With the arrival of winter, the artisans are busy making coatings
নীলফামারী:
শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা/With the arrival 0f winter, the artisans are busy making coatings শীতের আগমনী বার্তায় উত্তরের জেলা নীলফামারীতে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। শীত নিবারণের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তোষক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছে দোকানগুলোতে। অনেকেই আবার ব্যস্ত নিজের পুরোনো লেপ-তোষক মেরামতে।
উত্তরের জনপদে ভোরে ও সন্ধ্যা-রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে যে যার সাধ্যমতো শীত মোকাবেলার প্রস্ততি নিচ্ছেন।নীলফামারী ও নদী এলাকার লোকজন সকালে ও রাতে গায়ে সোয়েটার ও চাঁদর জড়াচ্ছেন। রাতের বিছানায় টেনে নিতে হচ্ছে কাঁথা বা কম্বল।
৮০ বছরের বৃদ্ধ আসমা বেওয়া ও ছেলের বউ সাহেদা খাতুন (৩২) নিজেদের পুরোনো ব্যবহারি কাঁথা সেলাই করে নিচ্ছেন। লেপ-তোষক বানানোর ক্ষমতা তাদের নেই। তাই পুরোনো কাথাকে মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করছেন তারা। তারা জানান, আমরা গরিব মানুষ বাবা, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ভাতেই ঠিকমতো খাবার পাই না, আর গায়ে দেওয়া লেপ বানাবো কীভাবে। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ আমাদের ঠাণ্ডা কম লাগে।
জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি শিমুল তুলা ৪০০ টাকা ও বিচি ছাড়া শিমুল তুলার কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা। এসব তুলায় বালিশ তৈরি করেন সমাজের ধনী লোকেরা। আর গার্মেন্টস তুলায় বালিশ, লেপ ও তোষক বানিয়ে নেন মধ্যবিত্ত ও গ্রামের গরিব মানুষেরা। তবুও বর্তমান বাজারে ৫ হাত বাই ৫ হাত লেপ তৈরি করতে ১২০০ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। যা গতবারের চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি।
বাজারে কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা করে দাম চলছে।
সৈয়দপুরের কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়া চৌধুরীপাড়া গ্রামের আবেদ আলী (৪৫) জানান, বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবার লেপ-তোষক তৈরির খরচও বেড়েছে। তাই পুরোনো লেপ খুলে নতুন করে তৈরি করার জন্য দোকানে নিয়ে এসেছি। তুলার খরচ বাদ দিয়ে কাপড় ও মজুরি বাবদ ৭০০ টাকায় বানাতে দিয়েছি।
সদরের আবুজার রহমান (৩৪) জানান, এবারে বেশি শীত হতে পারে। তাই আগে ভাগে লেপ তৈরির জন্য দোকানে এসে অর্ডার দিচ্ছি।
নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে এনামুল হক কটন শপের মালিক আবুবকর সিদ্দিক জানান, শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ক্রেতাদের এ আনাগোনা চলবে পুরো শীতজুড়ে। শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে ও গোলাহাটে গিয়ে দেখা যায় লেপ-তোষকের সব দোকানে ছিল কারিগরদের ব্যস্ততা। দোকানিরাও অর্ডার নিচ্ছেন। ক্রেতাদের বিভিন্ন মানের কাপড় ও তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
সৈয়দপুরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের শমসের কটন শপের মালিক শমসের আলী জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষকের চাহিদা আরও বাড়বে। বর্তমানে বিকিকিনি ভালো। অনেকে আগেভাগে পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক ও নতুনভাবে তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে।
লেপ-তোষকের কারিগর আব্দুল কাইয়ুম বলেন, একটি লেপ তৈরি করতে এখন মজুরি ২৫০ টাকা। এছাড়া তোষক ২২০ টাকা, বালিশ প্রতিটি ২৫ টাকা এবং জাজিম তৈরিতে ৪০০ টাকা হারে মজুরি নেওয়া হচ্ছে। এই মজুরির হার অন্য সময়ের চাইতে কিছুটা বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, যশোর এলাকার কিছু রেডিমেড লেপ-তোষক বিক্রেতারা বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে আস্তানা গেড়েছেন। তারা বাসা ভাড়া নিয়ে মেস করে থাকছেন। দিনের বেলা ভ্যান নিয়ে ছুটছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। কারিগররা জানান শীত মৌসুমে এ ব্যবসা করে তাদের পরিবারের খরচ যোগায়।