কোন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আপনার জন্য: আপওয়ার্ক নাকি ফাইভার? ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যাদের সামান্য ধারণা আছে তারা নিশ্চয়ই আপওয়ার্ক, ফাইভার ও ফ্রিল্যান্সার ডট কমের মতো জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস -গুলোর নাম শুনেছেন। মার্কেটপ্লেস নামক এই ফ্রিল্যান্সিং সাইট -গুলোর কল্যাণে প্রতিদিন লাখ লাখ স্কিল্ড মানুষ নিজ যোগ্যতায় কাজ পাচ্ছে ও স্বাবলম্বী হচ্ছে । এই ব্লগে আমরা মূলত আলোচনা করবো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace) কি, আপওয়ার্ক ও fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায়, অন্যান্য কী কী ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট রয়েছে ও এই ফ্রিল্যান্সিং সাইট -গুলোতে কীভাবে নিজের মার্কেটিং করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace) কি?
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace) বলতে কিছু অনলাইন ওয়েবসাইট বোঝায় যার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টরা একে অপরের সাথে কানেক্টেড হতে পারেন। একজন ফ্রিল্যান্সার নিজেদের কাজের স্যাম্পল দিয়ে প্রােফাইল তৈরি করেন, ক্লায়েন্টরা চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকেন। এসব বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তি কাজ পান। যেকোনাে দেশ থেকে ক্লায়েন্ট পেমেন্ট করে দিতে পারেন এবং একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারেন।
বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট -গুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ক্লায়েন্টরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজটি করানোর জন্য ঐ কাজটিতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ফ্রিল্যান্সার খোঁজ করে থাকেন। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য কোনো একজন ক্লায়েন্ট জব পোস্ট করে থাকেন। সেই কাজটি করতে আগ্রহী বিশ্বের নানা দেশের ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে থেকে তার কাজটি করার জন্য যোগ্য ফ্রিল্যান্সারকে খুঁজে তাকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নেন।
আবার অনেকসময় ক্লায়েন্টরা পোস্ট না দিয়ে এমনিই ফ্রিল্যান্সারদের প্রোফাইল ঘেঁটে তাদের কাজ দেন৷
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস -কে বলা চলে ক্লায়েন্ট ও ফ্রিল্যান্সারের মিলনমেলা। নিচের ইনফোগ্রাফিকের মাধ্যমে পরিচিত হই, আমাদের বহুল পরিচিত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলাের সাথে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রত্যেকে একটি বড় সময় নষ্ট হয় কোথায় শিখবে, কী শিখবে এসব ভেবে। অথচ যদি শুরুতেই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট বা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রিসার্চ করা যায় তাহলে অনেক কম সময় ব্যয় হয়।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace) প্লাটফর্মের মধ্যে রয়েছে :
- আপওয়ার্ক (Upwork)
- ফাইভার (Fiverr)
- ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.com)
- পিপল পার আওয়ার (People Per Hour)
- নাইনটি নাইন ডিজাইনস (99designs)
- গুরু ডটকম (Guru.com)
- বিল্যান্সার (Belancer)
এছাড়াও আরাে অনেক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace) রয়েছে যেখানে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করেন। প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মের কাজের ধরন আলাদা এবং একেক প্ল্যাটফর্মে কাজ করা ফ্রিল্যান্সাররাও একেকরকম।
আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেন, “আপু, আপনি আপওয়ার্ক -এ (Upwork) কেন কাজ করেন?”, “fiverr এ কি কি কাজ পাওয়া যায়?”, আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস -এ কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবােধ করবেন এবং যেটা আপনার কাছে সহজ লাগবে, সেই মার্কেটপ্লেস -এই কাজ করা দরকার আপনার। আমার ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। আমার আপওয়ার্ক ভালাে লাগে, তাই এখানেই কাজ করি। আজকের এই ব্লগে আমরা মূলত আপওয়ার্ক ও ফাইভার -এর মতো বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট কিংবা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আলোচনা করবো।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ১: আপওয়ার্ক (Upwork)
প্রায় ১২ মিলিয়নেরও অধিক নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হচ্ছে আপওয়ার্ক। এখানকার জব পোস্টিং ফিড অনেক দ্রুত আপডেট হয়। মাইক্রোসফট, অটোম্যাটি, ড্রপবক্সের মতন বড় বড় প্রতিষ্ঠানও এখানকার ক্লায়েন্ট।
আপওয়ার্ক ক্লায়েন্ট এবং ফ্রিল্যান্সার উভয়ের জন্যই একে অপরকে খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারটা সহজ করে দেয়। প্রতিটি ফ্রিল্যান্সারকে প্রাথমিকভাবে তাদের পারিশ্রমিকের ২০% ফিও আপওয়ার্ক -এর সাথে ভাগ করে নিতে হয়। একই ক্লায়েন্টের সাথে বারবার কাজ করলে সেই ফি হ্রাস পায়৷
আমার মতে ফ্রিল্যান্সিং সাইট- গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন প্ল্যাটফর্ম হলো আপওয়ার্ক এবং এখানে কাজ করার জন্য প্রফেশনালিজম খুব জরুরি। একটি স্কিলের ৪০% জেনে আপনার মােটেও আপওয়ার্ক -এ কাজ করার জন্য প্রোফাইল বানানো উচিত হবে না। এখানে কাজ করার আগে আপনাকে কয়েকটি ধাপ পার করতে হবে এবং সেই ধাপ পার করলেই আপনার এখানে প্রােফাইল করা ঠিক হবে।
আপওয়ার্ক -এ প্রােফাইল বানানাের আগে কী কী করতে হবে?
প্রােফাইল বানানাের আগে নিচের বক্সে থাকা ডিটেলসগুলাে আমাদের আছে কি না তা চেক করতে হবে:
হ্যাঁ | না | |
পাের্টফলিও আছে? | ||
ভােটার আইডি অথবা পাসপাের্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে? (ভেরিফিকেশনের জন্য) | ||
যে বিষয়ে কাজ চাইছি, সে কাজের সম্পর্কে ওভারভিউ লেখা আছে? | ||
প্রোফাইল টাইটেল সিলেকশন হয়ে গেছে? | ||
প্রােফাইল পিকচার তোলা আছে? | ||
স্কিল সর্টিং করা আছে? |
এই সব কিছু রেডি হলেই আপনি আপওয়ার্ক -এ প্রােফাইল বানানাের জন্য তৈরি। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার প্রােফাইল তারা অ্যাপ্রুভ করে দেবে।আপওয়ার্ক -এ কাজ করতে হলে আপনার প্রােফাইল অবশ্যই অ্যাপ্রুভড হতে হবে। না হলে আপনি কাজ করতে পারবেন না। প্রোফাইল প্রফেশনাল না হলে অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভাল নাও পেতে পারে। কারণ তাদের প্রােফাইলে প্রফেশনালিজম থাকে না। আপনি একজন প্রফেশনাল, এটি আপনার প্রােফাইল দেখে আমাকে বুঝতে হবে।
আপওয়ার্ক -এর কানেক্ট কী? কীভাবে ব্যবহার করবেন?
কানেক্ট হচ্ছে আপওয়ার্ক -এ আবেদন করার কারেন্সি। যখন আপনি জবের জন্য অ্যাপ্লাই করবেন তখন এই কারেন্সি কেটে নেয়া হবে। একদম শুরুতে আপনাকে ২০টি কানেক্ট পাবেন। কোনাে কোনো জবে আপনার ৬টি কানেক্ট প্রয়োজন হবে, আবার কোনাে জবে ৪ বা ২টি। কিছু ক্ষেত্রে আপনি জবটি না পেলে আবেদনের কারেন্সি ফেরত দেয়া হয়। কিন্তু আবেদন করার সময় অনেক সচেতন হয়ে আবেদন করা উচিত, যাতে আপনার সীমিত কারেন্সি নষ্ট না হয়।
তাছাড়া আপওয়ার্ক -এ এখন ডিরেক্ট কনট্যাক্ট অপশন আছে যার মাধ্যমে আপনি বাইরে থেকে ক্লায়েন্ট এনে কাজ নিয়ে সেই পেমেন্ট নিতে পারবেন। এর জন্য আপনার হয়তাে ৩% অতিরিক্ত চার্জ প্রয়োজন হবে, কিন্তু আপওয়ার্ক -এর মাধ্যমে কাজ করলে আপনার পেমেন্ট নিরাপদ থাকবে। আপওয়ার্ক -এ এখন বর্তমানে প্রত্যেক পেমেন্টের ২০% টাকা কেটে রাখে।
আপওয়ার্ক (Upwork) -এ কাজের ধরন:
এখানে আপনি ২ ধরনের জব করতে পারবেন:
আপওয়ার্ক -এ ঘণ্টাভিত্তিক (Hourly) কাজ:
যদি আপনি ঘণ্টাভিত্তিক কাজ করেন তার মানে প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্য আপনি পেমেন্ট পাবেন এবং এই পেমেন্ট ট্র্যাক করা হয় টাইম ট্র্যাকার দিয়ে। টাইম ট্র্যাকার প্রতি ১৫ মিনিট পরপর স্ক্রিন ক্যাপচার করে এবং আপনি কাজ করছেন কি না তা ট্র্যাক করে। এতে আপনার টাইপিং স্পিড এবং অ্যাকটিভিটি মনিটর করা যায়, যার দ্বারা আপনার কাজের গতি বুঝতে ক্লায়েন্টের সুবিধা হয়। প্রতি রবিবার এই ট্র্যাকিং শেষ হয় এবং বুধবারের মধ্যে বিলিং হয়। আপনি পরবর্তী শুক্রবার টাকা তুলতে পারবেন।
আপওয়ার্ক -এ ফিক্সড প্রাইস (Fixed Price) কাজ:
ফিক্সড প্রজেক্টের জন্য আপনি নিজের সুবিধামতো কাজ করে থাকেন। ক্লায়েন্ট আপনার জন্য মাইলস্টোন সেট করে দেবেন, সেই ডেডলাইন ধরে কাজ জমা দিতে হবে। ফিক্সড প্রাইসের কাজে পেমেন্ট পেতে ১৪ দিন সময় লাগে যাতে ক্লায়েন্ট আপনার কাজ চেক করে বুঝে নিতে পারেন।
আপওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত আরও কিছু তথ্য:
আপওয়ার্ক -এ আপনি প্রত্যেক স্কিলের জন্য আলাদা Specialized Profile করতে পারবেন। যেমন ধরুন, আপনি মার্কেটিং করেন। এতে আপনার মূল প্রোফাইলে মার্কেটিং থাকলেও সম্পূর্ণ আলাদা কোনো স্কিলের জন্য পাশেই একই প্রােফাইলে Specialized Profile তৈরি করতে পারবেন।
- নতুন স্কিলের জন্য আপনাকে এখন আর নতুন প্রােফাইল তৈরি করতে হবে না। আপওয়ার্ক বা অন্য যেকোনাে প্লাটফর্মে আপনি একের অধিক প্রােফাইল করতে পারবেন না। আপওয়ার্কে ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার প্রােফাইলের নাম ও ভােটার আইডের নাম অবশ্যই এক হতে হবে।
- Rising Talent, Top rated, Top rated plus, Expert- Vetted এগুলাে আপওয়ার্ক -এর কিছু ব্যাজ। আপনি যখন কাজ করবেন এবং ক্লায়েন্ট আপনাকে ফিডব্যাক দেবে, তখন আস্তে আস্তে আপনি এই ব্যাজগুলো পেতে প্রয়োজনীয় ক্রাইটেরিয়াগুলো পার করে যাবেন।
- বাংলাদেশ থেকে আপওয়ার্ক -এ কাজ করতে গেলে অনেকেই ভাবে প্রােফাইল অ্যাপ্রুভ করানাে কঠিন। কিন্তু না, আপনি যে কাজ পারেন তা যদি সুন্দর করে আপনার প্রােফাইলে উপস্থাপন করেন, তাহলে কাজ নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।
- যেকোনো বিষয়ে সমস্যায় পড়লে আপনি আপওয়ার্ক কমিউনিটিতে সার্চ করে নিতে পারেন। এখানে আপনি সব গাইডলাইন পাবেন। আর তাও না পেলে আমাদের কোর্স তাে আছেই।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ২: ফাইভার (Fiverr)
অনলাইনে নানান কাজ করে অর্থ উপার্জন করার একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হলো ফাইভার। লোগো ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, আর্টিকেল লেখা, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, এস.ই.ও, এন্ড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন, গ্রাফিকস ডিজাইন ইত্যাদি কাজ এখানে করতে পারবেন।
এখানে যেকোনো কাজ করানোর জন্য সর্বনিম্ন ৫ ডলার পেমেন্ট করতে হবে। ফ্রিল্যান্সার কাজ সম্পন্ন করে জমা দেওয়ার পরে ফাইভার থেকে পেমেন্ট পেয়ে যাবে। এর জন্য ফাইভার প্রতি ৫ ডলারে ১ ডলার নিয়ে থাকে।
প্রতিদিন হাজার হাজার বায়ার ফাইভারে তাদের কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। আপনার যদি ভালো কিছু দক্ষতা থাকে এবং একাউন্টে ভালো রেটিং ও রিভিউ জমাতে পারেন তাহলে ফাইবারেই ক্যারিয়ার গড়া যুক্তিসঙ্গত।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হিসেবে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত নাম ফাইভার (Fiverr)। ধরুন, আপনি একদম নতুন। আপনি কিছু ছােটো ছোটো কাজ পারেন। হতে পারে শুধু আপনি ডাটা এন্ট্রি (Data Entry) জানেন। ফাইভারে আপনার জন্যেও কাজ আছে। ফাইভার হচ্ছে গিগ বেজড প্লাটফর্ম। এখানে কাজ করার জন্য আপনাকে আপনার সার্ভিস সম্পর্কে গিগ বানাতে হবে।
ফাইভার -এর গিগ কী? (What is a Fiverr gig?)
আপনি যখন কোনাে দোকানে যান এবং দোকানে অনেক রকমের আইটেম সাজানাে দেখেন। তারপর সেখানকার পণ্য বা সার্ভিস পছন্দ হলে আপনি কেনেন। ফাইভারের গিগ অনেকটা দোকানের মতোই। আপনাকে আপনার সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে একটি গিগ বানাবেন। সম্ভাব্য ক্রেতার যদি আপনার গিগ দেখে পছন্দ হয়, তবে তিনি আপনাকে কাজ দেবেন। আপনি ইউটিউব দেখে খুব সহজেই গিগ বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
ফাইভার সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য
ফাইভারে কাজ পাওয়ার জন্য গিগ এবং Buyer Request নামে দুইটি অপশন থাকে। গিগ সম্পর্কে তো আগেই বলা হয়েছে। বায়ার রিকোয়েস্ট অপশনে বায়ার কী ধরনের কাজ প্রয়োজন সে সম্পর্কে লিখে দেয়, এই ব্রিফ পড়ে ফ্রিল্যান্সারকে কাজটির জন্য অ্যাপ্লাই করতে হয়।
এই স্ক্রিনশটে আপনি ফাইভার প্রােফাইলের একটি অংশ দেখতে পাচ্ছেন। কোনো বায়ার আপনাকে মেসেজ পাঠালে তা মেসেজ অপশন থেকে, অর্ডার করলে তা অর্ডার সেকশনে এবং আপনার পারফরম্যান্স মেট্রিকস অ্যানালিটিকস সেকশনে দেখতে পারবেন। কমিউনিটিতে আপনি নানা রকমের তথ্য, ব্লগ এবং কোর্স দেখতে পাবেন।
গিগ বানানাের সময় মনে রাখতে হবে, কীওয়ার্ড ও কভার ইমেজ যাতে সুন্দর হয়। এতে করে অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনি চাইলে আপনার গিগ এ আপনার পাের্টফলিও প্রােফাইল যোগ করে রাখতে পারেন। যেমন, অনেক ডিজাইনার তাদের গিগে তাদের বিহ্যান্স প্রোফাইল লিংক করেন, অনেক কনটেন্ট রাইটার তাদের পোর্টফোলিও ব্লগ লিংক করে রাখেন।
কোনাে প্লাটফর্মেই আপনি আপনার ক্লায়েন্টকে প্ল্যাটফর্মের বাইরে যোগাযোগ করতে বলতে পারবেন না এবং যােগাযােগের কোনাে তথ্য শেয়ার করতে পারবেন না। তাহলে আপনি ব্যান হয়ে যেতে পারেন।
আপওয়ার্ক নাকি ফাইভার?
ফাইভার ও আপওয়ার্ক দুটোই ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস হলেও, দুইটার মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যগুলোই আপনাকে বলে দিবে যে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার কোন মার্কেটপ্লেসে যাওয়া উচিত।
ফাইভার | আপওয়ার্ক | |
পেমেন্ট অনুযায়ী কাজের ধরন | ফিক্সড প্রাইস (Fixed Price) কাজ | ঘণ্টাভিত্তিক (Hourly) কাজ এবং ফিক্সড প্রাইস (Fixed Price) কাজ |
মেম্বারশিপ ফি | ফ্রি | বেসিক (ফ্রি) ও প্লাস (প্রতি মাসে ১৪.৯৯ ডলার) |
সার্ভিস চার্জ | প্রতি ট্রানজিকশনের জন্য ২০% | লাইফটাইম বিল হিসেবে প্রতি ক্লায়েন্টের জন্য:প্রথম ৫০০ ডলারে: ২০%৫০০.০১ থেকে ১০,০০০ ডলারে: ১০%১০,০০০ এর বেশি ডলারে: ৫% |
আকর্ষণীয় ফিচার | ইন-হাউজ কোর্স এবং ব্যাজএডভান্সড অপশনকাস্টমাইজেবল অতিরিক্ত গিগ | ওয়ার্ক ডায়েরিপ্রজেক্ট ক্যাটালগবিল্ট-ইন রেফারেল (বেটা ফিচার) |
কাস্টমার সাপোর্ট | কমিউনিটি ফোরামইমেইল সাপোর্ট | কমিউনিটি ফোরাম (সাথে থাকবে আপওয়ার্ক মডারেটর)ইমেইল সাপোর্টফোন সাপোর্ট (এন্টারপ্রাইজ ক্লায়েন্টদের জন্য) |
পেমেন্ট প্রটেকশন | চার্জব্যাক এবং সেলার প্রটেকশন | ঘন্টাপ্রতি এবং ফিক্সড প্রাইস পেমেন্ট প্রটেকশন |
ফ্রিল্যান্সার প্রোগ্রাম | নতুন সেলারলেভেল ১লেভেল ২টপ রেটেড সেলারফাইভার প্রো | রাইজিং ট্যালেন্টএক্সপার্ট-ভেটেডটপ রেটেডটপ রেটেড প্লাসট্যালেন্ট স্কাউট (নতুন) |
যাদের জন্য ভালো | যেসব ফ্রিল্যান্সাররা অন-ডিমান্ড সার্ভিস, ফিক্সড রেট পেমেন্ট এবং কাজের প্রতি সম্পূর্ণ দখল রাখতে চান। | যেসব ফ্রিল্যান্সাররা ক্লায়েন্টদের সাথে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক রাখতে চান, ঘন্টা এবং ফিক্সড রেট পেমেন্ট পেতে চান, ভালো ক্লায়েন্ট কোলাবোরেশান এবং রেসপন্সিভ কাস্টমার সাপোর্ট পেতে চান। |
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ৩: ফ্রিল্যান্সার ডট কম(Freelancer.com):
এই ওয়েবসাইটটি ছোট ব্যবসার জন্য সেরা। যাদের ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, লোগো ডিজাইনিং, লেখা এবং বিপণন সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে দক্ষতা আছে বা সাহায্যের প্রয়োজন তারা এখানে এসে খোঁজ করেন। ফ্রিল্যান্সার ডটকম একটি প্রথম সারির অনলাইন ভিত্তিক জব মার্কেটপ্লেস।
এখানে ফিক্সড প্রাইস প্রজেক্টের পাশাপাশি আওয়ারলি রেটের প্রজেক্ট পাওয়া যায়। এখানে প্রায় সব ধরনের অনলাইন জব রয়েছে, এবং প্রচুর ফ্রিল্যান্সার এখানে কাজ করেন।
ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করা খুব সহজ। আপনাকে কেবল পূর্ববর্তী কাজের উদাহরণ আপলোড করতে হবে, কাজের জন্য বিড করতে হবে এবং এরপরে আপনি নিয়োগকারীদের সাথে চ্যাট করতে পারবেন। তবে নতুনদের কাছে এই ওয়েবসাইটটিতে কাজ করা একটু কঠিন মনে হতে পারে। কারণ প্রথম অবস্থায় প্রজেক্ট শেষ করার পর এখানে অতিরিক্ত কিছু ফি প্রদান করতে হয়। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য উপার্জিত অর্থের ১০ থেকে ২০% টাকা কোম্পানী নিজে নিয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট ৪: পিপল পার আওয়ার (People Per Hour):
অনলাইনে আয় করার অন্যতম জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট হলো পিপল পার আওয়ার। এটি লন্ডন, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান। এখানে ঘন্টা প্রতি রেটের পাশাপাশি ফিক্সড প্রাইস প্রজেক্ট পাওয়া যায়। এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতা খুব বেশি। প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য সর্বনিম্ন ২০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। আয় করা টাকার ১৫% থেকে ২০% প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে নেয়।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট ৫: নাইনটি নাইন ডিজাইনস (99designs):
যারা ডিজাইন সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চান, তাদের কাছে ৯৯ডিজাইনস খুবই প্রিয় একটি ওয়েবসাইট। ক্লায়েন্টরা এখানে পেশাদার গ্রাফিক ডিজাইনারদের কাছে থেকে অর্থের বিনিময়ে লোগো, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করিয়ে নেন।
এখানে ডিজাইন কিনতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা তাদের কেমন ডিজাইন লাগবে, তা বিস্তারিতভাবে লিখে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। ডিজাইনাররা ক্লায়েন্টের চাহিদা পূরণ করার জন্য সেই অনুযায়ী ডিজাইন সাবমিট করেন। ক্লায়েন্ট তার পছন্দসই ডিজাইনটি কিনে নেয় এবং ডিজাইনারকে পূর্বনির্ধারিত পরিমাণ অর্থ প্রদান করেন।
ফ্রিল্যান্সিং সাইট ৬: গুরু ডটকম (Guru.com):
গুরু ডটকম একটি অ্যামেরিকান ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট। এখানে পোস্ট করা কাজগুলোর বাজেট সাধারণত ১০ থেকে ২০০ ডলারের ভেতর হয়ে থাকে। প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার পর ক্লায়েন্ট প্রদত্ত টাকার ৪.৯৫% হতে ৮.৯৫% টাকা প্লাটফর্মটি কেটে নেয়।
ফ্রিল্যান্সিং সাইট ৭: বিল্যান্সার (Belancer):
বিল্যান্সার বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট। এখানে বিভিন্ন ধরণের দেশি প্রজেক্ট পাওয়া যায়। বায়ার এখানে পোস্ট দিবেন এবং ফ্রিল্যান্সাররা সে কাজের জন্য বিড করবেন। আবেদনের তালিকা থেকে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং পোর্টফোলিও দেখে সেরা কর্মী বাছাই করবেন নিয়োগদাতা।
নতুন কোনো কাজ পোস্ট করার সময় নিয়োগদাতার কাছ থেকে মোট কাজের সমপরিমাণ টাকা তাঁর বিল্যান্সার অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। কাজ বুঝে পেলে তিনি কর্মীকে তার কাজের জন্য সেখান থেকে টাকা পরিশোধ করে দিতে পারেন। এতে কর্মী ও নিয়োগদাতা, উভয়ই আর্থিক প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পান। বিল্যান্সারে আয়ের উৎস দুই পক্ষই। কর্মী ও নিয়োগদাতা উভয়ের কাছ থেকে ৫ শতাংশ কেটে রাখা হয়।
ফ্রিল্যান্সার হওয়ার সুবিধা অনেক। যখন-তখন কাজে বসা যায়, প্যারা নাই চিল একদম! কিন্তু যদি নিজের গড়িমসি স্বভাবের কারণে ক্লায়েন্ট হাতছাড়া হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু প্যারা আছে! এরকম ঘটনা এড়ানোর জন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইট -এ এখনই নিজের কাজগুলো তুলে ধরুন। যত বেশি মানুষ আপনার কাজ সম্পর্কে জানবেন, আপনি তত বেশি কাজের অর্ডার পাবেন। এসব মার্কেটপ্লেসে নিজের মার্কেটিং করার কিছু সুনির্দিষ্ট উপায় আছে।
কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে নিজের মার্কেটিং করবেন
“এই দ্যাখ দ্যাখ, মেয়েটা কীভাবে নিজের কাজের ঢোল নিজেই পেটাচ্ছে! ভালো কাজ করলে তো অন্যরাই তার প্রচার করবে। এভাবে নিজের গুণগান নিজেই গাওয়ার কী হলো?” আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হোন এবং ফেসবুকে প্রায়ই নিজের কাজের আপডেট দিয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই কখনো না কখনো কানে এসব কথা ভেসে এসেছে?
এখনকার যুগ প্রচারের যুগ। প্রচারেই প্রসার, এই কথাটি নিশ্চয়ই শুনেছেন। পণ্য যেমনই হোক না কেন, প্রচার বা মার্কেটিং এর কারণে পণ্যের বার্তা সহজেই ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যায়। আর এ কারণেই কিন্তু এখন সব প্রতিষ্ঠান তাদের মার্কেটিং এর উপরেই বেশি জোর দিচ্ছে। পণ্য প্রচারের জন্য না হয় মার্কেটিং টিম আছে, কিন্তু নিজের মার্কেটিং কে করবে?
আমরা কেন জানি নিজের কাজের প্রচারে ভীষণ লজ্জা বোধ করি। কিন্তু নিজের ভালো কাজ অবশ্যই নিজেকেই প্রচার করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং মূলত কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে স্থায়ী না থেকে নিজের মত স্বাধীনভাবে কাজ করা।
একজন ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে ক্লায়েন্ট বা বায়ার তার প্রয়োজনীয় কাজ নির্ধারিত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে করিয়ে নেওয়ার মাধ্যমই হলো ফ্রিল্যান্সিং সাইট বা মার্কেটপ্লেস।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন:
কোথাও আবেদন করতে গেলে আগে চাকরিদাতা সিভি চাইতেন, এখন সবাই সিভির সাথে পোর্টফোলিওটাও দেখতে চান। আর ফ্রিল্যান্সিং জগতে তো পোর্টফোলিও ছাড়া ক্লায়েন্ট কাউকে দিয়ে কাজই করাতে চান না। পোর্টফোলিও হলো আপনার যাবতীয় উল্লেখযোগ্য কাজের একটি সংকলন।
আপনি যেসব বিষয়ের উপর কাজ করেছেন, সেগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা বা ভিজ্যুয়াল পোর্টফোলিওর মাধ্যমে তৈরি করা হয়। একটি পোর্টফলিও আপনার প্রফেশনাল দক্ষতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার একটি বড় প্রমাণ। একজন সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট এর মাধ্যমে আপনার কাজের মান ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পান।
পোর্টফোলিও নানান উপায়ে তৈরি করা গেলেও একটা ডোমেইন কিনে একান্ত নিজের জন্য একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে নেওয়াই শ্রেয়। এখানে আপনি নিজের মতো বিভিন্ন কাজ আলাদা আলাদা সেকশনে তুলে ধরতে পারবেন। ক্লায়েন্টরা এমন কাউকেই কাজ দেয় যাদের পোর্টফোলিও দেখে তাদের কাজের স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়। অর্থাৎ নিজের একটা ওয়েবসাইট থাকলে তা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনাকে খুঁজে পাওয়া লোকের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলবে।
ওয়েবসাইট তৈরি করুন:
একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব জটিল কিছু নয়। Wix এবং Leadpages-এর মতো ওয়েবসাইট নির্মাতারা আপনাকে সুন্দর টেমপ্লেট ব্যবহার করে কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি পোর্টফোলিও সেট আপ করতে সাহায্য করতে পারে। একবার আপনি আপনার পছন্দের একটি টেমপ্লেট বেছে নিলে, এটিকে সংশোধন করা ও আপনার নিজস্ব তথ্য যোগ করা বাকি থাকে।
সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের নজর কাড়তে একটি দুর্দান্ত উপায় হলো আপনার কাজ জনসমক্ষে শেয়ার করা। এর মধ্যে ওপেন সোর্স প্রজেক্ট, স্বেচ্ছাসেবক কাজ এবং আপনার হাতে নেওয়া সাইড প্রোজেক্টে কাজ করাও অন্তর্ভুক্ত। সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের জন্য শুধুমাত্র আপনার কাজ অনলাইনে শেয়ার করাই আপনার দক্ষতা দেখাবে না বরং আপনার সৃজনশীলতা এবং উদ্যোগও দেখাবে।
আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্স লেখক হোন তবে আপনার ওয়েবসাইটে ব্লগ লেখা শুরু করতে পারেন এবং সেই ব্লগগুলো আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে ক্রস-পোস্ট করুন। আপনি যদি একজন শিল্পী হয়ে থাকেন, তাহলে নিজেই সুন্দর করে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে লোগো ডিজাইন করতে পারেন।
আবার ব্লগ সেকশন তৈরি করে কী কী শিখছেন, নতুন কোথায় কাজ নিয়েছেন এসব নিয়েও ব্লগ লিখতে পারেন। একইসাথে আপনার সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া লিংক, যোগাযোগের তথ্য, ব্যক্তিগত প্রকল্প, অভিজ্ঞতা তুলে ধরুন এবং আপনার সম্পর্কে কিছু লিখে রাখুন। আপনার ব্লগ যত বেশি সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO) ফোকাস করবে, তত বেশি ট্রাফিক পাবে। আপনার ব্লগকে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এবং ওয়েবসাইটের সাথে লিঙ্ক করতে ভুলবেন না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকুন:
এই যুগে আমরা সবাই কোনো না কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকি। আপনি কি জানেন, এই মাধ্যমগুলো এখন এত জনপ্রিয় যে বিশাল ব্যবসা এবং স্টার্টআপগুলো একইভাবে তাদের বিপণনের জন্য এগুলো ব্যবহার করে? ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো আপনার মার্কেটিং বৃদ্ধির সুযোগ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকার কয়েকটি সুবিধা হলো:
- নিজ ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি
- নেটওয়ার্কিং
- কমিউনিটি তৈরি
- ক্লায়েন্টদের কাছে প্রসার
- একধরনের পোর্টফোলিও তৈরি
সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের নজর কাড়তে একটি দুর্দান্ত উপায় হলো আপনার কাজ জনসমক্ষে শেয়ার করা। এর মধ্যে ওপেন সোর্স প্রজেক্ট, পেইড-আনপেইড কাজ, হাতে নেওয়া সাইড প্রোজেক্ট- সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। আপনি যদি নিজের কাজগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন তাহলে আপনার বন্ধুতালিকায় থাকা সবাই আপনার কাজ সম্পর্কে অবগত হবে। হতে পারে আপনার পরবর্তী ক্লায়েন্ট তারা বা তাদের সুপারিশ করা কোনো একজন!
লিংকডইনে নিয়মিত আপডেট দিন:
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য গতবছর নিজেদের প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস মার্কেটপ্লেস চালু করেছে লিংকডইন। একটি আধুনিক ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে যেসকল ফিচার থাকার কথা, সেগুলো এই নতুন মার্কেটপ্লেসটিতে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে লিংকডইন কতৃপক্ষ। এছাড়াও লিংকডইন সম্ভাব্য কাজ প্রার্থীদের সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ করতে, চাকরির বিজ্ঞাপন দিতে এবং যারা চাকরি খুঁজছেন তাদের কাজ খুঁজে পেতে সহায়তা করতে নিয়োগকারীদের প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থা করেছে।
লিংকডইনের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্র্যান্ড বুস্ট করতে পারবেন, ব্যক্তি এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন। ব্যবসা বা যেকোন প্রচারণা লিংকডইনের মাধ্যমে খুব দ্রুত ভাবে করা যায়। দ্য ব্যালেন্স ক্যারিয়ারের একটি নিবন্ধ অনুসারে, নিয়োগকারী পরিচালকরা সম্ভাব্য চাকরি প্রার্থীদের সন্ধানের জন্য লিংকডইন ব্যবহার করে।
একটি লিংকডইন প্রোফাইল থাকার মাধ্যমে আপনি নতুন ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করতে পারবেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মতোই একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারবেন। এটি আপনার অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, কর্মজীবনের টাইমলাইন এবং আপনার ক্যারিয়ার সম্পর্কে আরও অনেক বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করার একটি জায়গা।
বিভিন্ন ফোরাম সাইটগুলোতে যুক্ত হোন:
রেডিট, কোরা, টাম্বলার, মিডিয়াম, ডিসকোর্ড এগুলোর নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? এগুলো হলো একেকটা ফোরাম সাইট। ফোরাম সাইট হলো একটি আলোচনার ওয়েবসাইট, যেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ থাকে বা নির্দিষ্ট নিশ অনুযায়ীও ফোরাম পোস্টিং হতে পারে। কোরা’র মতো জনপ্রিয় সাইটগুলোর প্রশ্নের দারুণ সব উত্তর দিন। যত বেশি মানুষ আপনার উত্তর দেখবে, তত বেশি মানুষ আপনার কাজ সম্পর্কে জানতে পারবে।
ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে নেটওয়ার্কিং। মনে রাখবেন, ক্লায়েন্টের সাথে যত ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ততো বেশি মসৃণ হবে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন প্রতিটি ক্লায়েন্টের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস (Freelancing Marketplace) সম্পর্কে যা না জানলেই নয়
- সব সময় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে নিজেকে গুছিয়ে রাখা ভালাে এবং এজন্য আপনাকে কিছু ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। যেমন: গুগল ড্রাইভের সফটওয়্যার এবং Slack, Trello এগুলাের ব্যবহার জানতে হবে। যাতে আপনি আপনার ক্লায়েন্টের কাজের প্রসেসের সাথে সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারেন। তাছাড়া টেকনোলজি সম্পর্কে আপডেটেড থাকলে ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিতে ভরসা পাবেন।
- ফ্রিল্যান্সিংয়ে টাইমিং EST মেইনটেইন করে এবং এই সময়ে বেশি কাজ পাওয়া যায়।
- ক্লায়েন্টের পেমেন্ট ভেরিফাইড কি না তা সবসময় দেখে নেয়া উচিত। বিশেষ করে আপওয়ার্কে জবে অ্যাপ্লাইয়ের আগে অবশ্যই দেখে নেবেন।
- আপওয়ার্কে কোনাে জব পাওয়ার আগে আপনার ক্লায়েন্টের সাথে কোনাে পারসােনাল কন্ট্যাক্ট ইনফরমেশন শেয়ার করা যাবে না।
- বড়ো প্রজেক্টের ক্ষেত্রে সবসময় ক্লায়েন্টের সাথে ইন্টারভিউ সাজেস্ট করা উচিত। কাজের আগে সময় নিয়ে বুঝে নেয়া ভালাে যাতে আপনার কাজটি যথাযথ হয় এবং আপনার রিভিউ ভালো থাকে। কিছুটা সময় নিয়ে ইন্টারভিউ করলে তা পরবর্তীতে আপনার ও ক্লায়েন্টের দু’জনেরই সময় বাঁচাবে।
- আপওয়ার্কে এবং ফাইভারে কিছু ব্যাজ থাকে ফ্রিল্যান্সারের কাজকে রেট করার জন্য। আপওয়ার্ক -এ টপ রেটেড এবং রাইজিং ট্যালেন্ট ব্যাজ থাকে। এসব ব্যাজ পাওয়ার কিছু নির্ধারিত ক্রাইটেরিয়া থাকে এবং আপনি ভালাে কাজ করে এই ব্যাজগুলো অর্জন করতে পারবেন। বলাই বাহুল্য, এসব ব্যাজ আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়।
- প্রত্যেক কাজের জন্যই আপওয়ার্কে জব সাকসেস রেট থাকে। ফাইবারে ফ্রিল্যান্সারকে রেট করার জন্য লেভেল থাকে। লেভেল ওয়ান, লেভেল টু এবং টপ রেটেড সেলার। সাকসেস রেট এবং রেসপন্স রেট মেইনটেইন করলেই এই লেভেলগুলো পাওয়া যাবে।
- যতটা সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট -এ অ্যাকটিভ থাকার চেষ্টা করা উচিত যাতে প্রয়োজনে দ্রুত রিপ্লাই করতে পারেন। একজন ফ্রিল্যান্সারের জন্য কমিউনিকেশনে ভালাে হওয়া বেশ জরুরি।
- কোনফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কী কী পেমেন্ট মেথড সাপাের্ট করে তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এত কষ্ট করে কাজ পেয়ে, কাজ সম্পন্ন করে যদি পেমেন্ট আনা না যায় তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই হতে পারে না। তাই আগে থেকেই জেনে নিন কোন মার্কেটপ্লেসে আপনি অ্যাকাউন্ট করবেন এবং কোন পেমেন্ট মেথডগুলাে ব্যবহার করতে পারবেন।
Comments (No)