শিরক ও আজকের সমাজ

শিরক ও আজকের সমাজ

শিরক ও আজকের সমাজ


পৃথিবীতে পাপ নামক যত প্রকারের কার্যক্রম রয়েছে তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর ও বড় পাপ হচ্ছে শিরক । শিরক সবচেয়ে বড় পাপ হওয়ার মূল কারণ হল এটা সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ও সত্তার প্রতি প্রভাব ফেলে। যা মহান আল্লাহ বরদাশত করতে পারেন না। এই পৃথিবীতে হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ) পর্যন্ত যে এক লক্ষ চবিবশ হাযার নবী ও রাসূল এসেছেন, তাঁদের মৌলিক প্রধান কাজ ছিল শিরক উৎখাত করতঃ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা। শিরক ও আজকের সমাজ 

তাঁরা প্রত্যেকেই আজীবন সর্বশক্তি প্রয়োগ করে শিরক মূল শিকড় উপড়ে ফেলার অবিরাম সংগ্রাম করে গেছেন। সাথে সাথে সমাজের সর্বস্তরে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তাঁদের তিরোধানের পর এ দায়িত্ব হক্বপন্থী আলেমদের উপর অর্পণ করে গেছেন। বড় পরিতাপের বিষয়, আজ সমাজের সর্বস্তরে শিরক জয়জয়কর চলছে। শিরক যেন একটি মামুলী ব্যাপার। মানুষ একে হালকা জ্ঞান করছে। ফলে অহরহ তারা অগণিত শিরক করলেও তাদের মাঝে অনুশোচনার কোন লক্ষণ নেই।

শিরক পরিচয় :

আরবী ‘শিরক ’ শব্দটি পবিত্র কুরআনে ও ছহীহ হাদীছে ব্যবহৃত বহুল প্রচলিত শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হল- অংশীদার বা শরীক হওয়া। আর কুরআন ও হাদীছে শিরক শব্দটি দ্বারা আল্লাহর রুবূবিয়াত, উলূহিয়াত ও আসাম ওয়াছ ছিফাতের মধ্যে কাউকে অংশীদার বানানোকে বুঝানো হয়েছে।

শিরক পারিভাষিক সংজ্ঞায় ডঃ ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মাদ বলেন, আল্লাহর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য তথা তাঁর জাত, গুণ ও প্রভুত্বে সমকক্ষ স্থাপন করা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কাউকে ইবাদত ও আনুগত্যের উপযুক্ত মনে করাই শিরক। ডঃ ছালেহ বিন ফাওযান বলেন, আল্লাহর উলূহিয়াত ও রুবূবিয়াতের ক্ষেত্রে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা। আল্লামা ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলে, শিরক হল আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ গ্রহণ করা এবং আল্লাহর মত তাকে ভালবাসা। Online Earning Tips

‘কিতাবুত তাওহীদ’ প্রণেতার মতে আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে আহবান করা, ইবাদতের মাধ্যম সাব্যস্ত করা কিংবা ইবাদতে অংশী স্থাপন করাকে শিরক বলে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শিরক পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আল্লাহর জন্য অংশীদার সাব্যস্ত করা, অথচ তিনি (আল্লাহ) তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’ (বুখারী, হা/৪২০৭)। মোট কথা শিরক হল প্রতিপালন, আইন, বিধান ও ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উলূহিয়্যাহ বা ইবাদতের ব্যাপারে অংশীদার সাব্যস্ত করা এভাবে যে, আল্লাহর সাথে অন্যকে আহবান করা অথবা বিভিন্ন প্রকার ইবাদতে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা। যেমন যবেহ করা, নযর বা মানত করা, ভয় করা, আশা করা এবং ভালবাসা।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ