ক্রিকেট এখন শুধু বাইশ গজে ব্যাটে বলের লড়াইয়েই সীমাবদ্ধ নয়। মারমার কাটকাট ক্রিকেটের এই যুগে রঙিন দুনিয়ার গ্ল্যামার আর খেলাধুলার বাণিজ্যিকীকরণের প্রভাবও কম নয় ভদ্রলোকেদের এই খেলাতে। বরং অন্য খেলার চেয়ে একটু বেশি। আর এখন ক্রিকেটের অন্যতম বড় আকর্ষণ টি-টোয়েন্টি লীগগুলো তো টাকারই খেলা।
তাই মাঠের খেলার পাশাপাশি ক্রিকেটারদের আয় নিয়েও উৎসুক সমর্থকদের আগ্রহের কমতি নেই। আর রমরমা ক্রিকেট বাণিজ্যের এই যুগে কোন দেশের ক্রিকেটাররা কত সম্মানী পান তা একটু বাড়তি আগ্রহের বিষয় অনেকের কাছে। সেই আগ্রহের কিঞ্চিৎ মেটানোর চেষ্টা করা যাক:
ব্যাংকে যেমন এগিয়ে তেমনি আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। র্যাংকিংয়ের মতই অবস্থা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারদের। টেস্ট খেলুড়ে অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় তারা যৎসামান্যই পান তাদের বোর্ডের কাছ থেকে। বেশ কিছু বোর্ড তাদের মুনাফার ২০ থেকে ২৫ ভাগই ক্রিকেটারদের বেতন-বোনাস খাতে ব্যয় করে। তবে ক্রিকেটারদের মূল বেতনটা নির্ভর করে স্পন্সরশীপ, মাঠে দর্শক উপস্থিতি আর টিভি স্বত্বের উপর। মূলত বোর্ডগুলোর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররাই বেতন পান তাদের বোর্ডের কাছ থেকে।
ভারত
১৩০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশে ক্রিকেট যখন সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, তখন সে দেশের ক্রিকেটারদের বেতনের অঙ্কটাও যে অনেক বড় হবে সেটাই স্বাভাবিক। এ,বি,সি-এই তিন ক্যাটাগরিতে বিসিসিআইয়ের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের মাসিক বেতন যথাক্রমে ১ কোটি, ৫০ লাখ ও ২৫ লাখ রুপি করে।
শুধু কি তাই? ভারতীয় ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফিও অন্য যেকোন দলের ক্রিকেটারদের চেয়ে বেশি। টেস্ট প্রতি একজন ক্রিকেটার ম্যাচ ফি হিসেবে পান ১৫ লাখ রুপি! আবার টেস্ট স্কোয়াডে থেকেও ম্যাচ না খেলতে পারা ক্রিকেটাররা বেঞ্চ গরম করেই পান ৭ লাখ রুপি করে। ওডিআইতে দুই ক্যাটাগরি ভেদে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি ৫ লাখ ও ২ লাখ রুপি করে। আর প্রতিটি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচের জন্য অঙ্কটা ২ লাখ রুপি। এখানেই শেষ নয়। সেঞ্চুরি কিংবা ইনিংসে ৫ উইকেট পেলে ৫ লাখ রুপি এবং ডবল সেঞ্চুরি বা ম্যাচে ১০ উইকেট পেলে ৭ লাখ রুপি বোনাস হিসেবে পান ভারতীয় ক্রিকেটাররা। তার উপর শীর্ষ তিন দলের সাথে টেস্ট জিতলে ৫০%, সিরিজ জিতলে ১০০% আর বৈশ্বিক কোন শিরোপা জিতলে ৩০০% বোনাস পান ধোনি-কোহলিরা।
অস্ট্রেলিয়া
ভারতের মত অস্ট্রেলিয়ান বোর্ডও দারুন লাভবান এক বোর্ড। অজি ক্রিকেটারদের বেতনটাও তাই বেশ চওড়া। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা প্রতি ক্রিকেটার বাৎসরিক বেতন পান ৯ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার(AUD) বা সাড়ে ৫ কোটি টাকা করে। সেই সাথে অধিনায়ক বোনাস পান বেতনের ২৫% করে। তার মানে স্টিভ স্মিথের পেছনে শুধু বেতন বাবদই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে গুণতে হয় ১.২ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা ৭ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
অজি ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফির অঙ্কটাও বেশ বড়। ব্যাগি গ্রিন মাথায় চাপানো প্রতি অজি ক্রিকেটার সাদা পোশাকে খেলা প্রতি ম্যাচের জন্য পান ১৪০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা)। ওয়ানডে অজি ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা(৭০০০ AUD)। আর টি-২০ এর ক্ষেত্রে অঙ্কটা প্রায় ৩ লাখ টাকা(৫০০০ AUD)।
ইংল্যান্ডদলের নিয়মিত সদস্য কিংবা পরবর্তী বছরে দলে নিয়মিত হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে এমন ক্রিকেটাররাই ইসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে স্থান পান। ‘টেস্ট কন্ট্রাক্ট’-এ থাকেন টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্যরা। আর শুধুমাত্র সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দলের নিয়মিত ক্রিকেটাররা থাকেন ইসিবির ‘হোয়াইট বল কন্ট্রাক্ট’-এর আওতায়।
টেস্ট দলের প্রতি খেলোয়াড় বাৎসরিক বেতন পান ৭ লাখ ইউরো করে (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকা)। সেই সাথে টেস্ট অধিনায়কের জন্য থাকে মূল বেতনের ২৫% বোনাস। আর হোয়াইট বল চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা ইসিবির কাছ থেকে বাৎসরিক বেতন হিসেবে পান ন্যুনতম ১ লাখ ৮০ হাজার ইউরো। সিনিয়র কোন কোন ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে এ অংকটা প্রায় দ্বিগুণ। একটা টেস্ট খেললেই ইংলিশ ক্রিকেটাররা পান ১২ হাজার ইউরো করে। ওয়ানডে ও টি-২০ এর ক্ষেত্রে ম্যাচ ফি-র অংকটা যথাক্রমে ৫ হাজার ইউরো ও ৩৫০০ ইউরো। আর প্রতি টেস্ট খেলার জন্য ৫ পয়েন্ট,ওয়ানডের জন্য ২ পয়েন্ট আর টি-টোয়েন্টির জন্য ১ পয়েন্ট ধরে কন্ট্রাক্ট ইয়ারে কমপক্ষে ২০ পয়েন্ট অর্জন করা ক্রিকেটাররা থাকেন পরের বছরের ‘ইনক্রিমেন্ট কন্ট্রাক্ট’-এর আওতায়। সেক্ষেত্রে দলে নিয়মিত না হলেও এই চুক্তির আওতায় থাকা ক্রিকেটাররা তাদের কাউন্টি ক্লাব থেকে পাওয়া বেতনের পাশাপাশি ইসিবির কাছ থেকে বাড়তি একটা বেতন পান।
বাংলাদেশ
‘বিগ থ্রি’র ক্রিকেটারদের বেতনের কথা জেনে নিশ্চিতভাবেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়বেন বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ মাসিক বেতন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাও পান কেবল এ+ ক্যাটাগরির ৪ ক্রিকেটার-মাশরাফি, সাকিব, তামিম ও মুশফিক। ‘এ’ ক্যাটাগরির মাহমুদউল্লাহ পান ২ লাখ ১২ হাজার টাকা করে। আর বি,সি ও ডি ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের মাসিক বেতন যথাক্রমে ১ লক্ষ ৫০ হাজার,১ লক্ষ ১২ হাজার ও ৭৫০০০ টাকা করে। অধিনায়ক বাড়তি ২০ হাজার ও সহ-অধিনায়ক পান বাড়তি ১০ হাজার টাকা।
টেস্ট ম্যাচ প্রতি বাংলাদেশী ক্রিকেটার পান ২ লাখ করে।টেস্ট ম্যাচ ৫ দিনে গেলে এ অঙ্ক দাঁড়ায় ২ লাখ ৫০ হাজারে, আর ড্র করলে ৩ লাখে। ওডিআইতে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি ১ লাখ টাকা এবং প্রতিটি আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলার জন্য সাকিব-মাশারাফিরা পান ৭৫ হাজার টাকা করে। প্রতি ম্যাচ জয়ের জন্য উইনিং বোনাসও পান টাইগার স্কোয়াডের প্রতি ক্রিকেটার। বোনাসের অঙ্ক নির্দিষ্ট না হলেও ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের জন্যও বোনাস দেয়া হয় ক্রিকেটারদের। বিশেষ জয় বা বিশেষ পারফর্মেন্সের কারণে মাঝে মাঝে বোনাস আসে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কিংবা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক মুনাফার ২৫ শতাংশই ব্যয় হয় ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতাদি বাবদ। বোর্ডের চুক্তিতে থাকা ২১ ক্রিকেটার বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী বাৎসরিক প্রায় ৮৬ হাজার থেকে ২ লাখ মার্কিন ডলার বেতন পান। ক্যাপ্টেন হিসেবে কেন উইলিয়ামসন বাড়তি বোনাস পান ৪০ থেকে ৫০ হাজার ডলার। টেস্টে ব্ল্যাকক্যাপসদের ম্যাচ ফি প্রায় ৬ হাজার ডলার। আর ওয়ানডে ও টি-২০ এর ক্ষেত্রে ম্যাচপ্রতি ক্রিকেটাররা পান যথাক্রমে ২৬০০ ডলার ও ১৭০০ ডলার করে। সেই সাথে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা প্রতি ক্রিকেটারদের বেতন প্রতি বছরই বাড়ে আড়াই শতাংশ করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা
ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) তাদের আয়ের ২০ শতাংশই ব্যয় করে ক্রিকেটারদের বেতন-বোনাস বাবদ। প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের বেতন ভারত, অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের বেতনের মত না হলেও নেহায়েত কম নয়। চুক্তির মেয়াদের ২ বছরে মাসিক সাড়ে ৬ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ১০ হাজার মার্কিন ডলার বেতন পান ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা। সে হিসেবে বাৎসরিক প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার বেতন হিসেবে পান আমলা-ডি ভিলিয়ার্সরা। ম্যাচ ফি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা মিলে বাৎসরিক প্রায় ২ লাখ মার্কিন ডলার করে বোর্ডের কাছ থেকে পান দেশটির শীর্ষ ক্রিকেটাররা।
শ্রীলংকা
বেতন-বোনাস নিয়ে নানা সময়ে ক্রিকেট বোর্ডের সাথে ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্ব লাগলেও এসএলসির কাছ থেকে বেশ ভালো অংকের অর্থই পান শ্রীলংকান ক্রিকেটাররা। এসএলসি-র কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা পাঁচ ক্যাটাগরিভেদে ২০ হাজার ডলার থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার বেতন পান। তাদের ম্যাচ ফির অঙ্কটাও কম নয়। টেস্ট,ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ম্যাথিউজ-চান্দিমালদের ম্যাচ ফি যথাক্রমে ৫ হাজার,৩ হাজার ও ২ হাজার ডলার। বোনাসের পরিমাণও কম নয়। টেস্ট ম্যাচ জয়ে ম্যাচ ফি দ্বিগুন হয়ে যায় দ্য লায়ন্সদের। সেই সাথে টেস্ট বা ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি কিংবা ৫ উইকেটের জন্য ৫ হাজার ডলার এবং টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি কিংবা ৫ উইকেটের জন্য আড়াই হাজার ডলার বোনাস পান শ্রীলংকান ক্রিকেটাররা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
বোর্ড থেকে প্রাপ্ত সম্মানী নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা।কারণটাও অমূলক নয়।টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা খ্যাত গেইল-স্যামি-ব্রাভোরা বিভিন্ন দেশের টি-২০ লীগগুলো খেলে যে অর্থ পান তার চেয়ে কয়েকগুণ কম বাৎসরিক বেতন পান তাদের বোর্ড থেকে। ক্যরিবীয় বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বাৎসরিক বেতন ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। ম্যাচ ফির ক্ষেত্রে অন্য সব বোর্ড থেকে ভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে ওয়েস্ট ক্রিকেট বোর্ড। একই ফরম্যাটে সব ক্রিকেটারের ম্যাচ ফি সমান নয়।এটা মূলত নির্ভর করে ক্রিকেটারদের পছন্দের ফরম্যাটের উপর। টেস্টকে অন্য ফরম্যাট থেকে বেশী প্রাধান্য দেয়া ক্রিকেটারের ম্যাচ ফি অন্য ফরম্যাট থেকে টেস্টে বেশী। অনুরূপভাবে ওয়ানডে বা টি-২০কে টেস্টের চেয়ে বেশী প্রাধান্য দেয়া ক্রিকেটারের ম্যাচ ফি টেস্ট থেকে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিতে বেশি।এই ম্যাচ ফির পরিমাণ সরবনিম্ন ১ হাজার ডলার,আর সর্বোচ্চ ৬ হাজার ডলার। ২০১৪ সালের ভারত সফরের সময় সর্বোচ্চ ম্যাচ ফি ১৭ হাজার থেকে ৫ হাজার দলারে নামিয়ে আনা হয়েছিল।প্রতিবাদে ওয়ানডে সিরিজের মাঝপথেই দেশে ফিরে গিয়েছিলেন দলের সব ক্রিকেটার।
পাকিস্তান
অন্যান্য এশিয়ান ক্রিকেট বোর্ডগুলোর মত পিসিবিও ক্রিকেটারদের বেতন-বোনাস নিয়ে কার্পণ্য করে না। পিসিবির কাছ থেকে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ১ লাখ থেকে ৫ লাখ রুপি করে মাসিক বেতন পান চার ক্যাটাগরিতে থাকা ২৭ পাকিস্তানি ক্রিকেটার। টেস্ট ও ওয়ানডেতে তাদের ম্যাচ ফির অংকটা যথাক্রমে ৪ লাখ ও ৩ লাখ রুপি। আর প্রতিটি আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলার জন্য ১ লাখ ২৫ হাজার রুপি করে পান পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের জন্যও বোনাসের অংকটা বেশ বড়।টেস্ট ও ওডিআইতে সেঞ্চুরি করা কিংবা ৫ উইকেট নেয়া ক্রিকেটার বোনাস হিসেবে পান ৩ লাখ রুপি। ডবল সেঞ্চুরি কিংবা ম্যাচে ১০ উইকেট পেলে বোনাসের পরিমাণটা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ রুপিতে। শীর্ষ তিন দল আর ভারতের মধ্যে কোনটির বিপক্ষে টেস্ট বা ওয়ানডে সিরিজ জিতলে ম্যাচ ফির আড়াই গুণ বোনাস পান স্কোয়াডে থাকা প্রতি ক্রিকেটার। আর বৈশ্বিক কোন শিরোপা জয় করতে পারলে এ বোনাস দাঁড়ায় ৪ গুণে।
জিম্বাবুয়ে
১১ হাজার শতাংশেরও বেশি মুদ্রাস্ফীতির দেশ জিম্বাবুয়ে।অর্থনীতির মত ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সও ছন্নছাড়া। ক্রিকেটাররা বোর্ডের কাছ থেকে যে বেতন পান তা নিতান্তই নগণ্য। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের মাসিক বেতনের অংকটা মাত্র ৯০০ থেকে ১৪০০ মার্কিন ডলার। সদ্য অভিষিক্ত হওয়া কোন ক্রিকেটার এর ক্ষেত্রে এই অংকটা মাত্র ৩০০ ডলার। আর সিরিজ চলাকালীন সপ্তাহ প্রতি বোর্ডের কাছ থেকে গড়ে ৫০০ ডলার করে পান স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটাররা। এই প্রাপ্ত টাকার অর্ধেকই সরকার আবার কর হিসেবে নিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়,নিজেদের চিকিৎসা খরচের ৪০ শতাংশই জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটাররা নিজেদের পকেট থেকে দেন। আর্থিক এই দুর্দশার কারণে ইতোমধ্যেই জিম্বাবুয়ে ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছেন অনেক ক্রিকেটার। তবে এত কিছুর মাঝেও এখনও ক্রিকেটে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন এলটন চিগুম্বুরা-হ্যামিল্টন মাসাকাদজারা। টাকা নয়,জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রেখেছে ক্রিকেটারদের কঠোর পরিশ্রম আর ক্রিকেটের প্রতি তাদের ভালোবাসা।
Comments (No)