সইও (SEO) বলতে বুঝায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization)। অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিনগুলোর (গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি) জন্য ওয়েবসাইট / ব্লগসাইটকে উপযোগী করে তোলাকেই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও বলে।
1) মেটা ট্যাগ:
এমনটা ভেবে থাকলে সর্বনাশ করে ফেলবেন! মেটা ট্যাগ ই তো এসইও’র প্রাণ বলা চলে। ইউজার কিভাবে বুঝবেন যে আপনার কন্টেন্ট (হোক অডিও/ ভিডিও/ কন্টেকচুয়াল/ ইমেজ যেটাই) ই তার কাঙ্ক্ষিত কন্টেন্ট/ ইনফরমেশন কি না। বরং মেটা ডেসক্রিপশন নিয়ে কিছু কথা শোনা গিয়েছিলো যে এগুলো গুগল আর ভ্যালু দেয় না তবে আমি মনে করি যেহেতু গুগল এখনো তার সার্চ ইঞ্জিনে মেটা ডেস্ক্রিপশন শো করাচ্ছে অন্তত সেজন্যে হলেও আমাদের এখনই মেটা ডেসক্রিপশনটাকে পরিহার করা উচিৎ হবেনা।
2) কিওয়ার্ডস এবং লিঙ্কই সর্বেসর্বা:
এসইও নিয়ে যারা কাজ করি তাদের মধ্যে এই ধারণাটি প্রবলভাবে আছে যে শুধুমাত্র সিংগেল কিওয়ার্ড (single keyword) খোঁজা এবং লিঙ্ক বিল্ডিং
(link building) এর উপর গুরুত্ব দিলেই সার্চ ইঞ্জিন (search engine) গুলোতে ভালো একটি র্যাঙ্ক (rank) পাওয়া যাবে।
২০১৬-১৭ এর গুগল আপডেট এবং বড় বড় এসইও গুরুদের লেখা থেকে উপরের এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
গুগল এর হামিংবার্ড (hammingbird update) থেকে জানা যায় যে,সার্চ এর ফলাফলে সিংগেল কিওয়ার্ড এর থেকেও
পূর্ণ প্রাসঙ্গিকতাকে (full context of query) বেশী গুরুত্ত দেয়া হয়।
এছাড়াও কোন কিছু খোঁজার ক্ষেত্রে, ব্যক্তির ভৌগলিক অবস্থানের গুরুত্বও সিংগেল কিওয়ার্ড থেকে ক্ষেত্রবিশেষে বেশী।
3) গুগলই সব (Google controls everything):
এসইও (seo) এর জগতে গুগলই সব (google is everything) এই ধারণার অনেককেই পাওয়া যাবে। সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কিত জরিপগুলো ও এই ধারণাকে শক্তিশালী করে।জরিপ থেকে দেখা যায় যে, সারাবিশ্বে প্রায় ৬৬ ভাগ মানুষ তাদের প্রাত্যহিক কাজে গুগল এর সাহায্য নেয়। কিন্তু একটু অন্যভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, প্রায় ৩৪ ভাগ মানুষ অন্য সার্চ ইঞ্জিন যেমনঃ বিং, আস্ক, ইয়াহু ইত্যাদি ব্যবহার করে। সংখ্যার হিসেবে এটা প্রায় কয়েক বিলিয়ন। এ কারণে গুগলের পাশাপাশি অন্য সার্চ ইঞ্জিন এ স্ম্য দেওয়া অপরিহার্য।
4) comment section:
যেকোন ব্লগ বা ফোরাম এর মন্তব্যের ঘরে (comment section) লিঙ্ক যোগ করার পিছনে অনেকেই অনেক সময় ব্যয় করে এইভেবে যে মন্তব্যের ঘরের লিঙ্ক গুলো পেজকে (page) একটি ভাল অবস্থানে নিয়ে যাবে। ২০১৭ তে এসে এই ধারণাটিও ভুল প্রমাণিত হয়ার পথে।
এখন কমেন্ট সেকশনের লিঙ্কগুলোর উপর নির্ভরশীল হওয়া বা এই ব্যাকলিঙ্কগুলোকে ভালো মানের লিঙ্ক হিসেবে বিবেচনা করা বোকামির শামিল। কারণ সার্চ ইঞ্জিন (search engine) গুলো বেশিরভাগ ব্লগ বা ফোরাম এর কমেন্ট সেকশনের লিঙ্কগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আমলে নেয় না এবং লাল চিহ্ন (red flag) দিয়ে রাখে। গুগল এলগরিদম এর মানোন্নয়ন (google algorithm moderation) এবং ব্লগসমূহের “no follow” নীতির কারণে মন্তব্যের ঘরের লিংকগুলো কার্যকরী হচ্ছে না।
5) Quantity is better than quality:
২০১৭ তে এসে এই ধারণাপোষণ করা ভুল যে- গুনমান থেকে পরিমাণ বেশী গুরুত্তপূর্ণ। বর্তমানে গুগল এলগরিদম এতটাই দক্ষভাবে তৈরী যে, তারা মানসম্পন্ন লিখাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করতে এবং ভালো পয়েন্ট দিতে পারে।
6) বিজ্ঞাপন:
অরগানিক সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে যে, সার্চ ইঞ্জিন (search engine) গুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের সবচেয়ে বেশী পয়েন্ট (point) দিয়ে থাকে।এবং পিপিসি (ppc) এর মাধ্যমে অরগানিক সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিংয়ে প্রবলভাবে প্রভাব রাখা যায়।
গুগল এই ধারণাকেও ভিত্তিহীন বলে অভিহীত করেছে। তাদের এ ব্যাপারে ভাষ্য হচ্ছে – “গুগল পেইড সার্চ এর ব্যাপারে নির্দিস্ট নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে থাকে যা ‘pay for control’ মূলনীতি এর বিরোধী”।
7) সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার :
আপনি জানেন কি না, গুগল তার পেজ র্যাঙ্কিং নামক যে মানদন্ড রেখেছে তা কিন্তু এই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনার কন্টেন্ট কেমন সিগন্যাল পাচ্ছে- এর উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। যদিও শুনতে আপনার কাছে বোরিং কিংবা খ্যাত খ্যাত শোনাতে পারে তবু যা সত্যি তা তো মেনে নিতেই হবে যে, আপনার কন্টেন্টের লাইক – কমেন্ট এবং শেয়ারের ভিত্তিতে আপনার কন্টেন্টের পেজ র্যাংক গুগলের এলগরিদম নির্ধারণ করবে। কাজেই, লাইক কমেন্টস আর শেয়ার পেতে নো হেলাফেলা !
Comments (No)