Online বর্তমান সময়ে চাকরির জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং একটি উল্লেখযোগ্য পথ, দ্রুত প্রসার হচ্ছে, শুরু করুন Digital Marketing ক্যারিয়ার
চ্যালেঞ্জিং এবং জনপ্রিয় একটি ক্ষেত্র। যারা মনে আনন্দ নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন, তারা ইচ্ছে
করলে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার হিসাবে নিতে পারেন। কারণ, এই ক্যারিয়ার আপনাকে একদিকে
যেমন প্রযুক্তিপ্রেমী করে তুলবে, অন্যদিকে আপনার জীবনকে করে তুলবে স্বাচ্ছন্দময় ও আনন্দময়।আর
প্রযুক্তির হাত ধরে ই-কমার্স যেভাবে প্রতিমুহূর্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।তাই আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার এটিই সঠিক সময়। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, আগে
হোক আর পরে হোক, প্রায় সব ধরণের ব্যবসাই ডিজিটাল রূপ নিচ্ছে। আর ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রসারে
আপনার মতো ডিজিটাল মার্কেটারদের সহযোগীতা লাগবেই। তাহলে বন্ধুরা এগিয়ে চলুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং:
ডিজিটাল মার্কেটিং পণ্য বা সার্ভিস বিক্রির জন্যে এমন এক ধরণের মার্কেটিং যা ইন্টারনেটের সাহায্যে
প্রযুক্তির ব্যবহারে সম্পন্ন করা হয়। এটি মোবাইল ফোন, ডিসপ্লে অ্যাডভার্টাইজিং ও অন্যান্য ডিজিটাল
মিডিয়ামের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যে কোন পণ্য বা বিজনেস ব্র্যান্ডকে কাস্টমারের কাছে পৌঁছানোর জন্যে নানা
ধরণের অনলাইন চ্যানেল ব্যবহার করা হয়। আর এটাই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং যা ইন্টারনেটের সাথে
ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
ডিজিটাল মার্কেটিং করতে যা যা প্রয়োজন:
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান, তবে জেনে নিন এই ক্যারিয়ারে
আপনাকে কী কী কাজ করতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং করতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত
কাজগুলো দেখে নিন নিচের তালিকায়:-
*সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাউজেশন (SEO)
*সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
*ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
*কন্টেন্ট মার্কেটিং
*কন্টেন্ট অটোমেশন
*ক্যাম্পেইন মার্কেটিং
*ইমেল মার্কেটিং
*ডাটা-ড্রাইভেন মার্কেটিং
*সোশ্যাল মিডিয়া অপটিমাইজেশন
*সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
*ই-কমার্স মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেবেন কেন:
বর্তমাণ সময়ে সবার কাছে একটা পণ্য বা সেবা প্রচারের সেরা মাধ্যম হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা।
যার ফলে, একটা সাধারণ কোম্পানী থেকে শুরু করে একটা মাল্টি ন্যাশনাল কিংবা ইন্টারন্যাশনাল
কোম্পানী প্রায় সম্পূর্ণরূপেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর নির্ভরশীল। কাজেই, এ সেক্টরে কর্মীর চাহিদা
অনবরত বেড়ে চলেছে। সুতরাং, ডিজিটাল মার্কেটিং এ ক্যারিয়ার গড়া যে কারো জন্যেই সহজ ও
নিরাপদ এবং সময়যোগী।
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারের জন্য সেরা টিপস:
যারা এইমুহূর্তে নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার কথা ভাবছেন , তাদের জন্য আমরা
এখন সেরা কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করবো।
1.সবকিছু থেকে শিখে নিতে হবে:
যে কোন কিছুতেই ভালো করতে চাইলে সেটা সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা জরুরি। ডিজিটাল মার্কেটিং এর
ক্ষেত্রেও একি কথা। যেহেতু জনপ্রিয় এবং দ্রুত বর্ধনশীল একটি পেশা তাই এখানে প্রতিযোগিতাও অনেক
বেশি। তবে সেই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার একটিই মৌলিক উপায়; সেটি হচ্ছে, প্রতিমুহূর্তে সবকিছু
থেকে শেখার আগ্রহ থাকতে হবে। এসইও, এসইওম, পিপিসি এসব কী জিনিস তা সম্পর্কে ভালভাবে
জানতে হবে।আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং কে ফুল টাইম জব হিসাবে নিতে পারেন, তাহলে সফলতা
আপনার হবেই হবে।
2.নিজেকে আপ-টু-ডেট করতে হবে:
প্রযুক্তি বিশ্বে এখন কোন বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে, সে সব সম্পর্কে আপনাকে ভালো ধারণা রাখতে
হবে। যেহেতু ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড প্রতিমুহূর্তে এগিয়ে যাচ্ছে, তাই একে কেন্দ্র করে ক্যারিয়ার গড়তে গেলে
নিজেকেও রাখতে হবে সবসময় আপ-টু-ডেট। একদম আপডেট খবরের জন্য টুইটার এবং বর্তমানের
মার্কেটিং ট্রেন্ড এর জন্য লিংকডইন ব্যবহার করতে পারেন।
3.মেন্টর খুঁজে বের করে তাদের কাছ থেকে জানুন:
ডিজিটাল মার্কেটিং এ ক্যারিয়ার গড়েছেন এরকম কেউ পরিচিত থাকলে ভাল হবে। আর পরিচিত না
থাকলে, পরিচিত হবেন। যারা সফল হন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা অন্যদেরকে সফল হওয়ার ব্যাপারে
সাহায্য করতে ভালোবাসেন। তাই, তাদের খুঁজে বের করুন এবং তাদের কাছে থেকে পরামর্শ নিন, তারা
কী কী ভুল করেছে সেগুলো সম্পর্কে জানুন।তাহলে আপনার কাজ করতে সুবিধা হবে।
4.নিজস্ব ব্যান্ড তৈরী করতে হবে:
নিজস্ব ব্যান্ড তৈরি করা এর অর্থ হচ্ছে নিজের পরিচয় অন্যদের সামনে তুলে ধরা। অনেকটা নিজের ঢোল
নিজে পেটানোর মতো মনে হলেও এটিই বাস্তবতা। আপনি যদি আপনার দক্ষতা বা যোগ্যতাকে অন্যদের
সামনে তুলে ধরতে না পারেন, তাহলে ক্যারিয়ার প্রতিযোগিতায় কখনোই এগিয়ে থাকার সুযোগ পাবেন
না। তাই এগিয়ে যেতে হবে।
5.নিজের ব্লগিং শুরু করতে হবে:
আপনার যদি ব্লগিং করার অভ্যাস থাকে তাহলে যে কোন ক্যারিয়ারের জন্য চমৎকার একটি প্লাস
পয়েন্ট। এতে করে আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ হলে সেটি যেমন অন্যদের সামনে তুলে ধরতে পারবেন,
তেমনি ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ শুরুটাও হতে পারে এখান থেকেই।তাই আজকেই শুরু করে দিতে
পারেন ব্লগিং করা। এমনকি যে কোন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলেও ব্লগিং আপনাকে দারুনভাবে
এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
অনলাইনে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করতে হবে:
আপনার সকল ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জনের জন্য নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
থাকে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, বাস্তব জীবন সকল ক্ষেত্রে মানুষের সাথে মিশে যেতে শিখুন, সুন্দর করে কথা
বলা শিখুন। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ক্যারিয়ার বিষয়ক ওয়ার্কশপ, সেমিনার
ইত্যাদি হয়, সেগুলোতে অংশ নিন। নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি পেলে আপনাতেই দেখবেন নিজেকে আপডেট রাখা
বা মেন্টর খুঁজে বের করা ব্যাপারগুলো অনেক সহজ হয়ে গেছে।
7.লিংকডইন প্রোফাইল তৈরী করতে হবে:
বর্তমানে যে কোন পেশাগত বিষয়ক আলোচনা এখন লিংকডইন কে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। ডিজিটাল
মার্কেটিং পেশাটি অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় এক্ষেত্রে কথাটি আরও বেশি সত্যি। ক্যারিয়ার গড়ার শুরুতে
এ দিকে নজর দেওয়া জরুরী।
8.ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগান:
সোশ্যাল মিডিয়া অর্থাৎ ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির কল্যাণে এখন সারা পৃথিবীতেই পরিচিত অপরিচিত
মানুষের সাথে যোগাযোগের বিশাল একটি সুযোগ তৈরী হয়েছে। তাই, আপনি যদি শুধুমাত্র এটিকে
সেলফি বা ছবি আপলোড কিংবা সময় কাটানোর একটি মাধ্যম হিসেবে এতোদিন ব্যবহার করে থাকেন,
তাহলে সেই অভ্যাসকে বাদ দিন।এবংডিজিটাল মার্কেটিং-এ ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চাইলে মানুষের সাথে
স্মার্টলি যোগাযোগ করা শিখতে হবে। তাছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমে চাকরি পাওয়ায়ও এখন অনেক
সহজ। তাই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মানুষের সাথে সুন্দর যোগাযোগ তৈরী করে, এটিকে কাজে লাগাতে
শিখুন।তাহলে আপনার কাজের জন্য ভাল হবে।
9.ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য অল্প হলেও কোডিং সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে:
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে এইচটিএমএল বা ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে বেসিক জ্ঞান আপনার
ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সহায়তা করবে। এটি আপনাকে আরও একটু সমৃদ্ধ করে
তুলবে । আমি আবারও বলছি, আপনাকে যে একজন ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে না, এমনটি নয়।
কোন একটি ওয়েবসাইটের অ্যাডমিন প্যানেল কীভাবে কাজ করে কীভাবে ওয়েবসাইটকে আপডেট রাখা
যায়, এসব বিষয়ে মোটামুটি ধারণা থাকলেই ক্লায়েন্টের সামনে নিজের যোগ্যতাকে আরও একটু ফুটিয়ে
তুলতে পারবেন।
আজ অথবা কাল আমাদের চারপাশের সকল ব্যবসা-বাণিজ্যই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়বে। সেকারণে
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্ষেত্রে কর্মীর চাহিদা অদূর ভবিষ্যতে কমার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই ডিজিটাল
মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আজ থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং শুরু করে দিন। দেখবেন এমন
এক সময় আসবে আপনি বুঝতে পারবেন না যে আপনি সফল হয়ে গেছেন। তাই বলছি আজ থেকে শুরু
করুন।
ভাল থাকবেন।।
Comments (No)