Online Tutoring করে আয়ের কিছু উপায় আপনিও হোন শিক্ষক শিক্ষকতা কে বলা হয়- মহান পেশা। আর এই পেশার দক্ষতাটা কাজে লাগিয়ে যদি বাড়তি ইনকামের সুযোগ পাওয়া যায় তাহলে সেটাকে কি বলা যায়? একাউন্ট করে নিন 100 টাকা প্রতি রেফারে 10 টাকা
যাই বলা যাক না কেন, এটা যে সবার জন্য বড় একটা সুযোগ এবং উপার্জনের মোক্ষম উৎস সেটা নিশ্চই বুঝতে কষ্ট হবে না।
বর্তমানে প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী কোন স্কুল-কলেজে চাকুরি না করেও কিন্তু আপনি নিজেকে একজন শিক্ষক হিসেবে দাবী করতে পারেন। এর জন্য বেশি কিছু করতে হবে না, আপনার নিজের স্কিলটা অন্যকে শেখানোর মতো কৌশল আর দক্ষতা জানা থাকলেই যথেষ্ট।
বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট-Online-কম্পিউটার- এগুলো সম্পর্কে জানে না এমন কিশোর-তরুন হয়তো খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো- কম্পিউটার আর ইন্টারনেটকে আমরা যতটা কাজের মাধ্যম হিসেবে চিনি তার চাইতে বেশি চিনি বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে।
তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের এবং দেশের কিভাবে মঙ্গল করা যায় সেই বিষয়গুলোতে আমাদের অনেক কিছু জানার অভাব আর অনীহা রয়েছে।
পৃথিবীটা ধীরে ধীরে কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের ভিতর ঢুকে পড়ছে। তৈরি হয়েছে বিশাল এক Online জগত। সেখানে আপনার প্রয়োজন মেটানোর মতো প্রায় সবকিছুই পাবেন। আপনার কাজ হলো সেটাকে আবিস্কার করা আর কাজে লাগানো।
এমনই একটি বিষয় হলো- Online Tutoring । আপনার হয়তো নির্দিষ্ট একটি কাজে দক্ষতা আছে। সেই কাজটি আপনি অন্য দশজনের চেয়ে ভালো পারেন, কিন্তু উপযুক্ত সময়-সুযোগের অভাবে সেটা কাজে লাগাতে পারছেন না কিংবা সেই কাজ করে কোন উপার্জন করতে পারছেন না।
আপনার এই স্কিলটাকে কাজে লাগানো এবং উপার্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে Online তথা ইন্টারনেট। এখানে আপনি আপনার সেই স্কিলটা অন্যকে শেখাবেন। আর কাউকে কোনকিছু শেখাতে কার ভালো না লাগে? দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ নিজের কোন একটা বিশেষ জ্ঞান অন্যদের শেখাতে ভালোবাসেন। আর অনলাইনে শেখানোর ফলে শুধুমাত্র মানসিক প্রশান্তিই লাভ হবে না, পাশাপাশি অর্থও উপার্জন হবে।
আজকের পোষ্টে এই বিষয়টা নিয়েই আলোচনা করবো। লেখার মূল বিষয় বস্তু হলো- Online টিউটোরিং। এই সম্পর্কে যদি আপনার পূর্ব থেকেই জানা থাকে তাহলে তো ভালই, আর যদি জানা না থাকে তবে এই লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। আশা করি Online Tutoring-এর মাধ্যমে ইনকামের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো।
যাই হোক, সবকিছু ক্লিয়ার করে বুঝার চেষ্টা করি।
Online Tutoring কি?
ধরে নিলাম Online সম্পর্কে আপনার মোটামুটি ধারণা আছে। অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায়- এ সম্পর্কেও অনেক কিছু শুনেছেন। সে প্রেক্ষিতে অনলাইন টিউটোরিং জিনিষটা সহজে বুঝানোর জন্য এভাবে বলি–
অনলাইনে কাউকে কোন কিছু শেখানোই হলো- Online টিউটোরিং।
শিক্ষাদানের বিষয়-বস্তু যে কোনকিছুই হতে পারে। হতে পারে সেটা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত পঠিত কোন বিষয় কিংবা সিলেবাসের বাইরের কোন বিষয়। লেখাপড়া থেকে শুরু করে গান-বাজনা, নৃত্য, বাঁশি বাজানো, মাছ ধরা, কিংবা টেকনিক্যাল কোন বিষয়।
অর্থাৎ আপনি যা পারেন সেটাই হবে আপনার পাঠদানের বিষয়। আর এই পাঠদানের বিনিময়ে পারিশ্রমিকও পাবেন। অনলাইনে শিক্ষাদানের প্রকৃতিটা ক্ষেত্রবিশেষ একেক ধরণের হতে পারে, তবে যে বিষয়টা আপনি শিখাবেন সেই বিষয়ে যদি আপনার পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকে তাহলে শিখানোর মাধ্যম যা-ই হোক না কেন, তাতে বিশেষ কোন ঝামেলার সম্মুখিন হবেন না।
Online Tutoring কাদের জন্য?
শেখানোর মতো কোন কাজে পারদর্শীতা আছে এমন যে কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ অনলাইনে টিউটোরিং করতে পারবেন। এর জন্য আপনার বয়স বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর উচ্চতর কোন ডিগ্রি থাকারও প্রয়োজন হবে না। কিন্ত হ্যা, অবশ্যই যে বিষয়টা শিখাবেন সেই বিষয়ে অগাধ জ্ঞান থাকতে হবে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বেকার তরুণ, কিংবা অন্য কোন পেশার সাথে জড়িত যাদের নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের উপর ভালো দক্ষতা আছে এমন যে কেউ এই পেশার সাথে জড়িত হতে পারেন। পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ যদি হাতে থাকে তবে আপনার জন্য এই পেশাটা হতে পারে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার একটি অবলম্বন।
উল্লেখ্য যে, যদিও অনলাইনের ক্ষেত্রে একাডেমিক ডিগ্রিটা তেমন বাধ্যবাধকতা নয়, তবুও আপনি যে বিষয়টা শিখাবেন সেই বিষয়ে যদি আপনার একাডেমিক উচ্চতর কোন ডিগ্রি থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ লাভ ও বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
Tutoring-এ কি শিখাবেন?
আগেই বলেছি, আপনি যা পারেন সেটাই হবে আপনার শিখানোর বিষয়। কিন্তু শর্ত হলো সেই বিষয়টাতে আপনাকে দারুন এক্সপার্ট হতে হবে।
কেউ হয়তো ইংরেজি ভালো জানেন, তিনি অনলাইনে ইংরেজির বিভিন্ন বিষয় যেমন- গ্রামার, রচনা লেখা, ইংরেজি সাহিত্য, ভোকাভোলারী, কমিউনিকেশন স্কিল ইত্যাদি বিষয় শেখাতে পারেন।
যারা গণিত ভালো পারেন, তিনি গণিত শিখাবেন। গণিতের মধ্যে-আলজেব্রা, জিওমেট্রি, ত্রিগনোমেট্রি, ক্যালকুলাস ইত্যাদি বিষয়গুলোর অনলাইনে চাহিদা রয়েছে।
যারা বিজ্ঞান ভালো জানেন তারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় যেমন- বায়োলোজী, ক্যামিষ্ট্রি, ফিজিক্স ইত্যাদি শেখাতে পারেন। এইসব বিষয়ের শিক্ষকদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে অনলাইনে।
একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়া অন্যান্য যে কোন বিষয়েও আপনি অনলাইনে শিক্ষাদান করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার যদি একাধিক স্কিল জানা থাকে তবে বর্তমানে অনলাইনে যেটা বেশি জনপ্রিয় এবং তুলনামূলক চাহিদা যেটার বেশি সেটা নির্বাচন করাই উত্তম।
এইবার আসি অনলাইনে কিভাবে Tutoring করবেন এবং টিউটোরিং করে কিভাবে উপার্জন করবেন তার কয়েকটি উপায় জেনে নিই।
Tutoring কোথায় করবেন?
Online Market Place-এর কথা নিশ্চই শুনেছেন? সহজ ভাষায় মার্কেটপ্লেস হলো- অনলাইনের একটি বাজার। সেখানে বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বেঁচা-কেনা হয়।
আপনার Tutoring সার্ভিসটি বিক্রয়ের জন্যও অনলাইনে এমন অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি মার্কেটপ্লেসের এড্রেস আমি নীচে উল্লেখ করছি যেগুলোতে বিভিন্ন ধরণের টিউটোরিং কাজ পাওয়া যায়।
এইসব মার্কেটপ্লেসের কাজের প্রকৃতি এবং ধরণ বুঝিয়ে শেষ করা যাবে না। সুতরাং কি ধরণের কাজ পাওয়া যায় সেটা আরও ক্লিয়ার করে বুঝার জন্য সাইটগুলোতে ভিজিট করে সার্চবারে Tutoring লিখে কিংবা আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়টি লিখে সার্চ করুন, দেখবেন কাজের অনেক নমুনা চলে আসছে।
- Upwork.com
- Freelancer.com
- Fiverr.com
- Guru.com
- Tutorme.com
- Skooli.com
- Tutor.com
- Chegg.com
- Yup.com
- Takelessions.com
- Cambly.com
- Wyzant.com
Tutoring করে উপার্জনের আরও কিছু উপায় :
নির্দিষ্ট কোন মার্কেটপ্লেসে না গিয়েও কিন্তু আপনি টিউটোরিং করে ইনকাম করতে পারেন। অনলাইনে এমন অনেক উপায়ই রয়েছে। আসুন তাহলে জেনে নিই আরও কি কি উপায়ে টিউটোরিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
Youtube Channel :
ইউটিউবের কথা তো নিশ্চই শুনেছেন কিংবা ব্যবহার করেছেন? এটি হলো বিশ্বের সবচাইতে বড় এবং জনপ্রিয় একটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। কি নেই ইউটিউবে! নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদী থেকে শুরু করে পড়ালেখা কিংবা বিনোদন, সব ধরণের ভিডিও ইউটিউবে পাওয়া যায়। মোট কথা, আপনি যা লিখেই সার্চ দেন না কেন, সেই বিষয়ে কোন না কোন ভিডিও অবশ্যই পেয়ে যাবেন।
ইউটিউব যেমন একটি বিনোদনের মাধ্যম, তেমনি এটি একটি বৃহৎ পাঠশালাও বটে। ইউটিউবে রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষামূলক প্রচুর ভিডিও টিউটোরিয়াল। যেগুলো দেখে একজন মানুষ তার নিজের স্কিল অর্জন করতে পারে। কাজেই বর্তমানে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে ইউটিউব একটি উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে হয়ে উঠেছে।
এই ইউটিউব হতে পারে আপনার আয়ের উৎস। এর জন্য আপনাকে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলতে হবে। এরপর আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়ের বিভিন্ন ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করে সেখানে আপলোড করতে হবে। আপনার ভিডিও গুলো যদি মান-সম্মত হয় তাহলে হাজার হাজার মানুষ সেই ভিডিওগুলো দেখবে। যখন আপনার চ্যানেলটি প্রচুর পরিমাণ ভিউ হবে তখন গুগল এডসেন্স বা এই জাতীয় কোন এডভার্টাইজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের এড শো করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
Blogging :
টিউটোরিং করার আরও একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে ব্লগিং। এই জন্য আপনাকে একটি ব্লগসাইট তৈরি করতে হবে। এরপর আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়ে সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখা বা ভিডিও টিউটোরিয়াল ব্লগে পোষ্ট করতে হবে। আপনার টিউটোরিয়াল গুলা যদি কোয়ালিটি সম্পন্ন হয় তাহলে মানুষ সেগুলো দেখবে এবং পড়বে। এভাবে যখন ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে তখন ইউটিউবের মতোই এডসেন্স এড শো করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ব্লগিং করার জন্য ব্লগে প্রতিনিয়ত মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করে পোষ্ট করতে হবে। এর জন্য নির্দিষ্ট টিউটোরিং স্কিল ছাড়াও অন্যান্য আরও কিছু টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে। সেগুলোও আপনি ইন্টারনেট থেকেই শিখতে পারবেন।
শেষ কথা :
আশা করি অনলাইন টিউটোরিং সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। সবশেষে এটাই বলবো, যদি আপনার দক্ষতা থাকে তবে সেটাকে কাজে লাগান। বেকার বসে না থেকে কিছু একটা করার চেষ্টা করুন। এখন অনলাইনের যুগ, কোনকিছু না জানলে অনলাইনে সার্চ করুন এবং শিখে ফেলুন। আর অনলাইনে কাজ করার সবচে বড় সুবিধা হলো আপনি স্বাধীনভাবে ঘরে বসে থেকেও কাজ করতে পারবেন। সেখানে থাকবে না অন্যের কোন মাতব্বরী, থাকবেনা বাড়তি কোন চাপ। সুতরাং মনে যদি ইচ্ছা থাকে, উপায় অবশ্যই হবে।
লেখাটি সম্পর্কে আপনার যে কোন মতামত বা পরামর্শ জানাতে কমেন্ট করুন। লেখায় কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তা শোধরানোর সুযোগ করে দিবেন। সবাই ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন। সবার জন্য শুভ কামনা।