বিসিকের ৮২টি শিল্পনগরে ১২ হাজার ৩১৩টি প্লট রয়েছে। এর মধ্যে ২১টি শিল্পনগরের ১ হাজার ৯৮টি প্লট বর্তমানে ফাঁকা।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)
বিসিক শিল্পনগরে ১০ শতাংশ প্লট পাবেন নারী উদ্যোক্তারা/Women entrepreneurs will get 10 percent plots in Bisik Shilpanagar বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) অধীনে পরিচালিত শিল্পনগর ও শিল্পপার্কে ১০ শতাংশ প্লট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। শিল্পনগরের প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত বিসিকের নতুন এক নীতিমালায় এই বিধান রাখা হয়েছে।
নীতিমালায় প্লটের মূল্য পরিশোধে এককালীন জমা (ডাউন পেমেন্ট) ও কিস্তির ক্ষেত্রেও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
‘বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগর/শিল্পপার্কে প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৩’ নামে এই নীতিমালার এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বরাদ্দযোগ্য মোট প্লটের ন্যূনতম ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের প্রদান করতে হবে। তবে উপযুক্ত নারী উদ্যোক্তা না পাওয়া গেলে প্লট বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা কমিটি আগ্রহী অন্য উদ্যোক্তাদের তা বরাদ্দ দিতে পারবেন। প্লটের মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের ডাউন পেমেন্ট বা এককালীন পরিশোধ করতে হবে প্লটের দামের ১৫ শতাংশ অর্থ।
অন্য উদ্যোক্তাদের জন্য যা ২০ শতাংশ। নারী উদ্যোক্তাদের প্লটের কিস্তির মেয়াদ হবে সাত বছর। প্রতিবছর দুটি কিস্তিতে এই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন নারী উদ্যোক্তারা। অন্য উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ১২ কিস্তিতে ছয় বছরের প্লটের দাম পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
কোটার মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, এর ফলে অনেক নারী উদ্যোক্তা তাঁদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বড় হওয়ার সুযোগ পাবেন।
তবে জমির পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে। নারী উদ্যোক্তারা যেহেতু ছোট, সুতরাং একাধিক উদ্যোক্তা মিলে যাতে প্লট বরাদ্দ নিতে পারেন, সেই সুযোগ রাখা যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
বিসিকের প্লট বরাদ্দের জন্য গঠিত জেলা কমিটি সর্বোচ্চ ১৫ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে। ১৫ থেকে ৪৫ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত প্লট বরাদ্দ পেতে বিসিকের চেয়ারম্যান ও ৪৫ হাজার বর্গফুটের বেশি প্লটের ক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বা সচিবের অনুমতি লাগবে।
তবে বিসিকের বিশেষায়িত শিল্পনগর বা শিল্পপার্কের কমিটি ২ লাখ ২৫ হাজার বর্গফুটের প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে। এর ওপরে গেলে তখন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বা সচিবের অনুমতি নিতে হবে। কোনো শিল্পনগরে প্লট খালি সাপেক্ষে ওখানকার শিল্প উদ্যোক্তা কারখানা সম্প্রসারণ করতে চাইলে, তিনি প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কারখানার পাশাপাশি নির্দিষ্ট মাপের ইটিপি বা বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে নতুন নীতিমালায়। এ ছাড়া কারখানা নির্মাণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপন ও পরের তিন মাসের মধ্যে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করতে হবে। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে হবে কারখানাগুলোকে।
বিসিকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশের ৮২টি বিসিক শিল্পনগরে ১২ হাজার ৩১৩টি প্লট রয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ১৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ১১ হাজার ১৯টি প্লট। পুরোদমে চালু রয়েছে ৪ হাজার ৫৩৩টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এর বাইরে ২১টি শিল্পনগরের ১ হাজার ৯৮টি প্লট বর্তমানে ফাঁকা। এসব প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন চেয়েছে বিসিক।