কিভাবে নিজেই ‘Boardband Internet ব্যবসা’ শুরু করবেন?

কিভাবে নিজেই ‘Boardband Internet ব্যবসা’ শুরু করবেন উন্নত বিশ্বে ইন্টারনেটের গতি রকেটের মত। আর আমাদের দেশে ইন্টারনেটের গতি কিলোবাইটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ধীর গতির ইন্টারনেটের কারণে অনেকের কার্যক্রম থমকে আছে। অনেক তরুণ প্রতিভাবান ফ্রিল্যান্সার তো একটু বেশি ইন্টারনেট স্পিডের জন্য প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করে শহর মুখী হচ্ছে। মাত্রকয়েকদিন আগেই মোবাইল অপারেটররা ৩জি সেবা দেওয়ার লাইসেন্স পেয়েছে। কিন্তু তাদের কার্যক্রম এখনও জেলা শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এ ছাড়া রক্ত চোষা মোবাইল কোম্পানির ইন্টারনেটের দাম এত বেশি যে সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের নেট প্যাকেজ ব্যবহার করা কঠিন। ওয়াইম্যাক্স সেবা দাতাদের অবস্থাও একই। কোনআনলিমিটেড প্যাকেজ তো নেই ই। কম টাকায় উচ্চ গতির নেট পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। আনলিমিটেড প্যাকেজ, স্বল্প মূল্যের কারণে অধিকাংশ মানুষই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান। কিন্তু দেশের খুব কম জায়গাতেই আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা কম ঝুঁকিপূর্ণ। দেখে নিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আদ্যোপান্ত।
কিভাবে শুরু করবেন:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করতে হলে প্রথমে রিসার্চ করে নিন আপনার ব্যবসায়ের এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কেমন। যদি সন্তোষজনক মনে হয় তাহলে শুরু করতে পারেন। ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করার জন্য বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স করতে হবে। লাইসেন্স করার জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। ফরম পাবেনএখানে । ফরমে বর্ণিত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিটিআরসি হেড অফিসে নিয়ে জমা দিতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদন করার ৩ মাসে ভিতর লাইসেন্স পেয়ে যাবেন। লাইসেন্স পাওয়ার পর কিনতে হবে ব্যান্ডউইথ।
ব্যান্ডউইথ পাবেন কোথায়:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য সবার আগে প্রয়োজন ব্যান্ডউইথ। আর ব্যান্ডউইথ আসে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে। তাই প্রথমে দেখতে হবে যে আপনার ব্যবসায়ীক এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার আছে কিনা। শুধু ফাইবার থাকলেই হবে না কানেকশন দেওয়ার পপস পোর্টও থাকতে হবে। বিটিসিএলের ফাইবার লাইনের পপসপোর্ট আছে শুধু জেলা শহরগুলিতে। তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মোবাইল অপারেটরদের ৩জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারণে এখন গ্রাম পর্যায়েও অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে গেছে। বেসরকারি IIG (International Internet Gateway) গুলা প্রায় সারাদেশে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। আপনাকে ঐসব IIG এর কাছথেকে জেনে নিতে হবে আপনার এলাকায় তাদের অপটিক্যাল ফাইবারের পপস পোর্ট আছে কিনা।
কম দামে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে ও সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এমন কয়েকটি IIG হল বিটিসিএল, ম্যাঙ্গো টেলিকম, সামিট কামিউনিকেশন, বাংলা ফোন, ভার্গো কামিউনিকেশন, ফাইবার এট হোম, নভোকম ও বিডি লিংক কামিউনিকেশন। দেশে মোট ৩৬টি ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার রয়েছে।
যদি আপনার কাছাকাছি পোর্ট থাকে তাইলে ব্যবসা শুরু করতে আর বাধা নেই। কাছাকাছি না হয়ে একটু দূরে পোর্ট থাকলে ঐখান থেকেও রেডিও লিংক করে আনতে পারবেন। আর যদি পপস পোর্টের দূরত্ব বেশি হয় তাইলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ নিতে পারবেন বা মাইক্রোওয়েভ দ্বারা কানেক্টেড মোবাইল টাওয়ারেরবিটিএস থেকে নিতে পারবেন ব্যান্ডউইথ। তবে এই দুই পদ্ধতিতেই ব্যান্ডউইথের দাম অনেক বেশি পরবে। বিভাগীয় শহরগুলিতে অনেক আইএসপি কম দামে সাবলাইন দিয়ে থাকে। তাদের থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়েও ব্যবসা করতে পারেন।
কি কি লাগবে:
ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করতে হলে আপনাকে কিছু যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। সেগুলি হল স্পিড কন্ট্রোল করার জন্য মাইক্রোটিক রাউটার, মিডিয়া কনভার্টার, ক্যাবল, একটি পিসি, বেজ স্ট্যাশন স্থাপন করার জন্য সুইচ ও বক্স। মাইক্রোটিক রাউটার ২৪ ঘণ্টা অন রাখার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুঁজি লাগবে কত:
পুঁজি কত লাগবে সেটা নির্ভর করবে আপনি কত কিলোমিটার এলাকায় লাইন টানবেন তার উপর। রাউটার ১৪,০০০, মিডিয়া কনভার্টার ৪৫০০, পিসি ২৫,০০০ (আগে থাকলে লাগবে না), সুইচ বক্স ও কানেকশন পোর্ট প্রতি কিলোমিটার লাইনে ১০,০০০, ক্যাবল প্রতি কিলোমিটার ১২,০০০, লাইসেন্স ফি ১০০০ টাকা কানেকশন ফি১০,০০০-২০,০০০, ব্যান্ডউইথ প্রতি মেগাবিট ১২০০-৩০০০ টাকা। প্রাথমিকভাবে ৫ এমবি ব্যান্ডউইথ আর ২ কিলোমিটার লাইন টেনে ১৫০,০০০-১৭০,০০০ টাকা হলেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
ঝুঁকি কতটুকু:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক কম। কারণ এই ব্যবসায় একবার সব কিছু স্থাপন করে নিলে তারপর ব্যান্ডউইথ ছাড়া তেমন খরচ নেই। বর্ষাকালটা ব্রডব্যান্ড ব্যবসার জন্য শত্রু। বজ্রপাতে যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়।
ব্যান্ডউইথ কিনব ৩০০০ করে বিক্রি করব ১২০০ করে তাইলে আমার লাভ কই:
ধরুন ১ এমবিপিএস ডেডিকেটেড ব্যান্ডউইথ নিলেন ৩০০০ টাকা দিয়ে। ইউজার বেশি হলে এই ১ এমবি থেকে ৬ জনকে ১ এমবিপিএস করে দিতে পারবেন। কারণ হচ্ছে ৩ জন থাকবে অফলাইনে, বাকি ৩ জন একটিভ থাকবে। এই ৩ জনের মধ্যে লোড দিবে ১ জন, বাকি দুইজন লোড বিহীন অবস্থায় নেটে একটিভ থাকবে। সুতরাং১ এমবি থেকে ৬ জনকে দিলেও ফুল স্পিডই পাবে। আপনি ১ এমবি থেকে দিচ্ছেন ৬ এমবি। সুতরাং আপনি ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন না বরং ১২০০x৬=৭২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। ৭২০০-৩০০০=৪২০০ টাকা আপনার লাভ থাকবে। কিন্তু ৬ জনকে দেওয়ার মত অবস্থায় যেতে হলে অন্তত ১৫০ ইউজার লাগবে। আবার ১৫০ইউজারের জন্য যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ লাগবে সেগুলি পাইকারি রেটে পাবেন। খুচরা ৩০০০ করে হলে পাইকারি ২০০০ করে পাবেন। ইউজার কম হলে একটিভ রেশিও অনেক বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনি ৬ জনকে দিতে পারবেন না। দিলেও স্পিড পাবে না। তাই শুরুর দিকে ৩ জনকে দেওয়া হয়। এ কারণে প্রথম দিকে তেমন লাভহয় না।
আয়-ব্যয়:
এই ব্যবসায় আয় গ্রাহকের উপর নির্ভরশীল। যদি গ্রাহক বেশি হয় তাহলে আয়ও বেশি হবে। আপনার এলাকায় যদি আপনিই একমাত্র আইএসপি হয়ে থাকেন তাইলে তো সোনায়-সোহাগা। আপনার ইচ্ছামত প্যাকেজের দাম বসিয়ে আয় করতে পারবেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলে প্রথমদিকে বেশি আয় করা কঠিন হয়ে পরবে। ৫০ জনইউজার পেলে প্রতি মাসে ১২,০০০-১৫,০০০ টাকা আয় করা যাবে। এরপর ইউজার যত বাড়বে আয়ও তত বাড়বে।
সবার বুঝার সুবিধার্থে আমি পয়েন্ট ভিত্তিক আরও কিছু তথ্য যুক্ত করলাম। আশা করি এরপর সবার কাছে বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা আসলে কি:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা মূলত ইন্টারনেট ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা। অনেক ভাবেই মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। যেমন ওয়ারল্যাস, ওয়াইফাই, ওয়াইম্যাক্স, ব্রডব্যান্ড। এদের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটেই সবচেয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া যায় গ্রাহকদের।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা কেমন:
আমার মূল লেখাতেই বলেছি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের জন্য সবাই হা হুতাশ করছে। সে থেকেই চাহিদা সম্পর্কে আচ করা যায়। কারণ ওয়ারল্যাস ইন্টারনেট অনেক ব্যয়বহুল। তার উপর এদের কোন আনলিমিটেড প্যাকেজ নেই। এ কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্রডব্যান্ডেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বেশি। তাই এ কথা বলে দেওয়া যায়যে অনেক ধরনের ইন্টারনেট সেবার মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসায় সুবিধা কি কি:
১। এই ব্যবসায় ঝুঁকি কম।
২। এই ব্যবসায় একবার সব কিছু সেট আপ করে নিলে আর তেমন খরচ লাগে না।
৩। ব্যবসা বর্ধিত হলেও মূলধন সেই অনুপাতে বাড়াতে হয় না।
৪। সঠিক জায়গা নির্বাচন করে ব্যবসা করতে পারলে দ্রুত লক্ষে পৌছা যায়।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় কি কি সমস্যায় পরতে পারেন:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় যেমন কিছু সুবিধা আছে তেমনি কিছু ঝামেলায়ও পরতে হয়। যেমন –
১। লাইন অনেক বড় হলে সেটা রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন হয়ে পরে।
২। লাইনের বিভিন্ন জায়গায় কেটে যায়, সুইচ, লেন কার্ড চুরি হয়ে যায়।
৩। চোরাই লাইন সংযোগ দেয়।
৪। বর্ষাকালে বজ্রপাতে যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়।
কিভাবে শিখবেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় কিছু টেকনিক্যাল বিষয় আছে। আপনাকে অবশ্যই সেগুলি রপ্ত করতে হবে। মাইক্রোটিক রাউটার সেটআপ করা, ইউজার কন্ট্রোল করা, সুইচ ফিট করা, নতুন সংযোগ দেওয়া শিখতে হবে। তবে এইগুলা শিখা কোন কঠিন কাজ নয়। বই/ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখলেই অনায়াসেই শিখতে পারবেন।
এ ছাড়া সুহৃদ সরকারের লেখা এডভান্স নেটওয়ার্কিং বইটি থেকেও অনেক সাহায্য পেতে পারেন।
ব্রডব্যান্ড ব্যবসার মার্কেটিং করবেন কিভাবে:
আপনি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টানেটের সার্ভিস নিয়ে এসেছেন সেটা তো মানুষকে জানাতে হবে। আর এর জন্য আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞাপন/প্রচার করতে হবে। যেহেতু আপনি একটা এলাকা টার্গেট করে ব্যবসায় নামবেন সেহেতু এতে মার্কেটিং করতে তেমন বড় বাজেট রাখতে হয় না। লিফলেটে আপনার প্যাকেজ সমূহ, প্যাকেজ মূল্য, স্পিড,শর্তাদি ইত্যাদি বিস্তারিত লিখে আপনার টার্গেটকৃত এলাকায় বিতরণ করতে হবে। আগে থেকেই কোন আইএসপি থাকলে তাদের সাথে কম্পেয়ার করে রেট নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া সরাসরি বাসায় বাসায় গিয়ে, মাইকিং করে, ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে, পরিচিত মহলকে অনুরোধ করেও মার্কেটিং করা যায়। এই ব্যবসা যেহেতুব্যবহারকারী ভিত্তিক এবং এক ব্যবহারকারীর সাথে আরেক ব্যবহারকারী লাগোয়া থাকে তাই আপনার বর্তমান ব্যবহারকারীদের বিশেষ ডিসকাউন্টের অফার দিয়ে প্রভাবিত করেও উইজার বাড়াতে পারবেন। এ ছাড়া এমন ঘোষণা দিতে পারেন প্রথম এতজন ব্যবহারকারী এত পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট পাবেন। তাতে দ্রুত কাস্টমার পেতেসাহায্য করবে।
নতুনরা এই ব্যবসায় যে ভুল করতে পারে:
নতুনরা এই ব্যবসায় এসে প্রথমেই যেই ভুলটি করতে পারে সেটা হচ্ছে সঠিক জায়গা নির্বাচন করতে না পারা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা এমন জায়গা চয়েজ করে বসে যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ কম্পিউটার ব্যবহারকারী নেই। এ ছাড়া ঐখানে যদি প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে তাইলে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে সে সম্পর্কে ধারনা না রাখা।আবার অনেক সময় ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার থেকে অনেক দূরে বিজনেসে শুরু করে দিতে পারে। এতে বিনিয়োগ করতে হয় অনেক বেশি। সাথে সার্ভিসও তেমন ভাল হয় না।
কর্মী লাগলে তার যোগ্যতা কেমন চাই:
যদি এই ব্যবসায় আপনাকে কোন কর্মী নিয়োগ দিতে হয় তাইলে দেখতে হবে মাইক্রোটিক রাউটার কন্ট্রোলিং এর কাজ জানে কিনা, নতুন পোর্ট বানানো, সুইচ, কানেকশন দিতে পারে কিনা, যোগাযোগ দক্ষতা কেমন, মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কেমন এসব দেখতে হবে। এ ছাড়া যোগ্যতা হিসেবে বাই সাইকেল চালানো জানতেহবে। কেননা দূর দূরান্তে গিয়ে লাইন ঠিক করতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
১। প্রথম দিকে মুনাফা করার চেয়ে ব্যবহারকারী বৃদ্ধির দিকে নজর দিন।
২। অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে তুলনামূলক কম মূল্যে সেবা দিন।
৩। সার্বক্ষণিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। লাইনে কোন সমস্যা হলে দ্রুত সেটা মেরামত করতে হবে।
৫। ২৪ ঘণ্টা সার্ভার আপ রাখতে হবে। তার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। আপনার সার্ভিসে ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হচ্ছে কিনা সেটার খোজ খবর নিতে হবে। তাতে করে আপনার গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
সফলরা কি বলে:
২ বছর ধরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করছেন টাঙ্গাইলের সুদিপ পাল। তিনি জানান প্রথমে আমি বিটিসিএল থেকে লাইন নিয়ে অল্প পরিসরে নিজের বাসাকেই অফিস বানিয়ে ব্যবসা শুরু করি। আমি প্রথমে ১ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ আর ৩ জন গ্রাহক নিয়ে স্টার্ট করি। প্রথম মাসে আমার আয় হয় মাত্র ২০০০ টাকা। বর্তমানেআমার মোট গ্রাহক ১৫০+। প্রতি মাসে আয় হচ্ছে ৩৫০০০ টাকার উপর। সুদীপ বলেন, এই ব্যবসায় ধৈর্য আর লেগে থাকতে হবে। কাস্টমারদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তারা খারাপ কিছু করলেও তাদের উপর রাগ করা যাবে না। গভীর রাতেও অনেকে ফোন করতে পারে। তাতে বিরক্ত হওয়া চলবে না।যারা এসব করতে না পারবে তাদের উচিত অযথা ব্যবসা করতে এসে মার্কেট নষ্ট না করা।
প্রশ্ন ১- যদি আমার এরিয়াতে Local Area Distributor হিসাবে কোন লোকাল ISP company থেকে ১টা মেইন Connection নিয়ে WIFI Connection দিয়ে ব্যবসা করতে চাইলে কি স্বল্প পুঁজিতে(১.৫ থেকে ২ লাখ টাকার ভিতর) পারব?
প্রশ্ন ২- আর যদি হয়, তাহলে প্রাথমিকভাবে WIFI Connection দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে ডিভাইসগুলোর দাম কেমন পড়বে? যেমন: (Mikrotik Router board, Computer, Router, Radio Device m2/m5) এই ডিভাইস গুলোর কোনটার দাম কেমন পড়বে?
প্রশ্ন ৩- Connection চলে আসলো এবং ডিভাইসগুলি কেনা হয়ে যাবার পর আমি ব্যবসা শুরু করব কীভাবে অথবা আমার এরিয়ার কাস্টমারদের Internet Connection কীভাবে দিব? কীভাবে তাদের ১টি নির্দিষ্ট Speed Limit দিব? সোজা কথায় setups করব কী করে?
প্রশ্ন ৪- সবকিছুর শেষে আমার, প্রতি কাস্টমার বাবদ কত খরচ হবে অথবা প্রতি বিট ব্যবহার করতে কতজন করে কাস্টমার লাগবে? অথবা আয় ও ব্যয় বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা।
প্রশ্ন ৫- এই বিষয়ে কোন শর্ট কোর্স করব কোথায় এবং কোর্স ফি কত লাগতে পারে?
১) ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নের জন্য। প্রথম কথা হলো, আপনি সাধারণ ওয়াই ফাই দিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন না। সাধারণ ওয়াই ফাই রাউটার সাধারণত ১০ থেকে ১৫ টি ডিভাইসের জন্য ভালো কাজ করে। সাধারণ ওয়াই ফাই সাধারণত একটি অফিসের জন্য বা একটি বাসায় ব্যবহৃত ডিভাইসের ইন্টারনেটসংযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। ব্যবসায়িক কাজের জন্য প্রফেশনাল ওয়াই ফাই রাউটার প্রয়োজন হবে। আপনার প্রাথমিক খরচ দুই আড়াই লাখের অনেক বেশি হবে। তবে এটা নির্ভর করছে, আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান কোথায়, তার উপর। আর আপনাকে ব্যবসায়িক লাইসেন্স বের করতে হবে। এটিছাড়া ব্যবসা করতে পারবেন না। দ্বিতীয় কথা হলো, ওয়াই ফাই রাউটার এর স্পিড নির্ভর করে এর সাথে সংযুক্ত ডিভাইসের উপর। যতগুলো ডিভাইস সংযুক্ত হবে, ওয়াই ফাই রাউটার এর মোট ক্ষমতা তত দিয়ে ভাগ হয়ে যাবে। অর্থাত আপনার ক্লায়েন্ট যদি বেশি পরিমানে হয়, তাহলে তারা মোটেও সন্তোষজনকস্পিড পাবে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেকগুলো ওয়াই ফাই রাউটার কিনতে হবে।
২) বিদেশী ডিভাইস গুলোর মূল্য ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে। আর রেঞ্জ কাভার করে ১৫ কিমি থেকে ৫২ কিমি পর্যন্ত। কম মূল্যের জন্য আপনি আইডিবি ভবনে খোঁজ নিতে পারেন।
৩) ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য আলাদা কিছু কাস্টমাইজ সফটওয়্যার এবং ডিভাইস পাওয়া যায়, যেটা আপনাকে কিনে নিতে হবে এবং এর খবর আপনার আইএসপি প্রোভাইডার এর কাছেই পাবেন। অথবা আপনি প্রফেশনাল কাউকে দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন। মূলত এই সফটওয়্যারটিই আপনারসবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। কোথায় কতটুকু স্পিড যাবে, কিভাবে যাবে, কার সংযোগ কখন বিচ্ছিন্ন হবে, সব কিছু।
৪) আপনি যে সফটওয়্যার টি ব্যবহার করবেন, সেটিই আপনার আয় ব্যয় এর সব রকম হিসেব রাখবে। কোনো কাস্টমার এর বকেয়া বিল থাকলে এই সফটওয়্যার অটোমেটিকালি তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এমনকি কোন কাস্টমার কিভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, কার জন্য কতটুকুব্যান্ডউইথ খরচ হচ্ছে, সবই দেখতে পারবেন।
৫) আপনি এই বিষয়ে শর্ট কোর্সের জন্য – ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল প্রফেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ওদের ওখানে কম খরচে কোর্স করার ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও আপনি আইডিবির বিভিন্ন কোর্স কো-অর্ডিনেটরদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদএবং আপনার ভবিষ্যত ব্যবসার জন্য শুভ কামনা। ধন্যবাদ
আমি গ্রাম্য এলাকায় থাকি, তবে আমাদের এলাকায় ইন্টারনেটের চাহিদা তুমুল।
আমি ও আমার কিছু বন্ধুরা মিলে ওয়াইফাই ব্রডকাস্টিং শুরু করতে চাচ্ছি। আমাদের সব সাপোর্ট আছে, মুলধন নিয়েও টেনশন নেই।
এখন জানা প্রয়োজন :
১। শুরু করবো কোত্থেকে?
২। সরকারি অনুমোদন লাগে?
৩। সর্বমোট প্রাথমিক খরচ কত?
৪। মূল নেটওয়ার্ক ওয়াইম্যাক্সের সাহায্যে আসে নাকি ক্যাবলের মাধ্যমে? নাকি ব্রডকাস্ট সেন্টারেই ওয়াইফাই প্রডিউস হয়?
ইন্টারনেট ব্যবসা। উন্নত বিশ্বে ইন্টারনেটের গতি রকেটের মত। আর আমাদের দেশে ইন্টারনেটের গতি কিলোবাইটের মাধ্যেই সীমাবদ্ধ। ধীর গতির ইন্টারনেটের কারনে অনেকের কার্যক্রম থমকে আছে। অনেক তরুণ প্রতিভাবান ফ্রিল্যান্সার তো একটু বেশি ইন্টারনেট স্পিডেরজন্য প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করে শহর মুখী হচ্ছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই মোবাইল অপারেটররা ৩জি সেবা দেওয়ার লাইসেন্স পেয়েছে। কিন্তু তাদের কার্যক্রম এখনও জেলা শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এ ছাড়া রক্ত চোষা মোবাইল কোম্পানীর ইন্টারনেটের দাম এতবেশি যে সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের নেট প্যাকেজ ব্যবহার করা কঠিন। ওয়াইম্যাক্স সেবা দাতাদের অবস্থাও একই। কোন আনলিমিটেড প্যাকেজ তো নেই ই। কম টাকায় উচ্চ গতির নেট পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। আনলিমিটেড প্যাকেজ, স্বল্প মূল্যেরকারনে অধিকাংশ মানুষই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান। কিন্তু দেশের খুব কম জায়গাতেই আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা কম ঝুকিপূর্ণ। দেখে নিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আদ্যোপান্ত। কিভাবে শুরু করবেনঃ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসাকরতে হলে প্রথমে রিসার্চ করে নিন আপনার ব্যবসায়ের এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কেমন। যদি সন্তোষজনক মনে হয় তাহলে শুরু করতে পারেন। ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করার জন্য বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স করতে হবে। লাইসেন্স করার জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতেহবে। ফরম পাবেন এখানে
www.btrc.gov.bd । ফরমে বর্ণিত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিটিআরসি হেড অফিসে নিয়ে জমা দিতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদন করার ৩ মাসে ভিতর লাইসেন্স পেয়ে যাবেন। লাইসেন্স পাওয়ার পর কিনতে হবে ব্যান্ডউইথ। ব্রডব্যান্ডতিন ভাবে আনা যায়। ১. অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে। ২. স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ৩. মোবাইল টাওয়ারের মাধ্যমে। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে আনলে ব্যান্ডউইথের দাম পরে সবচেয়ে কম। তবে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে আনতে হলে আপনার ব্যবসায়ীক এলাকায়বা আশে পাশে ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডারের লাইন থাকতে হবে। যদি অনেক দূরে হয় তাইলে স্যাটেইলাইট বা মোবাইল টাওয়ারের বিটিএস থেকে আনতে হবে। তবে এই পদ্ধতিতে ব্যান্ডউইথের দাম পরবে বেশি। দেশে মোট ৩৬টি IIG (International Internet Gateway)ব্যান্ড
উইথ বিক্রি করে। একমাত্র সরকারি IIG বিটিসিএল। কমদামে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে এমন কয়েকটি বেসরকারি IIG হল ম্যাঙ্গো টেলিকম, সামিট কামিউনিকেশন, বাংলা ফোন, টমেটুওয়েব, ভিগ্রো কামিউনিকেশন ও বিডি লিংক কামিউনিকেশন। দেশের সবগুলি IIG সম্পর্কেজানতে ভিজিট করুন – http://
www.btrc.gov.bd/operators/International%20Internet%20Gateway%20%28IIG%29%20Services কি কি লাগবেঃ ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করতে হলে আপনাকে কিছু যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। সেগুলি হল স্পিড কন্ট্রোল করার জন্যমাইক্রোটিক রাউটার, ক্যাবল, একটি পিসি, বেজ স্ট্যাশন স্থাপন করার জন্য সুইচ ও বক্স। মাইক্রোটিক রাউটার ২৪ ঘন্টা অন রাখার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুঁজি লাগবে কতঃ পুঁজি কত লাগবে সেটা নির্ভর করবে আপনি কত কিলোমিটার এলাকায় লাইন টানবেন তার উপর। যন্ত্রপাতি ও লাইসেন্স করার জন্য লাগবে ৫০,০০০ টাকা, প্রতিটি বেজ স্ট্যাশন ১০০০, প্রতি কিলোমিটার ক্যাবল ১০০০০ টাকা। বিটিসিএল এ প্রতি মেগাবিটব্যান্ডউইথের দাম পরবে ২৮০০ টাকা, বেসরকারি IIG এর নিজস্ব লাইন থেকে নিলে দাম পরবে ১০০০-১৮০০ টাকা। আর মোবাইলের টাওয়ারের বিটিএস থেকে নিলে প্রতি মেগাবিট পরবে ৩০০০-৫০০০ টাকা। ঝুকি কতটুকুঃ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় ঝুকি অনেক কম।কারন এই ব্যবসায় একবার সব কিছু স্থাপন করে নিলে তারপর ব্যান্ডউইথ ছাড়া তেমন খরচ নেই। ঝুকি বলতে যদি হঠাৎ সবাই কানেকশন বন্ধ করে দেয়। আয়-ব্যয়ঃ এই ব্যবসায় আয় গ্রাহকের উপর নির্ভরশীল। যদি গ্রাহক বেশি হয় তাহলে আয়ও বেশি হবে। সাধারণত প্রতিমেগাবিটে আয় হয়ে থাকে ২০০০-৩০০০ টাকা। আপনি যদি প্রতি মাসে ৫ মেগাবিট ব্যান্ডউইথ বিক্রি করতে পারেন তাহলে আয় থাকবে ১২০০০-১৫০০০ টাকা। গ্রাহক যত বাড়বে আয় তত বেশি হবে এবং ব্যান্ডউইথও কম লাগবে।
ক্ষুদ্র পরিসরে ই-কর্মাস ব্যবসা শুরু করার জন্য যা লাগবে
বাংলাদেশে ইন্টারনেট বিজনেস বলতে ই-কমার্স শব্দটাই বেশি ব্যবহার হয়। অনলাইনে ওয়েবসাইট থেকে কেনা গেলে সেটা ই-কমার্সই বলে। সেই অর্থে বিষয়টা ঠিক আছে । কিন্তু এই ই-কমার্স মানেই পুরো ইন্টারনেট বিজনেসকে বুঝায় না । সেই বিষয় আরেক দিন লিখবো। ধরেনিলাম আপনি অনলাইনে একটা ওয়েব সাইট খুলে তা থেকে কিছু বিক্রয় করতে চাচ্ছেন। এই ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে গেলে আপনার কি লাগবে তাই নিয়ে আজ লিখছি।
এখানকার পত্রিকায় , সোশ্যাল মিডিয়া , এখন পর্যন্ত নেয়া উদ্যোগ গুলোর দিকে তাকালে সহজেই মনে হতে পারে ই-কমার্স মানে অনেক বড় কিছু , অনেক টাকা লাগবে এবং কারিগরি বিষয়ে অনেক দক্ষ হতে হবে। আসলে বিষয়টি মোটেও সেকরম নয়। ইন্টারনেটের এতোজনপ্রিয়তার অন্যতম কারন ব্যাক্তি পর্যায়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের উদ্যোগ । আপনি যদি ওয়েব ব্রাউজ করে থাকেন দেখবেন এমন অনেক সাইট আপনি পেয়ে যাবেন যা থেকে অল্প কিছু প্রোডাক্ট বিক্রি হচ্ছে । সাইটটি ভালোই উপার্জন করছে ।
ক্ষুদ্র পরিসরে ই-কর্মাস সাইট তৈরি করার জন্য যা লাগবেঃ
১) লাভ জনক মৌলিক আইডিয়া বের করাঃ আইডিয়াটা মৌলিক হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ন । অন্যের দেখাদেখি আপনিও একই ব্যবসা শুরু করতে না চাওয়াই ভালো । বাংলাদেশে অনলাইনে কেনা বেচা মাত্র শুরু হলো । চাইলেই অনেক সহজেই ভালো কিছু আইডিয়া খুজেপাবেন। খুব ভালো হয় যদি আপনি যে বিষয়ে ভালো জানেন তা নিয়ে শুরু করা । অথবা আপনার শখ বা যে বিষয়ে আপনার বেশ আগ্রহ আছে সেই বিষয়ও আপনি নির্বাচন করতে পারেন। যদি মাথায় কিছু না আসে তাহলে যখন বিভিন্ন ধরনের সাইট ব্রাউজ করেন তা দেখেআইডিয়া নেয়ার চেস্টা করতে পারেন । এমন অনেক সাইট আছে যার মতো আমাদের এখানেও করা যায়। এমন কিছু পেলে লিখে রাখতে পারেন । অনেক গুলো আইডিয়া জমলে সেগুলো সাম্ভাব্যতা যাচাই করে কোন একটা নির্বাচন করতে পারেন।
২) টার্গেট মার্কেট নির্দিস্ট করা – আপনি সবাইকে টার্গেট করলে ভূল করবেন।সবার জন্য প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করাও ভুল ।যাদের অনেক বাজেট অনলাইন মেগাস্টোর করতে চায় তাদের জন্য বিষয়টা ঠিক আছে।আপনার উচিত হবে নির্দিস্ট একটা নিশ নিয়ে কাজ করা। অনলাইন বিজনেসের ক্ষেত্রে নিশ মার্কেটিং একটা খুব জনপ্রিয় ধারনা। এই ভালো একটা নিশ কে টার্গেট করে এগুলো ভালো করবেন।
৩) ব্যবসার জন্য পরিক্লপনা তৈরিঃ এখানেই আমরা অনেক ভূল করি । আমাদের সাথে পাশ্চাত্যের ব্যবসায়ীদের পার্থক্য এখানে । আমরা ব্যবসার জন্য পরিক্লপনা না তৈরি করেই ব্যবসা শুরু করে দেই । এজন্য অধিকাংশ ব্যবসায়ী মাঝখানে এসে হোছট খায় অথবা জানে নাগন্তব্য কি । আমার মতে খুব সংক্ষিপ্ত হলেও মানে এক দুই পাতার হলেও একটা পরিকল্পনা আপনার অবশ্যয় করা উচিত । কিভাবে তৈরি করতে হবে এই পরিক্লপনা ও নিজের ব্যবসা তৈরি করা নিয়ে বিনা ফিতে myownbusiness.net এই সাইটটি থেকে কোর্স করে নিতে পারেন। এখন প্রায় ফ্রিল্যান্সার থেকে উদ্যোক্তা হওয়া নিয়ে সভা সেমিনার হচ্ছে , পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এই সাইটটির কোর্সটি বেশ কাজে দিবে।
৪) সাইট তৈরি /টেকনিক্যাল সলিউশ্যান – পৃথিবীব্যাপি ওয়ার্ডপ্রস সেই ক্ষেত্রে খুবই জনপ্রিয় । একটা প্রিমিয়াম থিম ( ৫০-৬০ ডলার ) , একটা ই-কমার্স প্লাগিন ( jigoshop , woocommerce ) দিয়ে শুরু একটা স্টোর তৈরি করা খুব সহজ। jigoshop ফ্রি ভার্সন দিয়েচেস্টা করতে পারেন। বিকাশ , ক্যাশ অন ডেলিভারির কারনে মুটামুটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আপনাকে অফলাইনে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে । যেকোনো ই-কমার্স প্লাগিন ক্রেডিট কার্ড পেমেন্ট গ্রহন করতে পারে। বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ড গুলো যদি সমস্যা করে তাহলে যারাক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট করতে চাইবে তাদের জন্য আলাদা প্লাগিন তৈরির অথবা এড-অন তৈরির প্রয়োজন হতে পারে। এস এস এল কোম্পনী গুলো এই প্লাগিন তৈরি করে দিলে বিষয়টি খুব সহজ হয়ে যাবে। এছাড়া পেপল যদি আসে পুরো বিষয়টা একেবারে সহজ হয়ে যাবে।
অনলাইনে পুরোপুরি পেমেন্ট সংগ্রহ করা বাংলাদেশে এখনো বিষয়টি একেবারে সহজ নয় । যে পরিমানে খরচ পড়ে তাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য একটু সমস্যা । তবে এগিয়ে যেতে হবে । অনেক উদ্যোগ তৈরি হলে আস্তে আস্তে বিষয়গুলোর সহজ সমাধান তৈরি হবে । আপনি জানেনটেকনোলজী দ্রুতই পরিবর্তন হচ্ছে । দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে সব কিছু । সবকিছু ঠিক হলেই শুরু করবেন এমনটা করলে ভুল হবে। আপনারও তৈরি হতে সময় লাগবে । তাই এগিয়ে যেতে হবে যা আছে তাই নিয়ে । বাংলাদেশে এখনো বিষয়টি একেবারে সহজ নয় । যে পরিমানে খরচপড়ে তাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য একটু সমস্যা । তবে এগিয়ে যেতে হবে । আপতত ক্যাশ অন ডেলিভারি , বিকাশ ও ব্যাংক পেমেন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনার একটা ক্লিন ইমেইজ তৈরি করে নিতে হবে জেনো ক্রেতা সহজেই আপনাকে বিশ্বাস করে।
সাইট তৈরিতে খরচ কেমন হবেঃ
· ডোমেইন ও হোস্টিং ঃ বছরে প্রায় ৫ -১৫ হাজার টাকা ।
· ওয়ার্ডপ্রেস থিম – ৪০০০ হাজার টাকা
· প্লাগিন – ফ্রি । পরে দরকার হলে কিনে নিতে পারেন । তাও খুব বেশি খরচ পড়বে না ।
· ডিজাইন কাস্টোমাইজেশন , লগো তৈরি ঃ নির্ভর করবে আপনি কি করতে চান । প্রিমিয়াম থিম গুলোর তেমন কিছু প্রয়োজন হয় না । হেডার, লগো পরিবর্তন করেই মৌলিক একটা ডিজাইন তৈরি করা যায় । সেই ক্ষেত্রে ধরুন আরো ৫০০০ টাকা । কমেপাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
· আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার না জানেন ইউটিউব থেকে শিখে নিতে পারেন । আর অন্য কারো সাহায্য নিতে চাইলে নিতে পারেন ।
২০,০০০ -৩০,০০০ হাজার টাকার মধ্যেই খুব ভালো মানের একটা সাইট আপনি তৈরি করে নিতে পারবেন ।
৫) সাপ্লাইন চেইন ঠিক করা – ঠিক করতে হবে প্রোডাক্ট কোথা থেকে আসবে অথবা কিনবেন অথবা নিজেই বানাবেন কিনা, স্টক কিভাবে মেইনটেইন করবেন , অর্ডার হওয়ার পর কিভাবে ক্রেতার কাছে পৌছাবেন । এই ক্ষেত্রে শামীম ভাইয়ের পরামর্শটি খুবই গুরত্বপূর্ন।ভালোকোন কুরিয়ারের সাথে চুক্তি করতে পারেন।
৬) টিম তৈরি করা – সাফল্য নির্ভর করবে কেমন টিম আপনি তৈরি করতে পারছেন। কে কি ধরনের ভুমিকা পালন করছে। একটা লিস্ট করে নিতে পারেন কি ধরনের স্কিল এই ধরনের ব্যবসা করতে লাগবে । প্রথমেই সব ধরনের স্কিলের কর্মী স্থায়ীভাবে নিয়োগ না দিয়েফ্রিল্যান্সার কিংবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে আউটসৌর্সিং করতে পারেন । ব্যবসা বাড়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রথমে খন্ডকালীন , পরর্বত্তীতে পূর্নকালীন কর্মী নিয়োগ করতে পারেন।
৭) মার্কেটিং – সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন । অনলাইনে কেনাবেচা করা শুরু করার অর্থই হলো আপনি ইন্টারনেট থেকে ক্রেতা সংগ্রহ করবেন । সেই ক্ষেত্রে ইন্টারনেটে একটি সাইটকে প্রচার করার বিষয়টা অনেক বেশি জরুরী । আপনার মার্কেটিং কৌশল অফ লাইন এবং অনলাইনেরসংমিশ্রনে হতে হবে।কিন্তু অনলাইন মার্কেটিংয়ে আপনার ব্যর্থতা কিংবা সফলতাই ঠিক করে দেবে আপনার অনলাইন ব্যবসার ভবিষ্যত । এবং আপনি প্রথমেই যে টার্গেট গ্রুপকে নির্দিস্ট করে ছিলেন তাদের কাছে পৌছানো , তাদেরকে ক্রেতা বানানো , তাদের ধরে রাখার জন্যসার্চ, সোশ্যাল , ইমেইল মার্কেটিং সহ অনলাইনের আরো যে যে পদ্দ্বতি গুলো প্রযোজ্য তা সঠিক ভাবে কাজে লাগানো এবং ক্রমাগত কাজে লাগিয়ে যাওয়ার উপর নির্ভর করবে আপনার সাফল্য ।
আসলে অফলাইন বিষয়গুলোর চেয়ে ওয়েব টেকনোলজি ,ইণ্টারনেট মার্কেটিং আপনার সাফল্যের সাথে জড়িত ।
৮) রেজাল্ট পর্যালোচনা করা -প্রতিটি বিষয়ে কেমন করছেন তা পর্যালোচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ন । প্রথম দিকে এই পর্যালোচনার কাজটি বেশি করতে হবে। প্রথম দিকে ধরে নেয়া যায় যে আপনি অভিজ্ঞ নয় । আপনার ভুল হওয়ার সুযোগ অনেক বেশী থাকবে । ভুল গুলোচিন্থিত করে সুধরানোর তড়িত ব্যবস্থা নেয়া অনেক জরুরী হবে।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ