সম্ভবত আফ্রিকায় অনুষ্টিত ফিফা বিশ্বকাপের ঘটনা। পল নামের কোন এক অক্টোপাস ভবিষ্যতবানি করেছিল যে স্পেন বিশ্বকাপ জিতবে! প্রথমে কেউ পাত্তা দেয়নি। পরে স্পেন যখন সত্যি বিশ্বকাপ জিতল সবাই তখন হুমড়ি খেয়ে পড়ল!
বাবা পলের দর্শন নেয়ার জন্য?
ভবিষ্যতবানি তো কতোজনেই করে। কারোর টা মিলে, কারোর টা মিলে না।
যাদেরটা মিলে তাদের ভাব, ” দেখলা মনু, মুই কইছিলাম না!”?
কিন্তু না মিললে……..?
এতো গেল আমাদের কথা! আমাদের পূর্বেও বেশ কয়েকজন মানুষ এমন কিছু ভবিষ্যতবানি করেছিলেন যেটা পরবর্তীতে হুবহু মিলে গিয়েছিল। ভবিষ্যতবানির ধরণ দেখলে মনে হবে তারা বিষয়টি বাস্তবে ঘটার অনেক আগেই জানতেন?
১৫৫৫ সালে নষ্টারামো নামের একজন ফরাসী জ্যেতির্বিদ ভবিষ্যতবানি করেন যে ১৮০০ সালের পর পশ্চিম ইউরোপের এক দরিদ্র পরিবারে এমন এক শিশু জন্ম নিবে, যে কথা দিয়ে মানুষকে মোহিত করবে। মানুষ তার কথায় সম্মোহিত হবে।”
কি ভাবছেন? ছেলেটার নাম চার্লি চ্যাপ্লিন?
নষ্টারামো আরো বলেছিলেন, ” ছেলেটা হবে এক নিষ্ঠুর শাসক! রক্তের বন্যায় পাপকে ধুয়ে দিবে সে।”
ছেলেটার নাম চার্লি চ্যাপ্লিন নয়! চার্লির জন্মের ঠিক চারদিন আগে জন্ম নেয়া সেই ছেলেটার নাম এডলফ হিটলার!
হিটলার যা করেছিল সবকিছুই প্রায় ৩০০ বছর আগেই জানিয়েছিলেন নষ্টারামো!
এমন কি “হিটলার” নামটাও!!
সাহিত্যিক এইচ জিম ফয়েলস ১৯১৪ সালে প্রকাশিত তার “The World Set free” বইয়ের একটা অনুচ্ছেদে লিখেছিলেন, “হিরোছীমা ও নাগা হবে পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টে জায়গা। শুধুমাত্র একটা নিকৃষ্ট আবিষ্কার এই নগরের মানুষের জীবন কেড়ে নিবে। বহু বছর জীবন ফিরে পাবেনা এই নগরী!”
ঠিক ৩০ বছর পর হিরোছীমা(হিরোসিমা) আর নাগায়(নাগাসাকী) কি হয়েছিল আমরা সবাই জানি। পরমানুর বোমার আঘাতে উড়িয়ে দেয়া এই দুটি শহরকে আজো পৃথিবীর নরক বলা হয়। আজো সেখানে প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নিয়ে মারা যায়। হয়তো তাই ঘটনার ৩০ বছর আগে ফয়েলস তার বইয়ে লিখেছিলেন, “বহুবছর জীবন খুজে পাবে না এই নগরী”……..
১৯০৯ সালে জর্জ ওয়েব তার “ডিজিটাল ডিটেক্টিভ” বইয়ে “সি” নামের এমন এক ডিটেক্টিভের কথা লিখেছিলেন যে অফিস থেকে থেকে শুরু করে বড় বড় ইন্ডাস্ট্রী পর্যন্ত সব জায়গায় নজরদারী করবে। কিন্তু তার অবস্থান হবে কোন এক দেয়ালে বা ছাদের সিলিং এ!
বেচারা জর্জ এই কথা লিখেই যেন বিপদে পড়ে গিয়েছিল। তাকে পাগল ভেবে লোকজন ধাওয়া করত। জর্জ বাইরে বের হলে, পাব্লিক তাকে দেখেই দৌড়ানি দিত।
আর জর্জ তখন………?
২১ শতকে এসে জর্জের সেই ডিটেক্টিভ সি এর আধুনিক নাম “সিসি ক্যমেরা”।
ক্যামেরার গঠন, কাঠামো থেকে শুরু করে কার্যপ্রণালি সবই ছিল ১০০ বছরের অনেক আগে লেখা সেই “ডিজিটাল ডিটেক্টিভ” বইয়ে!
১৮৩৫ সালে সাহিত্যিক মার্ক টোয়েনের জন্ম হয়। সেই বছর ওই দিনটিতেই আকাশে হ্যালির ধুমকেতু দেখা যায়। মার্ক টোয়েন এই ব্যাপারটি উল্লেখ করে বলেছিলেন, “যেদিন এই ধুমকেতু আবার দেখা যাবে, সেদিন আমার মৃত্যু হবে”! অবাক করার বিষয় ১৯১০ সালে যেদিন টোয়েন মৃত্যুবরণ করেন সেদিন রাতেই আকাশে দেখা দিয়েছিল হ্যালির ধুমকেতু!!
শুধু টোয়েন নয়! নিজের মৃত্যুর ১ সপ্তাহ আগেই মৃত্যুর ঘটনা স্বপ্নে দেখেছিলেন লিংকন!
এমন অনেক ভবিষ্যতবানি আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৪ সালের ভারত মহাসাগরের সেই রহস্যময় সুনামী, ৬৬ তে লন্ডনের ভয়াবহ অগ্মিকান্ড, আন্দালিপের আগ্নেয়গিরি ইত্যাদি ইত্যাদি! সবগুলো তানিম শাহরিয়ার এক স্ট্যাটাসে দিতে অপরাগ।
একটু প্রেম ভালবাসার কথাও বলার দরকার আছে। ?
প্রেম করেন অথচ টাইটানিকের কথা জানেন না এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কম। টাইটানিকের কিভাবে ডুবল সেটা না জেনে টাইটানিকের রোমানটিক সিন সম্পর্কে আমরা অনেক অনেক বেশী জানি?
কিন্তু টাইটানিক ডুবার ১৪ বছর আগেও এ ঘটনা জানতেন সাহিত্যিক মরগান!!
মরগান বিখ্যাত তার ছোট গল্পের জন্য। পুরো জীবনে ভদ্রলোক একটাই উপন্যাস লিখেছেন যার নাম “কিউটিলিটি: দা রেক অভ টাইটান”। তার উপন্যাসের কাহিনী অনুযায়ী, “বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ উত্তর আটলান্টিকে বরফে ধাক্কা মেরে ২৫০০ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। সেই ২৫০০ যাত্রীর মাঝে থাকে একটা অপরিপূর্ণ ভালবাসার গল্প…….”
১৪ বছর পর এই কাহিনীকে বাস্তবে রুপ দিয়ে টাইটানিকের পতন হয়!
এ যেন সিনেমা! আর রাইটার হলেন ১৪ বছর আগে বই লেখা মরগান!!
এখনও কয়েকজন চিন্তা করছে, “তাইলে মরগান যে ঘটনা জানত তার প্রমাণ কি?”
প্রমান ওই নাম?
টাইটানিকের নাবিকেরা তাদের দলিলে টাইটানিক কে “টাইটান” উল্লেখ করেছিলেন। আর ১৪ বছর আগে মরগান সেই গুপ্ত নামেই জীবনের প্রথম ও একমাত্র উপন্যাস লিখে ফেললেন!!?
রহস্য আছে তার উপন্যাসের নামেও। উপন্যাসটির নাম ছিল রেক অভ টাইটান। বাংলা করলে যার অর্থ দাঁড়ায়, “টাইটানের সমাধি” …………….
Comments (No)