খেজুরকে বলা হয় রাজকীয় ফল। শুধু অতুলনীয় স্বাদ আর গন্ধের জন্য নয়, খেজুরের খ্যাতি তার অসাধারণ রোগ নিরাময়ের জন্যও। প্রতি একশো গ্রাম খেজুরে মেলে ২৮২ কিলো ক্যালরি শক্তি, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট। গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ছাড়াও মেলে কিছু অত্যাবশ্যক ভিটামিন। এ ছাড়াও মেলে কিছু অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড। এত ঝলকে দেখে নেয়া যাক মিষ্টি ফল খেজুরের উপকারিতা—
• যেকোনো বয়সে রক্তাল্পতা দূর করতে খেজুরের জুড়ি মেলা ভার।
• বহু যুগ ধরেই কার্যকরী ল্যাক্সাটিভ হিসেবে খেজুর ব্যবহার করা হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ছাড়াও বদহজম, অ্যাসিডিটি এমনকি পাকস্থলির আলসারেও উপশম আনে খেজুর।
• রক্তে খারাপ কোলেস্টোরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। এ ছাড়া সোডিয়ামের মাত্রা (একশো গ্রামে মাত্র ২ মিলিগ্রাম) কম থাকায় এবং পটাসিয়ামের মাত্রা (প্রতি একশো গ্রামে ৬৫৬ মিলিগ্রাম) বেশি থাকায় হৃদযন্ত্রের পেশির সক্রিয়তা বাড়িয়ে তোলে খেজুর।
• উচ্চমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম থাকার কারণে শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করে খেজুর। স্নায়বিক দৌর্বল্যের সমস্যা কাটাতে খেজুরের জুড়ি মেলা ভার।
• বিভিন্ন রকমের ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে খেজুর।
• পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, তামা, ভিটামিন-কে, এসেনসিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড থাকায় নিয়মিত খেজুর খেলে বোন মেটাবলিজম ঠিক থাকে। অস্টিওপোরোসিসের আশঙ্কা কম থাকে।
• জৈব সালফার থাকার কারণে বিভিন্ন ভাইরাল, ফাঙ্গাল, ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ দূর করে খেজুর। বিভিন্ন ফুসফুসের সংক্রমণও মোকাবিলা করতে সাহায্য করে খেজুর।
এটি খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহকৃত রস। বেশ মিষ্টি। শীতকালে সংগ্রহ করা হয়। রস হতে পিঠা, গুড় ইত্যাদি তৈরি করা হয়। খেজুরের রস হতে তৈরি হয় গুড়। মিষ্টি জাতীয় খাবার। শীত কালে তৈরি হয় এবং সারা বছর ই পাওয়া যায়। প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।
বাংলাদেশে যে খেজুর হয় তাতে যথেষ্ট শাঁস থাকে না বলে অনেকেই এটা খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না। রসই খেজুর গাছের আসল আকর্ষণ। আশ্বিন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি) পর্যন্ত রস সংগ্রহ চলে। আবহাওয়া ঠান্ডা, আকাশ মেঘলা ও কুয়াশাময় থাকলে রস বেশী মেলে, স্বাদও বেশী থাকে। পৌষ-মাঘ মাসে (ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি) তাই সবচেয়ে বেশী রস পাওয়া যায়। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে রসের পরিমাণ ও মান কমতে থাকে।
গাছের বয়স ৫ বছর হওয়ার সময় থেকেই রস সংগ্রহ শুরু করা যায়। গাছের বয়স, এলাকা বা মাটির প্রকারভেদ ছাড়াও একই মৌসুমের বিভিন্ন সময় ও গাছের যত্নের ওপর নির্ভর করে কেমন ও কতটা রস পাওয়া যাবে সেই ব্যাপারটি। পুরুষ গাছ স্ত্রী গাছের চেয়ে বেশী রস দেয়। এর রসও স্ত্রী গাছের তুলনায় বেশী মিষ্টি হয়।
Comments (No)