্যাপএ্যানি
- অ্যাপ ফিগারস
অ্যাড নেট-ওয়ার্ক মার্কেটিংঃ
সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং পদ্ধতি অ্যাড নেট -ওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি। কিন্তু কেন ? একটা অ্যাপ যদি আপনি পপুলার করতে চান বা সার্চ রেজাল্টে আসতে হয়, সেক্ষেত্রে আপনাকে অনপেজ অপ্টিমাজেশন থেকে শুরু করে অফপেজ অপটিমাইজেশন করতে হবে। কিন্তু অফপেজ অপটিমাজেশনের ক্ষেত্রে আপনাকে এমন কিছু পয়েন্ট কে ফলো করতে হবে যা প্রাথামিক দিকে করা খুব কষ্টের একটা ব্যাপার। কারন আপনার অ্যাপটি পৌছাতে হবে সঠিক যায়গা। এরপর ডাউনলোড > রেটিং > রিভিউ > সার্চ > রেজাল্ট > পপুলার। এই ধাপে কাজ হবে। কিন্তু সবকিছুর মূলেই রয়েছে অ্যাপটি সঠিক ব্যাক্তির কাছে প্রাথমিক দিকে পৌঁছান।
প্রাথমিক দিকে যদি আপনাকে আপনার ইউজার কাছে পৌঁছাতে হয় তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য নিতে হবে মোবাইল অ্যাপ নেট-ওয়ার্ক সার্ভিস দেই যারা, তাদের কাছে যেতে হবে। এই পয়েন্টটি হয়েছে শুধু অ্যাড ওইসব অ্যাড নেট-ওয়ার্কারদের কাছে পৌঁছানর জন্য।
লিস্ট অনুযায়ী আপনারা বেছে পারবেন। ১৫+ টি সেরা মোবাইল অ্যাড -নেট-ওয়ার্ক এর লিস্টে আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি। যারা আপনার অ্যাপকে প্রোমট করতে সাহায্য করবে।
- অ্যাডমোব
- ফেসবুক অ্যাড
- টুইটার অ্যাড
- মিলিনিয়াল মিডিয়া
- অ্যাডফোনিক
- চার্ট বুস্ট
- ট্যাপ জয়
- অ্যাডিটিক
- অ্যাডমোডা
- ফ্লুরি
- ইনমোবি
- জাম্প ট্যাপ
- কিপ
- ম্যাডভার্টাইজ
- মোব ফক্স
- মোবপার্টনার
- মোজিভা
সিক্রেট টিপসঃ
যদি আপনার অ্যাপকে আরও বেশি পরিমান ভাইরাল করতে চান, তবে এই সিক্রেট টিপসটি আপনাকে ২০% ইউজার বাড়িয়ে দিবে। ভাবছেন কি এমন জিনিস ? হা হা হ হা, কিছুই না। খুবই সোজা জিনিস। আপনার নিজের গল্প বলুন। মানুষ সবথেকে বেশি আকৃষ্ট হয় কিউরিসিটির উপর।
ইতিপূর্বে আমি আমার বেশিরভাগ লেখাতেই উল্লেখ করেছি মানুষের ভিতর যত বেশি কিউরিসিটী তৈরি করতে পারবেন তত বেশি আপনি উপরে উঠতে পারবেন। কারন মানুষ কিউরিসিটিকেই সব থেকে বেশি ভালবাসে। এটাও একটি কিউরিসিটি তৈরি করার চক্রান্ত। হি হি হি। তবে আপনার গল্প বলার সময় যেসব বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন।
- সঠিক নাম ব্যবহার করবেন ।
- অ্যাপ তৈরির পেছনে সবথেকে বেশি অবদান কার।
- কে আপনাকে উৎসাহিত করেছে।
- গল্পের ভিতর কি-ওয়ার্ড বাবহারের চেষ্টা করুন।
- কেন এটা সবথেকে বেস্ট অ্যাপ ?
- আপনি ব্যবহার কেন করবেন ?
- ব্যবহার করলে কি সুবিধা পেতে পারেন ?
উপরের পয়েন্টগুলো মাথায় রেখে আপনার নিজের গল্প লিখুন, দেখেন আপনার অ্যাপসহ আপনার কোম্পানি ব্র্যান্ড হিসেবে দাড়িয়ে গেছে।
এই ছিল অ্যাপস স্টোর অপটিমাইজেশন গাইডলাইন। যদি আপনি আমার এই গাইডলাইন অনুযায়ী কাজ করেন আমি আশাবাদী আপনি সাকসেস হতে পারবেন। আর এই গাইডলাইন অনুযায়ী যদি আপনি সাকসেস হতে পারেন, তবে সেটা হবে আমার লেখার সার্থকতা। আমি আশাবাদী এই ব্যাপারে যে আপনারা এই স্ট্রাটেজি ফলো করে আপনার অ্যাপ পপুলার করতে পারবেন ।
সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি। আমার জন্যও আপনারা দোয়া করবেন। দেখা হবে অন্য আরেকটা লেখাতে। সেই পর্যন্ত সাথে থাকুন।