সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন কি:

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন(Search engine optization) এর সংক্ষিপ্ত নাম SEO।এটি এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটকে সকল ভিজিটরের সামনে পেীছে দেয়া যায়।

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন কি,কেন করবেন,seo করার গুরুত্বপূর্ন টিপস

একটি তথ্যবহুল ওয়েবসাইট তৈরি করলেন এবং আপনার ওয়েবসাইটে বেশী ভিজিটর পাচ্ছেন না?তার কারন আপনার এখনও একটি কাজ বাকিই রয়ে গেছে আর সেটি হল সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন(SEO)।যার অর্থ হচ্ছে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য সার্চ ইন্জিনকে বিভিন্ন ভাবে দিয়ে দেবেন এবং কিছু কেীশল অবলম্বন করে সার্চ ইন্জিনকে বোঝাবেন যে আপনার সাইটটি খুবই মূল্যবান তারপর থেকে সার্চ ইন্জিন ভিজিটরের সামনে আপনার সাইট শো করাবে।
সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন করার প্রকৃত কারন হচ্ছে-
আপনার ওয়েবসাইটকে সকলের কাছে পেীছে দেয়া।
সাইটের ভিজিটর এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার একটি শক্তিশালী অবলম্বন।
অনলাইনে আয় করার একটি সুন্দর প্লাটফর্ম তৈরি।

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন কেন করবেন:

  1. আপনি একটি মুল্যবান ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন যেটি ভিজিটরের কাছে পেীছানো দরকার আর সেই কাজটিই করে থাকে সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশনের(SEO) মাধ্যমে।ওয়েবসাইটের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে ভিজিটর।ভিজিটর ছাড়া কোন ওয়েবসাইট অথবা ব্লোগ এর কথা চিন্তাই করা যায় না।ওয়েবসাইট যে কারনেই তৈরি করা হোক না কেন,ব্যক্তিগত মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ভিজিটর অবশ্যই দরকার।
  2. এছাড়া আপনার ওয়েবসাইটকে আপনি জনপ্রিয় করতে চাইলে আপনার ওয়েবসাইট নিজে থেকেই জনপ্রিয় হবে না এর ভিতর ভিজিটরের চাহিদামত জিনিস থাকতে হবে এবং তা ভিজিটরের সামনে তুলে ধরতে হবে,এভাবে যখন চেষ্টা করে যেতে থাকবেন তখন ধীরে ধীরে আপনার সাইট জনপ্রিয়তা অর্জন করবে। এখন অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট এবং ব্লোগ রয়েছে,ভিজিটর হয়ত আপনার সাইটকে মনে রাখতে পারবে না আর তাই আপনাকে নিজে থেকেই সেই ব্যবস্থা করে দেবেন যাতে ভিজিটর আপনার সাইটকে মনে রাখে।যারা ব্যবসায়িক উদ্দেশে ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাদের কাছে অধিক ভিজিটর পাওয়া এবং ভিজিটর ধরে রাখা জিনিস দুটি খুবই মুল্যবান।ভিজিটর না থাকলে তাদের সব চেষ্টা বৃথা যাবে তাই তাদের প্রধান লক্ষ হয়ে থাকে ভিজিটর পাওয়া এবং ভিজিটর ধরে রাখা।ব্যবসাকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব ব্যপক।

উল্লেখ্য যে অনেক ব্লোগারই বলে থাকেন তাদের ৫০% ভিজিটর আসে সার্চ ইন্জিন থেকে এবং বাকি ৫০% আসে অন্যান্য উৎস থেকে।

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশনের(seo) প্রকারভেদ:
সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন সাধারনত দু ধরনের হয়ে থাকে।

অনপেজ:

  • অনপেজ সাইটের ভিতরেই করতে হয় যেমন-কিওয়ার্ড ঠিক রাখা।টাইটেল ট্যাগ ভালভাবে সাজানো।ভালমানের কনটেন্ট লেখা।কনটেন্টে কিওয়ার্ড ও টাইটেল ট্যাগের প্রতিফলন ঘটানো।এভাবে প্রাসঙ্গিকভাবে সাইটের ভিতরেই কিছু কাজ সম্পাদন করতে হয় যাকে অনপেজ অপটিমাইজেশন বলে।

অফপেজ:

  • অফপেজ অপটিমাইজেশন সাধারনত সাইটের বাইরে করতে হয়।যেমন-বিভিন্ন ব্লোগে গেস্ট পোস্টিং,মন্তব্য ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যাকলিংক বাড়ানো।সামাজিক যোগাযোগের সাইটে লিংক শেয়ার করা,ওয়েব ডাইরেক্টরী ইত্যাদি ব্যবহার করে আপনার সাইটকে সার্চ ইন্জিনের কাছে তুলে ধরাই হচ্ছে অফপেজ অপটিমাইজেশন।

seo করার গুরুত্বপূর্ন টিপস:

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশনের(seo) কিছু গুরুত্বপূর্ন টিপস নিচে দিয়ে দিলাম যা আপনাদের কাজে লাগবে আশাকরি।

*কনটেন্ট:

  • বলা হয়ে থাকে যে,Content is the king.উন্নতমানের কনটেন্টের ভুমিকা ব্যাপক।আপনার ব্লোগ বা ওয়েবসাইটের মূল জিনিসটাই হল কনটেন্ট।গুরুত্বপূর্ন কনটেন্ট নিজে থেকেই হয়ে যায় seo।হট টাইটেল বা হট কিওয়ার্ড দিয়ে ভিজিটরকে বোকা বানিয়ে হয়ত প্রথমদিকে একটু বেশী ভিজিটর পাওয়া যায়,তা আবার চিরতরে হারিয়েও যায়।তাই উন্নতমানের তথ্যপূর্ন কনটেন্ট লিখুন এবং কনটেন্ট সম্পর্কিত ভাল কিওয়ার্ড দিতে চেষ্টা করুন।

*পেজ টাইটেল:

  • আপনার ওয়েবসাইট কি সম্পর্কিত,কি থাকতে পারে আপনার সাইটে? এ সকল তথ্য প্রাথমিকভাবে একজন ভিজিটর এবং সার্চ ইন্জিন পেয়ে থাকে আপনার ওয়েবসাইটের পেজ টাইটেলের মাধ্যমে।তাই চেষ্টা করুন যেন আপনার সাইট এর সাথে আপনার পেজ টাইটেলের মিল থাকে।

*কিওয়ার্ড:

  • ধরুন, আপনি একটি ভালমানের পোস্ট লিখেছেন।পোস্টটি কোন না কোন বিষয় সম্পর্কিত।তাহলে আপনি যে বিষয়ের ওপর পোস্টটি লিখেছেন সেই বিষয় সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলি আপনার কিওয়ার্ড হতে পারে।অর্থাৎ সহজ ভাবে বলতে গেলে আপনার পোস্ট সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলি আপনি কিওয়ার্ড নির্বাচন করতে পারেন।কারন সার্চ ইন্জিন ভিজিটরের সামনে আপনার সাইট তখনই শো করাবে যখন আপনার সাইটের কনটেন্ট ও কিওয়ার্ডের মিল খুজে পাবে।

*বাউন্স এর দিকে নজর দেয়া:

  • সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশনের জন্য বাউন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।কোন ব্যবহারকারী আপনার সাইটে এসে তুলনামূলক কম সময় আপনার সাইটে অবস্থান করে অন্য সাইটে চলে যাওয়াই হল আপনার সাইটের বাউন্স। আপনার সাইটের বাউন্স রেট যত কম হবে সার্চ ইন্জিন আপনার সাইটকে ততই মূল্যায়ন করবে।অপরদিকে সাইটের বাউন্স রেট যত বেশী হবে সার্চ ইন্জিন আপনার সাইটকে ততই পিছনে সরিয়ে দেবে।অর্থাৎ সার্চ ইন্জিন ধরে নেবে যে,আপনার সাইটে ভিজিটররা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস পায়নি তাই অন্য সাইটে চলে গেছে।বাউন্স রেট কমাতে সাইটের ভালমানের কনটেন্ট এবং ল্যান্ডিং পেজ এর ডিজাইন ঠিক রাখুন।

*সাইট ম্যাপ:

  • সাইটে অনেক ধরনের লিংক থাকলে তা খুজে পেতে ভিজিটরের বেশ কষ্ট হয় তাই সাইটম্যাপিং ব্যবহার করে ভিজিটরের অতিরিক্ত সুবিধা তৈরি করে দেয়া যায়।এছাড়াও সার্চ ইন্জিন এখান থেকেও আপানার সাইটকে খুজে পাবে।মনে রাখবেন কোন কিছু হোক বা না হোক ভিজিটরের অসুবিধা যাতে না হয় সেইদিকে সবসময় লক্ষ রাখবেন।

নিয়মিত ব্যাকলিংক বাড়ানো:

  • ব্যাকলিংক বা ইনকামিং লিংক হল অন্য একটি ওয়েবসাইটে আপনার সাইটের লিংক থাকা যা থেকে ভিজিটর আপনার সাইটে চলে আসবে।সাধারনত ভাল পেজেরেংক বিশিষ্ট সাইট থেকে ব্যাকলিংক নিতে হয়।তাতে সার্চ ইন্জিন আপনার সাইটকে বেশী মূল্যায়ন করবে।একটি ওয়েবসাইটকে জনপ্রিয় করার জন্য বেশী বেশী ব্যাকলিংক তৈরি করা দরকার।মনে রাখবেন প্রচারেই প্রসার।তাই বলে খুব বেশী ব্যাকলিংক হঠাৎ করে করা যাবে না এবং ভিজিটর যাতে আপনার সাইট থেকে তাড়াতাড়ি চলে না যায় সেজন্য নিয়মিত পোস্ট করতে থাকুন।

স্বল্প মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার:

  • মাল্টিমিডিয়া অর্থাৎ ইমেজ,সাউন্ড,ভিডিও,এনিমেশন ইত্যাদি।আপনি যত কম মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করবেন আপনার জন্য ততই মঙ্গলজনক।এতে সাইটের লোডিং সময় কম লাগে ভিজিটর খুশি হয়।এছাড়াও সার্চ ইন্জিন সাইটকে গুরুত্ব দেয়।অন্তত কম গ্রাফিক্স ব্যবহার করা।আপনি হয়ত লক্ষ করলে দেখবেন অনেক বিশ্ববিখ্যাত ওয়েবসাইট রয়েছে যারা তাদের সাইটে সেরকম কোন গ্রাফিক্স ব্যাবহার করেই না।খুবই সামান্য ব্যবহার করে থাকে।


ওয়েবসাইট ডাইরেক্টরীতে সাইট সাবমিট করা:

  • বিভিন্ন ধরনের বড় বড় ওয়েবসাইট ডাইরেক্টরী রয়েছে সেগুলোতে সাইট সাবমিট করাতে পারেন তা থেকে ব্যাকলিংক পাবেন।তবে ওয়েব ডাইক্টেরীতে সাইট সাবমিট করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার সাইটের সাথে মিল থাকে এমন ডাইরেক্টরীতে সাবমিট করুন অর্থাৎ আপনার সাইট বাংলা হলে বাংলা ওয়েব ডাইরেক্টরীতে করুন ইংরেজী হলে ইংরেজী ওয়েব ডাইরেক্টরীতে সাবমিট করুন।লোভের বসে সবখানে সাবমিট করবেন না কারন এতে অন্য ভাষা বা অন্য দেশের ভিজিটর আপনার সাইটে এসে চলে যাবে তাতে বাউন্স রেট বেড়ে যাবে।


১০০% ইউনিক কনটেন্ট লেখার চেষ্টা করুন:

  • সবসময় চেষ্টা করবেন ১০০% ইউনিক কনটেন্ট লিখার।সরাসরি কারও কনটেন্ট কপি পেস্ট করবেন না।কপি পেস্ট করলে লাভ কিছুই হয় না।যা হয় তা হল লোকসান যেমন-কারও কপিরাইট কোনকিছু কপি পেস্ট করলে আইন অনুযায়ী সেটা আপনার অপরাধ,কপি পেস্ট কনটেন্টকে সার্চ ইন্জিন গুরুত্ব দেয় না,যে কোন সময় কপি পেস্ট ব্লোগ গুগল মুছে দিতে পারে(যদি গুগলের ব্লোগার প্লাটফর্মের হয়ে থাকেন)

তাই চেষ্টা করবেন আপনার কনটেন্ট যেন ১০০% ইউনিক হয়।

কপি-পেস্ট কন্টেন্ট চেকার ওয়েব টুল পেতেএখানে ক্লিক করুন

কমেন্ট করুন:

  • ভাল পেজরেংক বিশিষ্ট ব্লোগ বা ফোরামে কমেন্ট করে ব্যাকলিংক বাড়াতে পারেন।তবে খুব বেশী লিংক দেবেন না।শুধু লিংক দিয়ে বসে থাকবেন না ব্লোগে বা ওয়েবসাইটে নিয়মিত তথ্য যুক্ত করতে থাকুন।

ফোরাম পোস্ট করুন:

  • বিভিন্ন ধরনের ফোরামে পোস্ট করতে পারেন যা থেকে প্রচুর পরিমানে ব্যাকলিংক পাবেন।তবে হাই পেজরেঙ্ক বিশিষ্ট ফোরামে করাটাই উত্তম।এছাড়াও আপনি বড় ধরনের ব্লোগেও পোস্ট করে ব্যাকলিংক বাড়াতে পারেন।সেজন্য তাদের ব্লোগে আপনাকে হয়ত সাইন ইন করতে হবে।

ফোরাম সাইটের ওয়েব ঠিকানা পেতে এখানে ক্লিক করুন

সোশাইল মিডিয়াতে লিংক শেয়ার:

  • কমবেশী সবারই ফেসবুক,টুইটার আইডি আছে।তাই আপনি আপনার ফেসবুক অথবা টুইটার বন্ধুদের জন্য সোশাইল মিডিয়াতে নিয়িামত লিংক শেয়ার করতে পারেন।এতে ভিজিটর এবং ব্যাকলিঙ্ক দুটোই বাড়ে।

জনপ্রিয় সোশাইল বুকমার্কিং ওয়েবের ঠিকানা পেতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়েবসাইটে এড দিন:

  • আপনি চাইলে অন্য ওয়েবসাইটে এড দিতে পারেন।এতে আপনার সাইটের ভিজিটর,ব্যাকলিঙ্ক উভয়ই বেড়ে যাবে।

এভাবে পর্যায়ক্রমে কাজগুলো নিয়মিত করে যান।ধীরে ধীরে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে চলে যাবে।

আপনি আরও দেখে নিতে পারেন-

1 thought on “সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন কি,কেন করবেন,seo করার গুরুত্বপূর্ন টিপস”

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ